টেক্সটাইল ফ্যাশন এন্ড ডিজাইন
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন? আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তালার অশেষ রহমতে আমিও ভালো আছি। আজ একটু ভিন্ন ধর্মী বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করব। প্রথমত শেয়ার করার চেষ্টা করব ফ্যাশন এবং স্টাইলের মধ্যে পার্থক্য কি? এর পরবর্তীতে আমরা টেক্সটাইল ডিজাইন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা নেয়ার চেষ্টা করব, তবে চলুন শুরু করি।
ফ্যাশন এবং স্টাইল এই দুইটা বিষয়ে আমরা প্রায়ই শুনে থাকি এবং বিভিন্ন জায়গায় এটা আমরা ব্যবহার করে থাকি তবে আপনাদের জানান জন্য বলে রাখি এটা সম্পূর্ণ আলাদা দুটি বিষয়। প্রথমত স্টাইলের কথা বলি। স্টাইল হচ্ছে একজন মানুষের ব্যক্তিগত ফ্যাশন। যেমন মনে করুন কারো চুলের কাটিং অন্যান্যদের তুলনায় আলাদা এবং তার সেই কাটিং একটি ইউনিট ডিজাইন ফলো করে। সেটাকেই আমরা স্টাইল বলে গণ্য করতে পারি। অর্থাৎ স্টাইল হচ্ছে আপনার ব্যক্তিগত নিজস্ব ডিজাইন কিংবা নিজস্ব ব্যক্তিগত কমফোর্ট। কিন্তু অন্যদিকে ফ্যাশন যদি বিবেচনা করি তাহলে কোন এক ব্যক্তিকে অনুপ্রেরণায় নিয়ে যেসব ডিজাইন তৈরি করা হয়, যেমন মনে করুন লিওনেল মেসির চুলের হেয়ারকাটের যে ট্রেন্ড চলে সেটা করে আমরা ফ্যাশন বলতে পারি। এই ফ্যাশন মার্কেট বিশ্বে অনেক বড়।
এই বিষয়টা আরেকটু ভালোভাবে বোঝার জন্য আরেকটি বিষয় জানিয়ে রাখি। মনে করুন আপনি দোকানে কাপড় কিনতে গিয়েছেন সেই কাপড়ের বিভিন্ন ধরনের ফ্যাশনেরর কাপড় রয়েছে। যেমন বিভিন্ন ধরনের শার্ট কিংবা প্যান্ট এগুলো কিন্তু কোন না কোন ফ্যাশনের অংশ কিন্তু স্টাইল যদি করতে হয় তাহলে আপনার ব্যক্তিগত চিন্তা ভাবনা, আপনার ভালো লাগা মন্দ লাগা এই সব কিছু বিবেচনা করে আপনার পার্সোনাল স্টাইল তৈরি করতে পারেন। এক কথায় ফ্যাশন হলো গ্লোবাল প্রপার্টি আর স্টাইল হল আপনার ব্যক্তিগত প্রোপার্টি।
এখন কথা বলি টেক্সটাইল ডিজাইন সম্পর্কে। আমরা বিভিন্ন ধরনের পোশাক পড়ে থাকি, বিভিন্ন পোশাকের বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন করা থাকে। কোনগুলো কাপড় তৈরি করার পরে ডিজাইন করা হয় আবার কোন কোন কাপড় ডাইরেক্ট সুতা দিয়ে ডিজাইন করা হয়। এ পর্যায়ে ডিজাইনকে অনেক ভাগে ভাগ করা যায় তবে আমরা বেসিক লেভেলের বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করব। প্রথমত, মনে করুন কোন কাপড় তৈরি হওয়ার পরে সেটাকে আমরা প্রিন্টিং কিংবা ডাইং এর মাধ্যমে ডিজাইন করতে পারি। বিভিন্ন কালারের ডিজাইন করতে পারি। একটি বিষয় আপনারা লক্ষ্য করবেন, যারা আপনারা শাড়ি পড়েন কিংবা পাঞ্জাবি পড়েন তার উপরে যে হাত দিয়ে ড্রয়িং করা থাকে সেগুলোর দাম কিন্তু তুলনামূলক অনেক কম থাকে। এর অনেকগুলো কারণ রয়েছে। প্রথমত সেই কাপড় গুলো একটু এভারেস্ট টাইপের হয়ে থাকে। দ্বিতীয় হাত দিয়ে প্রিন্টিং করতে সময় এবং পরিশ্রম দুটোই অনেক কম লাগে। পরবর্তীতে সেই কাপড়ের স্থায়িত্বতাও অনেক কম হয়ে যায়।
এছাড়াও মার্কেটে যেসব কাপড় রয়েছে তার বেশিরভাগই কিন্তু ডাইং কিংবা প্রিন্টিং করা। কিন্তু একটি বিষয় লক্ষ্য করে দেখবেন যেগুলো দামি দামি পোশাক রয়েছে যেমন বেনারসি শাড়ি, মসলিন শাড়ি (যার অস্তিত্ব বর্তমানে নেই) কিংবা জামদানি শাড়ি, এগুলো কিন্তু সুতা দিয়ে ডিজাইন করা হয়। এক একটি সুতা দিয়ে ডিজাইন করে সেগুলোকে বিভিন্ন সাজে সজ্জিত করা হয়। এখানে কিন্তু একটি শাড়ি তৈরি করতে এক মাসের বেশি সময় লেগে যেতে পারে। অনেক পরিশ্রমী কাজ এবং অনেক গুণগত মানসম্পন্ন কাজ। বর্তমানে আমরা সবাই শর্টকাটে কাজ করতে পছন্দ করি এবং শর্টকাট কাজেই হচ্ছে ডাইং এবং প্রিন্টিং করা। বিশ্বব্যাপী এটাও বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। কিন্তু একসময় ছিল যখন সুতা একটার পর একটা লাগিয়ে বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন করা হতো। বর্তমানে এই প্রযুক্তির রয়েছে তবে এই প্রযুক্তি খুব বেশি একটা ফলপ্রদ দেখা যায় না।
আপনি একটি বিষয় কল্পনা করুন, আপনি একটি শাড়ি তৈরি করছেন সেই শাড়িতে প্রত্যেকটি সুতা বিভিন্ন ধরনের কালারের রঞ্জিত করা হয়েছে. পরবর্তীতে সেই কালারফুল সুতা গুলো নিয়ে একটার পর একটা লাগিয়ে সেটাকে বিভিন্ন ডিজাইনের রূপান্তরিত করা হয়, তাহলে সেই কাপড়টা দেখতে কি রকম লাগবে? ঠিক যেমনটা বেনারসি শাড়ি লাগে। একটি বেনারসি শাড়ির দাম কম করে হলেও দশ হাজার টাকার উপরে কিন্তু একটা প্রিন্টিং নরমাল শাড়ি ৫০০ টাকাতেও পাওয়া যায়, এটাই হল তার মূল পার্থক্য। এছাড়াও যেহেতু প্রত্যেকটা সুতা আলাদা ভাবে রং করা হয়, তাই সুতার কোয়ালিটি সব সময় অনেক হাই রাখা হয় তা না হলে এই একটি একটি সুতা করে ডিজাইন করাটা অনেক টাফ হয়ে যেত। কিন্তু নরমাল শাড়িগুলোতে সুতা অনেকটাই নরমাল দেওয়া হয় এবং তার স্থায়িত্বটা অনেক কম থাকে।
ভার্সিটি থেকে নোটিশ এসেছে সব ধরনের ক্লাস এবং পরীক্ষা এখন অনলাইনে নেওয়া হবে। তাই অনলাইনে আমাদের ফ্যাশন এবং ডিজাইন সাবজেক্ট এর বেশ কিছু ডিজাইন তৈরি করতে দিয়েছিল। সেই ডিজাইনগুলো তৈরি করছিলাম এবং ভাবছিলাম আজকে কি নিয়ে পোস্ট করব। তাই চিন্তা করলাম আজকে টেক্সটাইল ডিজাইন সম্পর্কে আপনাদের সাথে একটু আলোচনা করে নেই। তারপরও বেশ কিছু ডিজাইনের স্ক্রিনশট আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি আশা করছি আপনারা ভালো লাগবে। বেশকিছু মৌলিক ডিজাইন রয়েছে এই সব ডিজাইন দিয়েই পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের বিষয়বস্তু তৈরি করা সম্ভব। প্রত্যেকটি ডিজাইন এক একটি সুতার বর্ণনা করে, একটি সুতা উপর দিয়ে যাবে বা নিচ দিয়ে যাবে, আবার কোন কোন সুতার অবস্থান কই হবে সেটা নিয়ে এই ডিজাইনটি তৈরি করা। আজকের মত এখানেই শেষ করছি, সবাইকে ধন্যবাদ।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: টেক্সটাইল ফ্যাশন এন্ড ডিজাইন
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
স্টাইল এবং ফ্যাশনের প্রকৃত অর্থ অনেকেই জানে না। কিংবা জানলেও অনেক সময় তালগোল পাকিয়ে ফেলে। আপনি দারুণভাবে এই দুটি জিনিস সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। তাছাড়া টেক্সটাইল ডিজাইন সম্পর্কেও চমৎকার আলোচনা করেছেন। সুতা দিয়ে যেসব ডিজাইন করা হয়, সেগুলোর দাম আসলেই অনেক বেশি। যাইহোক এমন তথ্যমূলক একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
চেস্টা করেছি ভাই, ধন্যবাদ আপনাকে।
অনলাইনে ক্লাস হলে যেমন সুবিধা আছে তেমনি অসুবিধাও আছে ভাইয়া। তবে ফ্যাশন এবং স্টাইল নিয়ে দারুন ভাবে বর্ণনা করেছেন। আর সুতার গুণগত মান আমরা যেহেতু বুঝিনা তাই হয়তো অনেক সময় অনেক ভুল কাপড় কিনে ফেলি। সত্যি ভাইয়া ৫০০ টাকা দিয়েও শাড়ি কিনতে পাওয়া যায় আবার ১০০০০ টাকা দিয়েও শাড়ি কেনা যায়। পার্থক্যটা হয়তো মানের ক্ষেত্রেই।