মহাকাশবিজ্ঞান সিরিজ || হোয়াইট ডোয়ার্ফ (২য় পর্ব)

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সবাই অনেক ভাল রয়েছেন। গত পর্বে আমরা চন্দ্রশেখর এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং সেইসাথে কিছু ছোটখাটো ইনফরমেশন আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। আজ আপনাদেরকে হোয়াইট ডোয়ার্ফ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা দেওয়ার চেস্টা করবো এবং এছাড়াও চন্দ্রশেখর লিমিট সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ভাবে আলোচনা করব। তবে চলুন শুরু করি। তবে যারা এখনো সিরিজের প্রথম পর্বটি পড়েননি তারা অবশ্যই আগে প্রথম পর্বটি পড়ে আসুন।

আমাদের এই মহাবিশ্বে কোন কিছুই স্থায়ী নয়। যেমন আমাদের জীবনকাল এক না এক সময়ে এটি শেষ হয়ে যাবে। ঠিক তেমনি মহাবিশ্ব যত ধরনের বস্তু বা এলিমেন্ট রয়েছে তাদের একসময় শেষ হয়ে যেতে হয়। এই শেষ হওয়ার প্রক্রিয়া গুলোতে বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন জিনিস সামনে আসে। তেমনি নতুন জিনিস হচ্ছে হোয়াইট ডোয়ার্ফ। মহাবিশ্বে থাকা যতগুলো সূর্য রয়েছে তার প্রায় ৯৭ শতাংশ সূর্যের শেষ পরিণতি হল হোয়াইট ডোয়ার্ফ।

যেমন আমাদের সূর্য কথাই ধরে নেই। আমাদের সূর্য এখন যুবক অবস্থায় রয়েছে এবং এর বয়স প্রায় ৪৫০ কোটি বছর। এভাবে আরো ৫৫০ কোটি বছর পরে সূর্যের সব জ্বালানি শেষ হয়ে যাবে। তখন এখানে একটি সুপারনোভা বিস্ফোরণ হবে এবং যার কারণে সূর্য একটি হোয়াইট ডোয়ার্ফ এ পরিণত হবে। এখানেই প্রায় সূর্যের সব ভর থাকে অর্থাৎ আমাদের সূর্যের ভর এখন যতটা রয়েছে ঠিক ততটাই থাকবে কিন্তু ছোট্ট একটি জায়গা ধরে থাকবে।

আমরা পদার্থবিজ্ঞান অনেকেই পড়েছি এবং অ্যাস্ট্রোনমি নিয়ে অনেকেই অনেক আগ্রহ প্রকাশ করি এবং বিষয়গুলো জানা প্রতি আগ্রহ থাকে তবে একটি বিষয় আমরা মাঝে মাঝে জানতে পারি যদি কোন একটা বস্তুর ভর মাত্রা অতিরিক্ত বেশি হয়ে যায় তখন সেই বস্তুর এলিমেন্ট গুলো সেই বস্তুর কেন্দ্রের দিকে ধাবিত হয় কিন্তু তখনো অনেক বাধা-বিপত্তি থাকে যে, আসলে এত ঘন হওয়ার পরেও কিভাবে হোয়াইট ডোয়ার্ফ এর মত একটি বস্তু কিভাবে স্টাবল থাকে।

আমাদের সূর্যের কথাই করে। বর্তমানে সূর্যের আলো প্রতি সেকেন্ডে লক্ষ লক্ষ মেট্রিক টন হাইড্রোজেন হিলিয়াম এ রূপান্তরিত হচ্ছে এবং নিউক্লিয়ার ফিশন গঠিত হচ্ছে। যার কারণে সেই নিউক্লিয়াসে নিউট্রন গুলো সূর্যর কেন্দ্র থেকে বাইরের দিকে চাপ প্রদান করছে এবং সূর্যের গ্রাভিটি নিচের দিকে চাপ প্রদান করছে যার কারণে ২ টি শক্তি একে আপরের বিপরিত সমান চাপ দিচ্ছে কিন্তু হোয়াইট ডোয়ার্ফ এ সেখানে এলিমেন্ট গুলো একটু অন্য আঙ্গিকে সাজানো থাকে। সেই বিষয়গুলো তখনকার বিজ্ঞানীরাও জানতো না। যার কারণে তাদের মাথায় অনেক ধরনের প্রশ্ন ছিলো। হোয়াইট ডোয়ার্ফ কিভাবে স্টাবল হতে পারে?

বিজ্ঞানীরা হোয়াইট ডোয়ার্ফ এর সামান্য এই বিষয়টি নিয়ে অনেক ঘাটাঘাটি করে কিন্তু এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা জানতো না নিউটন স্টার এবং ব্ল্যাকহোল সম্পর্কে। নিউটনের এক চামচ এর ভর আমাদের সম্পূর্ণ পৃথিবীর চেয়েও অনেক বেশি হতে পারে। যাইহোক নিউট্রন ষ্টার এবং ব্ল্যাকহোল নিয়ে আলাদা কোনো সিরিজে কথা বলবো। এই হোয়াইট ডোয়ার্ফ সম্পর্কে আমি মনে করি আপনাদেরকে বেসিক একটি ধারণা দিতে পেরেছি। এখন যাওয়া যাক চন্দ্রশেখর লিমিট এ। আসলে চন্দ্রশেখর লিমিট এই হোয়াইট ডোয়ার্ফ কে কিভাবে ব্যাখ্যা করে?

সুব্রামানিয়াম চন্দ্রশেখর যখন হোয়াইট ডোয়ার্ফ নিয়ে তাঁর গবেষণা প্রকাশ করেন তখন তৎকালীন একটি বিজ্ঞানী তাকে অবখয় করেন এবং বলেন এই গবেষণার কোন ভিত্তি নেই! কিন্তু তখনই তিনি চন্দ্রশেখর লিমিট আবিষ্কার করেন। সেই লিমিটে বলা হয়েছে, কোন একটি সূর্যের জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয়ার পরে সেখানে সুপার্ণভা বিস্ফোরিত সংঘটিত হয় এবং সুপার্ণভা বিস্ফোরিত সংগঠনের পরে সেই কোরের ভর আমাদের বর্তমান সূর্যের ১.৪% হলে সেটা হোয়াইট ডোয়ার্ফে পরিনত হবে।

কিন্তু তৎকালীন সেই বিজ্ঞানী মনে করেন এর থেকে বেশি মাত্রায় হলে তাহলে আরো ঘনত্ব বেশি হয়ে যাবে এবং একটি সিঙ্গেল বিন্দুতে পরিণত হয়ে যাবে যা তখনকার পদার্থ বিজ্ঞানের মতে কোন ভাবেই সম্ভব ছিলনা যার কারনেই এই চন্দ্রশেখর লিমিট কে প্রাধান্য দেয় নি।

আশাকরছি সুব্রামানিয়াম চন্দ্রশেখর এর সংক্ষিপ্ত জীবনী এবং তার গবেষণার বিষয়বস্তু এবং হোয়াইট ডোয়ার্ফ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য এই দুটি পর্বে আমি শেয়ার করেছি। পরবর্তীতে অন্য কোন সিরিজে অন্য কোন টপিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। এই সিরিজটি আপনার কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন তাহলে আমি অন্যান্য সিরিজগুলো আরো আনন্দের সাথে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে পারব। ধন্যবাদ।

---

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

---

---

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP	500 SP	1000 SP	2000 SP	5000 SP

---

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

---

---

বিষয়: মহাকাশবিজ্ঞান সিরিজ || হোয়াইট ডোয়ার্ফ (২য় পর্ব)

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......