দাবদাহের পর একটু স্বস্তির বৃষ্টি
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। বেশ কয়েকদিন প্রচন্ড গরমের পরে এখন বাংলাদেশসহ পশ্চিমবঙ্গেও প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে পরিবেশটাও একটু শীতল হয়ে উঠেছে। সবমিলিয়ে একটি মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে কিন্তু তারপরও ভোগান্তির শেষ নেই। সেই সব বিষয়গুলো নিয়েই আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। তবে চলুন শুরু করি।
বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গসহ বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় রিমেল নামক ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছেন। এতে করে সারাদিনই প্রচন্ড ঝড়ো বাতাস এবং সেই সাথে বৃষ্টিও হচ্ছে। এতে করে জনজীবনের বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় পানি জমা হয়ে অনেকটা বন্যার মত অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা এবং ঢাকার আশেপাশের এলাকা গুলোতে আনুমানিক সকাল আটটা থেকেই বৃষ্টি এবং ঝড় শুরু হয়েছে সেই বৃষ্টি এখনো থামছে না। এখন বাজে রাত তিনটা। এখন আমি পোস্ট লিখতে বসেছি। কারণ যে কোন সময় আমার এই ফোন বন্ধ হয়ে যাবে। গতকাল সকাল আটটা থেকে আমাদের এই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ নেই।
সকাল আটটা থেকে প্রায় ১২ ঘণ্টা মানে রাত আটটা অব্দি আমার ফোনের চার্জ ছিল। এরপরে আমার ফোন টিও বন্ধ হয়ে যায়। একটি বন্ধুর পাওয়ার ব্যাংক নিয়ে ফোনে চার্জ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এখন খুব বেশি পরিমাণে চার্জ নেই ফোনের মধ্যে। এছাড়াও প্রায় ১৬-১৭ ঘন্টা হয়ে যাচ্ছে, আমাদের এই এলাকাতে বিদ্যুৎ নেই। প্রচন্ড ঝড়ের কারণে বৈদ্যুতিক তারের খুটিও উঠে পড়েছে। এদিকে ল্যাপটপটিও চার্জ নেই এবং আমার পাওয়ার ব্যাংক এবং চার্জার লাইট যেগুলো ছিল সবগুলোই প্রায়ই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন যদি আগামীকালও বিদ্যুৎ সংযোগ না আসে তাহলে হয়তো সারাদিনই আমাকে অফলাইনে কাটাতে হতে পারে।
বাসায় যদি আইপিএসও থাকত তাহলেও হয়তো এত ঘন্টা ব্যাকআপ দিত না। বর্তমানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সংযোগের যা অবস্থা হয়েছে, এতে করে আমাদের সাধারণ জনগণের এই বেশি ভোগান্তির মধ্যে পরছে। গরমের দিনে তো এমনিতেই ২-১ ঘন্টা পরপর লোডশেডিং হয়। এছাড়াও ভুল করেও যদি দুই এক ফোঁটা বৃষ্টির পানি পরে সেক্ষেত্রেও আবার এক দুই ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুৎ থাকে না। এমন একটা অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে বিভিন্ন ধরনের কাজ অসমাপ্তই থেকে যাচ্ছে কিংবা পেন্ডিং রাখতে হচ্ছে। বিশেষ করে আমরা যারা অনলাইন নির্ভরশীল তাদের জন্য ভোগান্তিতে হয়তো একটু বেশিই থাকে। কারণ আর যাই হোক না কেন ১৭-১৮ ঘন্টা কোন মোবাইল ফোন কিংবা ল্যাপটপ ব্যাকআপ দিতে পারে না। এখনো জানিনা আগামীকাল কখন বিদ্যুৎ সংযোগ ঠিক হবে।
সব মিলিয়ে আবহাওয়া একটু শীতল হয়েছে, ঠিক আছে তবে অন্যান্য সব ধরনের কাজ প্রায় বন্ধর পর্যায়ে রয়েছে। এখন যদি আমার এই ফোনটি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সম্পূর্ণভাবেই আমি অফলাইনে চলে যাব। এছাড়াও একটি বড় সমস্যা হচ্ছে আমাদের মোবাইল প্রোভাইডার ডাটা সার্ভিস। বিকেলবেলা অন্য একটি কমিউনিটির কিউরেশন করার কথা ছিল। অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু আমার মোবাইল ফোনের ডাটা দিয়ে কোন ভাবেই কোন কিছুই করতে পারছিলাম না। এছাড়াও Discord পর্যন্ত ঢোকা যাচ্ছিল না। সারাদিনে অনেক কাজেই ছিল কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণে নেট না থাকার কারণে বেশ কিছু কাজ ইতিমধ্যে পেন্টিং পড়ে গেছে। আগামীকাল যদি বিদ্যুৎ সংযোগ এবং ইন্টারনেট সংযোগ ঠিক না হয় তাহলে বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
ফোনের মধ্যে এখনো ৩০% চার্জ রয়েছে এবং ডাটা অন করার সাথে সাথেই এখন ডাটা অন হয়ে গেল। আসলে প্রচন্ড পরিমাণে ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে এই সাধারণ বিষয়গুলো সমস্যা হবে। এই বিষয়টা কিন্তু স্বাভাবিক এবং এটা আমাদেরকে মেনে নিতেই হবে। আমার আশেপাশের অনেক বাসার উপরে ছাদ উড়ে গেছে এবং যারা বিভিন্ন ধরনের টিনের বাসায় থাকে সেসব বাসার মধ্যে অনেক সমস্যা হয়ে গেছে। এছাড়াও অনেকগুলো গাছ উপড়ে পড়েছে, যেটা আমি উপর থেকেই দেখছি। যারা সাধারণত ফ্লাটে থাকেন তাদের তো বেশ কোন সমস্যা হয় না। কিন্তু যারা একটু নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের তাদের জন্য এই সময়টা অনেক কষ্টকর।
আসলে পরিবেশের অবস্থা যাই হোক না কেন সেই অবস্থার মোকাবেলা আমাদের সবাইকে মিলেই করতে হবে। ভোগান্তি শুধুমাত্র আমার একা হচ্ছে তা কিন্তু নয়। ভোগান্তি প্রায় সবারই হচ্ছে এবং এটা প্রকৃতির খেলা, এটা মেনে নিতেই হবে। সব মিলিয়ে বেশ কয়েকদিন গরমে কাটানোর পরে এখন একটু স্বস্তিতে আছি। যদিও বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে যেগুলোর কথা ইতিমধ্যেই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম কিন্তু তারপরও অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ পরিবেশটা অনেক শীতল এবং ইনজয় করছি। আজ আবার দুপুরবেলা সেই বৃষ্টিতে গোসল করেছি। অনেকদিন পর মনে হয় বৃষ্টির পানিতে ভিজলাম এবং বৃষ্টির পানিতে গোসল করে অনেকটাই ভালো অনুভব করছি।
আপনারা অনেকেই হয়তো জেনে থাকবেন আমি একটু ভীতু প্রকৃতির লোক, অনেকটাই ভয়ের মধ্যে থাকি। আজকেও আমার বেশ ভয় লাগছিল, ভয় লাগার অনেক কারণ রয়েছে এবং ইতিমধ্যে বলেছি আমাদের এই এলাকায় সেই সকাল আটটা থেকে কারেন্ট নেই। চার্জার লাইট এবং পাওয়ার ব্যাংক মিলে দশটা পর্যন্ত কোন ভাবে সামাল দিয়েছি। এর পরবর্তী থেকে এই অন্ধকারে একদম বসে আছি। এছাড়াও এত জোরে বাতাস বইছে, বাতাসের এক বিকট শব্দ, সেটা আমার রুমে আসছে। রুমের জালানা, দরজা সবকিছুই বন্ধ কিন্তু বাতাস এত জোরে জোরে বাড়ি মারছে। সেখান থেকেও মাঝে মাঝে অনেক জোরে জোরে শব্দ হচ্ছে। এত ধরনের বিকট শব্দ যা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। এতো কিছুর মাঝে অন্ধকারের মধ্যে ঘুমানোটা আমার পক্ষে একটু ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেহেতু ফ্ল্যাটে একা থাকি তাই ভয়টা আরো বেশি লাগছে। যাইহোক আশা করা যায় সকালের মধ্যেই এই ঝড়-বৃষ্টি কমে। যাবে আশা করি আলো ফুটলেই একটা স্বস্তি ঘুম দেবো। আজকের মত এখানেই শেষ করছি। সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন ধন্যবাদ সবাইকে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: দাবদাহের পর একটু স্বস্তির বৃষ্টি
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
আসলে ভাইয়া গরমে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল। আবার অতিরিক্ত ঝড় বৃষ্টির কারণে মানুষ অস্হির। আর এই ঝড় বৃষ্টি জন্য বেশি ক্ষতি হচ্ছে কৃষক ও দরিদ্র মানুষের। আসলে কৃষক ও দরিদ্র মানুষের সব জায়গায় কষ্ট রোদ কিংবা বৃষ্টি। কিছু কিছু মানুষের ঘর ভেঙে গিয়েছে তাদের থেকে হয়তো আমরা কষ্ট নেই।আর বিদ্যুৎ এমনিতে থাকে না আর ঝড় হলে তো কথায় নেই। যাইহোক আশাকরি আজ থেকে আবার স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।ধন্যবাদ ভাইয়া।
ঠিক বলেছেন আপু, এই ঝড়ের কারণে অনেক মানুষ নিঃস্ব হয়ে গিয়েছে। অনেক মানুষের মাথা গোজার ঠাঁই নেই, তাদের তুলনাই সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে ভালই রেখেছে।
ঝড় বৃষ্টির পর গরমের তীব্রতা কিছুটা কমলেও, বিদ্যুৎ নেই বলে বেশ ভোগান্তির মধ্যে রয়েছি। দীর্ঘ ২৯ ঘণ্টা যাবৎ আমাদের এখানে বিদ্যুৎ নেই। কারণ বিভিন্ন জায়গায় বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গিয়েছে। কখন বিদ্যুৎ আসবে সেটাও বলা যাচ্ছে না। ভাগ্যিস আমার ২ টা পাওয়ার ব্যাংকে চার্জ ছিলো। নয়তো একেবারেই কাজ করতে পারতাম না। যাইহোক সাবধানে থাকবেন ভাই। সবার জন্য অনেক অনেক দোয়া এবং শুভকামনা রইল।
আপনার এবং আমার এলাকা একই বলা চলে, আমাদের এদিকেও ঠিক একই অবস্থা।
বিকেল ৫ টা বাজে বিদ্যুৎ এসেছে ভাই। এখন খুবই শান্তি লাগছে। আলহামদুলিল্লাহ বড় একটি বিপদ থেকে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে রক্ষা করেছেন।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া, গতকাল থেকে দুই দিন আমাদের এলাকাতে কোন কারেন্ট নেই। দেখছি সব দিকেই একই অবস্থা। ঠিক বলেছেন এই ভোগান্তি কিন্তু আমাদের সবারই হচ্ছে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ঠান্ডা আবহাওয়াটা আবার ভালো লাগতেছে। তবে সব রকম পরিস্থিতি মানিয়ে আমাদেরকে চলতে হবে। এটাই হচ্ছে কথা।
ঠিক বলেছেন আপু পরিস্থিতি যেমনই হোক সামলে নিতে হবে এবং সেভাবেই চলতে হবে।