সুস্বাদু ও মজাদার "হোমমেইড পিৎজা"রেসিপি।। [১০% লাজুক শিয়ালের জন্য ]
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহু
হায় বন্ধুরা
কেমন আছেন?
আশাকরি,আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে সকলেই ভাল আছেন।আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি।বিশ্বায়নের এই যুগে অনেক কিছুই এখন আমাদের হাতের মুঠোয়। ঘরে বসে আমরা এখন বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের পণ্য কিনতে পারি। দৈনন্দিন ব্যবহারের পণ্যসামগ্রীর পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ফাস্ট ফুড আমাদের খাদ্যতালিকায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান করে নিয়েছে।
আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খাওয়ার সময় আমরা শুধু দেশীয় খাবারই অর্ডার করি না,ভারতীয়, আফগানি, চাইনিজ, থাই, ইতালিয়ান, জাপানি, ম্যাক্সিকান খাবারও খেতে ভালোবাসি।ভিনদেশি নানান খাবারের মধ্যে জনপ্রিয় ইতালিয়ান খাবার পিৎজা আমাদের অনেক পছন্দের। শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্করা ঘরে-বাইরে বাহারি নাম-রং ও মুখরোচক স্বাদের পিৎজা খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তোলে।
তাই আজ আমি আপনাদের মাঝে বর্তমান সময়ে অনেক জনপ্রিয় ফাস্ট ফুড পিৎজা রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি।সচারাচর আমরা বাহিরের দোকান বা রেস্তোরাঁয় এই মুখরোচক পিৎজা খেয়ে থাকি। কিন্তু আজ আমি আপনাদের হোমমেইড পিৎজারেসিপি তৈরি করে দেখাবো।আশাকরি,রেসিপিটি আপনাদের ভালো লাগবে।তাই আর কথা বাড়িয়ে রেসিপিটির প্রস্তুতপ্রনালীর সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি আপনাদের মাঝে তুলে ধরছি।
উপকরণের তালিকা
ক্রমিক নং | উপকরণের নাম | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | মুরগির গোস্ত | ১০০ গ্রাম |
২ | ময়দা | ২ কাপ |
৩ | ইস্ট | ১ চা চামচ |
৪ | গোল মরিচ ফাঁকি | ১ চা চামচ |
৫ | খাবার সোডা | ১/২ চা চামচ |
৬ | অরিগানো | ১/২ চা চামচ |
৭ | পেয়াজ | ১ টি |
৮ | আদা কুঁচি | সামান্য পরিমাণ |
৯ | রসুন কুঁচি | সামান্য পরিমাণ |
১০ | আদা বাটা | ১/২ চা চামচ |
১১ | রসুন বাটা | ১/২ চা চামচ |
১১ | হলুদ ফাঁকি | ১/২ চা চামচ |
১২ | মরিচ ফাঁকি | ১/২ চা চামচ |
১৩ | ঘি | ১ চা চামচ |
১৪ | চিনি | ১/২ চা চামচ |
১৫ | টেস্টিং সল্ট | সামান্য পরিমাণ |
১৬ | লবন | স্বাদমতো |
১৭ | সয়াবিন তেল | পরিমাণ মতো |
১৮ | টমেটো সস | ১/৪ কাপ |
১৯ | দুধ | ১ কাপ |
২০ | সবুজ ক্যাপসিক্যাম | ১/৪ অংশ |
২১ | লাল ক্যাপসিক্যাম | ১/৪ অংশ |
২২ | চিলি ফ্লেক্স | ১ চামচ |
উপকরণের ছবি
রেসিপির প্রস্তুত প্রণালীর প্রতিটি ধাপ নিচে তুলে ধরা হলোঃ
প্রথম ধাপ
একটি বোলে সামান্য কুসুম গরম পানি এবং ইস্ট দিয়ে ভালো করে নেড়ে নিবো।
দ্বিতীয় ধাপ
এরপর পরিমান মতো ময়দা,সামান্য গোল মরিচ ফাঁকি, খাবার সোডা,তেল ও স্বাদমতো লবন দিয়ে সবকিছু ভালো করে মিশিয়ে একটি ডো তৈরি করে নিবো।ডো টি কিছুক্ষনের জন্য রেখে দিবো। যাতে পিৎজার রুটিটি পারফেক্ট হয়।
তৃতীয় ধাপ
একটি বাটিতে মুরগির গোস্ত, হলুদ ও মরিচ ফাঁকি, আদা ও রসুন বাটা, টেস্টিং সল্ট ও স্বাদমতো লবন দিয়ে মেরিনেট করে পাঁচ মিনিটের জন্য রেখে দিবো।
চতুর্থ ধাপ
চুলাতে একটি ফ্রাইপ্যান বসিয়ে সয়াবিন তেল দিয়ে নিবো।এরপর তেল যখন গরম হয়ে আসবে তখন মেরিনেট করা মুরগির গোস্তগুলো দিয়ে ভালো করে ভেজে নিবো।
পঞ্চম ধাপ
একটি বাটিতে আগে থেকে জ্বাল করা দুধের সাথে ১/৩ চাপ ময়দা মিশিয়ে নিবো।এরপর চুলাতে পুনরায় ফ্রাইপ্যান বসিয়ে এক চা চামচ ঘি দিয়ে নিবো।ঘি একটু গরম হলে এর মধ্যে দুধ ও ময়দার মিশ্রন দিয়ে নিবো।
ষষ্ঠ ধাপ
এরপর ঘি এর সাথে দুধ ও ময়দা মিশ্রনটি অনবরত নাড়াচাড়া করতে থাকবো।যখন দেখবো একটু ঘন হয়ে আসছে,তখন চিনি,সামান্য লবন ও গোলমরিচ ফাঁকি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিবো।এরপর যখন দেখবো পুরোপুরি ঘন হয়ে যাবে তখন একটি বাটিতে নামিয়ে নিবো।এভাবেই তৈরি হয়ে যাবে আমাদের হোমমেইড হোয়াইট সস।যা পরবর্তীতে পিৎজা তৈরির কাজে লাগবে।
সপ্তম ধাপ
একটি বাটিতে টমেটো সস, চিলি ফ্লেক্স, রসুন কুঁচি ও অরিগানো দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিবো।এভাবেই তৈরি হয়ে যাবে হোমমেইড পিৎজা সস।
অষ্টম ধাপ
এরপর পিঁড়িতে আগে থেকে বানানো ডো টি বেলুনের সাহায্যে হালকা বেলে নিবো।
নবম ধাপ
একটি বড় স্টিলের প্লেটে সামান্য তেল হাত দিয়ে ভালো করে মেখে নিবো।এরপর বেলে রাখা ডো টি প্লেটের মধ্যে দিয়ে হাতের সাহায্যে পুরো প্লেট ভরে নিবো এবং রুটিটির চারপাশে হালকা করে বটে নিব।এরপর কাটা চামচ দিয়ে পুরো রুটিটাকে খুঁচিয়ে নিবো।
দশম ধাপ
এরপর আগে থেকে বানিয়ে রাখা পিৎজা সস ও হোয়াইট সস পিৎজা রুটির উপরের চারপাশে ছড়িয়ে দিবো। এরপর
একে একে ক্যাপসিক্যামগুলো সাজিয়ে নিবো।
একাদশ ধাপ
এরপর পুরো পিৎজা রুটি উপরে ক্যাপসিক্যাম সাজানো হলে গোলকরে কেটে রাখা পেঁয়াজ, ভাজা মুরগির গোস্ত, চিলি ফ্লেক্স ও অরিগানো দিয়ে দিবো।অরিগানো না দিলে পিৎজার রিয়েল ফ্লেভারটি পাওয়া যাবে না।
দ্বাদশ ধাপ
পিৎজাটি বেক করার জন্য চুলাতে একটি বড় পাতিল বসিয়ে পাতিলে ভিতরে বেকিং স্টেন বসিয়ে নিবো।এরপর পিৎজার প্লেটটি বেকিং স্টেনে বসিয়ে পাতিলটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিবো। ঢাকনাটির উপর ভারি কিছু দিয়ে চুলার জ্বাল হাই হিটে এক ঘন্টার জন্য রেখে দিবো।
শেষ ধাপ
এক ঘন্টা পরে পিৎজাটি দেখতে এমন দেখাবে।এরপর পিৎজাটিকে অন্য একটি প্লেটে নামিয়ে নিবো এবং পিৎজার উপরে ডিম গ্রেড করে দিবো।ডিম দেওয়াটি অপশনাল।আপনারা চাইলে না ও দিতে পারেন।আমি ডিম দিয়েছি শুধু দেখার সৌন্দর্যের জন্য।এভাবেই তৈরি হয়ে সুস্বাদু ও মজাদার হোমমেইড পিৎজারেসিপি।
পরিবেশন
পরিশেষে আমি চেষ্টা করেছি সুস্বাদু ও মজাদার হোমমেইড পিৎজারেসিপিটি তৈরি করে আপনাদের মাঝে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য। জানি না কতটুকু পেরেছি।তবে আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।আমার তৈরি করা হোমমেইড পিৎজা রেসিপিটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তবে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।আপনাদের সহযোগিতা মূলক মন্তব্য আমাকে আরো সুন্দর ও মজাদার রেসিপি তৈরিতে অনুপ্রেরণা যোগাবে।
ফটোগ্রাফির বিবরণ
Photographer | @anisshamim |
---|---|
Device | Google Pixel 4a |
আমার পরিচিতি
আমি আনিসুর রহমান। আমার স্টিমিট আইডি @anisshamim।আমার জন্মস্থান মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে।আমি বাংলা ভাষার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্যেবোধ করি এবং বাঙালি হিসেবে নিজেকে খুব গর্বিত মনেকরি।ভ্রমন করা আমার খুব সখ।তাছাড়া সময় পেলেই কবিতা লিখা এবং মজার মজার রেসিপি তৈরি করা।গল্পের বই পড়তে ও খুব ভালো লাগে।অন্যের কষ্টে নিজেকে বিলিয়ে দিতে খুব ভালোলাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
বাহ! বাহ! দারুণ একটি রেসিপি আপনি শেয়ার করেছেন।হোমমেইড পিৎজা তৈরি করতে অনেক সময়ের ব্যাপার। তাই আমি বাসায় পিৎজা তৈরি করি না।তবে বাসায় তৈরি করে খাওয়ার মধ্যে একটা আনন্দ রয়েছে।তার সাথে আবার ফ্রেশ খাবার ও খাওয়া হয়।তবে আপনি দারুন তৈরি করেছে।অনেক কষ্ট করে রেসিপি তৈরি করে আমাদের সাথে ধাপে ধাপে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন।
ভাইইয়া আপনার পিজ্জা রেসিপি দেখে জাস্ট জিভে জল চলে এসেছে। পিজ্জা আমার খুবই পছন্দের একটি রেসিপি। বাহিরে গেলে আমার এটি খাওয়া হয়। কত টাকা নষ্ট করে বাহিরে খেয়ে থাকি। কিন্তু কত অল্প খরচে আমরা একটি বাসায় তৈরি করতে পারি। আপনার কাছ থেকে রেসিপিটি শিখে নিলাম খুবই ভালো লাগলো। আপনাকে ধন্যবাদ সুন্দর এই রেসিপিটির জন্য ভাইয়া।
হা আপু এখন থেকে বাসায় তৈরি করে খেয়ে দেখবেন। খুব মজা পাবেন। এতে যখন ইচ্ছে তখন বানিয়ে থেতে পারবেন।আপনার জন্য শুভকামনা রইল আপু।
সময় যত যাচ্ছে বিদেশি খাবার গুলোর প্রতি আমাদের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে সব জায়গায় বিদেশি খাবার গুলো সবার নজর কেড়ে নিচ্ছে। বিশেষ করে ফাস্টফুড গুলো সবাই খেতে বেশি পছন্দ করছে। পিৎজা পছন্দ করে না এমন মানুষ খুবই কম আছে। বাসায় যদি এভাবে পিৎজা তৈরি করা যায় তাহলে বেশ ভালো হবে। এই রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এটা আপনি ঠিক কথা বলেছেন ছোট থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সকলেই পিৎজা খেতে খুব পছন্দ করে।
আজকে আপনি আমাদের মাঝে বাড়িতেই পিৎজা তৈরি করার খুবই চমৎকার একটা পদ্ধতি শেয়ার করলেন ভাইয়া। পিৎজা তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনি যত উপকরণ ব্যবহার করেছেন দেখছি , এতে করে এটা খেতে কতটা সুস্বাদু হয়েছিল তা বলতে হবে না। যাইহোক নতুন ধরনের একটা রেসিপি শিখতে পারলাম আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে।
ওয়াও ভাইয়া খুব লোভনীয় একটি রেসিপি তৈরি করেছেন আমার মনে হয় পিজ্জা পছন্দ করে না এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। আর এই খাবারটা যদি বাসায় তৈরি করা যায় তাহলে তো আর কথাই নেই। দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে।আপনি খুব সুন্দর করে প্রতিটি ধাপ উপস্থাপন করেছেন যে কেউ দেখলে এটি তৈরি করতে পারবে। আমি আপনার কাছ থেকে শিখে নিলাম অবশ্যই আমি এটা ট্রাই করে দেখব। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি লোভনীয় রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
ওয়াও ভাইয়া চমৎকার পিৎজা বানিয়েছেন। এতো সুন্দর ভাবে পিৎজা বানিয়েছেন যে দেখে লোভ সামলাতে পারছি না।রেসিপির প্রতিটি ধাপ সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন।আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ভাইয়া।
ভাইয়া আমরা তো সব সময় পিৎজা বাইরে থেকে খেয়ে থাকি। কখনো বাসায় এভাবে তৈরি করে খাওয়া হয়নি। ২২ টি উপকরণের সাহায্যে আপনি এই পিৎজা বাড়িতে তৈরি করেছেন যেটি দেখেই মনে হচ্ছে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। তবে এটি তৈরি করতে বেশ ঝামেলা পূর্ণ দেখে মনে হচ্ছে এবং অনেক সময়ের ব্যাপারও মনে হচ্ছে। তবে পুরো উপস্থাপনটি বেশ চমৎকার ছিল। পরিবেশন টাও দারুন ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাইয়া এটা কি দেখালেন! আপনার রেসিপিটি দেখে তো আর লোভ সামলানো যাচ্ছে না। পিৎজা খেতে আমার কাছে খুব ভালো লাগে। আপনার রেসিপিটি দেখে জিভে জল চলে এসেছে ভাইয়া। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য।
আপনার এত সুন্দর মন্তব্য আমাকে আরো সুস্বাদু ও মজাদার রেসিপি তৈরি করতে অনুপ্রেরণা যোগাবে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল আপু।
ভাইয়া আপনার তৈরি করা পিজ্জা দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটা কত বেশি মজাদার হয়েছে। এত রাতে এমন রেসিপি দেখে সত্যিই লোভ সামলাতে পারছি না। চমৎকারভাবে পিজ্জা তৈরির পদ্ধতি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আমিও অনেকবার পিজ্জা তৈরি করেছিলাম বাসায়। কিন্তু সত্যি বলতে এটা আমার কাছে অনেক ঝামেলার মনে হয়। এ কারণে পিজা খেতে ইচ্ছা করলে হয় অর্ডার করি।না হয় বাহিরে গিয়ে খেয়ে আসি। অনেক শুভকামনা রইলো ভাইয়া আপনার জন্য।