খাবার অপচয় থেকে বিরত থাকুন || 10% Beneficiaries @shy-fox

খাবার হল, কোন পুষ্টি জাতীয় অন্যতম উপাদান যা মানুষ অথবা পশু খায় বা পান করে বা অথবা গ্রহণ করে জীবন যাপন এবং শারীরিক বৃদ্ধির জন্য। মজার ব্যাপার হল মানুষ ব্যতিত অন্য যে কোন প্রাণীর ক্ষেত্রে এই সংজ্ঞা টি ঠিকঠাক রয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন অন্যান্য জীবের তুলনায় আমরা মানুষ এই ব্যতিক্রম কেন? কারণ, আমরাই একমাত্র জাতি যারা শুধুমাত্র স্বাদ আস্বাদনের জন্য, খাবার খাই চোখের খুধার জন্য খাবার খাই এবং অপচয় করি। পৃথিবীতে প্রতিবছর যে পরিমাণ খাদ্য উৎপন্ন হয় তাতে পৃথিবীর সব মানুষের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ, কিন্তু তারপরও কোন না কোন জায়গায় খাবারের জন্য মানুষকে মারা যেতে হচ্ছে ।

Image Source

প্রতি সেকেন্ডে একজন মানুষ মারা যায় খুদা বা খুদা জনিত কোন রোগের কারণে ও প্রতি ১০ সেকেন্ডে একটি করে শিশু খুদার জনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। এ তো গেল শুধুমাত্র সেকেন্ডের হিসাব এখন যদি আমরা বছরের হিসাব করি তাহলে সংখ্যাটা অনেক বড় দ্বারায়, প্রতি বছর এ খুদা বা খুদা জনিত কারণে ৯ মিলিয়নের বেশি মানুষ মারা যায় এবং যক্ষ্মা, এইডস, ম্যালেরিয়া এই তিন রোগে মৃত মানুষের সংখ্যার চেয়েও বেশি। এটা সত্যিই একটি বেদনাদায়ক তথ্য। বর্তমানে বিভিন্ন রোগের তুলনায় ক্ষুদা একটি মারাত্মক ব্যাধি পরিণত হয়েছে, যাদের কাছে খাবার আছে তারা অপচয় করছে এবং যাদের কাছে খাবার নেই তারা না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছে। এর চেয়ে দুঃখজনক বিষয় আর কিছু হতে পারে না। নিচে যে লিঙ্কটি দেখতে পারছেন, সেটি খুদা জনিত কারণে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা গুনে যাচ্ছে। আমাদের সবাইকে এই মৃত্যুসংখ্যা টা দেখা উচিত কারণ, আমরা কোনো না কোনোভাবে প্রতিনিয়তই খাবার অপচয় করে আসছি। এই খাবারগুলো যদি সঠিকভাবে সঠিক জায়গায় দিতে পারতাম তাহলে হয়তো কিছু মানুষ কম মারা যেত।

Image Source

খুদা জনিত কারণে মৃতের সংখ্যা গননাকারী ওয়েবসাইট

কেউ আমরা ইচ্ছে করে খাবার অপচয় করি আবার কারো আবার খাবার অপচয় করা ছাড়া অন্য কোন অপশন থাকে না। যেমন ধরুন, আপনারা যখন ব্রিজে বেশি করে খাবার ভর্তি করে রাখেন, কিন্তু ককোন কারনে সময় মত খাবারটি ব্যবহার না করায় খাবার পৌঁছে গিয়েছে বা রান্না করার সময় কিছু খাবার অবশিষ্ট থেকে যায় যা পরবর্তীতে ফেলে দিতে হয়। খাবার সৃষ্টিকর্তার কত বড় একটি নিয়ামত তা আমরা বুঝতে পারি না কিন্তু এই নিয়ামত বুঝতে পারে আফ্রিকার দেশ মানুষগুলো। আমরা ইচ্ছে করে খাবার অপচয় করি এবং তারা তাদের ফসলি জমির 30% খাবার অপচয় হয়, তাদের আবহাওয়া এবং সংরক্ষণ ব্যবস্থা না থাকার কারনে।

একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতিবছর ১.৩ বিলিয়ন খাবার নষ্ট হয়, যার আর্থিক মূল্য ১ ট্রিলিয়ন ডলারের চেয়েও বেশি। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৩০ কোটি টন খাবার অপচয় হয়। আরো একটি তথ্য শেয়ার করছি, যেখানে প্রতিদিন ৮১ কোটি মানুষ না খেয়ে বিছানায় ঘুমাতে যায়, সেখানে ২০০ কোটি মানুষ বেশি খাবার গ্রহণ করে এবং খাবার অপচয় করে। পৃথিবীতে যত ক্ষুধার্ত মানুষ আছে তাদের চেয়ে দ্বিগুণ মানুষকেও খাওয়ানো সম্ভব এই অপচয়কৃত খাওয়ার থেকে, যদি এই অপচয় কৃত খাবার সঠিক স্থানে ব্যবহৃত হয় তাহলে।

Image Source

আমরা যখন রাস্তা দিয়ে হাঁটি যদি রাস্তার পাশে ডাস্টবিন থাকে তাহলে আমরা নিজের নাক টা বন্ধ করে নেই। এটা সচরাচর করি কিন্তু এই অপচয় কৃত খাবার থেকে কত পরিমান বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হয় তা কি আমরা জানি?? আমাদের অপচয় কৃত খাবার থেকে প্রতিবছর ৩.৩ বিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয়। কার্বন-ডাই-অক্সাইড বাড়ার সাথে সাথে আমাদের বৈশ্বিক উষ্ণতা দ্রুত আকারে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এই খাবার অপচয় থেকেই অনেক বিষাক্ত গ্যাস উৎপন্ন হয় যা আমাদের জন্য অনেক ক্ষতিকারক।।

আসুন সবাই আমরা খাবার অপচয় থেকে বিরত থাকে এবং সুন্দর একটি পৃথিবী গড়ে তুলি, যেখানে কোন ক্ষুধার্ত মানুষ থাকবে না।

এই বিষয়ে পড়াশোনা করার সময় একটি ভিডিও আমার চোখে পরে। আমার মনে হচ্ছে এই ভিডিওটি আপনাদের সকলের দেখা উচিত। আমি সেটার ইউটিউব লিংক দিয়ে দিচ্ছি।