নীলফামারী টু ঢাকা

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। গতকাল নীলফামারী থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলাম এবং সেই বিষয়ে কিছু ঘটনা আপনাদের সামনে তুলে ধরব।

ঈদের বেশ কিছুদিন আগে অসুস্থ থাকায় খুব দ্রুত বাসায় যেতে হয়েছে। অসুস্থতা ঠিক হয়ে ঈদ পার হওয়ার অনেকদিন পরে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। যদিও আমার আসতে একটু ইচ্ছা করছিলো না। কারণ ঢাকার এই অশান্ত পরিবেশ আমার কোনোভাবেই ভালো লাগেনা। ঢাকার এই যান্ত্রিক জীবনযাপন আমার একটুও ভালো লাগে না। তারপরও জীবনের চাহিদার জন্য, পড়াশোনার জন্য ঢাকায় আসতে হয়, ঢাকায় থাকতেই হয়। তারপর বাসার কথা অন্যরকম, আলাদা রুমে ঘুমানোর একটি আলাদা প্রশান্তি কাজ করে যা ঢাকায় কোন ভাবেই পাওয়া সম্ভব নয়। এদিকে আমার ভাইয়াও অনেক অসুস্থ। কিন্তু তারপরও বাধ্য হয়ে এসেছি কারণ ঈদের আগে একটি পরীক্ষা আমার মিস গিয়েছে সেই পরীক্ষার সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা ১২ তারিখে দিতে হবে তাই সেই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত রয়েছে, সবমিলিয়ে হিসাব করে ঢাকায় এসেছি।

গতকালের টিকিট ছিল রাত ৮.৩০ মিনিটে। যদিও আগে কাউন্টার থেকে আমরা উঠতে পারতাম কিন্তু বর্তমানে আমাদের নীলফামারী শহরে অনেক যানজটের সৃষ্টি হয় যার কারণে আমাদের মেয়র মহোদয় আমাদের টার্মিনালটি একমাত্র কাউন্টার হিসেবে ঘোষণা করে এবং এই কাউন্টার থেকেই মূলত সবধরনের বাস ছেড়ে যায়। আগে বাসা থেকে বার হলেই আমি বাসে উঠতে পারতাম তবে এখন বেশ কিছুটা রিকশায় করে টার্মিনাল পর্যন্ত আসতে হয়। যাইহোক নীলফামারী শহরের জন্যই ভালোই হয়েছে আমি মনে করি। পরবর্তীতে যথাসময়ে বাস ছেড়ে দেয়। সত্যি বলতে অনেক খারাপ লাগছিল। নিজের পরিবার পরিজনের কাছ থেকে এতটা দূরে সরে যাচ্ছি সত্যিই এই বিষয়টা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়।

এদিকে আরো বেশ কিছু চিন্তা মাথার মধ্যে গ্রাস করে রয়েছে। ছোট ভাই অসুস্থ তারপরও তাকে ছেড়ে আসতে হয়েছে। বাসার সবকিছুই মূলত এলোমেলো হয়ে আছে। এমন অবস্থায় যদি তাদের পাশে আমি থাকতে পারতাম তাহলে সত্যি অনেক ভালো হতো। কিন্তু জীবনের চাহিদা এবং পড়াশোনার খাতিরে সবকিছু ছেড়েছুড়ে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি।

বর্তমান আমি এমন একটি সময় অতিবাহিত করছি, কোন কিছু চিন্তা ভাবনার না করলেও অটোমেটিক সে সব চিন্তাভাবনাগুলো গ্রাস করে ফেলে। নিজের পরিবারের কথা সবসময় মাথায় ঘুরপাক খায়, আমি ছাড়া আমার পরিবারের কি হবে!! এই বিষয়গুলো অনেকটাই ভাবার আমাকে, অনেক ধরনের চিন্তা করেছি গতকাল আসার সময়। কিন্তু তারপরও আমার কিছু করার ছিল না।

তবে গতকাল ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে এসেছি, অনেকটা সময় চিন্তার মধ্যে কাটিয়েছি আবার বেশ কিছুটা সময় নীরব নিস্তব্ধ হয়ে বসেছিলাম। ব্যাচেলারদের জীবণ কি এটাই? সবকিছু ছেড়েছুড়ে, সবার পরিবার-পরিজনের কাছ থেকে দূরে যেয়ে নিজের ভবিষ্যতের জন্য যুদ্ধ করতে হয়। এই বিষয়গুলো মোটেও সহজ বিষয় নয়। একটি মেয়ে হওয়ার চেয়ে একটি ছেলে হওয়ার চেয়ে অনেকটাই কঠিন। এটা আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি। যাইহোক এই বিষয়ে খুব একটা বেশি কথা বলব না। তাহলে আবার কথাগুলো অন্য দিকে চলে যাবে। তবে ঢাকায় এসে পৌঁছেছে ভোর পাঁচটার সময়।

রাত একটার সময় বগুড়া ফুড ভিলেজে দাঁড়িয়েছিল আমাদের গাড়িটি। তবে পেটের মধ্যে অনেক ক্ষুধা থাকা সত্বেও কিছু খেতে পারেনি। প্রচুর টেনশন কাজ করছিলো। জানিনা কি হবে! পরবর্তীতে একটু পানি খেয়ে আবার বাসে উঠে বসি এবং একটু ঘুমানোর চেষ্টা করি।

তখন কি আর ঘুম আসে তখন! চুপচাপ করে বসে রইলাম এবং ভোর পাঁচটার সময় আমাকে গাবতলী বাস টার্মিনালে নামিয়ে দিল। সেখান থেকে আবার বাসে করে আমি রামপুরা পর্যন্ত চলে আসি। এসে দেখি রুমের অবস্থা একেবারে করুন। সেই সকাল বেলায় আবার রুম পরিস্কার করে, বিছানা করে, গোসল করে একটু ঘুমানোর চেষ্টা করি কিন্তু তখনও ঘুম আসছিল না। অনেকক্ষণ ছটফট করার পরে তিন ঘন্টার মত ঘুমাতে পেরেছি। ঘুম থেকে উঠে একটু ফ্রেশ হয়ে আমি এই পোষ্ট লিখতে বসে পরলাম।

আমাদের প্রত্যেকের ব্যাচেলার জীবনে এরকম, প্রত্যেকটা ব্যাচেলার এর জীবনের কাহিনী গুলো ভিন্ন-ভিন্ন কিন্তু তাদের বাস্তবতা একই। জীবন যুদ্ধে সবসময় লড়ে যেতে হয়, নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে হয়। এর মাঝেই কেটে যায় অনেকগুলো বছর। কেউ সফল হতে পারে আবার কেউ ব্যর্থ হয়ে জীবন কাটায়। তবে কোন এক মহান ব্যক্তি বলেছিল মানুষের জন্ম হয়েছে পরাজয়ের জন্য নয়, জয়ী হওয়ার জন্য। যাইহোক আজ আর বেশি কিছু লিখছি না, সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেষ করছি।।

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

---

---

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP	500 SP	1000 SP	2000 SP	5000 SP

---

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

---

---

বিষয়: নীলফামারী টু ঢাকা

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......