প্রাণের নীলফামারী
বাসায় আসার পর থেকেই একটু ব্যস্ততার মধ্যে দিন কাটছে। যদিও কোন পড়াশোনা কিংবা অন্যান্য কোন কাজে ব্যস্ততা নেই মূলত বাসার কিছু কাজে ব্যাস্ত রয়েছি। সবাই সবার মাতৃভূমিকে অনেক ভালোবাসে এবং সেই মাতৃভূমিতে কাটানো শৈশবের স্মৃতিগুলো কখনো ভুলতে পারেনা। ঠিক তেমনি আজ আমি নীলফামারী সম্পর্কে কিছু কথা এবং আমার কিছু স্মৃতি আপনাদের সামনে তুলে ধরব।
আমার জন্মের পর থেকে প্রায় ২০১৫ সাল অব্দি সম্পূর্ণ সময়টাই কেটেছে আমার এই নীলফামারীতে এবং এই সময়টুকুতে রয়েছে অনেক স্মৃতি এবং শৈশবে কাটানো কিছু মুহূর্ত।বর্তমানে ২০২৩ চলছে। এমন সময় এসে আমি অনেক কয়েকটা জেলার মধ্যে থেকেছি এবং অনেক জেলা সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখি। তবে একটি কথা বলতেই হয় আমাদের নীলফামারীর মত এত শান্তশিষ্ট জেলা বাংলাদেশে আরেকটি নেই।
উত্তরের জনপদ আমাদের এই নীলফামারী জেলা রংপুর বিভাগের অন্তর্গত এবং এর পাশেই রয়েছে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় এবং লালমনিরহাট জেলা।উত্তরের জনপদ হওয়ার জন্যই মূলত এই জায়গায় গরম কালে খুব বেশি গরম পরে এবং ঠান্ডা কালে খুব বেশি শীত পরে, এবং বর্ষাকালে খুব বেশি বৃষ্টি হয়। যদিও আমাদের এই জেলার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা অন্যান্য জেলা তুলনায় অনেক ভালো তাই টানা দুই তিন দিন বৃষ্টি হলেও পানি নিষ্কাশন হতে সর্বোচ্চ ১ ঘন্টা সময় লাগে।
তবে খুব তাড়াতাড়ি আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এই অঞ্চলের মানুষের খুব বেশি ঠান্ডা জনিত সমস্যায় ভুগতে হয় এছাড়াও পানিবাহিত রোগও অনেক বেশি আর দেখা যায় এই উত্তরাঞ্চলের মানুষদের। কিন্তু তারপরও দিন দিন এই উত্তরাঞ্চলের মানুষরা আপডেট হচ্ছে এবং প্রযুক্তি সম্পর্কে অবহিত হচ্ছে। উত্তরের জনপদকে অনেকেই অবহেলার চোখে দেখতো তবে যমুনা সেতু হওয়ার পর থেকেই এই বিষয়টি আস্তে আস্তে ঘুচতে শুরু করে এবং ঢাকা শহরের সাথে সরাসরি সংযোগ স্থাপন হয়। যার কারণে বর্তমানে নীলফামারীতে রয়েছে বাংলাদেশের বৃহত্তম উত্তরায় ইপিজেট।
তবে এই কয়েক বছরের ঢাকায় অবস্থানকারী সময়ে একটি বিষয় আমি লক্ষ্য করেছেন, যখনই কেউ জিজ্ঞাসা করে তোমার বাসা কোথায় তখন আমি বলি নীলফামারী কিন্তু অনেকেই এই নীলফামারির নামটি চেনেন না। কিন্তু একটি বিষয় আপনাদের বলে রাখি এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সবথেকে বড় রেলওয়ে কারখানা কিন্তু আমাদের কিন্তু আমাদের এই নীলফামারীতে অবস্থিত।
অন্যান্য শহরের তুলনায় নীলফামারী এখনো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমৃদ্ধ রয়েছে। নীলফামারীর বাহিরে যেতে খুব বেশি একটা সময় লাগে না। বর্তমানে নীলফামারীর উপর দিয়ে ট্রেন চলাচল করে এবং নীলফামারীতে দুইটি স্টেশন রয়েছে।এছাড়াও কিছুদিনের মধ্যেই চিলাহাটি থেকে ট্রেন চলবে এবং ট্রেন আসবে সরাসরি ভারত থেকে।যারা জানেন না তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, চিলাহাটি কিন্তু নীলফামারীর একটি অংশ।
যাইহোক নীলফামারী নিয়ে অন্য একদিন বিস্তারিতভাবে কথা বলব। কিছু শৈশবে স্মৃতি নিয়ে আলোচনা করা যাক। যখন আমি ছোট ছিলাম নীলফামারীরিক স্কুলেই পড়াশোনা করতাম। নীলফামারীতে অনেক বড় একটি মাঠ রয়েছে মাঝে মাঝে স্কুল ফাঁকি দিয়ে সেই মাঠে কত যে ফুটবল ক্রিকেট খেলেছি তার হিসেব নেই।
এছাড়াও নীলফামারীর সরকারি কলেজের মাঠে বিরাট বড় একটি পুকুর রয়েছে সেই পুকুরে প্রচুর গোসল করেছি এবং খেলাধুলা করেছি। বিশেষ করে আমি স্কাউট দলের একজন সদস্য ছিলাম এবং স্কাউটের সাথে দীর্ঘ কয়েক বছর সংযুক্ত ছিলাম।
কত ক্রিকেট লিগ, ফুটবল লিগ খেলেছি এই নীলফামার মাটিতেই সেগুলো গুনে শেষ করা যাবে না। সত্যি কথা বলতে ২০১৫ সালের আগ পর্যন্ত আমি নিজের শৈশবকে ভালোভাবেই উপভোগ করতে পেরেছি। তাই তো সেই বিষয়গুলো এখনো মনে পড়লে মুখের কোন একটি মুটকি হাসি চলে আসে। যাই হোক এটাই আমার জন্য যথেষ্ট বলে মনে করি।
আমার এই প্রাণের নীলফামারী এবং মাতৃভূমি নীলফামারী নিয়ে অন্য একদিন বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করে নেব। আজকের মত এখানে বিদায় নিচ্ছি ধন্যবাদ সবাইকে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: প্রাণের নীলফামারী
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
সত্যি ভাইয়া একটা সময় উত্তরবঙ্গের এলাকাগুলোকে সবাই অন্য চোখে দেখত। কিন্তু উত্তরবঙ্গ এখন অনেক উন্নয়ন করেছে। কোন কিছুতে পিছিয়ে নেই উত্তরবঙ্গ। ভাইয়া আপনার প্রিয় শহর সম্পর্কে জেনে সত্যিই ভালো লেগেছে। এই শহরের সাথে আপনার অনেক অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে।
ভাইয়া যার যার জন্মভূমি তার কাছে অনেক প্রিয়।আসলে আমাদের প্রয়োজনের তাগিদে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয় বা থাকতে হয়।তাই বলে কিন্তু জন্মভূমির মতো কাউকে ভালোবাসা যায় না। তবে আপনার পোস্ট পড়ে নীলফামারীর সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। ধন্যবাদ আপনাকে নিজের জিলার সুন্দর অনুভূতি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
প্রতিটা মানুষের কাছে প্রিয় জন্মভূমি এতটাই আপন যত দূরেই থাকুক না কেন সেই জন্মভূমি টানে আবার ফিরে আসতে চায় । জীবনের তাগিদে আমরা বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করি আমাদের মন হৃদয় কিন্তু পড়ে থাকে জন্মভূমি প্রান্তে। শৈশবের অনেক স্মৃতি থেকে যায় যেগুলো আপনি শেয়ার করলেন নীলফামারী সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছি যেটা আগে জানা ছিল না। ফুটবল ক্রিকেট খেলতে আমিও পছন্দ করি ছোট্ট বেলায় অনেক খেলাধুলা করা হয়েছে এখন আর খেলাধুলার সময় পাইনা।
বাবার কর্মস্থল উত্তরবঙ্গে ছিল তাই এদিকটার সম্পর্কে মোটামুটি ভালোই জানি, তবুও আপনার পোস্টের মাধ্যমে অনেক অজানা তথ্য জানতে পারলাম। তবে মাতৃভূমির প্রতি আপনার গভীর মমতা প্রকাশ পেয়েছে পোস্টটির মাধ্যমে।
ভাইয়া, আপনার নীলফামারী জেলা সম্পর্কে আপনার লেখাগুলো পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনার লেখাগুলো পড়ে মনে হচ্ছে আপনার নীলফামারী জেলা সত্যিই একটি উন্নত মানের জেলায় পরিণত হয়েছে। একটানা দুই তিন দিন বৃষ্টি হলেও পানি নিষ্কাশন হতে মাত্র এক ঘন্টা সময় লাগে এটা জেনে তো আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। নীলফামারী ইপিজেট, শিক্ষা ও খেলাধুলাসহ অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার পোস্টের মাধ্যমে নীলফামারী জেলা সম্বন্ধে সুস্পষ্ট ধারণা পেলাম ভাই। আসলে মাতৃভূমিতে কাটানো ছোটবেলার স্মৃতি গুলো কখনোই ভুলবার মতো নয়। তবে নীলফামারীর নাম বললে কেউ চিনে না,এটা জেনে বেশ অবাকই হলাম। যাইহোক এমন চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।