আতঙ্কের নাম এডিস মশা
বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বর একটি আতঙ্কের নাম এবং বর্তমানে ঢাকা সহ বাংলাদেশের সব জেলায় এই ডেঙ্গুর প্রভাব দেখা দিচ্ছে। ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে আজ একটি বিশেষ প্রতিবেদন লিখতে চলেছি, আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।
বর্তমানে বাংলাদেশের ডেঙ্গু জ্বর মহামারি আকার ধারণ করেছে এবং বর্তমান সময় অনুযায়ী প্রায় ৩৭০০০ মানুষ এই ডেঙ্গু জ্বরের আক্রান্ত হয়েছে। যদিও আমরা সকলেই জানি ডেঙ্গু জ্বর সবথেকে বেশি অ্যাকটিভ হয়ে থাকে অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত অর্থাৎ বলা চলে এখনো ডেঙ্গুর প্রভাব পুরোপুরিভাবে শুরু হয়নি তাতেই এই অবস্থা। গত বছরের পরিসংখ্যান দেখলে, ২০২২ সালে মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছিল প্রায় ৭০ হাজারের মতো এবং প্রায় ৩০০ জনেরও বেশি এই ডেঙ্গু ঝরে মারা গেছিলো। এখনো অক্টোবর মাস শুরু হয়নি তাতে করেই বর্তমানে ঢাকা সহ বাংলাদেশের সব জেলার অবস্থা অনেকটাই ভয়াবহ। বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরের রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমত অবস্থায় আপনার আমার কি কি করনীয় সে বিষয়ে আলোচনা করব।
সচরাচর আমরা যেভাবে ডেঙ্গুর লক্ষণগুলো আগে দেখতাম সেই লক্ষণগুলো এখন অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। অর্থাৎ এডিস মশার যে ভাইরাস বহন করে, সেই ভাইরাসের লক্ষণও পরিবর্তন হতে দেখা গেছে। আগে আমরা জানতাম মাত্র অতিরিক্ত জ্বর, গায়ে পায়ে ব্যথা, এছাড়া চোখের পিছনে ব্যথা, ক্ষুধা কমে যাওয়া ইত্যাদি আমরা ডেঙ্গুর লক্ষণ বলে বিবেচনা করি। কিন্তু বর্তমানে আরো কিছু লক্ষণ দেখা দিচ্ছে। যার কারণে আমাদের সাধারন মানুষদের বুঝতে অনেকটাই দেরি হয়ে যাচ্ছে, যে এটা ডেঙ্গুর লক্ষণ! এর কারণে অনেক মানুষ এই পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিয়ে চলে গেছে।
এই তো কিছুদিন আগের কথা একটি খবরে দেখলাম, একটি ছোট বাচ্চার হঠাৎ করে পেট ব্যাথা শুরু হয়ে গেছে। তার পরিবারের মানুষজন এটা বুঝতেই পারেনি এটা ডেঙ্গুর লক্ষণ। পরবর্তীতে শরীর যখন মাত্রা অতিরিক্ত খারাপ হয়ে যায় তখন তারা ডাক্তারের শরণাপন্ন হন এবং ডাক্তার টেস্ট করে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত নিশ্চিত করেন। শেষ পর্যন্ত সেই বাচ্চাটিকে বাঁচাতে পারেনি, সেই বিষয়টি আসলে অনেকটাই মর্মাহত।
আপনারা সকলেই জানেন ডেঙ্গু জ্বরের সুনির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই বরঞ্চ নিজেদেরকে বাঁচিয়ে রাখা, সতর্ক রাখাই গুরুত্বপূর্ণ। ডেঙ্গু জ্বরের ওষুধ তৈরি করার জন্য প্রায় ৭৫ বছর ধরে গবেষণা চলছে তারপরও বিজ্ঞানীরা তেমন কিছু আবিষ্কার করতে পারেনি। বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরের প্রভাব ঢাকা শহরের তুলনামূলক অনেক বেশি দেখা দিয়েছে এবং ঢাকার হাসপাতালগুলোতে এখন শুধুমাত্র ডেঙ্গু রোগীদের দিয়েই ভর্তি রয়েছে।
এখন যদি জ্বরের সাথে মাত্রা অতিরিক্ত মাথা ব্যথা কিংবা পেট ফুলে যাওয়া, বুকে পানি জমা এছাড়াও মাত্রা অতিরিক্ত পেট ব্যথা এসব কিছু হলেই অবশ্যই ডেঙ্গুটে করিয়ে নিতে হবে। এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।
পৃথিবীতে হাজার হাজার প্রজাতির মশা রয়েছে তার মধ্যে এরিস মশা অন্যতম। কারণ এডিস মশাই একমাত্র মশার যেই মশা এই ভাইরাস বহন করতে সক্ষম। এই এডিস মশা বংশবৃদ্ধি যেন না করতে পারে সেই বিষয়ে আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে। বাসার আশেপাশে কোথাও পানি জমে থাকলে সেই পানি অবশ্যই ফেলে দিতে হবে। এছাড়াও সব সময় সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে। যদিও এখন গরমকাল চলছে এই গরমের মধ্যে ও অবশ্যই মশারি টাঙিয়ে ঘুমাতে হবে, শুধুমাত্র রাতের বেলা নয় দিনের বেলায় ও এডিস মশা কামড়ানোর ঝুঁকি থেকেই যায়।
বর্তমানে শিশুরা ডেঙ্গু জ্বরে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। কারণ তাদের চামড়া অনেক পাতলা এছাড়াও তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম। তাই সবসময় আর নিজেদের শিশুদেরকে অবশ্যই নজরে রাখবেন এবং তাদের কোন সমস্যা হলে তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের কাছে গিয়ে সুপরামর্শ গ্রহণ করবেন।
আগেই বলেছি ডেঙ্গু জ্বরের সুনির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই তাই সতর্ক থাকাই আমাদের সকলের জন্য জরুরি। আশা করছি আপনারা সবাই সতর্ক থাকবেন এছাড়াও ঢাকার মধ্যে যারা রয়েছেন তাদেরকে বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ঢাকার অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে ডেঙ্গুর প্রভাব অনেকটাই বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ মাঝে মাঝে বৃষ্টি হয় এবং এই বৃষ্টির পানি গুলো জমে এডিস মশা বংশবৃদ্ধি করে। আজকের মত এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সতর্ক থাকবেন ধন্যবাদ।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: আতঙ্কের নাম এডিস মশা
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
ভাইয়া আসলে এসব খবর শুনলে একেবারে মন খারাপ হয়ে যায়। আর ডেঙ্গুর লক্ষণ যে এতটাই পরিবর্তন হয়ে গেছে এটা ভাবতেও পারিনি। সাধারণত পেট ব্যাথা হলে আমরা কখনোই বুঝতে পারি না যে এটা ডেঙ্গু জ্বর অন্য কিছু ভেবে হয়তো অন্য ডাক্তার দেখাই। পারিনা জানার কারণে এখন অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছে। নিউজে দেখি ঢাকা শহরের হাসপাতালগুলোতে এখন বেশিরভাগই ডেঙ্গু রোগী। এজন্য সবাইকে বেশি বেশি সচেতন হতে হবে।
খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আজ পোস্ট শেয়ার করলেন। সত্যি ই হাসপাতালগুলো রোগী দিয়ে ভরে গেছে। আমাদের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে বাচ্চা আর বয়স্কদের দিকে একটু বেশী খেয়াল রাখতে হবে।এই এডিস মশা দিনে বেশী কামড়ায়।তাই দিনেও বাচ্চাদের মশারী লাগিয়ে দেয়া জরুরী।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
আসলে ঢাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুই তিন মাস পরে যে কি হবে, সেটাই চিন্তা করছি। এমতাবস্থায় সচেতনতা বৃদ্ধি ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। বিশেষ করে বাড়ির আশেপাশের জায়গায় পানি যেন জমে না থাকে, সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। যাইহোক এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিক নিয়ে পোস্ট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
বর্তমান সময়ের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্লগ শেয়ার করেছেন। এডিস মশা ভাইরাস বহন করার জন্যই এটা এত ভয়াবহ মশা। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষ করোনার থেকেও বেশি ভয় পাচ্ছে এই ডেঙ্গুকে। আপনার ব্লগটা পড়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পেলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া।
বর্তমান সময়ে ডেঙ্গু এক আতঙ্কের নাম। এই সময়ে সুস্থ থাকাটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সময়ের সাথে সাথে ডেঙ্গুর লক্ষণগুলো বদলে যাচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। সবাইকে সাবধান হতে হবে এবং নিজের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করতে হবে। ভাইয়া আপনি অনেক সুন্দর ভাবে পুরো বিষয় তুলে ধরেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।