একে অপরকে প্রতিযোগী না ভেবে সহযোগী ভেবে একসাথে কাজ করা উচিৎ 🤝
আজ আমি আপনাদের সাথে একটি ব্যক্তিগত মতামত নিয়ে কথা বলবো। আমরা একে অপরকে প্রতিযোগী না ভেবে সহযোগী ভেবে একসাথে কাজ করতে পারি। তবে আমাদের ছোট থেকে শিখানো হয়েছে সবার সাথে প্রতিযোগিতায় জিততে হবে এবং সবার সাথে প্রতিযোগিতা করতে হবে। প্রতিযোগিতামূলক কাছে একেবারে খারাপ সেটা আমি বলছি না তবে একে অপরকে সহযোগিতার মাধ্যমে তার চেয়েও অনেক ভালো কিছু ফল আশা করা যেতেই পারে।
আমি দলগত কাজের উপর বিশ্বাসী বেশি। কারণ দলগত কাজের মধ্যে কারও বিতর্ক প্রতিযোগিতা মূলক তারা থাকে না। তবে আমাদের বাঙ্গালীদের একটি পুরনো স্বভাব রয়েছে, তারা কখনোই কারো উন্নতি দেখতে পারে না। সবাই ব্যস্ত থাকে একে অপরের খারাপ দিক গুলো খোঁজার জন্য। তাইতো আজ বাঙ্গালীদের এমন অবস্থা। যেখানে উন্নত দেশগুলো দল ভাবে কাজ করে তারা নিজের রাষ্ট্রকে এবং নিজের জাতিকে একটি উন্নত জাতিতে পরিণত করেছে। আর আমরা বাঙালিরা শুধুমাত্র নিজেদের ভুল ভ্রান্তি ধরে নিজেদের মধ্যেই যুদ্ধ শুরু করি।
আমার মতে যে জাতি যত বেশি দলগত ভাবে কাজ করে এবং একে অপরকে সহযোগিতা করে সে জাতি তত বেশি উন্নত। তবে বাঙ্গালীদের মধ্যে বেশি হিংসাপরায়ণ এবং একে অপরকে সাহায্য না করার ক্ষমতা টাই বেশি কাজ করে।
ছোট্ট একটি রূপকথার গল্পের মাধ্যমে আমি আপনাদের বুঝানোর চেষ্টা করব।
একটি বস্তিতে একটি ভিক্ষুক বসবাস করত। ভিক্ষুকের স্ত্রী মানুষের বাসায় কাজ করতো এবং ভিক্ষুক সারাদিন ভিক্ষা করে দিন কাটাতো। একদিন গরমের মাঝে ভিক্ষা করতে করতে ভিক্ষুক বিশ্রাম নেয়ার জন্য একটি গাছের নীচে বসলো। ভিক্ষুক লক্ষ্য করলো গাছের নিচে অর্ধেক মাটিতে পোঁতা একটি কি জানো দেখা যাচ্ছিল। তিনি মাটি খুঁড়ে দেখল এটি একটি চিরাগ। চিরাগ থেকে যখনই সে মাটি পরিষ্কার করতে গেল তখন সেখান থেকে একটি জিন বের হয়ে আসলো। চিরাগ থেকে জীন বের হয়ে বলল, আমি তোমার তিনটি ইচ্ছা পূরণ করব কিন্তু শর্ত একটা, তুমি যা চাইবে তাই পাবে কিন্তু তুমি যা চাইবে তার দ্বিগুণ পরিমাণ জিনিস তোমার প্রতিবেশীরা পাবে।
ভিক্ষুক খুব চিন্তায় পড়ে গেল, ভিক্ষুক কোনভাবেই চায় না যে তার প্রতিবেশীরা তার চেয়ে বড় লোক হয়ে যাক। ভিক্ষুক কোনো ইচ্ছে পোষণ করল না বরং সেই জাদুর চিরাগ নিয়ে বাসায় ফিরল এবং নিজের স্ত্রীর সাথে সবকিছু শেয়ার করে নিল। ভিক্ষুকের স্ত্রী একজন সৎ মহিলা ছিলেন। তিনি বলল আমরা যা চাইবো তাই পাবো অন্যরা কি করলো কত বড়লোক হলো সেটা তো আমাদের দেখার বিষয় না। কিন্তু ভিক্ষুক এটি মানতে নারাজ সে কোনভাবেই চায় না যে তার প্রতিবেশীরা তারচেয়ে ধনবান হয়ে যাক।
পরেরদিন ভিক্ষুক আবার ভিক্ষা করতে বের হয়ে গেল যখন সন্ধ্যায় সে বাড়িতে ফিরল তখন সে তার এলাকাকে চিনতে পারছিল না। সে যেই বস্তিতে থাকতো সেটি আরেকটি বস্তি নেই। একটি আধুনিক শহরে রূপান্তরিত হয়েছে এবং সবগুলো দশতলা বিল্ডিং এর সমান হয়ে গেছে। সব দশতলা বিল্ডাং এর মাঝখানে দেখছে পাঁচতলা বিল্ডিং। বুঝতে বাকি রইলো না যে তার স্ত্রী চিরাগ এর সাথে কি করেছে।
ভিক্ষুকের যত স্বপ্ন ছিল সব কিছুই পূরণ হয়ে গেছে কিন্তু সে কোনোভাবেই মানতে পারছিল না যে তার প্রতিবেশীরা তার চেয়ে বেশি সম্পদ বান হয়ে গিয়েছে। তিনি খুব হিংসুক একজন ব্যক্তি। সেই স্ত্রীর কাছে গেল এবং জাদুই চিরাগ টি কেড়ে নিল এবং চিরাগের মধ্যে ঘষতে শুরু করলো। যখন চিরাগ এর মধ্যে থেকে যখন জীন বের হলো তখন সে একটি জিনিস চাইলো, সে বলল আমার একটি চোখ অন্ধ করে দিন। স্ত্রীর বুঝতে বাকি রইল না তার যদি একটি চোখ অন্ধ হয়ে যায় তার প্রতিবেশীদের দুটি চোখ অন্ধ হয়ে যাবে।
এই হলো আমাদের বর্তমান অবস্থা।আমাদের সমাজে মাঝে মাঝে এমন অনেক চিত্র দেখা যায়।
আমাদের সকলের উচিত একে অপরের সহযোগিতা করা এবং একে অপরের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলা। এতে যেমন জীবন যাপন টা অনেক সুন্দর এবং সুষ্ঠু হবে এবং আমাদের কষ্টগুলো অনেকটা সহ্য করার মত ক্ষমতা হয়ে যাবে।
আমার জীবনে শুধুমাত্র একটি বেস্ট ফ্রেন্ড রয়েছে সে আমাকে সবসময় একটি কথা বলে যা আমি তার ভাষায় আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি। হয়তো আমি তোর কষ্ট গুলোর সমাধান করতে পারব না তবে তোর কষ্ট গুলো সহ্য করার ক্ষমতা টা তোর মাঝে তৈরি করে দিতে পারবো। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড নিয়ে একদিন বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন আপনাদের সামনে শেয়ার করব। যাইহোক আজ আর বেশি কথা বাড়াবোনা শুধু এটুকুই বলতে চাই, আপনারা একে অপরকে সহযোগী হোন তাদের কে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাববেন না।
উপরোক্ত কথাগুলো শুধুই আমার ব্যক্তিগত মতামত, কেউ অন্য ভাবে কথাগুলো নেবেন না। সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
Cc,
@rme
@blacks
@amarbanglablog
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: একে অপরকে প্রতিযোগী না ভেবে সহযোগী ভেবে একসাথে কাজ করা উচিৎ 🤝
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ
ভাল লিখেছেন ভাই। আমাদের সকলে মিলে মিশে কাজ করা উচিত। ধন্যবাদ।
শুভ কামনা ভাই।
ভালো লিখেছেন ভাইয়া।আর আপনার বন্ধুর কথাটি অনেক শিক্ষণীয়।ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ। আমার পোস্টটি মনযোগ দিয়ে পড়ার জন্য। শুভ কামনা।
টীম ওয়ার্ক মানেই কাজের পরিধি অর্ধেক কমে যাওয়া, কিন্তু আমরা বাঙালীরা টীম ওয়ার্ক করতে চাই না, বরং নিজে সব করে নিজের ক্রেডিট নিতে চাই। যার কারনে আমাদের এই অবস্থা। ধন্যবাদ খুব সুন্দর লিখেছেন।
ধন্যবাদ ভাই। আপনি আমার লেখাটি আপনি মনযোগ দিয়ে পড়েছেন।
সত্যি অনেক ভাল লিখেছেন ভাই। আমাদের সকলে মিলে মিশে কাজ করা উচিত। ধন্যবাদ ভাইয়া
ধন্যবাদ ভাই।
🥀
লেখাটি আশ্চর্য রকমের ভালো হয়েছে । আপনি কন্টিনুয়াসলি ভালো লেখেন :)
ধন্যবাদ ভাই।