সাথী পাঠাগার ও বৃষ্টি ভেজা গল্প
আজ সকাল থেকেই অনেক রোদ উঠেছিল এবং প্রচন্ড গরম ছিল। যেহেতু আজ থেকে আমাদের নীলফামারী সাথী পাঠাগারের নতুন রুমের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে তাই সকাল থেকে অনেকটাই ব্যস্ত ছিলাম। এরই মাঝে কিছু মিস্ত্রিকে ডেকেছিলাম, তারা আমাদের ডিজাইন অনুযায়ী সেই বইয়ের সেলফ এবং কিছু ইনটোরিয়ার ডিজাইন করে দেবেন।
যে মিস্ত্রিকে ডেকে এনেছিলাম সবার কাছ থেকে শুনেছি সে অনেক ভালো ডিজাইনের জিনিসপত্র তৈরি করতে পারে। জানিনা সঠিক কতটুকু ভালো কাজ করছে, সবকিছু শেষ হওয়ার পরে আসলে বুঝা যাবে তার কাজ কতটুকু ভালো হয়েছে। তবে তার কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে তিনি ভালো কাজ করেন।
আমাদের নিচের ফ্লাটে একটু বড় হলরুম রয়েছে। মূলত সেখানে আমরা বিভিন্ন ধরনের সেমিনার করে থাকতাম। কিন্তু বর্তমানে অনেকদিন ধরে আমাদের অফিসের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সেই রুমটাকেই আমরা লাইব্রেরি করার চিন্তা ভাবনা করেছি। যেহেতু আমাদের লাইব্রেরীটা অনেক বছর পুরনো এবং আমরা আশাবাদী নীলফামারীকে অনেক চমৎকার একটি লাইব্রেরী আমরা উপহার দেব। সেই উদ্যোগকে সামনে রেখে মূলত এত কার্যক্রম করা হচ্ছে। মূলত প্রথমেই আম্মুর জন্য একটি বসার জায়গা তৈরি করছি এবং সেখানকার ইন্টেরিয়র ডিজাইন করছি।
এর আগে যেই রুমে লাইব্রেরী করা ছিল সেই রুমটি ছিলো ছোট এবং বসার জায়গাও কম ছিল। তাই পাঠকদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে অনেকটাই অসুবিধা হয়ে যায়। তাই মূলত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং বড় একটি সেক্রিফাইস করা। আসলে এই লাইব্রেরীর জন্য কোথাও থেকে কোন তহবিল আসে না। মূলত আমাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই লাইব্রেরীটি করা। যদিও এই লাইব্রেরী টি ১৪ বছর পুরনো এবং এই লাইব্রেরীর কার্যক্রম সেই ১৪ বছর আগে থেকেই যথাক্রমে চলে যাচ্ছে।
গত দুদিন আগেই আমি পারটেক্সের কিছু বোর্ড কিনে এনেছিলাম এবং আমাদের রুমে রেখেছিলাম। পরবর্তীতে আজ মিস্ত্রিরা এসে কার্যক্রম শুরু করলো। সকাল থেকেই অনেক ভালোই যাচ্ছিল। এরই মধ্যে আকাশ একেবারে মেঘলা হয়ে আসলো। মনে হচ্ছে এই বুঝি ঝড় আসবে ঠিক সেই সময় অনেক বৃস্টি শুরু হল।
হঠাৎ করেই সম্পূর্ণ আকাশটি কালো হয়ে আসলো এবং প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টি শুরু হল। এরই মাঝে দুপুর হয়ে গেছে। আমরা সবাই সিদ্ধান্ত নিলাম আজ বৃষ্টিতে গোসল করব। সবাই বাসা বেরিয়ে দেখলাম সবাই বৃষ্টিতে গোসল করার জন্য বেরিয়েছে। এরই মাঝে ছোট ভাই ফুটবল নিয়ে বেরিয়েছে।
যেহেতু আমাদের মহল্লা একটি আবাসিক এলাকা তাই সবার সাথে অনেকটাই আমরা এখনো আন্তরিক রয়েছি। একে অপরের সাথে দেখা হলে এখনো কুশল বিনিময় করা হয় এবং একে অপরের খোঁজ নেওয়া হয়। তাই সবার মাঝে অনেক আন্তরিকতা রয়েছে। আমাদের মহল্লার সকল ছোট বড় মিলেই সেই রাস্তার মধ্যে ফুটবল খেলতে শুরু করলাম। আসলেই সেই ছোটবেলার স্মৃতিগুলো মনে পড়ে গেল। আমাদের মহল্লার সবাই এখনো অনেক আন্তরিক রয়েছে।
প্রায় ৩০ মিনিটের মতো ঝড় বৃষ্টি হল এবং পরক্ষণেই একেবারেই বৃষ্টি কমে গেল। মনে হচ্ছে কেউ ঝর্ণার লাইনটা একেবারেই বন্ধ করে দিয়েছে। আবার ১০ মিনিটের মাঝেই প্রচন্ড রোদ। বুঝতেছিনা আজকাল কি হচ্ছে! এই রোদ এই বৃষ্টি এমনভাবে চলছে নীলফামারীর জীবন।
পরবর্তীতে ফ্রেশ হয়ে লাঞ্চ করলাম, লাঞ্চ করে আবারো কাজের এখানে চলে আসলাম। এসে দেখি তারা অনেক কাজই করে ফেলেছে। ইতিমধ্যে তিনটি সেলফ তৈরি করা হয়ে গেছে এবং বাকি আনুষঙ্গিক কাজগুলো তারা করছে। মূলত সাথী পাঠাগারের কাজগুলো তিনটা সেক্টরে ভাগ করেছি। প্রথম সেক্টরের কাজ চলছে। আসলে রুমটা অনেক বড় তাই ডেকোরেশন করতো প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। যেহেতু ব্যক্তিগতভাবেই করছি তাই কাজগুলো আস্তে আস্তে করবো বলে ভেবে রেখেছি।
সাথী পাঠাগার এর প্রথম সেক্টরের কাজ শেষ হলে অবশ্যই আপনাদের সাথে সেই আপডেটগুলো শেয়ার করে নেব। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি ধন্যবাদ।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: সাথী পাঠাগার ও বৃস্টি ভেজা গল্প
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
পাঠাগারের নামটি আপনার মায়ের নামে জেনেই ভালো লাগে।তাছাড়া যেহেতু সবাই বলেছেন সেহেতু মিস্ত্রীটির নিশ্চয়ই ভালো কাজের জন্য নামডাক আছে।আস্তে আস্তে 14 বছরের পুরোনো পাঠাগারটি সুন্দর হয়ে উঠবে আপনাদের প্রচেষ্টায় আশা করি।তাছাড়া এখন রোদ ও বৃষ্টি একসঙ্গেই হতে দেখা যায়, আবহাওয়া বোঝা কঠিন।ধন্যবাদ ভাইয়া।
দোয়া করবেন আপনারা, এই পাঠাগারকে যেন আরো বড় করে তুলতে পারি ।।
অনেকদিন পর এমন বৃষ্টিতে ভিজে গোসল করার অনুভূতি ছিল চরম। আস্তে আস্তে সাথী পাঠাগার প্রতিষ্ঠিত পাঠাগারের রূপ নেবে। এটাই প্রত্যাশা করি। মিস্ত্রিটি আসলেই অনেক ভালো, খুবই দক্ষতার সাথে একদিনে অনেকগুলো কাজ করে ফেলেছে।সাথী পাঠাগারের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।♥♥
হ্যা, আজ অনেক ইনজয় হয়েছে, এবং পাঠাগারের কাজ অনেকটা এগিয়েছে।
সাথী পাঠাগারের ডেকোরেশন এর কাজ চলছে, দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। মিস্ত্রিদের কাজ দেখে মনে হচ্ছে বেশ দক্ষ। যাইহোক শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত ঠিকভাবে কিছু বলাও যাচ্ছে না। বৃষ্টিতে ভিজে খেলাধুলা করতে সত্যিই খুব ভালো লাগে। ছোটবেলা প্রায়ই বৃষ্টিতে ভিজে খেলাধুলা করতাম। বর্ষাকালের বৃষ্টি এমনই। এই রোদ এই বৃষ্টি। যাইহোক পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ ভাই, আসলে নিজেরা উদ্দেগ নিয়ে সব কিছু করা সম্ভব। তাই চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
ভাইয়া বর্তমান সময়ে বড় লাইব্রেরীর ডেকোরেশন করাটা সত্যিই খুবই খরচের বিষয়। তবে আপনাদের অদম্য পরিশ্রম এবং আন্তরিকতার কারণে অবশ্যই আপনাদের লাইব্রেরীটা সুসজ্জিত রূপ ধারণ করবে বলে আমি মনে করি। আমি আশা করি, আপনাদের লাইব্রেরীর প্রথম সেক্টরের কাজ অত্যন্ত সফলতার সাথেই সুসম্পন্ন হবে।
ধন্যবাদ আপনাকে, আমরা চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
ভাইয়া, আমাদের এদিকেও যেন রোদ বৃষ্টির খেলা চলছে। এখনই ঝুম বৃষ্টি আবার এখনই প্রখর রোদ। বর্তমানে আবহাওয়াকে দেখে বোঝার উপায় নেই কখন বৃষ্টি হবে আর কখন রোদ উঠবে। যাইহোক ভাইয়া, আপনাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে সাথী পাঠাগার বছরের পর বছর সমৃদ্ধশালী হয়েছে। ভবিষ্যতেও এই সাথী পাঠাগার সাফল্যমণ্ডিত হোক এই প্রত্যাশা করছি।
আপনাকে ধন্যবাদ ভাই, আমরা প্রতিনিয়ত চেস্টা করে যাচ্ছি।