স্বস্তিতম শুক্রবার
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনার সবাই অনেক ভালো আছেন। দীর্ঘ এক বছর পরে হয়তো শুক্রবার একটু স্বস্তিতম ভাবে কাটিয়েছি। কারণ নতুন সেমিস্টার শুরু হয়েছে তাই এখনো নতুন সেমিস্টারের ক্লাস এবং রেজিস্ট্রেশন কমপ্লিট হয়নি তাই আজকের দিনটা অনেকটাই অলসতার মাঝেই কাটিয়েছি।
গত ছয় দিন টানা জেনারেল শিফটে ডিউটি করেছি এবং যেতে আসতে প্রায় চার ঘণ্টার মতো গড়ে সময় লেগেছিল মোটকথা ৪ ঘন্টা এবং ৮ ঘন্টা সবমিলিয়ে ১২-১৩ ঘন্টার উপরেই ডিউটি করা হয়েছে আমার এই ছয় দিনে। এই ছয় দিনে প্রপার ঘুমাতে পারেনি কিন্তু এই আজ আমার অফ ডে ছিলো। যদিও প্রতি সপ্তাহে একবার করেই থাকবে কিন্তু আমি এখনো বাসা পরিবর্তন করিনি। এইদিকে আবার রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে একটু ভুল করে ফেলেছিলাম। তারপরও সবকিছু এখন পর্যন্ত নিজের কন্ট্রোলেই রয়েছে। তাই আজকে অনেকটা স্বস্তিতম শুক্রবার কাটিয়েছি অনেকটাই অলসতার মাধ্যে। তারপরও আমার কিছু হাতের কাজগুলো আজকে করার চেষ্টা করছি। জানিনা কতটুকু করতে পারব। দুই তিনটি পোস্ট আগে থেকেই লেখার চেষ্টা করছি। জানিনা কোন কাজ কখন চলে আসবে তাই আগে থেকে প্রিপারেশন নিয়ে রাখছি।
গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল। বৃহস্পতিবারে রাস্তায় মনে হয় একটু বেশি জ্যাম থাকে। কালকে আমি এটার প্রমাণ পেয়েছি। যাইহোক বাসায় আস্তে আস্তে হ্যাংআউট শুরু হয়ে গিয়েছিল ঠিক পরেই আমি বাসায় ঢুকতে পেরেছি এবং উপস্থিত হতে পেরেছি। গতকাল সব কাজ শেষে একটি ভালো ঘুম দিয়েছি এবং আজ উঠেছি দুপুর ১২ টার দিকে। প্রায় অনেকদিন পরে হয়তো এরকম একটি ঘুম দিলাম। অবশ্য আমার শরীরের জন্য এই ঘুমটা দরকার ছিল। কারণ গত ৬ দিন ধরেই আমি ৩-৪ ঘন্টার বেশি ঘুমাতে পারিনি।
এইদিকে নতুন সেমিস্টার এখনো শুরু হয়নি যার কারণে এই শুক্রবারে কোন ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়নি তবে রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে আমি একটি ভুল করে ফেলেছিলাম তাই আজকে দুপুরের পরে একটু ভার্সিটিতে গিয়েছিলাম একটি স্যারের সাথে কথা বলার জন্য। সেই দিক থেকে আসার সময় একটু আশেপাশে ঘোরাফেরা করেছি। তাছাড়াও আজকে হঠাৎ হঠাৎ করেই বৃষ্টি পড়ছিল এবং আবহাওয়াটি অনেক চমৎকার ছিল। মোট কথা বলতে আজকের দিনটা অনেক চমৎকার ভাবে উপভোগ করতে পেরেছি।
আপনারা যারা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে একটু হলেও অবগত আছেন তারা বুঝতে পারবেন টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে আসলে শিফটিং ডিউটি হয়। কারণ ইন্ডাস্ট্রিতে মেশিন এক সেকেন্ডের জন্য বন্ধ থাকে না। যদি মেশিন বন্ধ না থাকে তাহলে মেশিনগুলো পুনরায় চালু করতে অনেকটা সমস্যা পোড়াতে হয়। তাইতো টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিগুলো কখনোই বন্ধ হয় না। যেহেতু আমি কোয়ালিটি কন্ট্রোল আর টিমে রয়েছি সেহেতু কোয়ালিটি মেইনটেইন করা আমাদের টিমের কাজ। তাই এই টিমকে ২৪ ঘন্টার জন্য অ্যাপয়েন্ট করা হয়েছে। যদিও এটা শিফটিং হিসেবে ভাগ করা হয়েছে। যে আজকে ডে শিফটে কাজ করবে সে এক সপ্তাহ পরে ইভিনিং শিফটে কাজ করবে। এভাবে করেই মূলত তিন শিফটে এই টোটাল ডিউটিগুলো ভাগ করা রয়েছে।
আমাদের এই টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশের জন্য অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কারণ আমাদের দেশের মোট জিডিপির প্রায় ৮০ শতাংশ জিডিপি এই টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি থেকে আসে। তাই এই টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির উপর আমাদের বাংলাদেশ অনেকটাই নির্ভরশীল। প্রথম যেদিন আমি আসি জবে অ্যাপোয়েন্ট করেছিলাম সেদিন ছোট্ট একটি আমার ক্লাস নেওয়া হয়েছিল এবং সেই ক্লাসে বলা হয়েছিল ওয়ার্কারদের সাথে খারাপ ব্যবহার করার জন্য যা আমার কাছে মোটেও ভালো লাগেনি। কারণ বলেছিলো ওয়ার্কারা নাকি ঠিক ভাবে কাজ করে না এবং সেগুলোকে মেইনটেনেন্স করাই হচ্ছে আমার দায়িত্ব। কিভাবে কোয়ালিটি ভালো করা যায় সেই বিষয়ে লক্ষ্য রাখা আমার দায়িত্ব। এছাড়াও কোন মেশিনের কি সমস্যা হলে কিভাবে সেগুলোকে গাণিতিক সমস্যার সমাধান করতে হয় সেই বিষয়টিও আমাকে শিখিয়ে দিয়েছিল। এতকিছুর পরও ওয়ার্কার দের সাথে আমি খারাপ ব্যবহার করতে পারিনা। কোন কাজ অসম্পন্ন দেখলে সেটা নিজেই করার চেষ্টা করি কারণ আমি আসলে এই সেক্টরের নতুন এই সেক্টরে কিভাবে কাজ করতে হয় তা এখনো আমার জানা নেই। তবে আস্তে আস্তে সব কিছু শিখে ফেলবো এবং কাজ শেখার জন্যই মূলত জয়নিং করেছি।
এই ছয় দিনের অভিজ্ঞতার কথা যদি বলতে হয় তাহলে দারুন একটি অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। কেন বাংলাদেশে এই টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে এতটা এগিয়ে গেছে সেই বিষয়টি আমি বুঝতে পেরেছি। আসলে এইখানকার বিভিন্ন প্রোডাক্টের উপর এতটা গুরুত্ব দেওয়া হয় এবং প্রতিটা পদে পদে এই সব প্রোডাক্টের টেস্টিং করা হয়। যার কারণে মূলত আমাদের প্রোডাক্টগুলো এত গুণগত মানসম্পন্ন হয়। আমাদের কোয়ালিটি কন্ট্রোল ল্যাবে এত দামী দামী মেশিন রয়েছে যেগুলোকে বিক্রি করলে আমাদের সারা জীবন কাটিয়ে দিতে পারব।
শুনে অবাক হবেন আমাদের কোয়ালিটি কন্ট্রোল অফিসে আর ১০ টি টেস্টিং ডিভাইস রয়েছে। সেসব টেস্টিং ডিভাইসের দাম ৫০ কোটি টাকার ও বেশি। তিন শিফটে মূলত তিনজন ইনচার্জ রয়েছে। তার মধ্যে আমি একজন। প্রত্যেকটি শিফটেই সমস্ত ফ্যাক্টরি যত ধরনের আউটপুট রয়েছে সেগুলোকে সেই মেশিনের মাধ্যমে টেস্টিং করতে হয় এবং সেই রিপোর্টগুলোকে আমাদের জিএম স্যারকে দেখাতে হয়। যদি কোন সমস্যা থাকে তাহলে সেই সমস্যাগুলো কিভাবে সলভ করা যায় সেগুলোও আমাদেরকে আইডেন্টিফাই করতে হয়।
যাইহোক আমি ভাবছিলাম এই টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে আমি একটি বিস্তারিত পোস্ট লিখব তবে সময় পাচ্ছি না। সময় পেলে অবশ্যই দেখার চেষ্টা করব। আজ বিকেলে ভার্সিটি থেকে আসার সময় হাতিরঝিলে গিয়েছিলাম বেশ কিছুক্ষণ সময় কেটে দিয়েছি তবে ছবি তুলতে ভুলে গিয়েছিলাম। যাইহোক আজকের দিনটা অনেক চমৎকার ভাবে কাটিয়েছি এবং কমিউনিটির কাজগুলো সব তাড়াতাড়ি করে আজকে তাড়াতাড়ি একটা ঘুম দিব। কালকে আবার দুপুরের আগেই অফিসে পৌঁছাতে হবে এবং রাত দশটা পর্যন্ত ডিউটি করে আবার ঢাকায় ব্যাক করতে হবে। কবে যে এই জার্নিটা আমার শেষ হবে সেটাই বুঝতে পারছি না। অবশ্য এক তারিখে নতুন বাসায় উঠবো দেখি কি করা যায়।
যাইহোক আজকের মত এখানেই শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: স্বস্তিতম শুক্রবার
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
যাক ছয়দিন পর একটু তাহলে শান্তির বিশ্রাম নিলেন। হ্যা বৃহস্পতিবার বেশ জ্যাম থাকে। তবে আমিার মনে হয় বেশ ভালোই করেছেন বিকেলের আবহাওয়ায় একটু প্রকৃতির মাঝে থেকে। আজকের আবহাওয়াটি কিন্তু বেশ সুন্দর ছিল। তবে আজ আপনার পোস্ট পড়েই বুঝতে পারলাম যে আপনি গত ছয়দিনে বেশ ভালোই অভিজ্ঞাতা অর্জন করেছেন।
অনেকদিন পর শুক্রবারে বিশ্রাম পেলেন ভাই। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর প্রচন্ড জ্যাম থাকে রাস্তায়। এটা আমি অনেকবার খেয়াল করেছি। বন্ধের দিন ঘুম থেকে দেরি করে উঠলে খুব ভালো লাগে। বাসা পরিবর্তন করলে আরো স্বস্তিতে থাকতে পারবেন মনে হচ্ছে। নাইট শিফটে কাজ করা কিছুটা কষ্টকর ই বটে। তবুও কিছু করার নেই, কারণ এই মেশিন বন্ধ করে পুনরায় চালু করলে,শুরুতে প্রোডাকশনের সময় কোয়ালিটি ভালো হয় না। যাইহোক ওয়ার্কারদের সাথে ভালো আচরণ করার চেষ্টা করবেন এবং তাদেরকে বুঝিয়ে কাজ আদায় করার চেষ্টা করবেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাই।
এই হয়তো প্রথমবার শুনলাম যে, শুক্রবার দিনটা আপনার ব্যস্ততাহীন কেটেছে। আপনার এই চাকরিটা বেশ উপভোগ করছেন জেনে ভালো লাগলো ভাই। নিজের স্কিল ডেভেলপমেন্ট করার জন্য নিজের ডিপার্টমেন্টের সেক্টরে চাকরি করাটা বেশ ভালো। সুন্দর অনুভূতিগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
সপ্তাহে ছয়দিন পর শুক্রবার ভালোই বিশ্রাম করার সুযোগ পেয়েছেন।এটার দরকার ছিল। আর ঢাকায় রবি ও বৃহস্পতিবার খুব জ্যাম লক্ষ্য করা যায়।সুন্দর একটি বিকেল ছিল কাল।ওয়েদারটা ও খুব মিষ্টি ছিল।এমন পরিবেশে সময় কাটালে বেশ লাগে।অনেক বেশি অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন এই কয়দিনে। অনুভূতি গুলো পড়ে ভীষণ ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।
অনেক আগেই জেনেছিলাম আপনি চাকরি জীবনে অতিবাহিত করেছেন জেনে বেশ ভালো লেগেছিল ভাই সেই সময়। আসলে অনেকদিন চাকরি করার পরে আজকে শুক্রবার ছুটির দিনে বিশ্রাম পেয়েছেন জেনে আরও বেশি ভালো লাগলো ভাই। আসলে ভাই বৃহস্পতিবারের সন্ধ্যার পরেই ঢাকা শহরে একটু বেশি জ্যাম দেখা দেয়। আপনি দুপুরবেলা ইউনিভার্সিটিতে গিয়েছিলেন জেনে বেশ ভালো লাগলো সেখানে বেশ সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।