জানা-অজানা মহাবিশ্বের কিছু তথ্য

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। আজ অনেকদিন পর মহাবিশ্বের কিছু ছোটখাটো তথ্য নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম। আশা করি এসব তথ্য আপনাদের ভাল লাগবে তবে চলুন শুরু করি।

আমরা সকলে জানি সূর্য পৃথিবী থেকে ১৩ লক্ষ গুণ বড় এবং মাঝেমাঝে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা সূর্যের তাপমাত্রা থেকেও বেশি! এটা কেন বললাম? পৃথিবীর মধ্যে যে লাভা রয়েছে সেই লাভার গড় তাপমাত্রা হলো ৭০০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং সূর্যের উপরিভাগের তাপমাত্রা হলো ৫০০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস সেই তুলনায় বলাই যেতে পারে সূর্যের থেকে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেশি কিন্তু এই কথাটা পুরোপুরি সত্য নয়। আমরা যেমন পৃথিবীর কেন্দ্রের তাপমাত্রা পরিমাপ করে একটি মান বার করছি সে ক্ষেত্রে যদি সূর্যের কোরের মান তাপমাত্রা নির্ণয় করা যায় তাহলে সেটা ৫ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হতে পারে।

আমরা অনেকেই মনে করি সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবী ঘুরছে যদিও কথাটা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। এই বিষয়টি আমাদের ছোটবেলা থেকেই ক্লাসের মধ্যে শেখানো হয় কিন্তু তারা কি আমাদেরকে ভুল শেখাচ্ছে, প্রশ্ন রইল? বিষয়টি একটু সহজ করে বলার চেষ্টা করি। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন এই বিষয়গুলো বোঝার মত ক্যাপাবিলিটি ছিলনা তাই আমাদেরকে এটাই বলা হতো সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবী এবং বাকি সব গ্রহ ঘুরছে। কিন্তু আসলে এটা সত্য নয় এবং এই বিষয় গুলো সঠিক ভাবে বুঝার ক্ষমতা অর্জন করবেন তখন শুধুমাত্র এই বিষয়গুলো বুঝতে পারবেন তাছাড়া বুঝতে পারবেন না।

পৃথিবী এবং যত সব গ্রহ রয়েছে সেগুলো সূর্যের একটি বেরি সেন্টারকে প্রদক্ষিণ করে ঘুরছে অর্থাৎ সূর্যের কেন্দ্রকে প্রদক্ষন করে ঘুরছে না। এখন প্রশ্ন আসতে পারে এই বেরি সেন্টার টা কি? এটা কি কোন বস্তু নাকি অন্য কিছু!! না এটা কোন বস্তু নয়,, বরঞ্চ এটা একটা পয়েন্ট। সহজ ভাষায় যদি আমি আপনাদেরকে বোঝার চেষ্টা করি সেটা হচ্ছে সূর্য এবং বাকি অন্য সব গ্রহ গুলো এমন একটি পয়েন্টে ঘুরছে যাতে করে আমরা মনে করি অনেকটা সূর্যকে কেন্দ্র করে আমরা ঘুরছি।

আমরা সকলেই জানি মহাবিশ্বের যত বস্তু রয়েছে একে অপরকে আকর্ষণ করে। ঠিক যেমন সূর্য আমাদেরকে আকর্ষণ করছে ঠিক তেমনি বাকি অন্যান্য গ্রহ গ্রহ সূর্যকে আকর্ষণ করছে যার কারনে এই সবকিছুর আকর্ষণ এর মান নির্ণয় করে একটি পয়েন্ট নির্ণয় করা হয় এবং সেই পয়েন্ট কে কেন্দ্র করে মূলত সমস্ত গ্রহ ঘুরছে। যা সূর্যের অনেক কাছে অবস্থিত, তাই আমাদের মনে হয় আমাদের সকল গ্রহ সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে।

বর্তমানে আমাদের এই সূর্যের বয়স প্রায় ৪৫০ কোটি বছর এবং এর বয়স যখন ১০০০ কোটি বছরের অধিক হয়ে যাবে তখন এটা আস্তে আস্তে বড় হতে থাকবে। এমনকি সূর্য আকারে এত বড় হবে বুধ, শুক্র এবং পৃথিবীপৃষ্ঠ পর্যন্ত আকার বৃদ্ধি পাবে। সর্বশেষ সূর্য থেকে সুপারনোভা বিস্ফোরণ হবে। এই বিস্ফোরণের মধ্য দিয়েই আমাদের এই সৌরজগতের শেষ হবে, এই ছিল মোটামুটি একটি ধারণা।

তবে আমাদের হাতে খুব একটা বেশি সময় নেই এখন থেকেই যদি অন্য কোনো গ্রহ বা উপগ্রহ খুঁজে যদি আমরা বসতিস্থাপন না করতে পারি তাহলে হয়তো অদূর ভবিষ্যতে আমাদের মানব সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে এর আগেই হয়তো মানবসভ্যতা নিজেই নিজেদের শেষ করে দেবে।

মনে করুন কোনোভাবে সেই সুপারনোভা বিস্ফোরণ থেকে মানুষেরা বেঁচে গেল এবং অন্য কোন গ্রহতে যেয়ে বসতি স্থাপন করলো তাহলে কি মানুষ সভ্যতা বেচে থাকবে? আমাদের এই মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি এবং অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি একে অপরের কাছে খুব দ্রুত আসছে যা সেকেন্ডে প্রায় ১২০ কিলোমিটার বেগে। এই দুটি গ্যালাক্সি যখন একে অপরের সাথে সংঘর্ষিত হবে তখন হয়তো মানব সভ্যতার কোন অস্তিত্বই থাকবে না। তবে এই বিষয়ে বিজ্ঞানীরা অনেক গবেষণা করছেন। তবে যদি আমরা এই সৌরমণ্ডলের অবস্থান করি তাহলে ভয়ের কোনো আশঙ্কা থাকবে না। কিন্তু ততদিনে হয়তো আমাদের এই সূর্য রেড জায়েন্টে এ পরিণত হবে।

আমাদের এই মহাবিশ্ব কত বড় তা আমরা কল্পনাও করতে পারবোনা। এই মহাবিশ্বের কথা বাদই দিলাম আমাদের এই মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি প্রায় এক লক্ষ আলোকবর্ষ পর্যন্ত বিস্তৃত অর্থাৎ আপনি যদি আলোর গতিতে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ট্রাভেল করেন তারপরও এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে আপনাকে এক লক্ষ বছর সময় লাগবে। কিন্তু আপনারা জেনে অবাক হবেন আলোর গতির ১% ও মানুষেরা অ্যাচিভ করতে পারেনি।

আপনারা কি জানেন আমাদের এই মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি কে রাক্ষসী গ্যালাক্সি বলা হয়। কারণ এর অতীত থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ছোটখাটো অনেকগুলো গ্যালাক্সি কে মিলকিওয়ে নিজের গ্যালাক্সির অংশ করে নিয়েছে এবং এন্ডরোম্যাডাও একটি রাক্ষসে গ্যালাক্সি। সেও তার জীবনকালে অনেকগুলো গ্যালাক্সি নিজের মধ্যে নিয়ে নিয়েছে। এই দুই রাক্ষসী গ্যালাক্সি যদি পরস্পরের সংঘর্ষের লিপ্ত হয় তাহলে অনেক ধ্বংসলীলা হতে পারে বলে মনে করছি। কিন্তু সেসব দেখার মতো আপনি আমি কেউই বেঁচে থাকব না।

বিষয়গুলো সাইন্সফিকশন মুভির মত লাগলেও এসবই বাস্তব। বর্তমানে আমাদের এই শিক্ষা ব্যবস্থায় এতকিছু শেখানো হয় না। শুধুমাত্র পড়ানো হয়। সেগুলোও আজ থেকে ২০-২৫ বছর আগের। বর্তমান সময়ে অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছে এবং এই ২০-২৫ বছরে এমন অনেক সূত্রও পরিবর্তন হয়েছে। যেগুলো এখন আর কোন কাজে লাগবে না।

যাইহোক সেসব বিষয়ে পরবর্তীতে অন্য একদিন আলোচনা-করবো। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। এই সিরিজ আপনাদের কেমন লাগে তা অবশ্যই মন্তব্যে জানাবেন। তাহলে পরবর্তীতে নতুন নতুন তথ্য নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব।

---

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

---

---

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP	500 SP	1000 SP	2000 SP	5000 SP

---

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

---

---

বিষয়: জানা-অজানা মহাবিশ্বের কিছু তথ্য

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......