এল নিনো

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনার সবাই অনেক ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আমিও ভালো আছি। আজ আপনাদের সাথে কথা বলব এল নিনো সম্পর্কে। আসলে গত কিছুদিন আগে আমি আমাদের এই পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে একটি পোস্ট করেছিলাম। সেখানেই কথায় কথায় এল নিন এ শব্দের ব্যবহার করেছি। অনেকেই কমেন্টের মাধ্যমে জানতে চেয়েছে এই এল নিনো পুরো বিষয়টি কি এবং এর প্রভাবে আমাদের এই পৃথিবীতে কি কি প্রভাব পরছে? তবে চলুন আমার সংক্ষিপ্ত জ্ঞানে সেসব বিষয়গুলো জেনে রাখা যায়।

এল নিনো সম্পর্কে জানতে হলে এই এল নিনো বিষয়টি কি সেই বিষয়টা কিভাবে আমাদের মাঝে আসলো সেই বিষয়টি সবার আগে জানা দরকার। তো ঘটনা শুরু হয় পেরুতে, একজন জেলের মাধ্যমে। ঘটনাটি সিক্সটিন সেঞ্চুরির আশেপাশে। তিনি যখন মাছ ধরতে যান তখন মাঝে মাঝেই তিনি লক্ষ্য করেন প্যাসিফিক ওশানের কিছু নিদিষ্ট সময় পরপর পানি ঠান্ডা আবার পানি গরম হয়। এই সাইকেলের একটি বিষয় তিনি লক্ষ্য করেন, যখন ডিসেম্বর মাস চলে তখন এই সাইকেলের বিষয়গুলো একদম পিকে চলে যায় অর্থাৎ সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে যায়। তখনই তিনি এই বিষয়টির নাম দিয়েছিল পেরুর ভাষায় এল নিনো দি নাভিডাট। এটাকে যদি ইংরেজিতে ট্রান্সলেট করা হয় তাহলে সেটা দাঁড়ায় দ্য লিটিল বয় অফ ক্রিসমাস। এরপর থেকেই মূলত এল নিনো শব্দের প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়।

তিনি আরো লক্ষ্য করেন যখন সমুদ্রে পানি ঠান্ডা কিংবা গরম থাকে তখন তাদের সেই পেরুতেই বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা যায়। যেমন প্রচুর বৃষ্টিপাত এছাড়াও সমুদ্রের মাছের বিভিন্ন কারণে মৃত্যু হয়। তখনকার সময় তিনি এটা ইগনোর করেন তাছাড়া তিনি একজন মৎস জেলে। তিনি আর কি বা চিন্তা করতে পারেন! কিন্তু এই বিষয়টা এখন আমরা জানতে পারছি সেই পেরুতে যখন প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় তখন আমাদের এই ভারত, বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া সহ এই পাশে যতগুলো দেশ রয়েছে তখন খড়ার মধ্যে ছিল।

এর আরো বহু বছর পরে একজন বিজ্ঞানী গিলবার্ট ওয়াটার এই সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তিনি লক্ষ্য করেন পৃথিবীর এক প্রান্তে যদি প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় তাহলে অন্য প্রান্তে প্রচুর খরা হচ্ছে। আবার কোন কোন জায়গায় যদি প্রচুর জলোচ্ছ্বাস হয় সে ক্ষেত্রে অন্যান্য জায়গায় দাবানলে সৃষ্টি হয়। এল নিনোর প্রভাব আমরা সবথেকে বেশি দেখেছিলো ১৯৮২ সালে। সেসময় পৃথিবীর এক প্রান্ত পানির নিচে ডুবে ছিল এবং অন্যান্য জায়গায় দাবানল এবং করার প্রচুর খড়া হয়েছিল। কিছু কিছু বিজ্ঞানীরা এটা মনে করছেন এই ২০২৪ সালে এল নিনোর প্রভাব আবারও দেখা দিতে পারি এবং তারা কিছু কিছু বিষয়বস্তুগুলো তারা আবারও গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করতে পেরেছে।

Source

এল নিনোর অর্থ হচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং পৃথিবীর একই সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন যে জায়গায় বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা দেবে। এদের মধ্যে রয়েছে দাবানল, বন্যা, মহামারী, ভূমিকম্প জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি। ১৯৮২ সালের যে ভয়াবহতা ছিল তা যদি আপনারা একটু গুগলের সার্চ করে দেখেন তাহলে আপনারাই অবাক হবেন। প্লেগ মহামারির কথা তো সবাই শুনেছেন, তাকে The Black Death হিসাবেও আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। সে সময় আমেরিকা সহ পশ্চিমাদেশ গুলো একদম পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল এবং আমাদের এশিয়া মহাদেশ সহ অস্ট্রেলিয়া সব জায়গায় প্রচন্ড রোদে জ্বলছিলো এবং খরা, দাবানল এসবের সৃষ্টি হয়েছিল। প্রচন্ড বৃষ্টিপাত এবং বন্যার কারণেই মশা বাহিত রোগ সেই জায়গায় প্রচুর পরিমাণে ছড়িয়ে গিয়েছিল এ থেকেই মূলত একটি মহামারী সৃষ্টি হয়েছিল যা সত্যিই অনেক বেদনাদায় ছিল।

যদি আমি এক কথায় বলি তাহলে এল নিনো শব্দের অর্থই হচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং এই দুর্যোগ পৃথিবীর একেক জায়গায় একেক রকম হতে পারে কিন্তু সেটা একই সময় ঘটবে। বর্তমানে পৃথিবীর উষ্ণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এছাড়াও সূর্যের যে ১১ বছরের সাইকেল রয়েছে সেটাও ২০২৪ এবং ২০২৫ সালের মধ্যে পূর্ণ হবে। সূর্য আরো প্রখর হয়ে উঠবে এবং সূর্য থেকে বিভিন্ন ধরনের ফ্লেয়ার পৃথিবী এবং সৌরজগতের প্রতিটা পর্যায়ে ছড়িয়ে যেতে পারে। তাই বিজ্ঞানীরা খুব বেশি আশঙ্কা করছেন এই ২০১৪ এবং ২০২৫ সাল আমাদের পৃথিবী বাসীর জন্য অনেকটাই চ্যালেঞ্জিং হতে যাচ্ছে।

আরেকটি বিষয় বলে রাখি প্রতি ১১ বছর পর পর সূর্যের ম্যাগনেটিক ফিল্ড পরিবর্তন হয়। যদিও এই বিষয়ে আমি সন্দেহ পোষণ করছি। কারণ এই বিষয়ে এখন কোন প্রমান বিজ্ঞান দিতে পারেননি। তবে আর যাই হোক না কেন ১১ বছর পর পর সূর্য প্রখর হয়ে ওঠে। আপনাদের সুবিধার্থে বলে রাখি সূর্যের কোন ফ্লেয়ার যদি সরাসরি পৃথিবীর দিকে চলে আসে তাহলে আমাদের ব্যবহারকৃত সকল ইলেকট্রনিক্স পণ্য কাজ করা বন্ধ করে দিবে। হতে পারে দিন, মাস, বছর খানিক পর্যন্ত পুরো পৃথিবীকে ইলেকট্রিসিটি ছাড়াও চলতে হতে পারে।

Source

২০২৩ সালে আমরা কি রকম গরম দেখেছি তার থেকেও প্রহর গরম আসতে চলেছে আসছে দুই বছর। আশা করছি আপনারা সবাই সুস্থ থাকবেন। আর এই বিষয়গুলো সম্পূর্ণই তথ্যমূলক। আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই মন্তব্যে জানাতে পারেন। তাহলেও আরো বিভিন্ন ধরনের তথ্যমূলক পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। আসলে এই পোস্টগুলো লেখার জন্য প্রচুর পরিমাণে পড়াশোনা করতে হয় তাই এই পোষ্টের মধ্যে আপনাদের মন্তব্য আশা করছি। আজকের মত এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।

---

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

---

---

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP	500 SP	1000 SP	2000 SP	5000 SP

---

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

---

---

বিষয়: এল নিনো

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......