ঢাকা টু নীলফামারী || এক ভয়ানক অভিজ্ঞতা

গত কিছুদিন ধরেই ভাবছিলাম বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেব। বাসায় কেউ নেই শুধুমাত্র মা এবং বাবা। আমাদের এক ছোট্ট পরিবার। আমার ছোট ভাইকে কিছুদিন আগেই ঢাকায় পাঠিয়ে দিয়েছে অতঃপর থেকে আমাদের বাসাটা একদম ফাকা হয়ে গিয়েছ। এছাড়াও আম্মু কোন কাজ ঠিকভাবে করতে পারছে না। নিজের দুই সন্তান বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছে এবং বাসায় একাই রয়েছে। তাই অনেক কষ্টের মধ্যে রয়েছে। আমার এদিকে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ। আমি ভাবছিলাম আম্মুর সাথে একটু দেখা করে আসি। শুধুমাত্র একটা কারণে হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত নিলাম বাসা যাব।

আমার ছোট ভাইকে গত ১ তারিখে তাদের হোস্টেলে উঠিয়ে দিয়েছি। তারপরও প্রতিদিন তার হোস্টেলে গিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি। সবকিছু ঠিক আছে কিনা, কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা অতঃপর হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত নিলাম বাসায় যাব।। তাই কোন কিছু না জানিয়েই বিকাল বেলা ব্যাগ গোছালাম এবং সব ধরনের কাজ শেষ করে ফেললাম। অতঃপর বাসা থেকে বেরিয়ে আগে শিপুর হোস্টেলে গেলাম। খবর নিলাম এবং তাকে বললাম কোন সমস্যা হলে আমাকে জানানোর জন্য। অতঃপর আমি গাবতলির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। যাওয়ার সময় আমি বাসায় ফোন করে বলছি যে আমি বাসায় আসছি, আম্মুর মুখে একটু হাসি ফুটল।

বর্তমানে ঢাকায় অনেক শীত পরছে কিন্তু আপনারা যারা উত্তরবঙ্গে একবার হলেও গিয়েছিলেন তারা ভালভাবেই জানেন উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বেশি শীত পরে। গতকাল রাতেও অনেক বেশি শীত পরেছে। সবকিছু চিন্তা ভাবনা করেই আমি ভাবছিলাম সন্ধ্যার কোন গাড়িতে উঠবো, কারণ বেশি রাত করে গাড়িতে উঠলে পরবর্তীতে কুয়াশা কবলে পরতে হবে।

গতকাল সন্ধ্যার একটি গাড়ির টিকিট কেটেছিলাম। যেহেতু আমাদের বাসা ঢাকা থেকে অনেকটা দূরে অবস্থিত তাই ৮-৯ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায় আমাদের বাসায় যেতে। তাই সন্ধ্যার সময় টিকিট কিনেছি। যাতে করে বেশি রাত গভীর না হয়।। পরবর্তীতে ঢাকা ছেড়ে যখন সাভারের দিকে যাচ্ছিলাম তখন হালকা হালকা কুয়াশা পরছিলো। আমাদের ড্রাইভার অনেক সতর্কতার সাথে গাড়ি চালাচ্ছিল কিন্তু দুঃখের বিষয় যমুনা সেতুর আগে কোন কিছুই দেখা যাচ্ছিলো না,এত বেশি কুয়াশা হয়েছিল। আমি সামনের দিকের সিটে বসে ছিলাম এবং সব গুলো স্পষ্ট ভাবে দেখেছি, আমার অনেক ভয় লেগেছিল সেই সময়টাতে।

আমাদের গাড়ি অনেক আস্তে চলছিল। যেখানে আমাদের ফুট ভিলেজে যাওয়ার কথা রাত এগারোটার দিকে সেখানে পৌঁছাতে হয়েছিল প্রায় ১ টার দিকে, অনেক সময় লেগে যাচ্ছিল। পরবর্তীতে একটু কুয়াশা ছাড়া ছিল কিন্তু পরবর্তীতে যখন রংপুর সদর থেকে ঢুকলাম তখন বিষয়টা সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপের নিয়ে যায়। কারণ ১৫-২০ হাত সামনে দেখা যাচ্ছিল না। এমন সময় সামনে থেকে হঠাৎ একটি বাস আমাদের মুখোমুখি আসলো। ভাগ্যভালো দুটির ড্রাইভার অনেকটাই অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ছিল। কোন ভাবে গাড়ি কন্ট্রলে নিয়েছিল এবং ব্রেক করে রেখেছিল। আসলে এই বিষয়টা কোনভাবেই লিখে ব্যক্ত করা সম্ভব নয় আমার পক্ষে। কারণ চারিদিকে ঠান্ডা কুয়াশা এর মধ্যে যদি আপনার সামনে গাড়িরর সাথে মুখোমুখি হয়ে যায় বিষয়টা কেমন হবে একটু কল্পনা করে দেখুন।

আমাদের বাসায় থাকে যাত্রীরা অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে সবাই মিলে ড্রাইভারকে বললাম গাড়ি আপনি আসতে চালাতে। আমরা দুই তিন ঘন্টা লেট করে পৌঁছালে কোন সমস্যা হবে না। ড্রাইভাও ঠিক তেমনভাবেই গাড়ি চালিয়ে ছিল এবং বাসায় আসতে আসতে ভোর পাঁচটা বেজে যায়। যেখানে আমাদের বাসায় আসার কথা ছিল রাত তিনটার দিকে। যাই হোক এই আশা করি এমন অভিজ্ঞতা অন্য কারো জীবনে না আসুক। আমিও পরবর্তীতে ঠান্ডার জন্য রাতের বেলা ট্রাভেল করব না। এবার দিনের বেলা ট্রাভেল করার অভ্যাস করতে হবে। যাই হোক এই ছিল ছোটখাটো একটি ঘটনা। আশাকরি আপনাদের ভালো লাগেছে। আর আপনারা যদি কেউ চান তাহলে নীলফামারীর নীলসাগর এই সময়টা একটু ভিজিট করে যাবেন। বর্তমানে নীল সাগরে প্রকৃতির খেলা চলছে। শীতের সময় জায়গাটি দারুন লাগে। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি, সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সকলকে।

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

---

---

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP	500 SP	1000 SP	2000 SP	5000 SP

---

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

---

---

বিষয়: ঢাকা টু নীলফামারী || এক ভয়ানক অভিজ্ঞতা

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......