।। আনন্দ নগর পিকনিক স্পট ঈদের পর জনশূন্য ।। 10% shy-fox & 5% abb-school beneficiary।।
১২ই জ্যৈষ্ঠ /১৪২৯ বঙ্গাব্দ।
২৫মে/২০২২ইং।
রোজঃ-বুধবার।
।। আনন্দ নগর পিকনিক স্পট জনশূন্য।।
বন্ধুরা, নমস্কার/আদাব
আমি @amitab বাংলাদেশ থেকে "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির এপার বাংলা এবং ওপার বাংলার বাংলা ভাষাভাষী সকল বন্ধুদের জানাই মধুমাসের উষ্ণ শুভেচ্ছা। আশারাখি সকলেই ভাল আছেন। আমিও ঈশ্বর কৃপা ও আপনাদের দোয়া এবং আশীর্বাদে মোটামুটি আছি। আজ আমি আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি ঈদ পরবর্তী রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বিনোদন কেন্দ্র ও পিকনিক স্পট আনন্দনগরের দুরবস্থা নিয়ে। আশাকরি সকলকে ভাল লাগবে।
আনন্দ নগর চিত্র ০১
আনন্দ নগরের প্রবেশদ্বারে একটি সেলফি
বিনোদন কেন্দ্র ও পিকনিক স্পট আনন্দনগর আমার বাসা থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার। এটি পীরগঞ্জ উপজেলার ৫ নং মদনখালী ইউনিয়নে অবস্থিত। পীরগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ মন্ডল প্রায় ২শত ৫০ একর জমি নিয়ে নির্মাণ করেছেন এ আনন্দনগর। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সারা বছর ভ্রমণপিপাসু মানুষ, স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা বনভোজনের জন্য এসে থাকেন। বাড়ির নিকটে এ বিনোদন কেন্দ্র টি হওয়ায় বহুবার যাওয়া হয়েছে কিন্তু আমার ছেলে প্রশান্ত বর্মন পায়েল যায়নি কখনো। ছেলের বায়না সে আমার সঙ্গে আনন্দনগরে যাবে। সময় সংকোচনের ফলে ঈদের দুদিন পরে ছেলেকে নিয়ে চলে গেলাম আনন্দনগর দেখতে।
আনন্দ নগর চিত্র ০২
ফাঁকা রাস্তায় গাছের নিচে বসে ছেলের একটি সেলফি
আনন্দনগরে গিয়ে দেখি একেবারে ফাঁকা জনশূন্য একটি বিনোদন কেন্দ্র। ঈদের এক সপ্তাহ আগেই এই আনন্দনগরে হাজার হাজার দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে ছিল। শত শত যাত্রীবাহী বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, অটো ভ্যান রিক্সা ইত্যাদিতে ভরপুর। সেই আনন্দ নগর আজ জনশূন্য প্রায় যেদিকে তাকাই শুধু ফাঁকা আর ফাঁকা। ছেলেকে নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে কথা হয় আনন্দ নগরের ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান বর্তমানে এখানে কর্মরত শতাধিক কর্মচারীদের বেতন ভাতা দিতে হচ্ছে বাড়ি থেকে। এই অবস্থা নাকি চলতে থাকবে ঈদের পরের দিন পর্যন্ত। বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে এই আনন্দ নগরের যথেষ্ট উপকরণ রয়েছে।
আনন্দ নগর চিত্র ০৩
আনন্দ নগরের অফিস কক্ষ
আনন্দনগর এর ভিতরে রয়েছে বিশাল একটি জলাধার। যাহার পরিধি প্রায় ৫০ কি করে বেশি প্রায়। এই জলাশয় থেকেই বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা রোজগার হয় আনন্দনগর কর্তৃপক্ষের। এখানে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন একটি মসজিদ, রয়েছে গ্রামীণ ঐতিহ্যের নানা উপকরণ যাহা সিমেন্ট বালু দ্বারা নির্মিত। এখানে রয়েছে কৃতিম হাতির ভাস্কর্য, ভিতরে চলাফেরা রাস্তাগুলো বেশ প্রশস্ত, ভিতরে অফিস কক্ষের সামনে চিত্রাঙ্কন করা রয়েছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
আনন্দ নগর চিত্র ০৪
রাস্তার পাশে দৃষ্টিনন্দন একটি মাছের ভাস্কর্য।
এখানে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ভাস্কর্য, রয়েছে রাস্তার ধারে মাছের ভাস্কর্য, রয়েছে জলপরীর ভাস্কর্য, জলপরী চতুর্দিক দিয়ে রয়েছে মাছের ভাস্কর্য। হয়েছে ভূতের কৃতিম বাড়ি সেই বাড়িতে নানারকম ভুতের আনাগোনা যে কেউ তা দেখে আঁতকে উঠবে।
আনন্দ নগর চিত্র ০৫
এটি বন্যহাতির একটি ভাস্কর্য
রয়েছে রাস্তার দু'পাশে নানা রকমের বাহারি ফুলের বাগান। রাস্তার উপর দিয়ে ছাউনি আকারে রয়েছে নানা জাতের পাতা বাহারি ফুল। যা অতি সহজেই দর্শনার্থীদের মনে প্রশান্তি এনে দিতে পারে। রয়েছে দূর-দূরান্ত থেকে আগত দর্শনার্থীদের জন্য উন্নত মানের আবাসিক। রয়েছে বিবাহ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য কমিউনিটি। রয়েছে সভা-সমাবেশ করার মতো বিশাল মাঠসহ অডিটোরিয়াম হল।
আনন্দ নগর চিত্র ০৬
এটি ভুতেরবারি প্রবেশ করার প্রবেশদ্বার।
ভিতরে রয়েছে খাবারের জন্য উন্নত মানের হোটেল রেস্তোরা। বিভিন্ন অনুষ্ঠান করার জন্য রেডিমেট ডেকোরেশন এর ব্যবস্থা। জলাধারে বিভিন্ন রকমের রয়েছে স্পিড বোর্ড। বাচ্চাদের জন্য রয়েছে নাগরদোলা, চরকি, রেল লাইন সহ রেলগাড়ি। রয়েছে বিভিন্ন জাতের ফলদ বৃক্ষ যা প্রাকৃতিক শোভায় দৃষ্টিনন্দন করেছে এই আনন্দনগর কে। রয়েছে বেশ কটি কেলেন।
আনন্দ নগর চিত্র ০৭
কৃত্রিম বন্য মানুষ ও দুইটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর নিচে ছেলের একটি সেলফি
ঈদ পরবর্তীতে এই বিনোদন কেন্দ্র টি ফাঁকা থাকলেও ছেলে আমার বেশ আনন্দের সাথে সব ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছে এবং উপভোগ করছে। সাথে আমি নিজেও খুবই উপভোগ করছি।
আনন্দ নগর চিত্র ০৮
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ভাস্কর্য।
আনন্দ নগরের প্রবেশদ্বারে একটি বিশাল কৃত্তিম চিল ফুরিয়ে যাচ্ছে আকাশ পথে। প্রবেশদ্বার এর পাশেই কৃত্রিম ঘোড়ায় চড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে সুভাষ বসু। বেশ অসাধারণ লাগছে দেখতে।
আনন্দ নগর চিত্র ০৯
এটি আনন্দ নগরের ভিতর একটি পাকা রাস্তার দৃশ্য।
ভেবে একটু খারাপ লাগছে বীরেন্দ্র আনন্দনগরে এইরকম জনশূন্য বিশ্বাস করাই বাহুল্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভিতরে কর্মচারীরা স্বভাব মোবাইল টিপে এদিক-ওদিক বসে সময় পার করছেন। ছেলে একসময় বলে ফেলল, মাসখানেক পরে আবার আসবে জনসমাগম সহ আনন্দ নগর ভ্রমণ করতে। আমি তাকে আশ্বস্ত করলাম।
আনন্দ নগর চিত্র ১০
এটি আরেকটি রাস্তার চিত্র
যাহোক আনন্দনগরের ভিতর তেমন কোন অনুষ্ঠান না থাকায় ঘুরতে বেশি ভালো লাগছে না। ছেলেকে বললাম চলো বাড়ি ফিরে যাই। একমাস পরে আবার তোমাকে নিয়ে ঘুরতে আসবো এই আনন্দ নগরে। শেষে আনন্দনগর থেকে বের হয়ে বাহিরের একটি রেস্তোরাঁয় হালকা নাস্তা খেয়ে বাড়িতে চলে আসলাম।
আনন্দ নগর চিত্র ০১১
এটি জলপরীর অসাধারণ দৃশ্য।
বন্ধুরা, আজ এ পর্যন্ত্যই, ঈদ পরবর্তী আনন্দ নগর ভ্রমন পর্ব। আগামীকাল আবার কথাহবে আনন্দ নগর ভ্রমনের ২য় পর্ব নিয়ে। সে পর্যন্ত সাথেই থাকুন এই প্রত্যাশায় সকলের সুস্বাস্থ্যে কামনায়, সবাইকে শুভেচ্ছা, শুভ সকাল।।
নাম | শ্রী ফণিভূষণ রায় অমিতাব। |
---|---|
User Id | @amitab |
Camera | Symphony Mobile phone. |
Model | Z-35. |
Photo Location | pirgonj Picnic spot Anandnagar. |
Address | Vendabari Prigonj Rangpur Bangladesh. |
রংপুরে এত সুন্দর একটি পার্ক রয়েছে সেটা তো আগে জানতাম না। ছবিগুলো দেখেই মনে হচ্ছে জায়গাটা কত সুন্দর। সুযোগ হলে একবার ঘুরে আসবো, ধন্যবাদ আপনাকে।
আসার জন্য আমন্ত্রণ রইল। সেইসঙ্গে মন্তব্য করার জন্য শুভকামনা রইল।
আনন্দনগর পিকনিক স্পটে ঈদের পরে জনশূন্য এটাই স্বাভাবিক। তাছাড়া আনন্দনগর পিকনিক স্পটের দৃশ্য পটভূমি দেখে অনেক ভালো লাগলো। আপনি আনন্দনগর পিকনিক স্পটের দারুন অনুভূতির গল্প শেয়ার করেছেন আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো।
মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। মন আপনার জন্য।
পার্কের ফটোগ্রাফি গুলো খুবই সুন্দর হয়েছে। আনন্দনগর ভ্রমণের গল্পটা বেশ ভালো লাগলো। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। পার্কের গল্পটি পড়ার জন্য। ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
আনন্দনগর পিকনিক স্পট এর নাম অনেক শুনেছি কিন্তু এখন পর্যন্ত যাওয়া হয়ে ওঠেনি। আপনার ফটোগ্রাফিতে আনন্দনগর পিকনিক স্পট দেখে যাবার আগ্রহটা বেড়ে গেল। তাই একদিন সময়-সুযোগ করে ঘুরে আসব। আপনার সুন্দর উপস্থাপনার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আনন্দনগর পিকনিক স্পট এর নাম অনেক শুনেছি কিন্তু এখন পর্যন্ত যাওয়া হয়ে ওঠেনি। আপনার ফটোগ্রাফিতে আনন্দনগর পিকনিক স্পট দেখে যাবার আগ্রহটা বেড়ে গেল। তাই একদিন সময়-সুযোগ করে ঘুরে আসব। আপনার সুন্দর উপস্থাপনার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আসার জন্য দাওয়াত রইল। আসলে জানাবেন ভাইয়া, এখানেই আমার বাড়ি। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।