।। রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ পর্ব--৫ ।।10% shy-fox & 5% abb-school beneficiary।।
২৬ই বৈশাখ/১৪২৯ বঙ্গাব্দ।
৯মে/২০২২ইং।
রোজঃ-সোমবার।
ঈদ আনন্দে শেখ রাসেল উদ্যান ও আশুরা বিলের কাঠের সেতু ভ্রমণ
ঈদ হল সারা বিশ্বের মুসলমান সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় ও আনন্দের উৎসব। আর এই ঈদের উৎসবকে ঘিরেই ১৯৩১ ইং সনে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম অন্যতম একটি গান রচনা করেছিলেন। গানটি হল "ও মন রমজানের ঐ শেষে এলো খুশির ঈদ।" ধর্ম যার, যার, উৎসব সবার।
আশুড়া বিল ভ্রমণ চিত্র-০১
টমটম গাড়ীতে নিজের একটি সেলফি।
বন্ধুরা ঈদ আনন্দ ভ্রমন বিবরনের আগে আপনাদের সকলের অবগতির জন্য কিছু কথা না বললেই নয়। আমি কিন্তু বর্তমানে একজন সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষের মত নই। বর্তমানে আমি একজন ব্রেন স্টোকের রোগি। বর্তমানের খুব ধীরে চলাচল করতে পারলেও আগের মত আর স্বাভাবিক ভাবে কথা বলতে পরছি না, তাহলে বলতে পারেন যে, রেষ্টে না থেকে এ সকল আনন্দ উৎসবে কেন? মুলত এটিও আমার চিকিৎসার একটি আংশ। ডাক্তার বলছেন কোন টেনশন করবেন না। যেখানই আনন্দ উৎসব হবে পারলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রেখে অংশ গ্রহনের চেষ্টা করবেন। তাই এটি আমার একটি সুস্থ হবার প্রায়াস মাত্র। বন্ধুরা সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন আর নিজেরা ভালো থাকবেন।
আশুড়া বিল ভ্রমণ চিত্র-০২
বন্ধুরা, গতকাল পর্যন্ত ঈদ আনন্দ ভ্রমণ নিয়ে আপনাদের মাঝে এ পর্যন্ত মোট ৪টি ভ্রমণ কাহিনী উপস্থাপন করেছি। সে গুলো হচ্ছে (১) ভেন্ডাবাড়ী ঝিলমিল পার্ক, (২) মিঠাপুকুরের রাবার বাগান, (৩) মিঠাপুকুরে শালবাগান এবং (৪) ভেন্ডাবাড়ীর সোনামতি নদীপারের মেলা। আজ আপনাদের সামনে ঈদ আনন্দে দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার আশুরা বিল, শাল-বাগান ঐতিহ্যেবাহী কাঠের সেতু ভ্রমণ কাহিনী নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা রাখি আপনাদের খুবই ভালো লাগবে।
আশুড়া বিল ভ্রমণ চিত্র-০৩
আশুরা বিলের দুরত্ব আমার বাড়ী থেকে ১৫ কিলোমিটার প্রায়। আশুরা বিল ভ্রমণে যাওয়ার দিনে সকাল ১০ ঘটিকায় আমার খুবই ঘনিষ্ট বন্ধু মাহফুজুর রহমান, একটি প্রাইভেটকার নিয়ে পরিবার সহ আমাকে দেখার জন্য এসেছিলেন। মূলত আমাকে দেখার পর সোজা চলে যাবেন আশুরা বিল ভ্রমণে।
আশুড়া বিল ভ্রমণ চিত্র-০৪
যাইহোক আমার সঙ্গে কুশল বিনিময় শেষে আমাকে প্রস্তাব করা হলো আশুরা বিল ভ্রমণে যাওয়ার জন্য। আমি সেই প্রস্তাবটি সঙ্গে সঙ্গে গ্রহন করলাম এবং সঙ্গে চলে গেলাম আশুরা বিল ভ্রমণে। প্রায় ৩৫-৪০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে গেলাম সেখানে। পৌঁছার পর আমার মন আনন্দে ভরে উঠলো।
আশুড়া বিল ভ্রমণ চিত্র-০৫
অপরুপ সৌন্দর্যের প্রাকৃতিক ও কৃতিম দৃশ্য এই আশুরা বিলের। আশুরা বিলে যাওয়ার সময় প্রথমে পড়বে হরিপুরের **বিশাল শাল-বাগান, প্রায় হাজার একরের উপরেরও বেশী জমি নিয়ে গড়ে উঠেছে বাগান। বিশাল এ শাল বাগানের ভিতর দিয়ে তৈরি হয়েছে একটি পিচঢালা রাস্তা। সেই রাস্তাটি কয়েক কিলোমিটার যাবার পর দেখা মিললো আশুরা বিলের। বাহ কি অপরুপ দৃশ্য, বিলের পরিধিও হবে কয়েক শত একর। একটু নদীর মত লম্বাটে।
আশুড়া বিল ভ্রমণ চিত্র-০৬
৷ বিলের ওপার থেকে আবার শুরু হয়েছে শাল বাগান। যা বিনােদন কেন্দ্র স্বপ্নপুরী পর্যন্ত বিস্তৃত। মূলত এই আশুরা বিলেই দ্বিখণ্ডিত করেছে এই শতবর্ষী শাল বাগানকে। বর্ষা মৌসুমে এই বিলটি পানিতে পরিপূর্ণ থাকে। মূলত বর্ষা মৌসুমী পরিপূর্ণতা পায় এই বিলটি। **বর্ষা মৌসুমে শালবাগান এর এ প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে যাওয়ার জন্য নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এর পক্ষ থেকে বিলের উপরে একটি দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়। **
আশুড়া বিল ভ্রমণ চিত্র-০৭
সরকারিভাবে এই আশুরা বিল থেকে মাছের জন্য অভায়ারণ্য ঘোষণা করা হয়। বর্ষা মৌসুমে এই বিলে সরকারিভাবে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছাড়া হত। **শত শত জেলে পরিবার এই বিলে মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। বর্তমানে এই বিলটি বর্ষা মৌসুমে মাছ চাষের জন্য নিলাম দেয়া হয় জেলেদের। ব্রীজের উপরে আঁকাবাঁকা দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতু কে কেন্দ্র করেই এখন হাজার হাজার দর্শনার্থীর ভিড় জমে এই আশুরা বিলে। এই বিল কে ঘিরে সরকার সরকারিভাবে একটি যুগোপযোগী বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে এই স্থানটির নামকরণ করা হয়েছে , শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যান ও ঐতিহ্যবাহী আশুরার বিল
আশুড়া বিল ভ্রমণ চিত্র-০৮
বর্তমানে দূর থেকে দেখে মনে হবে না এটি একটি বিল, বিলের পানি শুকিয়ে বিশাল একটি মাঠে পরিণত হয়েছে, আর সেই মাঠে কৃষকেরা ইরি-বোরো ধান চাষ করেছেন। এ বিলের দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতুটি পরিদর্শনে আসা দর্শনার্থীদের জন্য থাই খাবারের হোটেল, হরেক রকমের দোকান, শিশুদের জন্য নাগরদোলা, ঘুরে বেড়ানোর জন্য টমটম গাড়ি, আগত দর্শনার্থীদের
বহনকৃত মাইক্রোবাস, মোটরবাইক ইত্যাদি রাখার সুব্যবস্থা।
আশুড়া বিল ভ্রমণ চিত্র-০৯
দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য নবাবগঞ্জ থানার বিশেষ টহল টিম। এরকম দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক শালবাগান, ঐতিহাসিক বিল ও বিশালাকৃতির কাঠের সেতু দর্শন করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
আশুড়া বিল ভ্রমণ চিত্র-১০
আমরা এই দর্শনীয় স্থানে কখনো পায়ে হেঁটে, কখনো বা টমটম গাড়িতে চড়ে ঘুরে বেরিয়েছি। আর ভীষণ ভালো লেগেছে আমাকে। কথা বলতে না পারলেও, বন্ধু মাহফুজুর রহমান কে নিয়ে অনেক আনন্দ হয়েছে । আমাদের বাংলাদেশের বন্ধুদের জন্য আমার বাত্রা রইল, যদি সময় হয় তাহলে বর্ষা মৌসুমে এই আশুরা বিল ঘুরতে আসিয়েন। বেশ উপভোগ্য প্রকৃতি দেখতে পাবেন।
আশুড়া বিল ভ্রমণ চিত্র-১১
বন্ধুবর মাহাফুজার সহ বিখ্যাত সেই কাঠের সেতুতে সেলফি।
এখানে এসে একটি মজার ব্যাপার লক্ষ্য করলাম। শালবাগান এর ভিতর বিশাল বিশাল আকৃতির উইপোকার ঢিবি তা সংখ্যায় প্রায় রয়েছে হাজার হাজার।
আশুড়া বিল ভ্রমণ চিত্র-১২
এই সব ইউপাকার ঢিবির সঙ্গে অসংখ্য আগত দর্শনার্থীরা সেলফি তুলছেন। কেউবা আবার শাল বাগানের ভিতরে গিয়ে শাল গাছের সাথে।
আশুড়া বিল ভ্রমণ চিত্র-১৩
আমরা আবার ঘোরাঘুরি করতে দেখা পেলাম একজন দোতারা বাদক এর। সেই দোতারা বাদক কে শালবাগানে বসিয়ে, তার সুরালা কন্ঠে ২টি গান শুনলাম। পরিশেষে কিছু বকসিস্ দিয়ে তাকে বিদায় দিলাম।
আশুড়া বিল ভ্রমণ চিত্র-১৪
এখন বাড়ী ফেরার পালা, আমার পরিবার থেকে ফোন আসছে বারবার। সব মিলিয়ে আসাধারন ভাবে চমৎকার একটি দিন পার করলাম আজ। খুবই মজা হয়েছে এই আশুরা বিলে। এ জন্য আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু মাহাফুজারর রহমানকে আমার অন্তরের অন্তস্তল থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। ভালো থোকো বন্ধু স্বপরিবারে সর্বদা।
আশুড়া বিল ভ্রমণ চিত্র-১৫
বন্ধুরা, আজ এ পর্যন্ত্যই, "ঈদ আনন্দে দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার আশুড়া বিল ভ্রমণ পর্ব। " আগামীকাল কথাহবে আবার ঈদ আনন্দে রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ৬ টুকুরিয়া ইউনিয়নের ভিতর দিয়ে বয়ে চলা করতোয়া নদী, ড.এম এ ওয়াজেদ মিয়া সেতু ও ড.এম এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ও ইন্জিনিয়ারিং কলেজ ভ্রমন কাহিনী নিয়ে।" সে পর্যন্ত সাথেই থাকুন এই প্রত্যাশায় সকলের সুস্বাস্থ্যে কামনায়, সবাইকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা। "ঈদ মোরারক।"
নাম | শ্রী ফণিভূষণ রায় অমিতাব। |
---|---|
User Id | @amitab |
Camera | Symphony Mobile Phone. |
Model | Z-35 |
Address | Vendabari Pirganj Rangpur Bangladesh. |
রমজানের রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ ঈদ উদযাপন পর্ব 5 দেখে অনেক ভালো লাগলো। আপনি পরবর্তী পর্বগুলোতে খুব সুন্দর সুন্দর মুহূর্ত পার করেছেন যেগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। এই পর্বের কাটানো মুহূর্তগুলো আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।
ঈদ উপলক্ষে আপনার ঘোরাঘুরি যে শেষই হচ্ছে দেখছি। একের পর এক অসাধারণ পোস্ট উপহার দিয়ে যাচ্ছেন আমাদের। এবং টমটম গাড়ি আমাদের দিকে নেই আমি কখন কাছ থেকে দেখিনি। এবং আশুড়া বিল মনে হচ্ছে অনেক সুন্দর একটি জায়গা। এখানে যত মটরসাইকেল দেখে যাচ্ছে এটা দেখে লোকের সংখ্যা মোটামুটি বুঝতে পারছি। এবং বেশ মেলা বসে গেছে দেখছি। দারুণ ছিল আপনার পোস্ট টা।
ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানেই খুশি।৩০ দিন রোজা রেখে পাওয়া ঈদ আমরা এতোটা আনন্দ হয় বলে বোঝানো যাবে না।কতো মজা করি সবার সাথে এই একটি দিন পাওয়ার জন্য আমাদের কে আবার এক বছর অপেক্ষা করতে হয়।আপনি অনেক দারুন দারুন জায়গাতে ঘুরাঘুরি করেছেন সুন্দর উপস্থাপনা ছিল।
এবার আপনি দেখছি বেশ ভালোই ঘোরাফেরা করেছেন এবং আপনি এই ঘোরার কিছু মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আপনি ঘোরার যে ফটোগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন তা দেখে বোঝা যাচ্ছে আপনি বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন এবং আপনি খুবই সুন্দর পরিবেশে ঘুরতে গিয়েছিলেন। দেখে আসলে অনেক ভালই লাগল এবং চমৎকার কিছু ফটোগ্রাফি ও শেয়ার করেছেন। এরকম জায়গা ঘুরতে গেলে আসলে মন অনেক ভাল হয়ে যায়।
সব স্থান গুলো আমার বাড়ীর পাশেই তাই সম্ভব হয়েছে ভাই। কষ্টকরে দেখার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।