জ্যোতিবিজ্ঞানমূলক সিরিজ || প্লানেট নাইন
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন? আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সকলকে নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা বিকাশের সুযোগ করে দেয় এবং তার এই ধারাবাহিকতায় আমরা একে একে তিনটি বছর অতিক্রম করে গেলাম। এর মাঝে আমিও মহাকাশ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিষয়বস্তু আপনাদের সামনে উপস্থাপন করেছি তবে মাঝে মাঝে একটু নিরসাহিত হয়ে সেগুলো আবার বন্ধ করেছি। তবে আমি চিন্তা ভাবনা করছি এই সৌরজগৎ এবং মহাকাশে বিষয়বস্তু নিয়ে একটি নতুন সিরিজ তৈরি করব। যেখানে প্রতি সপ্তাহে একটি করে মহাকাশের বিভিন্ন ধরনের রহস্য গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব।
আশা করছি এবার আপনাদের সকলের কাছ থেকে অনেক উৎসাহ পাবো। ছোটবেলা থেকেই মহাকাশ নিয়ে প্রচুর পড়াশোনা করেছি এবং এখনো করে যাচ্ছি। তবে খুব বেশি একটা যে জ্ঞান রাখি তা কিন্তু নয় তবে আমি আমার মত করে সেই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করব। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এসব বিষয়ে সকলেরই প্রাথমিক ধারণা থাকা দরকার কিন্তু এসব বিষয়ে খুব বেশি একটা ব্লগিং করা হয় না, এছাড়াও এসব জিনিসের তথ্যগুলো খুব সহজে কালেক্ট করা যায় না। তাই তো এই বিষয়গুলো কালেক্ট করে আপনাদের কাছে আমি নিজের মতো করে উপস্থাপন করব। যাতে করে এই বিষয়ে সাধারণ জ্ঞানটুকু আমরা পেতে পারি। মহাজাগতিক বিষয়বস্তুগুলো এখনো অনেকগুলো রহস্যের মধ্যে ঘেরা রয়েছে। এখনো আমরা পৃথিবীবাসী অনেক কিছুই জানিনা, আবার মাঝে মাঝে এমন কিছু রহস্যের সম্মুখীন হতে হয় যেগুলোতে আমাদের আগে কোন ধারনাই ছিল না। সে সমস্ত বিষয়গুলোতে এই সিরিজে বেশি ফোকাস করা হবে। সচরাচর মহাকাশ নিয়ে আমরা যেসব সাধারণ জ্ঞান রাখি সেসবদের বাহিরে গিয়ে একটু এডভান্স ফিজিকস কিংবা এডভান্স সোলার সিস্টেম নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করবো এবার। তবে চলুন এই সিরিজের সূচনা করা যাক।
আমরা সকলেই জানি আমাদের এই সৌরজগতে আটটি গ্রহ রয়েছে। তবে ২০০৯ সালের আগে কিন্তু নয়টি গ্রহ ছিল এবং ২০০৯ সালের পরে প্লুটোকে গ্রহ থেকে বাদ দেওয়া হয় বিশেষ কিছু কারণে। কারণ গ্রহ হতে গেলে তিনটি মেজর বিষয় থাকা দরকার যার মধ্যে একটি প্লটুর মধ্যে ছিল না। আমরা আজ প্লুটোকে নিয়ে কোন কথা বলবো না। বরঞ্চ একটি রহস্যময় প্লানেট নিয়ে কথা বলব, যেটা হচ্ছে প্লানেট নাইন বা প্লানেট এক্স। এটা রহস্যময় কারণ এই গ্রহটিকে এখন পর্যন্ত আবিষ্কার করা যায়নি। কারণ এই গ্রহটি আমাদের এই সৌরজগতের মধ্যে রয়েছে কিংবা সৌরজগতের বাহিরে রয়েছে সেই বিষয়টিও স্পষ্ট নয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যদি এই বিষয়গুলো স্পষ্ট নয় তাহলে আমরা কিভাবে এটা মনে করছি যে প্ল্যানেট নাইন নামক একটি গ্রহ রয়েছে কিংবা একটি অবজেক্ট রয়েছে? এর পিছনের মূল কারণ কি?
দেখুন, আমাদের এই মহাবিশ্বে এমন অনেক অবজেক্ট রয়েছে যেগুলোকে আমরা দেখতে পারি না তাই বলে যে সেগুলো নেই তা কিন্তু নয় বরং সেই বিষয়গুলোর ইম্প্যাক্ট গুলো আমরা দেখতে পারি। যেমন, আপনারা সকলেই জানেন ব্ল্যাক হোল দেখা যায় না কিন্তু ব্ল্যাক হোলের কারণে যেসব বিষয়বস্তু সংঘটিত হচ্ছে সেই বিষয়গুলো কিন্তু আমরা ভালোভাবেই বুঝতে পারি কিংবা অবজারভ করতে পারি। প্লানেট নাইন যে আমাদের সোলার সিস্টেমেরই একটি অংশ এটা বুঝতে গেলে সর্বপ্রথম আমাদেরকে বেরি সেন্টার বুঝতে হবে। বেরি সেন্টার নিয়ে গত এক বছর আগেই আমি একটি পোস্ট করেছিলাম, সেখানে সমগ্র বিষয়গুলো ভালোভাবে বুঝিয়েছি তবে দু একটি কথা এখানে বলার চেষ্টা করছি।
আমরা সকলেই জানি পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। তবে এই বিষয়টি পুরোপুরি সঠিক নয় বরঞ্চ সূর্য এবং পৃথিবীর একটি সেন্টার রয়েছে যেটাকে আমরা বলি বেরি সেন্টার। মূলত সূর্য এবং পৃথিবী উভয়ই সেই সেন্টারকে ঘিরেই একে অপরকে প্রদক্ষিণ করছে। আমাদের সৌরজগতের যতগুলো অবজেক্ট রয়েছে সেই সকল অবজেক্টগুলো একত্রিত হয়ে একটি বেরি সেন্টার গঠন করে এবং সূর্য একাই একটি সেন্টার গঠন করে। যেহেতু সৌরজগতের সকল বস্তুর ভর সূর্যের ভরের মাত্র ২% এর ও কম তাই বেরি সেন্টারটি সূর্যের অনেক কাছাকাছি অবস্থান করে। সমগ্র সৌরজগতের বিষয়বস্তুগুলো সেই বেরি সেন্টারকে কেন্দ্র করে ঘুরছে এবং সূর্য সেই বেরি সেন্টারকে কেন্দ্র করেই ঘুরছে। এখন আমাদের এই সৌরজগতে যত বড় বড় বিষয়বস্তু রয়েছে সবগুলোর ক্যালকুলেশনের হিসেবে যে বেরি সেন্টার থাকার কথা সেটা থাকছে না। বরঞ্চ বেরি সেন্টার অন্য দেখাচ্ছে। মানে, এখানে আরো কেন বড় অবজেক্ট কিংবা গ্রহ থাকার কথা। কিন্তু সেরকম কোন অবজেক্ট আমরা সোলার সিস্টেমে খুঁজে পাচ্ছি না।
বিষয়টা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে, মনে করুন কোন একটি বস্তুর রয়েছে সেটার ইম্প্যাক্ট কিংবা গ্রাভিটি আমরা ও অনুভব করতে পারছি কিন্তু সেই বিষয়টিকে আমরা দেখতে পাচ্ছি না। গত এক দশক আগেও এমন অনেকগুলো খবর বেরিয়ে ছিল যে, প্ল্যানেট নাইন হয়তো বৃহস্পতি গ্রহের চেয়েও অনেক বড় তবে এই বিষয়টি পরবর্তীতে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। যদিও এখনো সেই প্ল্যানেট কিংবা সেই অবজেক্টকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি তবে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন পৃথিবীর থেকে ৫ থেকে ১২ গুণের বেশি বড় সেই গ্রহ হবে না। এবং বিজ্ঞানীরা এটাও ধারণা করেন সূর্য থেকে ৫০০ থেকে ৮০০ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট দূরত্বে এই গ্রহটি থাকতে পারে।
এই বিষয়টি এত রহস্যময় এটি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের থিউরি আবিষ্কার হয়েছে এবং সেসব থিওরিগুলো পরবর্তী পর্বে আপনাদের সাথে আলোচনা করে নেব। আপনারা যদি ইন্টারেস্টে থাকেন তাহলে অবশ্যই মন্তব্যে লিখবেন। এই বিষয়গুলো আপনাদের কেমন লাগছে। যদি ভালো লাগে তাহলে এই বিষয়গুলো বেশি বেশি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আজকের মত এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন, ধন্যবাদ।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: জ্যোতিবিজ্ঞানমূলক সিরিজ || প্লানেট নাইন
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
X-Promotion
প্লুটোকে গ্রহ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে সেটা অনেক আগেই শুনেছিলাম,তবে কেনো বাদ দেওয়া হয়েছিল, সেটা জানা ছিলো না। আপনার এই পোস্টটি পড়ে সেটা জানতে পারলাম। যাইহোক প্লানেট নাইন তো আসলেই বেশ রহস্যময়। প্লানেট নাইন সম্পর্কে বেশ ভালোই ধারণা পেলাম। এই ধরনের পোস্ট পড়লে আসলেই অনেক তথ্য জানা যায়। পোস্টটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো ভাই। আশা করি এখন থেকে নিয়মিত এই ধরনের পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করবেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। আগামীকাল আশা করছি এর থিউরিগুলো নিয়ে ভালোভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব।
ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়ে সত্যিই অনেক ভালো লাগলো। জ্যোতিবিজ্ঞান নিয়ে আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো লিখেছেন। এই বিষয় সম্পর্কে জানতেও অনেক ভালো লাগে। সূর্য থেকে ৫০০ কিংবা ৮০০ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট দূরত্বে কোনো গ্রহ আছে কিনা জানতে চাই ভাইয়া। এই বিষয়ে আরো নতুন নতুন তথ্য চাই। আজকের পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লেগেছে।
এটা এখনো আবিষ্কার হয়নি তবে বিজ্ঞানের আশঙ্কা করছেন এই দূরত্বে গ্রহ থাকার কথা। এই বিষয়ে থিউরি আগামীকাল প্রকাশ করব।