জানা-আজানা মহাবিশ্বের কিছু তথ্য || সৌরমণ্ডলের শেষ প্রান্ত

মহাকাশ নিয়ে আপনাদের অনেকের মধ্যেই বিভিন্ন ধরনের কৌতুহল রয়েছে। আমার মাঝে অনেক কৌতুহল রয়েছে সেই থেকে মহাকাশ নিয়ে একটু জানার চেষ্টা করি এবং নিজে থেকেই কিছু লেখার চেষ্টা করি। নিজে নিজেই মহাবিশ্বের বিভিন্ন জিনিস নিয়ে চিন্তা ভাবনা করি সে সব চিন্তা-ভাবনা আপনাদের সামনে আমি উপস্থাপন করি। যাই হোক আজ আমি আমাদের এই সৌরমণ্ডলের শেষ প্রান্ত নিয়ে কথা বলব। আমরা প্রায় সকলেই জানি আমাদের সৌরমণ্ডলের আটটি গ্রহ রয়েছে এবং এই আটটি গ্রহ সর্বশেষ গ্রহ হচ্ছে নেপচুন। এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে তাহলে কি এই নেপচুন পর্যন্ত আমাদের সৌরমণ্ডলের সীমাবদ্ধতা রয়েছে!! নাকি এরপরেও আরো বিভিন্ন বস্তুর অস্তিত্ব রয়েছে!! এসব প্রশ্নের উত্তর জানবো আজকের এই ইনফরমেটিভ পোস্টে।

যেহেতু আমাদের সৌরজগতের শেষপ্রান্ত নিয়ে কথা হচ্ছে সে ক্ষেত্রে দূরত্ব একক জানা আমাদের পক্ষে খুবই জরুরী। আমরা সকলেই জানি এক আলোকবর্ষ সমান সমান কতটুকু!! সেটা হচ্ছে মহাকাশে বিভিন্ন স্থানের দুরুত্ব পরিমাপের একক বলা চলে। তবে আমাদের সৌরমণ্ডলের ভিতর এই বিষয় গুলো অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট হিসেবে দূরত্ব পরিমাপ করা হয়। এক এস্ট্রোনোমিকাল ইউনিট সমান সমান পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব। যা প্রায় ১৫ কোটি কিলোমিটার। যেহেতু আমরা সৌরমণ্ডলের বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলছি তাই আমরা অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট একক ধরেই আমরা দূরত্ব নির্ধারণ করবো ইতিমধ্যে বলেছি এক অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট সমান সমান কত টুকু।

মূল কথায় যাওয়ার আগে আর একটি বিষয় ক্লিয়ার করি। যারা ছোটবেলায় মহাকাশ নিয়ে পড়েছেন, আগে আমাদের শেখানো হতো আমাদের সৌরজগতে ৯টি গ্রহ রয়েছে। তার মধ্যে সর্বশেষ গ্রহটি হচ্ছে প্লুটো কিন্তু এখন আর প্লুটোকে একটি গ্রহ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। তাকে ড্রফট প্লানেট বলা হয়। কিছু বছর আগেই বিজ্ঞানীরা একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। গ্রহ হিসেবে নিজেকে দাবি করার জন্য তিনটি বিষয়বস্তু বিবেচনা করা হবে। সেই বিষয়বস্তুর মধ্যে একটির ক্ষেত্রে প্লুটো সেই নিয়মের মধ্যে পরে না। সে ক্ষেত্রে তাকে লিস্ট থেকে বাদ দেওয়া হয়, তবে তার অস্তিত্ব এখনো রয়েছে। আমাদের এই সৌরজগৎ আমাদের কল্পনার থেকে অনেক বেশী বড়। নেপচুন আমাদের সৌরজগতের শেষ সীমানা নয়, এরপরেও হাজার হাজার কোটি কিলোমিটারের পথ আমাদের সৌরমণ্ডলের সীমানার মধ্যে পরে।

কিছু কিছু বিজ্ঞানী দাবি করেন, আমাদের এই সূর্যের আকর্ষণ বল যতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত আমাদের এই সৌরমন্ডল ততদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। আমাদের সৌরমণ্ডলের প্রথম চারটি গ্রহ হচ্ছে রকি প্লানেট। অর্থাৎ সেখানে মাটি বা পাথর রয়েছে এবং শেষের চারটি গ্রহ হচ্ছে গ্যাসীয় প্লানেট যেখানে তাদের কোন সার্ফেস নেই শুধুমাত্র গ্যাস পিণ্ড আকারে তারা তৈরি হয়েছে। এর পরেই মূলত আমাদের চলে আসে কুইপার বেল্ট। এর দূরত্ব ৫৫ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট থেকে ১০০ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট পর্যন্ত বিস্তৃত। এই কুইপার বেল্টে মূলত বিভিন্ন ধরনের ছোটখাট বড় পাথর এবং ধূমকেতুর বসবাস হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। কারণ এখানে প্রচুর পরিমাণে ধুলাবালি রয়েছে এবং সূর্যের আলো খুব বেশি না থাকার কারণে সেখানে অনেক বরফ হয়েছে।অনেকটা শনি গ্রহের যেরকম বলয় রয়েছে সেরকম আমাদের সৌরমণ্ডলের চারপাশে এই কুইপার বেল্ট প্রায় ৫৫ থেকে ১০০ এস্ট্রোনোমিকাল ইউনিট দূরত্ব পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।

আজকের কুইজঃ কোন তিনটি নিয়ম থাকলে সৌরজগতের কোন একটি বস্তুর নিজেকে গ্রহ হিসেবে দাবি করতে পারে! এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর যে আগে দিবেন সেই বিজয়ী হবেন। বিশেষ দ্রষ্টব্য, পোস্ট পড়ে পোস্ট এর সাপেক্ষে মন্তব্য করতে হবে। অতঃপর কুইজের উত্তর দিতে হবে। শুধুমাত্র কুইজের উত্তর দিলে আপনার প্রশ্নের উত্তরটি গ্রহণ করা হবে না।

মানুষ তৈরি দুটি মহাকাশযান এই কুইপার বেল্ট এর মধ্যে বর্তমান অবস্থান করছে। আপনারা প্রায় সবাই এই মহাকাশযান দুটির নাম শুনে থাকবেন ভয়েজার ১ এবং ভয়েজার ২। এতদুর পর্যন্ত পড়ার পর যদি আপনার মনে হয় এটাই হয়তো আমাদের সৌরজগতের শেষ সীমানা তাহলে অনেকটাই ভুল করবেন। কারণ সৌরজগতের শেষটি এখনো অনেকটা দুরে রয়েছে। এরপর যে বিষয়টি অবস্থান করছে তাকে বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছে ওড ক্লাউড। এই ওড ক্লাউড প্রায় ২০০ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট থেকে দুই লাক্ষ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এরপরে যেসব বস্তু রয়েছে সেসব বস্তুর প্রতি সূর্যের আকর্ষণ বল কাজ করে না।

_{Image Source}

২ লক্ষ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট আমাদের এই সৌরমণ্ডলের শেষ সীমানা প্রায় বলা চলে। তাহলে একবার চিন্তা করে দেখুন আমাদের এই সৌরজগৎ কতটা বড়!! যদিও মহাবিশ্বে তুলনায় আমাদের এই সূর্য একটি ধূলিকণা সমান ও নয়। তারপরও এই সব কিছু আবিষ্কার করতেন বৈজ্ঞানিকদের অনেক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে হয়েছে। কারণ মহাবিশ্বের সবকিছুই পরিবর্তনশীল এবং কখন কি হয় সেটি বলা অনেক কষ্টসাধ্য। এইসব বিষয়ে অধ্যয়ন এর মাধ্যমে আমরা জানতে পারি কোন কোন ধুমকেতু বা মহাকাশের কোন বস্তু আমাদের পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে। এর কারণেই কিন্তু আমরা বলতে পারি বা অধ্যায়ন করতে পারি। মাঝে মাঝে শুনতে পারি কোন এক বড় একটি এন্ড্রয়েড বা সৌরজগতের অবজেট আমাদের পৃথিবীর দিকে তেড়ে আসছে, এই সবকিছুই কিন্তু ওড ক্লাউড এবং কুইপার বেল্ট থেকেই আসে।

_{Scerinshort taken This web side}

আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। কেমন লাগলো আমার এই ইনফরমেটিভ পোস্ট তা অবশ্যই মন্তব্যে জানাবেন।

---

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

---

---

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP	500 SP	1000 SP	2000 SP	5000 SP

---

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

---

---

বিষয়: সৌরমণ্ডলের শেষ প্রান্ত

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......