ট্রেন ভ্রমণ || নীলফামারী টু ঢাকা
এইতো গত ১০-১২ দিন আগে নীলফামারী গিয়েছিলাম বিশেষ কিছু কাজে এবং সেই কাজগুলো সম্পন্ন করার পরেই গতকাল রাতে ট্রেন যাত্রা করে আবার ঢাকায় ফিরে আসি। এই যাত্রার মধ্যে অনেক ধরনেরই অভিজ্ঞতা হয়েছে সেসব অভিজ্ঞতাগুলো আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করে নেব, তবে চলুন শুরু করি।
বর্তমানে আম্মু কোলকাতায় রয়েছে, এছাড়াও আমার ভার্সিটি বন্ধ ছিল তাই বাসায় গিয়েছিলাম। এছাড়াও বাসার মধ্যে এখন কেউ নেই বাসায় দেখাশোনা এবং বাসার বেশ কিছু কাজ ছিল তাই যাওয়া হয়েছিল। সত্যি কথা বলতে নিজের মাতৃভূমি ছেড়ে আসাটা অনেকটাই কষ্টকর একটি বিষয়। এবার নীলফামারীতে গিয়ে অনেক ধরনের মজা মাস্তি করেছি, যেগুলো ছোটবেলায় করতাম। যেমনটা আম চুরি করেছি, বন্ধু-বান্ধবের সাথে ক্রিকেট খেলেছি, আড্ডা দিয়েছি, আরো বেশ কিছু কার্যক্রম করেছি, সেগুলো আসলেই অনেকটা আনন্দঘন মুহূর্ত ছিল।
এদিকে আমার ভার্সিটিতে নতুন সেমিস্টার শুরু হয়েছে। যেহেতু আমার চার মাসের সেমিস্টার তাই খুব তাড়াতাড়ি ক্লাস শুরু হয় এবং ক্লাস শুরু হতে না হতেই মিড এক্সাম চলে আসে। বেশ কয়েকদিন আগেই নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কেটে রেখেছিলাম। যেহেতু সোমবারে তুলনামূলক কাজ কম থাকে তাই সোমবারই ট্রাভেল করার চেষ্টা করি। তাই সোমবারের টিকিট কেটেছিলাম এবং যথাসময়ে স্টেশনে গিয়ে পৌঁছাই। আমার জীবনযাত্রায় যতগুলো ট্রেন ভ্রমন করেছি কালকে ট্রেন ভ্রমনটা অনেকটাই ভালো ছিল। কারণ এক মিনিটও লেট করেনি এবং ঢাকায়ও ঠিক সময়ে আমাকে পৌঁছে দিয়েছে।
তবে একটা বিষয় আপনাদেরকে বলতে চাই, একা একা ট্রেন ভ্রমণ করে কোন মজা নেই বরঞ্চ সবসময় সতর্ক থাকতে হয়। নিজের ব্যাগ কিংবা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চুরি হয়ে গেল কিনা! অনেকেই ভাবতে পারে না এখনো কি চুরি হয়? হ্যাঁ এখনো এই ট্রেনের মধ্যে প্রচুর চুরি হয়। তাই তো যদি ট্রেন ভ্রমণ করতে হয় তাহলে বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সকলে মিলে ট্রেন ভ্রমন করলে সেটা আনন্দঘন হয়। গতরাতেও প্রচুর ঘুম পাচ্ছিল, কিন্তু ঠিকভাবে ঘুমাতে পারিনি। কারণ আমার ল্যাপটপের ব্যাগটি উপরে ছিল হঠাৎ করে যদি কেউ ব্যাগটি নিয়েও যেত আমি টের পেতাম না, তাইতো সবসময় সতর্ক অবস্থানে ছিলাম।
আমি যত বছর ঢাকায় রয়েছি, বেশিরভাগ সময় বাসে ট্রাভেল করেছি। বাসে ট্রাভেল করার সুবিধাও রয়েছে আবার অসুবিধা রয়েছে, সুবিধা হচ্ছে সেখানে ব্যাগগুলো অন্ততপক্ষে একটু হলেও ট্রেনের তুলনায় নিরাপদে থাকে। এছাড়াও বাসে আসলে বাসার পাশেই নামিয়ে দেয়। সব থেকে বড় দুটি সমস্যা হচ্ছে, রাস্তায় যদি যানজট থাকে তাহলে আমি আমার গন্তব্যে কখন পৌঁছাবো সেটা কেউ বলতে পারবে না। এছাড়াও বাসের মধ্যে ওয়াশরুমের ব্যবস্থা নেই, তাই তো বেশ সমস্যার মধ্যেই পরতে হয়।
ট্রেনে আবার এই ধরনের সমস্যা হয় না, ট্রেন এক-দুই ঘন্টা লেট হলেও সেটা পুষিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু যানজটের অবস্থা খারাপ হলে ১২-১৩ ঘণ্টা পর্যন্ত বাস দাঁড়িয়ে থাকতে পারে, এটা সত্যিই অসহনীয় একটি বেদনা। এছাড়ও বাসে তুলনায় ট্রেনের ভাড়া অনেকটা কম। যদিও আগে থেকে টিকিট কাটতে হয় এবং সিট পেতেও অনেকটাই সমস্যা পোহাতে হয়। তারপরও গত রাতে অনেকটা ভালো এনজয় করেছি। একটু বসে ছিলাম, আবার যখন খারাপ লাগছিল তখন একটু হাটাহাটি করছিলাম, ওয়াশরুমে যেতে পারছিলাম। সব মিলিয়ে অনেক ভালোই জার্নি হয়েছে গতকাল রাতে।
কমলাপুর স্টেশনে ঠিক সকাল সাতটার সময় নামিয়ে দেয় এবং সেখান থেকে নারায়ণগঞ্জে আছে প্রায় ঘন্টাখানেকের মত সময় লাগে। এদিকে আবার নারায়ণগঞ্জের পুরো রাস্তায় জ্যামে ভরা রয়েছে। তাই এইটুকু রাস্তা আসতেই অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে আগে পোস্ট লিখতে বসে পড়লাম, এরপরে কমিউনিটির কাজ গুলো করবো। আপনারা সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: ট্রেন ভ্রমণ || নীলফামারী টু ঢাকা
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম আপনার জার্নি খুব ভালো হয়েছে। আমি জীবনে প্রথম একবার ট্রেন জার্নি করেছিলাম তাও বেশি সময়ের জন্য নয়। গাজীপুর থেকে কমলাপুর আর ট্রেন দিয়ে সেভাবে যাওয়ার মতো কোনো জায়গা নেই বলে কখনো ট্রেনে যাতায়াত করা হয়নি। তবে এটা ঠিক বলেছেন ট্রেনের থেকে বাসে জিনিসপত্র একটু নিরাপদে থাকে কিন্তু জ্যামে পড়লে অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। তবে ট্রেন জার্নিতে জ্যামের দিক আবার চিন্তা করতে হয় না। যাই হোক যেহেতু আপনার আম্মু বাড়িতে ছিল না তাই কারো বারণ ও ছিল না আর সেজন্য যা ইচ্ছে তাই করেছেন। তবে নিজের জন্মস্থান ছেড়ে দূরে থাকার কষ্ট আমিও বুঝি ভাইয়া। কিন্তু কিছু করার নেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে এতটুকু ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। যাক অবশেষে নিরাপদে আবার বাসায় ফিরে আসতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ সুন্দর একটি ব্লগ শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন আপু, নিজের মাতৃভূমি ছেড়ে আসতে ইচ্ছে করে না। তারপরও জীবনের তাগিতে এটা করতেই হয়, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ট্রেন জার্নি বরাবরই আমার ভীষণ পছন্দ। তবে এটা ঠিক একা ট্রেন জার্নি করলে তেমন ভালো লাগে না। তার চেয়ে পরিবার কিংবা বন্ধু বান্ধবদের সাথে ট্রেন জার্নি করলে ভীষণ ভালো লাগে। যাইহোক ঢাকায় ঠিকঠাকমতো পৌঁছে গিয়েছেন,এটা জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ঠিক বলেছেন ভাই, আসলে বন্ধুবান্ধব কিংবা পরিবার থাকলে ট্রেনের জার্নি টা অনেকটাই আনন্দময় হয়ে ওঠে, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।