মানুষ মানুষের জন্য।
প্রকৃতির অতিরিক্ত কিছু যে সবসময় ভালো বয়ে আনবে তা নয়।অনেক সময় তা অপকারও বয়ে আনে।সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটের বন্যার পরিস্হিতি আমাদের ভাবিয়ে তোলে।হঠাৎ সিলেটে বন্যা দেখা দেয় এবং বন্যা পরিস্হিতি ক্রমে অবনতি হতে থাকে।পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হতে থাকে।রাস্তাঘাট তলিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে।বন্যার পানিতে ভেসে যাচ্ছে গবাদিপশু ও মাঠের ফসল।শোচনীয় হয়ে পড়েছে বন্যার্তদের জীবনযাপন। বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট চরম আকার ধারন করে।এরই মধ্যে আবহাওয়া অফিসের ঘোষণা আসে যে,বন্যার পরিস্হিতি আরও অবনতি হতে পারে।হঠাৎ বন্যায় আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান মানুষও অভাবে পরে।এই অবস্থায় সাধ্যমত এই বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দ্বায়িত্ব। আমি মনেকরি,যারা নিরাপদে আছেন তাদের জন্যও এ বন্যা এক পরীক্ষা। কারন যারা বন্যাক্রান্ত হননি তারা তাঁদের সার্মথ্য অনুযায়ী এই বন্যাকবলিত মানুষের পাশে তাদের সাহায্যে হাতটি বাড়িয়ে দেন কিনা।এই বন্যা- দুর্গতদের জন্য ত্রানসামগ্রী,খাদ্য, বস্ত্র,ঔষধ,খাবার স্যালাইন ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের মাধ্যমে তাদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মর্যাদা লাভ করতে পারেন।বিত্তশালীরা যদি আল্লাহর পরিবারের অন্তর্ভুক্ত এই মানুষগুলোর মানবেতর জীবনযাপন দেখেও তাদের সাহায্যে এগিয়ে না এসে হাত গুটিয়ে বসে থাকে,তাহলে আল্লাহর কাছে জিজ্ঞাসিত হবে।রাসূল( সা.) বলেন, "আল্লাহতায়ালা কিয়ামতের দিন (আদমসন্তানকে বলবেন) হে আদমসন্তান!আমি অসুস্থ ছিলাম,তুমি আমার সেবা করনি;আমি তোমার কাছে খাবার চেয়েছিলাম,তুমি আমাকে খাবার দাওনি। বান্দা বলবে,হে আল্লাহ আপনি তো বিশ্বজগতের মালিক। আমরা কিভাবে আপনাকে খাবার খাওয়াবো( এ সাধ্যতো আমাদের কারো নেই) ।আল্লাহ বলবেন, তোমার কি মনে নেই যে আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে খাবার চেয়েছিলো।তুমি কি জান না যে যদি তুমি তাকে খাবার দিতে তাহলে তা আমাকেই খাওয়ানো হতো।তুমি তা আমার কাছে ফেরত পেতে।আল্লাহ বলবেন, হে আদমসন্তান!আমি তৃষ্ণার্ত অবস্থায় তোমার কাছে পানি চেয়েছিলাম,তুমি আমাকে পানি পান করাও নি।বান্দা বলবে হে আল্লাহ! আপনিতো বিশ্বজগতের মালিক। আমরা কিভাবে আপনাকে পান করাবো(এ সাধ্যতো আমাদের কারো নেই)।আল্লাহ তখন বলবেন, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে পানি চেয়েছিলো।তুমি তাকে পান করাও নি। যদি তুমি তাকে পান করাতে তাহলে তা তুমি আমার কাছে পেতে।" (মুসলিম শরিফ)। তাই বন্যা প্লাবিত এলাকায় আমাদের সবসময় খোঁজখবর নিয়ে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের পাশে এগিয়ে যেতে হবে।সামর্থ্য থাকার সত্ত্বেও যদি এই অসহায় মানুষের পাশে কেউ এগিয়ে না আসবে,সৃষ্টিকর্তার দয়া তার জন্য সংকুচিত হবে।রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন,' যে ব্যাক্তি মানুষের প্রতি দয়া করে না,তার প্রতিও দয়া করা হয় না'।(তিরমিজি)।আর যারা দ্বায়িত্ব পালন করবে আল্লাহ তায়ালা তাদের মহান পুরস্কারে ভূষিত করবেন। রাসূল (সা.) বলেন, 'জমিনে যারা আছে তাদের প্রতি দয়া কর,আকাশে যিনি আছেন তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন।'( তিরমিজি)। পৃথিবীর সবকিছুই স্রষ্টার সৃষ্টি। তাই তিনি ও চান তার সৃষ্ট জীবেরা তার সব সৃষ্টির প্রতি মমত্ববোধ করুক। মোটকথা বন্যা হউক বা অন্য যেকোনো বিপদে মানুষ মানুষের পাশে এগিয়ে আসবে।তবেই তো একে অপরের সাথে ভ্রাতৃত্ববন্ধন তৈরি হবে। আজকের যে অবস্থা কালকে যে আমার হবে না, তার কোন নিশ্চয়তা কেউ বলতে পারে না।তাইতো শিল্পির বিখ্যাত গানের সুরে ফুটিয়ে উঠে মানবপ্রেম "মানুষ মানুষের জন্যে,জীবন জীবনের জন্যে,একটু সহানুভূতি কি মানুষ দিতে পারে না,ও বন্ধু।" পরিশেষে,আসুন আমরা সকলেই কবির সেই উক্তির সাথে মিশে যাই," সকলের তরে প্রত্যেকে আমার পরের তরে"।
অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া। খুবই ভালো লাগলো আপনার লেখা গুলো পড়ে।
আর আপনি আপনার পোস্টে অন্তত একটি ছবি থাম্বনেইল হিসেবে ব্যবহার করবেন এতে আপনার পোস্ট দেখতে আরো বেশি সুন্দর লাগবে। আপনি আমাদের ভেরিফাইড মেম্বারদের পোস্ট গুলো একটু ভিজিট করে দেখুন এতে আপনার সুবিধা হবে। ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ ভাইয়া।আপনাদের উৎসাহ ও উদ্দিপনায় মাধ্যমেই আমাকে আরো সুন্দর ও প্রানবন্ত লিখার উৎসাহ যোগাবে।
খুব ভালো পোস্ট
আপনি পোস্টে কিছু ফটো অ্যাড করে দিবেন। অন্যদের পোস্টে ফটো দেয়া দেখে আপনি ধারণা নিতে পারেন।
ধন্যবাদ ভাইয়া। পরের পোস্টগুলোতে ছবিযুক্ত সহ আরও সুন্দর ও প্রানবন্ত কনটেন্ট যাতে লিখতে পারি সেজন্য দোয়া করিবেন।
খুব সুন্দর করে লিখখেছেন ভাল লাগল