ঢাকার রাস্তাগুলো মনে হয় এক একটি বিশাল নদী
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনার সকলেই অনেক ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহতালার অশেষ রহমতে আমিও ভালো আছি। তবে বাংলাদেশে অবস্থান করছি তার মানে আপনারা বুঝতেই পারছেন, বাংলাদেশের কিরকম অবস্থা চলছে বর্তমানে। এদিকে আগামী মাসে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে তাই অনেকটা চাপের মধ্যে রয়েছি, অনেকগুলো অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন আরো অনেক কিছুই তৈরি করতে হবে।
গতকাল ভার্সিটির ক্লাস ছিল। যথারীতি ক্লাসের উদ্দেশ্যে ভোর ছয়টার সময় বেরিয়েছিলাম। কারণ ক্লাস ছিল সকাল আটটা থেকে। আমি যেখানে থাকি সেখান থেকে আমার ভার্সিটিতে যেতে প্রায় দেড় ঘণ্টার মতো সময় লাগে তারপরও ৩০ মিনিট সময় হাতে নিয়ে বের হতে হয়। কারণ ঢাকার অবস্থা কখন যে পরিবর্তন হয়ে যায় সেটা বলা অনেক দুষ্কর একটি বিষয় হয়ে ওঠে। গতকাল ভোর ছয়টার সময় যখন আমি বাসা থেকে বেরিয়েছিলাম। তখন আমাদের এলাকায় বৃষ্টিপাত ছিল না তবে আকাশ একটু মেঘলা ছিল। যখনই ঢাকার মধ্যে ঢোকা শুরু করলাম বৃষ্টি পড়তে রইলো। কিন্তু ঢাকায় যাওয়ার পরে জানতে পারলাম বৃষ্টি সেই ভোর ছয়টা থেকেই শুরু হয়েছিল। এই বৃষ্টির মধ্যে আর ঢাকায় ট্রাভেল করাটা মোটেও ভালো একটি বিষয় ছিল না। কারণ এত বৃষ্টির মধ্যে টিচারেরা আসতে পারেনি এবং এমন অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছিল।
তারপরও ভার্সিটিতে যেতে খুব বেশি একটা সমস্যায় পোহাতে হয়নি কারণ বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগেই একদম বাসে উঠে বসে ছিলাম এবং সেই বাস একদম আমাদের ভার্সিটির গেটের সামনে নামিয়ে দিয়েছিল। যথারীতি আমাদের ক্লাস শুরু হয়। তবে আমাদের দুজন ক্লাস টিচার ভার্সিটিতেই আসতে পারেনি। কারণ তাদের বাসার সামনে অনেক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছিল এবং সেই ক্লাস গুলো অনলাইনে নেওয়া হয়েছিল। আমরা ভার্সিটিতে বসেই অনলাইনে ক্লাস করেছিলাম। ভোগান্তি শুরু হয়ে যখন ভার্সিটি থেকে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। ভার্সিটির একটু পাশেই দেখি এতটা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে কোন ধরনের বাস, অটো রিক্সা বা সিএনজি কোন কিছুই সেই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করছিল না। যারা যাতায়াত করছে তারা ৫০ টাকার ভাড়া প্রায় ২০০ টাকা চেয়ে বসছে এতে করে সাধারণ জনগণের অনেক সমস্যা হয়েছিল।
মাঝে মাঝেই বিভিন্ন ধরনের খবর ইউটিউবে দেখতে পাওয়া যায়। তার মধ্যে গতকাল একটি খবর দেখলাম ঢাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ঠিক করার জন্য প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছিল এবং কাজ করা হয়েছিল। তবে কতটুকু কাজ করা হয়েছে সেটা আমার বোধগম্য হয় না। মাত্র ৩-৪ ঘন্টার বৃষ্টিতেই যেখানে কোমর জল উঠে যায় সেখানে আর কি কাজ করা হয়েছে! সেটা তো সবাই বুঝতেই পারছেন। এক দিকে ছাত্র আন্দোলনে বিভিন্ন ধরনের রাস্তাঘাট বন্ধ তার উপরে যেগুলো রাস্তা খোলা ছিল তার বেশিরভাগই ছিল পানিতে জলাবদ্ধ।
এই পানির মধ্যে ঢাকা থেকে আমার বাসা আসতে অনেকটা ভোগান্ত হতে হয় এবং আমি সম্পূর্ণ ভিজে গিয়েছিলাম। এতে করে আর গতকাল রাতেই হালকা পাতলা একটু ঠান্ডা লেগে ছিল। সবমিলিয়ে এতটা ভোগান্তি মনে হয় যে এই কয়েক বছরে হয়নি। যেখানে ভার্সিটিতে যেতে শুধুমাত্র দুটি বাস পরিবর্তন করতে হয় কালকে ভার্সিটি থেকে আমার বাসা আসতে প্রায় বিভিন্ন ধরনের পরিবাহনের সাহায্য নিতে হয়েছিল। সিএনজিতে করে কিছু পথ এসেছি, আবার কিছু পথে রিকশায় এসেছি, আবার সর্বশেষ লেগুনা এবং বাসে করে বাসায় আসতে হয়েছিল।
এ ছাড়াও সামনে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা রয়েছে এখনকার ক্লাস গুলো আমাদের সকলের জন্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাই ভার্সিটি না যেও কোন উপায় ছিল না। কিন্তু এই যে ভোগান্তি গুলো এগুলো আমরা কার কাছে তুলে ধরব? কার কাছে এই কথাগুলো বলব? সেটাও আমার বোধগম্য হয় না। কার কাছে গিয়ে বলবো এই ঢাকা শহরকে একটু বসবাসের যোগ্য করে দেন। ঢাকাবাসী যেন কোনভাবেই কোন ধরনের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে না. শুধুমাত্র ভোগান্তি আর ভোগান্তি. মাত্রা অতিরিক্ত গরমে যখন সবাই অতিষ্ঠ হয়ে একটু বৃষ্টি হলে তার থেকেও বেশি অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে ঢাকা বাসি। বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা যায়। বিভিন্ন দোকানপাট বা বাসা বাড়িতে পানি ঢুকে যায় এতে করে জীবনযাত্রার মান যেমন কমছে তেমনি আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।
এই সবকিছু দেখে এবং অনুধাবন করে শুধুমাত্র দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলা ছাড়া আর কোন উপায় নেই বলে আমি মনে করছি। আজকের মত এখানেই শেষ করছি, আপনারা সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: ঢাকার রাস্তাগুলো মনে হয় এক একটি বিশাল নদী
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
কালকে অঝোর ধরার বৃষ্টিপাতে ঢাকা শহর প্রায় ডুবেই যাচ্ছিল। কোন কোন এলাকায় হাটু পর্যন্ত আবার কোন কোন এলাকায় কোমর পর্যন্ত পানি জমে ছিল। আর এতে জনসাধারণের দুর্ভোগ অনেক বেড়ে যায় যাতায়াতের জন্য।
তবে তোমার জন্য আমারও টেনশন হচ্ছিল ঠিকভাবে বাসায় আসতে পারবে কিনা এটা ভেবে। মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি তুমি ভালোভাবেই বাসায় ফিরেছ বলে।
হ্যা, ধন্যবাদ আম্মু।
খবর আর ফেসবুকের কল্যানে যা দেখলাম তাতে মনে হয়েছে ঢাকা এখন মিনি কক্সবাজারে রূপান্তরিত হয়েছে, যা সত্যি অনাকাংখিত এবং অপ্রত্যাশিত।
আমি ও তাই বললাম।যাই এই মিনি কক্সবাজারে কিন্তু ভাবীকে নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন🤣🤣
চলেন ভাই, মিনি কক্সবাজারে আবারো ঘুরে আসি।
ঢাকা শহর প্রকৃতপক্ষে বসবাসের অযোগ্য একটি শহর। গরমের সময় ও থাকা যায় না আবার বৃষ্টির সময়ও টেকা যায় না এমন অবস্থা এখন! সত্যি কার কাছে গিয়ে বলবো যে ঢাকা শহরকে একটু বসবাসের যোগ্য করে তুলুন, সেই জায়গাটি ও নেই আমাদের!
সেটাই তো বললাম আপু, কাকে বলবো!
বেশ কিছুদিন ধরে সোসাল মিডিয়ার মধ্যে দেখছিলাম ঢাকার রোড গুলো বৃষ্টির পানিতে ডুবে যাচ্ছিলো। অবশেষে আপনি ও আজকে ঢাকার রোডের বন্যা পরিস্থিতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে ঢাকা শহরের মধ্যে কোন কিছু একটু সমস্যা হলেই তারা ভাড়া বাড়িয়ে দেন, এটা আমাদের জন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার। তবে, আপনার সামনে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা থাকায় এই প্রতিকুল আবহাওয়া উপেক্ষা করে ভার্সিটি যেতে হয়েছে।
সমস্যার শেষ নেই ভাই।
আমিও ফেসবুকে হালকা পাতলা ঢাকার কিছু দৃশ্য দেখলাম দেখে মনে হচ্ছে এটা কোনো জলাশয়। মাত্র কয়েক ঘন্টার বৃষ্টিতেই একটা শহরের অবস্থা যদি এমন হয় তাহলে চলাচলে তো অনেক সমস্যা হয়। এত টাকা খরচ করে যদি কোনো উন্নতি না হয় তাহলে আল্লাহই ভালো জানে তারা টাকাগুলো কোথায় ব্যয় করছেন। তবে ভার্সিটিতে বসেই অনলাইনে ক্লাস করার বিষয়টা বেশ মজা ছিল। যাই হোক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে ভোগান্তি নিয়ে এই পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
কি আর করবো ভাই, পরিস্থিতি যেমন সেভাবেই চলতে হবে।
ভাইয়া আপনার কাছে নদী মনে হয়,আমার কাছে তো সমুদ্র সৈকত মনে হয়।বৃষ্টি সময় রিক্সা কিংবা সিএনজি মামাদের দাম অনেক বেড়ে যায়।যাই হোক বাসায় যে আসতে পেরেছেন তাই অনেক😂😂
কি যে বলবো আপু, গতকাল অবস্থাই খারাপ হয়ে গিয়েছিলো।
বাবারে। ঢাকায় এতো বৃষ্টি হচ্ছে? এদিকে কলকাতা তো শুকিয়ে খরা হয়ে গেল। গরমে সব মরতে বসেছে। আর পারা যাচ্ছে না। এদিকে ঢাকা তো ভেসে গেছে। প্রচুর জল জমে গেছে। অদ্ভুত বৈপরীত্য। যাই হোক। সাবধানে থেকো। ভালো করে পড়াশোনা কোরো। আর রাস্তাঘাটে সাবধানে চলাফেরা কোরো। ভালোবাসা নিও।
মাত্র ৩-৪ ঘন্টা বৃস্টিতেই এমন অবস্থা।।
হঠাৎ করে এত বেশি বৃষ্টি হয়েছে যে ঢাকার অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেছে। আর আপনার অনেক সমস্যা হয়েছে বুঝতে পারছি ভাইয়া। বৃষ্টিতে ভেজার কারণে আপনার ঠান্ডা লেগে গেছে জেনে খারাপ লাগছে। সাবধানে থাকবেন ভাইয়া।
সাবধানেই থাকার চেস্টা করছি, আপু।
ভাই আমাদের দেশের জনগণের ভোগান্তির শেষ নেই এবং এসব দেখার আসলেই কেউ নেই। ঢাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে গিয়েছে একেবারে। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ভাবতেই অবাক লাগে, এতো মানুষ বসবাস করে ঢাকাতে,কিন্তু ঢাকার প্রায় সবকিছুই অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি করা। আপনি তো দেখছি ইউনিভার্সিটি থেকে বাসায় ফেরার সময় চরম ভোগান্তিতে পড়েছিলেন। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
হ্যা, কি যে এক ভোগান্তি বলে বুঝানো যাবে না ভাই।
টাকা গুলো কী উড়ে গেল নাকী খুব জানতে ইচ্ছা করছে। এমন একটা বৃষ্টিতে ঢাকার এই অবস্থা যেটা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। আমারও ক্লাস ছিল বৃষ্টির মধ্যেই বের হয়েছিলাম। কপাল টা ভালো ছিল এমন অবস্থার মধ্যেও সঠিক সময়ে পৌছে গিয়েছিলাম ।
কার কাছে জানতে চাইবেন! সেটাও তো অজানা হাহাহা