স্মৃতির পাতায় হাতিরঝিল
Short by Samsung S10+ 5G
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনার সবাই অনেক ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আমিও ভালো আছি। ছয় মাস হবে আমি বাসা পরিবর্তন করেছি একটি কারণে, তবে আমার আগের বাসা ছিল হাতিরঝিলের যা আমার কাছে অনেকটাই স্মৃতিময় একটি অধ্যায় হয়ে আছে। সেই হাতিরঝিলের কিছু মধুরময় স্মৃতিগুলো নিয়েই আজকের আমার এই আয়োজন। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে, তবে চলুন শুরু করি।
বর্তমানে আমার নাইট শিফট ডিউটি চলছে অর্থাৎ রাত দশটা থেকে ভোর ছয়টা অব্দি তবে আজকের ডিউটিতে আসার পরে জানতে পারলাম আমাদের এই ফ্যাক্টরিতে আজ সম্পূর্ণ প্রসেস চেঞ্জ হবে অর্থাৎ আগে আমরা শুধুমাত্র কটন সুতা তৈরি করতাম এখন ভিসকোস, পলিস্টার এবং কটন সবগুলো একত্রিত করে একটি নতুন ধরনের সুতা তৈরি করা হবে যার কারণে সব মেশিন গুলোর সেটিং থেকে শুরু করে সবকিছু পরিবর্তন করা হচ্ছে। অর্থাৎ প্রসেস চেঞ্জ হলে আমাদের কোন অবকাশ থাকে না শুধুমাত্র কাজ আর কাজ এবং শিফটিং ডিউটিগুলো এমনই হয়ে থাকে। কাজ কাজের গতিতে চলতে থাকে অর্থাৎ কেন কাজ থেমে থাকবে না কাজটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, এভাবে করেই কম সময়ের মধ্যে বেশি প্রোডাকশন দেওয়া সম্ভব।
প্রতি শিফটিং ডিউটিতেই বিশ মিনিট করে বিশ্রামের জন্য দেওয়া হয় অর্থাৎ ২০ মিনিট আপনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারবেন। আমি সেই সময়টা একটু রুমের মধ্যে বসেই আমার মোবাইলে ঘাটাঘাটি করছিলাম। ঠিক তখনই গ্যালারিতে সেই পুরনো ছবিগুলো ভেসে উঠলো। আমি যেন হারিয়ে গেলাম সেই হাতিরঝিলে কাটানো মুহূর্তগুলোর মাঝে..! কতই না সুন্দর সময় গুলো ছিল। সেই গ্রষ্ম, বর্ষা, শীত সবকিছুই সেখানে কাটিয়েছি। অনেকটা আপন হয়ে গিয়েছিল সেই এলাকাটি, এছাড়াও সেই এলাকার বসেই আমি বিশ্বকাপ দেখেছিলাম।
যখন আমি ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হই তখন ঢাকায় তেমন কোন থাকার জায়গা ছিল না আমি মূলত সেই থাকার জায়গাটি আমার জন্য খুঁজে দিয়েছিল এবং যখন হাতিরঝিলে প্রথম উঠি সেখান থেকে আমার ভার্সিটি যেতে প্রায় ৩০ মিনিটের মত সময় লাগতো। এবং বাদবাকি সময়টা অনেকটা ফ্রি কাটাতাম। সময়টা ছিল গ্রীষ্মকাল বাইরে প্রচুর গরম পরতো এছাড়াও সেই সময়টাতে হাতিরঝিলে বসে একটু ঠান্ডা বাতাস উপভোগ করার জন্য দূর দূরান্ত থেকে মানুষ সেখানে ছুটে আসতো, অফিসের ব্যস্ততা শেষে এই ক্লান্তি ভাব নিয়ে বাসায় যাওয়ার আগে সেই হাতিরঝিলে বসে মানুষ একটু শান্ত হয়ে যেত।
সেই হাতিরঝিলে কাটানো প্রত্যেকটা মুহূর্ত আমার অনেক মনে পরে, বিশেষ করে হাতির ঝিলের শান্ত পরিবেশ। আশেপাশে যতই গরম থাকুক না কেন হাতিরঝিলের কিছু কিছু জায়গায় সব সময় বাতাস থাকতো। যে বাতাস নিজের মনকে ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। আবার মাঝে মধ্যে কোন কারন ছাড়াই নৌকায় করে হাতিরঝিলের এক মাথা থেকে অন্য মাথায় যাওয়াটার মজাই ছিল আলাদা। বিশেষ করে সন্ধ্যার পরে অনেকটা চমৎকার পরিবেশের সৃষ্টি হয় এই হাতিরঝিলে, তখন গ্রীষ্মকালে শীতল একটু আভাস পাওয়ার জন্য এই কাজটি মূলত করতাম।
এছাড়া অসংখ্য ফটোগ্রাফি এবং বন্ধু-বান্ধবের সাথে আড্ডা দেওয়ার কিছু মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দি করেছিলাম যা সারা জীবনের জন্য আমার এই জীবনের অধ্যায়ের সাথে সংযুক্ত হয়ে থাকবে। সেসব ছবিগুলোর মধ্যে কয়েকটি ছবি আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। আশা করছি ছবিগুলো আপনাদের ভালো লাগবে।
তবে একটি কথা না বললেই নয় বৃষ্টির দিনে হাতিরঝিল কিন্তু অনেকটাই রোমান্টিক হয়ে ওঠে। সেই বৃষ্টির দিনে বৃষ্টির ফোটা এবং মন জুড়ানো শীতল বাতাস খুব মিস করি। এখনো মাঝে মাঝে ভার্সিটি থেকে আসার সময় পাঁচ মিনিট হলেও হাতির ঝিলে দাঁড়িয়ে থাকি। সে সময় গুলোকে মনে করার চেষ্টা করি এবং সেখানকার শীতল বাতাস অনুভব করার চেষ্টা করি। যাই হোক আপনারা যদি কেউ হাতিরঝিলের আশেপাশে থাকেন তাহলে অবশ্যই মন্তব্যে জানাবেন। আজকের মত এখানেই শেষ করছি ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: স্মৃতির পাতায় হাতিরঝিল
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
বৃক্ষ পরিবেশকে শীতল রাখে এই কথাটির একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো হাতিরঝিল। এটা আমি আমার মন থেকে বললাম। অনেকদিন পর ভাইয়া আজকে আপনার পোষ্টের মাধ্যমে হাতিরঝিলের এই ছবিগুলো দেখলাম আমার অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেল। পোস্টে পড়ে বোঝা যাচ্ছে ভাইয়া আপনি হাতিরঝিলে একটা সময় অনেক সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন। আপনি যে অনেক পরিশ্রমী এটা তো জানি ভাইয়া আমি কিন্তু সিফট সিস্টেমের ডিউটি করেন কেমনে ভাইয়া? বিশেষ করে যখন রাতে শিফটে ডিউটি পড়ে তখন আপনার কি রকম মনে হয় ভাইয়া?
নাইট শিফট ডিউটি হলে একটু পরিশ্রম হয়ে যায়। সব ধরনের সিডিউল পরিবর্তন করতে হয়, সব ধরনের কাজের সময় নির্ধারণ করে সেই কাজগুলো করার চেষ্টা করি।।
আসলে আমাদের জীবনে কাটানো সুন্দর স্মৃতিগুলো প্রায়ই মনে পড়ে। সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে আমরা যখন কিছুটা খারাপ সময় পার করি কিংবা কষ্টে থাকি তখন। হাতিরঝিল আমার খুব পছন্দের একটি জায়গা। মাঝেমধ্যে হাতিরঝিল গিয়ে সময় কাটিয়ে থাকি। ৮/১০ দিন আগেও গিয়েছিলাম সেখানে, যদিও বেশিক্ষণ থাকতে পারিনি কাজ ছিলো বলে। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। যাইহোক এতো চমৎকার স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
একবার ভাই কাজের ভিতর ঢুকে পড়লে বাকি জীবনটা শুধু পরিশ্রম করেই যেতে হয়। তবে আপনার যেহেতু নাইট শিফট চলছে এখন, তার মানে কষ্ট অনেক বেশি হচ্ছে সেটা তো বুঝতেই পারছি। আর আপনি হাতিরঝিল নিয়ে যে মেমোরি গুলো শেয়ার করলেন, সেগুলো আমি অনেক আগেই আপনার পোস্টের ভিতর পড়েছি। সেগুলো তো আমার সবই মনে আছে। তবে ভাই জীবনের সময়, সব সময় একই রকম থাকে না, সময়ের সাথে সাথে আমাদের জীবনের অনেক পরিবর্তন হয়। তাই এটাকে মেনে নিতে হবে। তবে আপনার গ্যালারিতে যে ফটোগুলো আছে, ওইগুলো দেখে দেখে একটু কল্পনা করতে থাকেন, তাহলে হয়তো কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন।