জীবন যখন যেমন
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনার সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনার সবাই অনেক ভালো আছেন। আসলে পোস্টার টাইটেল দেখে বুঝতে পেরেছেন কি বিষয়ে কথা বলব। আসলে আমরা মানুষ মাত্রই ভুল করি মানুষ মাত্রই আবার অভিজ্ঞতা অর্জন করি। সবকিছুর মাঝে রয়েছে নতুন নতুন শেখার কিছু বিষয়, নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হওয়ার কিছু বিষয়। এছাড়াও নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার একটি বিষয় থাকে। কিন্তু তারপরও আমরা সব জায়গায় মানিয়ে নিতে পারি না। এটা আসলে আমাদের দোষ নয় বরঞ্চ এটা একটি পরিবেশের দোষ।
২০১৫ সালের আগে আমি কখনো নীলফামারীর বাহিরে থাকি নি। এমনকি আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় গেলেও সেখানে রাত যাপন করেনি। কিন্তু সেই আমি এখন বছরের পর বছর একাই ঢাকায় আছি। জীবনযাত্রার মান যেখানে যেমন দেখতে সেখানে তেমনভাবেই নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়। এই বিষয়টি বুঝতে আমার বেশ কয়েক বছর সময় লেগেছে। যখন আমি নতুন নতুন ঢাকায় যাই তখন সেই পরিবেশ হিসেবে খাপ খাইয়ে নেওয়াটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জের মত হয়ে পরে।
জ্ঞান হওয়ার পর থেকে আমি রুম কখনো শেয়ার করিনি কারো সাথে। পরবর্তীতে ঢাকায় যাওয়ার পরে সেই বিষয়টিও পরিবর্তন করতে হয়েছে। সেখানে নতুন নতুন রুম মেট ছিল, তাদের সব সুবিধা অসুবিধা দেখেই আমাকে চলতে হতো এবং আমার সব সুবিধা অসুবিধা দেখে তাদেরকে চলতে হতো অর্থাৎ এই বিষয়টি ছিল অনেকটাই চ্যালেঞ্জিং।
ঢাকা গিয়ে নতুন কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম এবং সেখানে নতুন নতুন বন্ধু বান্ধবের সাথে পরিচিত হয়েছিলাম। সবার সাথে কিভাবে বন্ধুত্ব করব, কিভাবে সবার সাথে মানিয়ে চলবো এই বিষয়টাও কিন্তু একটি চ্যালেঞ্জিং ছিল। তারপরও সেই সব বাধা অতিক্রম করে আজ আমি সেসব বিষয় শিখেছি এবং কিভাবে একা চলতে হয় সেই বিষয়টিও শিখেছি।
একাকীত্ব মানুষকে অনেক কিছু শিখতে সাহায্য করেন যা আপনি পরিবারের সাথে থেকে কখনো শিখতে পারবেন না। ঢাকা শহরে যাওয়ার পরে সব থেকে বড় একটি চ্যালেঞ্জ ছিলো ভাষা বোঝা। কারণ ঢাকার মানুষের একটু অন্যভাবে কথা বলে সেসব বিষয়গুলো শিখতেও অনেক সময় লেগেছে। এখন প্রায় বাংলাদেশের সব অঞ্চলের কথাই বুঝি তবে সিলেট অঞ্চলের কথা বুঝতে একটু সমস্যা হয়।।
তবে বর্তমানে এই বিষয়গুলো নিয়ে খুব একটা বেশি সমস্যা হয় না। ঢাকায় থাকলে সেই অঞ্চলের ভাষায় কথা বলি এবং বাসায় আসলে নীলফামারীর আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলি এসব বিষয়ে এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছি।
ছোটবেলা থেকেই বাবা মায়ের টুকটাক কাজে সহযোগিতা করতাম এবং এই সহযোগিতার জন্যই ঢাকায় গিয়ে সারভাইভ করা আমার পক্ষে সম্ভব হয়েছে। আসলে ঢাকায় গেলে নিজের সব কাজ নিজেকেই করতে হয়। আপনি অসুস্থ থাকুন আর যাই থাকুক না কেন সময় মত সব কাজ করতে হবে তা না হলে আপনার শরীর খারাপ হয়ে যাবে। এছাড়াও ঢাকার পানি অন্যান্য অঞ্চলের থেকে অনেকটাই খারাপ বলা চলে।
যারা প্রথমবার ঢাকায় আসেন তাদের মূলত পানিবাহিত রোগ হয়। কিন্তু এই বিষয়টি আমার হয়নি কারণ অন্যান্যদের তুলনায় হয়তো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আমার একটু বেশি ছিল। তবে এখন সব অঞ্চলের সাথেই মিলে মিশে গেছি। আমার এই ছোট্ট জীবনে পড়াশোনার জন্য বিভিন্ন জেলায় থাকতে হয়েছে। ঢাকায় থেকেছি, গাজীপুরে থেকেছি, এছাড়াও নরসিংদীতে থেকেছি, এখন আবারো ঢাকায় অবস্থান করছি। মূলত এইসব অঞ্চলের মানুষের সাথে খুব ভালো ভাবেই মিশতে পেরেছিলাম।
জীবন যখন যেমন ঠিক সেভাবেই নিজেকে গুছিয়ে নিতে হবে তা না হলে ভারী বিপদের মধ্যে পড়তে হবে। এই বিষয়টি আমি এই ছোট্ট জীবনে শিখতে পেরেছি। যাইহোক হাজার কথা বাড়াবো না। আজকের মত এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ সবাইকে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
| 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: জীবন যখন যেমন
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
আসলে আমাদের প্রয়োজনেই জীবনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কিছুর সাথে মানিয়ে চলতে হয়। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদেরকে চ্যালেন্জ এর মোকাবেলা করতে হয়। তাই যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে যত তাড়াতাড়ি মানিয়ে নেওয়া যায় ততোই ভালো। আর আমি একটা কথা বিশ্বাস করি যে,মানুষ অভ্যাসের দাস। তাই মানুষ চাইলে অবশ্যই নিজেকে বা নিজের চিন্তা ভাবনাকে পরিবর্তন করতে পারে। যাইহোক এমন চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।