মহাকাশ বিজ্ঞান ভিত্তিক সিরিজ || হোয়াইট ড্রফট, নিউট্রন ষ্টার, ব্ল্যাকহোল

হোয়াইট ড্রফট আবিষ্কারের পরে বিজ্ঞানীরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিল না যে এই হোয়াইট ড্রফটেরর চেয়ে বেশি ঘনত্ব বস্তু এই মহাবিশ্বে হতে পারে। তারপরেও হোয়াইট ড্রফট এর মধ্যে থাকা অণুগুলোর অবস্থান কিরকম হবে এই বিষয়ে তখনও বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছিলেনন। এরই মধ্যে একজন গবেষক দেখতে পেলেন মহাকাশে খুবই উজ্জ্বল এবং ঘনত্ব বিশিষ্ট একটি বস্তু রয়েছে কিন্তু তার বৈশিষ্ট্য হোয়াইট ড্রফট এর মত নয়।

এই বস্তুতির বৈশিষ্ট্য ও অন্যান্য হোয়াইট ড্রফট এর তুলনায় অনেকটাই ভিন্ন ছিল এবং এর দুই প্রান্ত থেকে অনেক উজ্জ্বল কুইজার নির্গত হচ্ছিল। এই কুইজার হল আলোকরশ্মি। এই আলোকরশ্মি প্রায় লক্ষ লক্ষ আলোকবর্ষ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল এবং এই বস্তুটি এত পরিমাণে ঘুরছিল যা বিজ্ঞানীদের ভাবতে বাধ্য করে।

এই নিউট্রনন স্টার গুলো সূর্যের কোর থেকে সৃষ্টি হয় তবে এইটা তুলনামূলক অনেক বড় সূর্যের ধ্বংসাবশেষ থেকে তৈরি হয় এবং মহাবিশ্বের সবচেয়ে মসৃণ বস্তু হচ্ছে এই নিউট্রন স্টার। এই নিউট্রন স্টারের ঘনত্ব এতটাই বেশি, মনে করুন আমাদের এই সব সম্পূর্ণ পৃথিবী কে সংকুচিত করে টেনিস বলের আকারে নিয়ে আসতে যেরকমটা সিচুয়েশন তৈরি হবে ঠিক একই সিচুয়েশন ক্রিয়েট হয় নিউট্রন ষ্টার এর ক্ষেত্রে। তাহলে একবার চিন্তা করে দেখুন এই নিউট্রনন স্টারের ঘনত্ব কতটা বেশি! এক-চামচ নিউট্রন স্টারের ঘনত্ব লক্ষ মেট্রিক টন পর্যন্ত হতে পারে।

এই নিউট্রন ষ্টার এর মধ্যে থাকা অণুগুলো পরস্পরের কাছে এতটাই কাছাকাছি এসে পরে যার কারণে অণুগুলোর নতুন একটি গঠন সৃষ্টি হয়। যার বিষয়ে এখনও বিজ্ঞানীরা স্পষ্টভাবে ধারনা করতে পারেনি। তবে আশা করা যায় পরবর্তীতে এই বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা পাব। কিভাবে অণুগুলো এত কাছাকাছি চলে আসে এবং অনু অবস্থা কেমন হয় কিংবা নতুন কোনো এলিমেন্ট তৈরি হয় কিনা এই বিষয়ে এখনও আমরা তেমন কোনো তথ্য জানিনা।

নিউট্রন ষ্টার মহাবিশ্বের উজ্জ্বলতম বস্তুদের মধ্যে অন্যতম। এই নিউটন স্টারের কুইজার যে দিকে এদিকে থাকবে সেই দিকে ধ্বংস অনিবার্য। তবে আমাদের পৃথিবীবাসীর জন্য স্বস্তির বিষয় হচ্ছে আমাদের কাছাকাছি তেমন কোনো নিউট্রন স্টার নেই। নিউট্রন ষ্টার এত ঘনত্ব বিশিষ্ট হওয়ার কারণ হচ্ছে যে সূর্য থেকে নিউট্রন স্টার জন্ম নেয় সেই সূর্যের সম্পূর্ণ ভর সেই নিউট্রনন স্টারের মাঝে চলে আসে। সেই সূর্যের গ্রাভিটি ও সেই নিউট্রনের মধ্যে চলে আসে। তাই এই নিউট্রনন স্টারের ঘনত্ব অনেক বেশী। তবে আপনি যদি মনে করে থাকেন এই নিউট্রন স্টার মহাবিশ্বের সবচেয়ে ঘনত্ব বস্তুর তাহলে আপনি ভুল ধারণা করছেন। এর থেকেও ঘনত্বমত বস্তু হচ্ছে ব্ল্যাকহোল। সেই ব্ল্যাকহোল সম্পর্কে জানব বিজ্ঞানভিত্তিক সিরিজের তৃতীয় পর্বে।

আমাদের এই মহাবিশ্বে এখনো অনেক বস্তু রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে আমরা কোন তথ্যই জানি না। শুধুমাত্র মহাবিশ্বের যেসব উজ্জ্বলতম বস্তু রয়েছে এবং যেগুলো আমরা দেখতে পাই সেসব কিছুই আমরা আবিষ্কার করতে পেরেছি। এমন এমন জায়গা রয়েছে যেখানে মহাবিশ্ব এত দ্রুত সরে যাচ্ছে যেখানে থেকে আলো আমাদের পৃথিবীতে এসে পৌঁছায় না। সেই জায়গা গুলোকে কখনোই আমরা আবিষ্কার করতে পারবোনা।

মহাবিশ্বের প্রত্যেকটা বস্তু একে অপরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে কিন্তু এই সরে যাওয়ার গতি কোন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভিজিবল ইউনিভার্স অর্থাৎ যে বস্তুর আলো আমাদের পৃথিবী পর্যন্ত এসে পৌঁছায়। আপনারা জেনে অবাক হবেন শুধু মাত্র 5% মহাবিশ্ব আমরা এক্সপ্লোর হতে পেরেছি কিংবা এই 5% মহাবিশ্ব আমরা আমাদের চোখে দেখতে পারবো। এর বাকিগুলো আমরা কখনোই দেখতে পারবোনা। কারণ এই মহাবিশ্বের বিস্তার কোন কোন জায়গায় আলোর গতির থেকেও বেশি। কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব? সেই বিষয়টি এখনও বিজ্ঞানীরা সমাধান করতে পারেনি......

_{Image Source}

মহাবিশ্ব যেমন সুন্দর তেমনি রহস্যময় তাই এই মহাবিশ্বের বিষয়গুলো প্রতিনিয়ত পড়ার চেষ্টা করি। এইসব বিষয়গুলো কোন না কোন বই থেকে কিংবা কোন আর্টিকেল আমি পড়েছি এবং সেই বিষয় গুলোকে নিজের মতো করে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করলাম। আশা করছি আমি সহজ ভাষায় উপস্থাপন করতে পেরেছি। বইয়ের ভাষা কিংবা আর্টিকেলের ভাষা গুলো অনেক জটিল হয়ে থাকে তাই নিজের মতো করে আপনাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি সবাইকে ধন্যবাদ।

---

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

---

---

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP	500 SP	1000 SP	2000 SP	5000 SP

---

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

---

---

বিষয়: মহাকাশ বিজ্ঞান ভিত্তিক সিরিজ || হোয়াইট ড্রফট, নিউট্রন ষ্টার, ব্ল্যাকহোল

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......