জীবন নামের গোলকধাঁধার মাঝে আমি
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সবাই অনেক অনেক ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহতালার অশেষ রহমতে আমিও ভালো আছি। তবে কয়েকদিন ধরে শরীরে খুব একটা বেশি বল পাচ্ছি না। অনেকটা অসুস্থ বোধ করছি, এদিকে আবার জ্বর, ঠান্ডা, কাশি লেগেই রয়েছে। তারপরও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
মরীচিকা কিংবা গোলকধাঁধার নাম তো অনেকেই শুনেছেন, কেউ কেউ তো বিভিন্ন সিনেমাতেও দেখেছেন। তবে আমি যদি আপনাদেরকে বলি আমরা সবাই গোলক ধারার মধ্যে রয়েছি, জীবন নামের এমন একটি মরীচিকা। যেই মরীচিকা থেকে বের হওয়ার আমাদের কারোরই সাধ্য নেই। একবার কি চিন্তা করে দেখেছেন আমাদের এই জীবনের মূল উদ্দেশ্য কি? ঘুম থেকে উঠেই অফিস, নিত্যদিনের কার্যক্রম আবার অফিস থেকে বাসায় এসে আবার ঘুম, এর মধ্যেই আমরা ৯৫ শতাংশ মানুষ সীমাবদ্ধ।
প্রত্যেকটি মানুষের জীবন নানান ধরনের সমস্যায় জর্জরিত। একটি সমস্যা থেকে বের হলে আর একটি সমস্যা হাজির হয়ে যায়। এভাবে করেই সমস্যা এবং সমস্যার সমাধান নিয়েই আমাদের এই জীবন চলছে এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চলতেই থাকবে। মাঝে মাঝে গভীর রাতে এই বিষয়গুলো বেশ ভাবায় আমাকে। আসলেই এই জীবনের অর্থ কি? আমরা জন্ম নিয়েছি একদিন ঠিক মরে যাবো, মাঝখানে এই কিছুটা সময়ের জন্যই এতটা আয়োজন। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের দিকে তাকালে আমরা একদম নিঃস্ব এবং একাকীত্ব জীবনযাপন করছি। পৃথিবী ছাড়া অন্য কোন গ্রহে এখনো পর্যন্ত প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আমাদের এই জীবন কি কোন কাকতালীয় ঘটনা? কেনই বা পৃথিবীতেই শুধুমাত্র জীবন নামের মরীচিকা গঠিত হয়েছে? নাকি এর পিছনে সত্যি কোন উদ্দেশ্য রয়েছে, এই বিষয়গুলো মাঝে মাঝে গভীর চিন্তাভাবনার দাগ ছড়িয়ে যায়। আবার মাঝে মাঝে চিন্তা করছি বর্তমানে আমি কি করছি? আমার ভবিষ্যৎ জীবনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য টাই বা কি? ঘুম থেকে উঠে অফিস, অফিস থেকে এসে কমিউনিটির কাজ এরপরে পড়াশুনা রান্নাবান্না তারপরে আবারো ঘুম। সত্যি কথা বলতে এত কিছুর মাঝে আমার নিজের অস্তিত্বটাকেই মাঝে মাঝে হারিয়ে ফেলি।
জীবন নামের এই বাস্তবতা আর ভালো লাগেনা। প্রতিনিয়তই একই কর্মকান্ড, একই ধরনের কার্যক্রম। নিজেকে নিয়ে যে একটু চিন্তাভাবনা করব সেই সময়টুকু হয়ে ওঠো না। মাঝে মাঝে এতটাই ক্লান্ত লাগে যা বলে বোঝানোর মত নয়। এইতো গত মাসে এমন কিছু সময় পার করলাম যাতে করে পরপর দুদিন টানা ঘুম হয়নি। সারা রাত অফিস করে থেকে এসে ভার্সিটি গিয়েছি পরীক্ষা দিতে, পরীক্ষা দিয়ে এসে আবার অফিসে গিয়েছি রাতে, আবার ও অফিসের কাজ শেষ করে সকালে বাসায় এসে তবে ঘুমিয়েছি, এভাবে করে যে কতগুলো দিন যে কাটিয়েছি তার হিসেব নেই।
মাঝে মাঝে নিজের উপর এতটাই রাগ হয়, ইচ্ছা করে সবকিছু ভেঙে ফেলি, জীবনটা শেষ করে দেই। পরবর্তীতে নিজেকেই আবার শান্ত করে নেই, আসলে এই কথা গুলো বলার মত একজন মানুষ নেই। সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে এসে যখন নিজের রান্নাটা ও নিজে করে খেতে হয় তখন পৃথিবীর সব থেকে অসহায় ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে মনে করি। তবে আজকাল আমার মানসিক অবস্থা খুব একটা বেশি ভালো যাচ্ছে না। সেটা আমিও ব্যক্তিগতভাবে বুঝতে পারছি। অল্পতেই যে কোন বিষয়ে রেগে যাচ্ছি, আবার কাজ করতে গিয়ে কাজের মধ্যে ছোটখাটো প্রচুর ভুল হচ্ছে।
জানিনা পড়াশুনা এবং চাকরিটা কতদিন এভাবে একসাথে কন্টিনিউ করতে পারব। তবে যেদিন সব ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যাবে হয়তো দূরে কোথাও চলে যাব। গভীর রাতে এই পোস্টটি লিখছি, তাই অনেকটা হয়তো ইমোশনালি কথা বলে ফেললাম। পোস্টের মধ্যে কোন ভুল ত্রুটি থাকলে নিজ গুণে ক্ষমা করে দেবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: জীবন নামের গোলকধাঁধার মাঝে আমি
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
সত্যি কথা বলতে কি ভাইজান মানুষের জীবন বড়ই সংগ্রামীময়। হয়তো অফিসের দায়িত্ব এদিকে কমিউনিটির দায়িত্ব আবার রান্না বারা করে খাওয়ার ঝামেলা, এদিকে লেখাপড়ার বিষয় তো রয়েছে। তবুও তার মধ্য দিয়ে মানিয়ে নিতে হবে। আর এদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে নিজের শরীর যেন ভালো থাকে। আর পথে ঘাটে চলতে অবশ্যই সজাগ ও সচেতন ভাবে চলতে হবে, যেন কোন সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয়।
ভাই যথেষ্ট সতর্ক থাকার চেষ্টা করি, তবে মাঝে মাঝে মনোবল হারিয়ে ফেলি।
কথাগুলো ইমোশোনাল না ভাই একেবারে বাস্তবতা ছিল। আসলেই সারাদিন অফিস করে বাসায় এসে ঘুম পরের দিন ঘুম থেকে উঠে আবার অফিস। এভাবেই তো চলছে জীবন। এটা যেন একটা নিয়মতান্ত্রিক বেঁচে থাকা। কোন নতুনত্ব নেই কোন আনন্দ নেই কোন আশা নেই। কেমন জানি একটা স্থবির হয়ে আছে সব। জীবন নামের এই গোলকধাঁধা থেকে বের হতে গিয়ে সারাজীবন চলে যায়।
ঠিক বলেছেন ভাই, তবে মাঝে মাঝে অনেকটাই খারাপ লাগে।
এখনকার বেশিরভাগ মানুষ রোবোটিক জীবনযাপন করছে। কারণ চারিদিকে তাকালে দেখি সবাই যার যার মতো করে ব্যস্ত। কারো সাথে মন খুলে দু'চারটে কথা বলার সময়ও নেই। আর আপনি তো আরও ব্যস্ততম সময় কাটাচ্ছেন। জীবনটাকে একেবারেই উপভোগ করতে পারছেন না। আমি হলে তো এতকিছু একসাথে ভুলেও সামলাতে পারতাম না। কিন্তু আপনি যে সবকিছু কিভাবে ম্যানেজ করেন,সেটা ভেবেই অবাক হয়ে যাই। পড়াশোনার ঝামেলাটা না থাকলে, এতোটা চাপ হতো না আপনার। যাইহোক সবার জন্য শুভকামনা রইল, যাতে করে দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি, সবাই সবার ছোট্ট জীবনটা উপভোগ করতে পারে। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
তারপর ও চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছি ভাই, দেখি কত দিন করে যেতে পারি।