ছোটবেলার একটি ভৌতিক ঘটনা [10% ʙᴇɴᴇғɪᴄɪᴀʀɪᴇs ғᴏʀ @sʜʏ-ғᴏx🦊]

আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি প্রত্যেকটি মানুষের বিশেষ করে ছোটবেলার অনেক কিছু গল্প থাকে, যেগুলো আসলে শেয়ার করার উপযুক্ত। সেরকম গল্পের মধ্যে কিছু থাকে মজার গল্প, কিছু থাকে ভৌতিক গল্প। আজ আমি আমার ছোটবেলা থেকেই একটি ভৌতিক ঘটনা আপনাদের সামনে শেয়ার করবো। যদিও তেমন একটা ভৌতিক না কিন্তু আমার কাছে মনে হচ্ছে এটা আপনাদের সাথে শেয়ার করা যায়, তাই লিখতে বসলাম।

ঘটনাটি ছিল ২০১২ সালের, তখন অনেক ছোট ছিলাম এবং অনেক ৮ম ক্লাসে পড়তাম। তথনও আমাদের শহরটি তেমন একটা উন্নত হয়নি অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ আসেনি। আমরা কমবেশি সকলেই জানি, রমজান ঈদে ত্রিশটি রোজা রাখতে হয় এবং ২৬ তম রোজার রাতে আমাদের রাত জেগে আল্লাহ তাআলার ইবাদত করতে হয়। ছোটবেলায় এই রাত নিয়ে অনেক প্ল্যান থাকতো আমাদের সব বন্ধুদের মাঝে। কোথায় যাব, কোন কোন মসজিদে যাব এবং কিভাবে সময়টা কাটাব কারণ ছোটবেলায় বাসার বাহিরে রাত কাটানো অনুমতি আমাদের ছিলো না। আমাদের মূলত ৫ জন বন্ধুর একটা দল ছিল, যেখানেই যাই আমরা সব সময় এক সাথেই যেতাম এবং কোন কিছু করলে একসাথেই করতাম, সেবার ও তার ব্যতিক্রম কিছু হয়নি। আমরা সবাই অনেক উৎসাহী ছিলাম। অনেক অপেক্ষার পরে সেই কাঙ্খিত দিনটি চলে আসে। সারাদিনের সব কাজ শেষ করে যখন আমরা রাতে নামাযের উদ্দেশ্যে বের হয়ে সবাই একসাথে হয়ে নামাজ পড়ে রাত বারোটার সময় মসজিদ থেকে বেরিয়ে পরি।

ঘটনাটি বলার আগে একটি বিষয় বলা খুবই জরুরী। আমাদের ৫ জন বন্ধুর মধ্যে দুইজন বন্ধু অনেক সাহসী ছিল এবং তারা মোটামুটি ছোটখাটো ট্রিটের জন্য সবকিছুই করতে পারতো। আমরা মসজিদ থেকে বের হয়ে নাস্তা করছিলাম হোটেলের মধ্যে বসে এমন সময় কথার মধ্যে কথা উঠল যে শসানের মধ্যে এখন যারা যেতে পারবে তাদেরকে একটি স্ট্রিত হবে। যেমন কথা তেমন কাজ, তারা দুজনেই রাজী হয়ে গেল। আমাদের বাজার মসজিদ থেকে শ্মশান টি বেশী দুরে ছিল না এবং হেঁটে যেতে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট সময় লাগে কিন্তু তখন পর্যন্ত শ্মশানের ঐ দিকে কোন বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। সেজন্য সে জায়গাটা অনেক নিরব এবং একটি ভয়ানক পরিবেশের সৃষ্টি করে। তাদের সাথে বাজি টা মূলত এরকম ছিল, শ্মশান এর মধ্যে একটা বড় বটগাছ রয়েছে এবং তার পাশেই মূলত বিভিন্ন লাশ পোড়ানো হয়। আমরা বলেছিলাম সেখান থেকে বট গাছের একটি পাতা নিয়ে আসার জন্য কিন্তু শর্ত হলো একজন একজন করে যেতে হবে এবং আমরা সবাই বাইরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকবো।

তারা দুজনে অনেক কনফিডেন্ট ছিল এবং এমন ভাব দেখাচ্ছিলো যে তাদের কাছে এই বিষয়টি কিছুই না। আমরা শ্বসনের উদ্দেশ্যে বের হলাম এবং আস্তে আস্তে যত শ্মশানের দিকে যাচ্ছিলাম তত ভয় কাজ করছিল কারণ ওই সময় আমাদের কাছে কারো কাছে মোবাইল ছিল না এবং লাইক বলতে শুধুমাত্র টর্চ লাইট ছিল। কিন্তু তারা টর্চ লাইট নিয়ে ভিতরে যেতে পরবেনা। এরকম একটি শর্ত ছিল যাইহোক আমরা সবাই শ্মশানের সামনে চলে আসলাম। যতবারই শ্মশানের সামনে গিয়েছিলাম ভয় কাজ করছিল কিন্তু এইবার মনে হয় একটু বেশি ভয় কাজ করছিল। তখন বাজে প্রায় রাত একটা, চারিদিকে ফাঁকা জায়গায় এবং আশেপাশে কোন জনবহুল এলাকা ছিল না। প্রথম বন্ধুদের ভিতরে গেল আমরা প্রায় ৫-৬ মিনিট অপেক্ষা করলাম কিন্তু দেখলাম সে ঠিকই বট গাছের একটি পাতা নিয়ে আসলো। এখন শুরু হবে মূল কাহিনী, দ্বিতীয় বন্ধুটি যাবে সে মনে মনে অনেক ভয় পাচ্ছিল এবং তার চেহারা দেখে বোঝা যাচ্ছিল যে সে অনেক ভয় পেয়েছে।

সেই বন্ধুটি শ্মশানে ঢোকার পরে আমরা অনেকক্ষণ যাবৎ ওয়েট করছিলাম কিন্তু সে কোনভাবেই বাইরে বের হচ্ছিলোনা যখন দশ মিনিট অতিক্রম হয়ে গেল তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা সবাই মিলে শ্মশানে ভিতরে গিয়ে দেখবো। আমরা ভিতরে গিয়ে দেখি সেই বটগাছের নিচে পড়ে আছে। আমরা তো অনেক ভয় পেয়ে গেছিলাম খুব তাড়াহুড়ো করে তাকে সবাই মিলে ধরে শ্মশান থেকে বাইরে নিয়ে আসলাম এবং পানি দিয়ে তাকে একটু জাগানোর চেষ্টা করলাম।কোন ভাবে সে একটু শান্ত হওয়ার পরে আমরা জিজ্ঞাসা করলাম যে আসলে ভিতরে কি হয়েছিল। সে বলল যে সে দেখেছিল যে হয়তো বা কেউ সাদা কাপড় পরিহিত কেউ সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলো এবং দেখার পরে যখন বাইরে বের হতে দৌড় দেয় তখন সে কোন কিছুর সাথে ধাক্কা খেয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। এ বিষয়টা হওয়ার পর থেকেই আমরা প্রতিগ্গা করি। আসলে এরকম কোন রকমের বাজি করা ঠিক হবে না এটাই ছিল মূলত আমার সেই ঘটনাটি। কিন্তু আরো কিছু ভিতর ঘটেছিলো, সেগুলো আমি বলতে চাচ্ছি না।

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

---

---

বিষয়: ছোটবেলার একটি ভৌতিক ঘটনা

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.........