ঢাকা টু নীলফামারী || নতুন অভিজ্ঞতা
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই ভালো এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আমিও মোটামুটি ভালো আছি। বর্তমানে আমার সেমিস্টার ফাইনাল চলছে যদিও পরীক্ষাটা অনলাইনে দিতে হচ্ছে কিন্তু তারপরও আমি ঢাকায় অবস্থান করছিলাম। হঠাৎ করেই আমার মা গতকাল ফোন দিয়ে বাসায় আসতে বলে তাই আর বেশি সময় নষ্ট না করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম শনিবার খুব দ্রুত বাসা থেকে বের হয়ে যখন গাড়ি পাবো তখনই বাসে চড়ে বসবো বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার জন্য।
শুক্রবারে তিনটে পরীক্ষা ছিল এছাড়াও আনুষাঙ্গিক বেশ কিছু কাজ ছিল তাই শুক্রবারে ঘুমাতেও একটু দেরি হয়ে গেছে। যার কারণে প্রায় দুপুর বারোটার সময় ঘুম ভেঙেছে শরীর এতটাই ক্লান্ত ছিল। সচরাচর এত দেরি করে আমি কখনোই ঘুম থেকে উঠি না। কিন্তু শরীর হয়তো অনেকটা ক্লান্ত ছিল তাই সেদিন খুব বেশি দেরি টের পেয়েছিলাম। এমন ঘটনা আমার সাথে প্রায়ই ঘটে যেদিন একটু বেশি কাজ থাকে কিংবা কোথাও যাওয়ার থাকে সেদিন দেরি করে ঘুম ভাঙ্গে এবং এসব ঘটনা হয়তো আপনাদের সাথে ঘটেছে।
এবার আমার পরিকল্পনা ভিন্ন ছিল। আমি সাধারণত বেশ কয়েক মাস ধরেই ট্রেনে ট্রাভেল করছি এবং ট্রেনে ট্রাভেল করতে অনেকটাই স্বাচ্ছন্দ বোধ করি। কিন্তু শনিবারে নীলফামারীর ট্রেনের বন্ধের দিন ছিল তাই সেদিন আর কোন ট্রেন চলাচল করেনি ঢাকা নীলফামারীর রুটে। তাই বাধ্য হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম খুব তাড়াতাড়ি সকালে ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে দুপুরবেলা যে কোন একটি বাস স্ট্যান্ড থেকে নীলফামারের বাস চেপে বসবো। আগে যখন বাসে চলাচল করতাম তখন সাধারণত ঢাকার গাবতলী বাস স্ট্যান্ড থেকেই গাড়িতে উঠতাম কিন্তু এখন আমি যেখানে অবস্থান করছি সেখান থেকে গাবতলী বেশ দূরে হয়ে যায়। এর থেকে মহাখালী এবং আব্দুল্লাহপুর এই আমার কাছ থেকে একটু কাছে মনে হয়। তাই এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আব্দুল্লাহপুর থেকে নীলফামারীর বাসে উঠবো
যেহেতু ঢাকায় আমি একাই থাকি তাই রুমের সবগুলো কাজ আমাকেই করতে হয়। তাই তাড়াহুড়ো করে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে সম্পূর্ণ রুম গুছিয়ে তারপরে আমি বেরিয়ে পড়লাম ঢাকার উদ্দেশ্যে।বর্তমানে ঢাকা সহ পুরো বাংলাদেশেই অনেক গরম আবহাওয়া বিরাজ করছে। এমতাবস্থায় আমি চিন্তা করেছিলাম হয়তো দুপুরবেলা কোন যানজট থাকবে না। তবে এটা আমার একান্তই ভুল ধারণা ছিল। বাসা থেকে বের হয়েই যখন আমি ঢাকার দিকে যাচ্ছিলাম পুরো রাস্তায় জ্যামে ভরা ছিল গাড়ির চাকা কোনভাবেই চলছে না। এইদিকে আবার প্রচন্ড গরম সব মিলিয়ে একটা হ য ব র ল বিচ্ছিরি অবস্থা হয়ে গিয়েছিল।
যেখানে আমার পরিকল্পনা ছিল দুপুরের বাসে করে নীলফামার যে যাওয়া সেটা তো আর হলো না। অনেক কষ্টে আব্দুল্লাহপুরে গিয়ে শুনে বাস সবগুলোই রাতে রয়েছে দিনের বেলা কোন বাস নেই। সেই সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত সাড়ে নয়টার পর্যন্ত কাউন্টারে বসে অপেক্ষা করছিলাম। এই দিকে আমি যেই বাসের টিকিট করেছি সেটা কাউন্টারে আসতেও আরও আধাঘন্টা বেশি সময় নিয়েছিলো।সব মিলিয়ে এই গরমের মধ্যে একটু ভোগান্তিতেই পড়তে হয়েছে। আমার যতদূর ধারণা ছিল আব্দুল্লাহপুর থেকে সব সময় নীলফামারির বাস চলাচল করে অর্থাৎ দুপুরেো সকালে, বিকেলে, সন্ধ্যায় কিন্তু এই ধারণাটা সম্পূর্ণই ভুল ছিল। যাই হোক নতুন একটি অভিজ্ঞতা হল। তারপরে সময় মতো বাস আসলে পাশে চেপে বসে এবং সোজা আমার নীলফামারীতে চলে আসে। মনে হয় যেন কত বছর নীলফামারীতে আসেনি, সেই শেখ হাসিনার আমলে নীলফামারীতে এসেছিলাম আর এখন আসলাম। হাহাহা।
তারপরেও অনেক তাড়াতাড়ি বাসায় চলে এসেছি। সেই বাস খুব দ্রুতই চালিয়ে আমাকে আমার গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছিল। যেখানে ট্রেনের ট্রাভেল করতে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা সময় লাগে, আজ মাত্র সাত ঘণ্টায় ঢাকা থেকে একদম নীলফামারীতে নামিয়ে দিল আজকের এই বাস। যাইহোক সবমিলিয়ে আজকে বেশ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি এবং এই অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগিয়ে হয়তো পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। আজকের মত এখানেই শেষ করছি আপনারা সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: ঢাকা টু নীলফামারী || নতুন অভিজ্ঞতা
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
একজনের শাসন আমলে এসেছিলেন আবার নতুন শাসন আমলে বাড়ি এলেন ব্যাপারটা সত্যিই ভালো লেগেছে। আপনার মা আপনাকে ডেকেছে বলেই তাড়াহুড়ো করে বাসায় এসেছেন। তবে জ্যামের মধ্যে জার্নি করা খুবই কষ্টের। ঢাকা থেকে নীলফামারী এসেছেন জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া।
তাহলে তো বেশ কষ্ট হয়ে গিয়েছিল আপনার। কারণ অপেক্ষা করাটা খুবই বিরক্তিকর একটি কাজ। আপনার উচিত ছিলো গুগলে সার্চ দিয়ে আব্দুল্লাহপুর কাউন্টারের মোবাইল নম্বর কালেক্ট করে,ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করে বের হওয়া। যাইহোক নীলফামারিতে অল্প সময়ের মধ্যেই ঠিকমতো পৌঁছাতে পেরেছেন, জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।