ফিরে যেতে চাই সেই সোনালী সময়ে

in আমার বাংলা ব্লগlast year
ফিরে যেতে চাই সেই সোনালী সময়ে

children-1822704_1920.jpg

Source

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। আসলে আমরা যারা ৯০ দশকে জন্মগ্রহণ করেছি তারা সবাই অনেক ভালো একটি সময় কাটিয়েছি। তখন না ছিল ইন্টারনেট, না ছিল এই এত উন্নত প্রযুক্তি কিন্তু তারপরও আমাদের মাঝে অনেকটা আন্তরিকতা ছিল এবং একটি ভালো সময় আমরা অতিবাহিত করেছি। সেই বিষয়গুলো নিয়ে আজকে আলোচনা করব এবং কিছু স্মৃতিচারণ করব তবে চলুন শুরু করছি।

বর্তমান জেনারেশনের ছেলে মেয়েরা হয়তো জানবেই না যে কখনো সাদাকালো টিভি ছিল এবং সেই সাদাকালো টিভিতে শুক্রবার করে সিনেমা দেখার জন্য বাসায় একগাদা মানুষের ভিড় জমাতো। সেই বিষয়গুলো আসলেই অনেকটাই চমৎকার ছিল। বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রতি শুক্রবার করে বিকেল বেলা একটি করে সিনেমা দেখতো এবং এই সিনেমা দেখতেই এলাকার সমস্ত মানুষ একটি বাড়িতে ভিড় জমাতো। আগে কিন্তু সবার বাসায় টিভি ছিল না এলাকায় যারা গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বাসায় শুধুমাত্র সাদাকালো টিভি ছিল এবং সেই টিভিতেই সিনেমা দেখার জন্য অনেক লোক ভিড় করতো। টিভি দেখার সময় অনেক মজা মাস্তি হতো। সবাই একত্রিত হয়ে সিনেমা দেখতাম। মাঝে মাঝেই আবার এন্টেনা সমস্যা হলে এন্টেনা ঘুরিয়ে দিতে হতো তাহলেই ছবি পরিষ্কার দেখা যেত। আবার মাঝে মাঝে সিনেমা দেখার সময় লোডশেডিং তো তখন অনেকটাই বিরক্ত বোধ করতাম।

children-5833685_1920.jpg

Source

আগেকার সময় বাংলাদেশ টেলিভিশন অনেক চমৎকার চমৎকার কিছু অনুষ্ঠান দেখার জন্য অপেক্ষা করতাম। যেমন সিনবাদ এছাড়াও আরো অনেক ধরনের শিশু কিশোরের অনুষ্ঠান। বিতর্ক প্রতিযোগিতা এবং বিভিন্ন ধরনের শিক্ষনীয় অনুষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিভিশনের সম্প্রচার করা হতো। তখন ইন্টারনেট কি জিনিস সেটা আমরা জানতাম না। ইন্টারনেট অনেক পরে এসেছে বর্তমান তো সবার হাতেই মোবাইল ফোন রয়েছে। যখন যেটা ইচ্ছা ইউটিউব এ ঢুকে দেখতে পাওয়া যেত, কিন্তু তখনকার সময়ে সেটা হতো না।

আগেকার সময়ে দুপুরবেলা খাওয়া দাওয়া করি একটি ঘুম দিতাম। ঘুম থেকে উঠেই মূলত বন্ধু-বান্ধবের সাথে মাঠে খেলা করতে যেতাম এবং আমাদের মায়েরা সেই খেলার মাঠের পাশেই বসে আমাদের খেলা দেখতো এবং গল্প করত! কি মধুর দৃশ্য ছিল!! সেগুলো বলে কখনো বোঝানো সম্ভব নয়। আগেকার সময় ২০ টাকার একটি টেনিস বল কেনার জন্য সবার কাছে চাঁদা উঠিয়ে সেই বল কিনতে হতো এবং ব্যাটের কথা তো অনেক দূরের। কারণ একটি ব্যাট কিনতে অনেকদিন যাবত সবাই টাকা জমিয়ে জমিয়ে সেই একটি ব্যাট কিনতাম এবং সেই ব্যাট দিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত খেলাধুলা করতাম। এখন হয়তো সেই ব্যাট কেনার সামর্থ্য রয়েছে, বল কেনার সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু সেই সময়টা নেই, সেই সুযোগটা নেই।

তখন টাকা-পয়সা না থাকলেও সবার মাঝে আন্তরিকতা ছিল। সবাই আমরা অনেক ধরনের মজা করেছিলাম। বিশেষ করে বিভিন্ন উৎসবের সময় আমরা ঘরোয়া ভাবেই পিকনিকের আয়োজন করতাম। সেই পিকনিকের চাঁদা খুবই অল্প ছিল। বাসা থেকেই চাল-ডাল, মরিচ, পেয়াজ, তেল সবকিছু নিয়ে যেতাম এবং সামান্য ১০-১৫ টাকা করে চাঁদা উঠিয়ে বিভিন্ন ধরনের তরকারি কিনে সেটা দিয়ে খিচুড়ি কিংবা আরও বিভিন্ন ধরনের সবজি রান্না করে আমরা পিকনিক করতাম।

বর্তমানে ঈদের আনন্দ বুঝতে পারি না, কখনো এটা আসে আবার চলে যায় ঈদ। আসলেই এখন ভয় লাগে অনেক খরচ বেড়ে যায়, অনেক ধরনের টেনশন, দায়িত্ব এইসব কিছুই পালন করতে হয়। কিন্তু তারপরও আগেকার সময়েই ঈদ আসার এক মাস আগে থেকেই আনন্দের কমতি ছিল না। এই বুঝি ঈদ আসবে, কখন ঈদ আসবে এই বিষয়গুলোর জন্যই সারাক্ষণ অপেক্ষা করতাম এবং মনের মধ্যে একটি আনন্দ কাজ করতো কিন্তু বর্তমানে আনন্দেরর চেয়ে টেনশন বেশি কাজ করে।

field-6558125_1280.jpg

Source

বর্তমানে আমরা কোন না কোন কাজের সাথে সবাই জড়িত রয়েছি ঈদের সময় আসলেই আমাদের মনে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি চলে আসে সেটা হচ্ছে ঈদের সময় শান্তি ভাবে ঘুমাবো। কারণ সারা বছর কাজের ব্যস্ততার মাঝে পর্যাপ্ত ঘুমাতে পারিনা। এই ঈদের ঘুমানো টাই হচ্ছে আমাদের ঈদের আনন্দ। জীবনের প্রতিটা পদেই নতুন নতুন শিক্ষা অর্জন করছি, নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হচ্ছে, নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হচ্ছি এবং সেই মানুষগুলো কিরকম এই মানুষগুলোকেও বোঝার চেষ্টা করছি। বর্তমানে নতুন একটি চাকরিতে জয়েন করেছি কিন্তু চাকরিতে নতুন হওয়ার পরও আমার উপর অনেক প্রেসার দিয়ে রাখছে, কেন রাখছে তার বলতে পারি না! হয়তো আমার ভালোর জন্যই বেশি কাজ দিয়ে রাখে।

তবে আমি যেই ফ্যাক্টরিতে বর্তমানে জব করছি সেই ফ্যাক্টরির জেনারেল ম্যানেজার স্যার আমার অনেক ভালো পরিচিত। তাই তিনি আমাকে যথেষ্ট সময় নিয়ে বিষয়গুলো বুঝিয়েছেন, বলেছেন এই তিন চার মাস একটু কঠোর পরিশ্রম করার জন্য। তারপরেই আমাকে ভালো একটি পদে তিনি বসিয়ে দেবেন। আসলে কাজ না জানলে ভালো পদ দিয়ে লাভ নেই। কারণ কাজটাই সবার আগে। তাই আমিও আপ্রাণ চেষ্টা করছি সবকিছু খুব তাড়াতাড়ি শেখার জন্য এবং নিজের সক্ষমতা দেখানোর জন্য।

তবে এই সব কিছুর মাঝে হারিয়ে গেছে আনন্দ হারিয়ে, গেছে মা-বাবার ভালোবাসা, হারিয়ে গেছে পর্যাপ্ত ঘুম। সামান্য কিছু টাকার জন্য এই সব কিছুই বিসর্জন দিয়েছি। মায়ের হাতের রান্না খাইনি কতদিন হয়ে গেল!! সেগুলো এখন ভাবতেও অনেক খারাপ লাগে। নিজে রান্না করে খেতে হচ্ছে। কতটা কষ্ট সেটা একজন ব্যাচেলার চাকরিজীবী বলতে পারে। ফিরে যেতে চাই সেই সোনালী সময়ে, ফিরে যেতে চাই সেই সোনালী মুহূর্ত গুলোর কাছে। ছোটবেলার সেই সোনালী সময় গুলো আবার উপভোগ করতে চাই। কিন্তু সেটা কি আদৌ সম্ভব!! কখনোই সম্ভব নয়!! তাই দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার কাজে মনোযোগী হতে হয়। যাইহোক আজকের মত এখানেই শেষ করছি। আপনাদের যদি ছোটবেলায় ফিরে যেতে ইচ্ছা করে তাহলে অবশ্যই মন্তব্যে আপনার মন্তব্যটি লিখতে পারেন ধন্যবাদ সবাইকে।


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png



Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

photo_2021-06-28_11-13-39.jpg

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



বিষয়: ফিরে যেতে চাই সেই সোনালী সময়ে

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......

Sort:  
 last year 

আপনার লেখাগুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো মামা। ৯০ দশকের ছেলেমেয়েরা সত্যিই খুব উপভোগ করেছে তাদের সময়টা। এখনকার ছেলে মেয়েদের মধ্যে কোন আন্তরিকতা নাই।ছোটবেলার এ সকল লেখাগুলো পড়তে খুব ভালো লাগে এবং ছোটবেলায় হারিয়ে যেতে মন চায়। আর মামা পরিশ্রম করেন একদিন ঠিক সফলতা পাবেন। অনেক দোয়া রইলো মামা আপনার জন্য।

 last year 

আপনাকেও ধন্যবাদ মামি। আসলে আজ ছোটবেলার কথা মনে পড়ছিলো তাই এই ব্লগটি লিখে ফেললাম।

 last year 

ভাইয়া আপনি আজকে খুবই চমৎকার একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে ভাইয়া অতীতের দিনগুলো ছিল খুবই সুমধুর। দাদাদের কাছ থেকে শোনা, আগেকার দিনে অনেক মানুষ টিভি দেখার জন্য সন্ধ্যা হতে রওনা দিতেন। আজ বর্তমানে প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে টেলিভিশন এবং দামি দামি ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র। অতীতে যেখানে বিকেলে ছেলেমেয়েরা খেলা করত আজ সেখানে ছেলে মেয়েরা কম্পিউটার অথবা স্মার্টফোন নিয়ে বিকেল সময়টা অতিবাহিত করছে। অতীতের দিনগুলো স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

 last year 

হ্যা ভাই, সেই সময় গুলো অনেক মধুর ছিলো। ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আসলেই সেই সোনালী দিন গুলো ভীষণ মিস করি। সবার কাছ থেকে টাকা তুলে টেনিস বল কিনতাম, তারপর ওসাকা টেপ পেঁচিয়ে ক্রিকেট খেলতাম মাঠে। মাঝেমধ্যে টাকা তুলে পিকনিক করতাম। কোনো টেনশন ছিলো না তখন। প্রতিটি দিন যেন আনন্দের ছিলো। আর এখন ঈদের দিনও তেমন আনন্দ লাগে না। আসলেই ভাই চাকরি করে নিজে রান্না করা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। দোয়া করি যেন সফলতার চূড়ায় উঠতে পারেন।

 last year 

আসলেই ভাই বর্তমানের ছেলে মেয়েরা আমাদের ঐ সময়ের গুরুত্ব টা বুঝবে না। প্রকৃতপক্ষে আমরাই তো আসল শৈশব কৈশোর অতিবাহিত করে এসেছি। সাদা কালো টিভিতে বাংলা মুভি দেখা। আবার বিকেল হলেই মাঠে খেলতে ছুটে যাওয়া। আর ঈদ আসার আগেই পরিকল্পনা করে রাখতাম এবার ঈদের সালামি দিয়ে কী করব হা হা। সেই সময় টা স্মরণ করিয়ে দিলেন ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

তুমি একদম ঠিক বলেছ সাদা কালো টেলিভিশনের কথা এখনকার জেনারেশনদের জানার কথা নয়। তবে আমার মনে পড়ে আমার বাবা যখন টেলিভিশন কিনেছিল তখন ওই এলাকায় আর কারো বাড়িতে টেলিভিশন ছিল না। তখন আমরা রাতে আমাদের বাড়ির উঠোনে টেলিভিশন বের করলে প্রতিবেশীরা সবাই এসে ভিড় জমিয়ে একসাথে সিনেমা দেখতো। তখনকার সময়ে মানুষের আন্তরিকতা ছিল অনেক বেশি যা এখন দেখা যায় না।♥♥

 last year 

আপনার অনুভূতি গুলো পড়ছিলাম আর আমিও সেই সোনালী অতীতে ফিরে যাচ্ছিলাম।দিনগুলো সত্যি সোনালী।তবে আর ফিরে আসবে না।সেই সাদাকালো টিভি, সেই নানা অনুষ্ঠানের জন্য অপেক্ষা করা এটা এ সময়ের ছেলেমেয়েদের বোঝার কথা ও নয়।কাজের সূত্রে পরিবার থেকে দূরে থাকতে হয়।আর তাইতো মায়ের কথা এখন এতো অনুভব করছেন।আশাকরি সোনালী দিনগুলোকে সঙ্গী করে বর্তমান দিনগুলোকে সচল রাখবেন।অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।

 last year 

ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে দারুণ একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। আসলে ভাই সেই শৈশবের সোনালী দিনগুলো এখন বেশ মিস করি। ঠিক বলেছেন ভাই আপনি শৈশবের ছোটবেলায় যখন খিচুড়ি দিয়ে সবজি রান্না করে পিকনিক করতাম তখন বেশ ভালই লাগতো খেতে। কিন্তু শত চেষ্টাও করলেও আর সেই শৈশবে ফিরে যাওয়া যাবে না ভাই। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 last year 

সময় দ্রুত হারিয়ে যায়। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে আমরা আমাদের অতীত হারিয়ে ফেলি। সত্যি ভাইয়া অতীতের সেই সময় গুলো অনেক সুন্দর ছিল। এখন আর সেই আন্তরিকতা কারো মাঝে নেই। এখন আর সেই বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে না। আর সময় গুলো কেন জানি বদলে গেছে। অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে।

 last year 

সেই সোনালী দিনগুলো আর ফিরে আসবে না। শুক্রবারে দুপুরে বাংলা সিনেমা, রাত টিভিতে বিভিন্ন সিরিজ। বন্ধুদের সাথে খেলায় কাটানো সময়। সব মিলিযে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছি। আর এখন তো অনলাইন আর ইন্টারন্টের কারনে বাহিরের জগৎ নিয়ে আমরা কিছুই জানিনা।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.15
JST 0.030
BTC 65556.02
ETH 2660.30
USDT 1.00
SBD 2.91