অমর একুশে বইমেলা

গত কয়েকদিন আগে বই মেলায় গিয়েছিলাম এবং এবার একাই গিয়েছিলাম। বইমেলা যাওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে এবার কিছু বিজ্ঞান ভিত্তিক বই কিনব। সেইসাথে বিকেলের কিছুটা সময় বইমেলা উপভোগ করব। যেহেতু এই বই মেলা শাহবাগে আয়োজন করা হয়েছে আমার বাসা থেকে খুব একটা বেশি দূরে নয় মাত্র ৩০ মিনিটের ব্যবধানে. কিন্তু ঢাকা শহরের জ্যাম অতিক্রম করে যেতে প্রায় একঘন্টা লেগে গেল. ভিতরে ঢূকে আমার পছন্দের বিজ্ঞানভিত্তিক স্টলগুলোতে ঘোরাঘুরি শুরু করলাম।

আমার কাছে একটি বিষয় অনেক অবাক লেগেছে গতবারের তুলনায় এবার বইমেলায় গ্রাহকের সংখ্যা অনেক কম। বেশিরভাগ মানুষ শুধুমাত্র ঘোরাঘুরি করার জন্য এসেছে, বন্ধু-বান্ধবের সাথে আড্ডা দিতে এসেছে কিন্তু বই কেনার জন্য অনেক কম মানুষই এসেছে যা আমি পরবর্তীতে অনুধাবন করতে পারলাম। এখানে বিভিন্ন ধরনের খাবার দোকান বসেছে অনেক ধরনের রেস্টুরেন্ট রয়েছে সেখানে আবার প্রচুর ভিড় রয়েছে কিন্তু দুঃখের বিষয় বইয়ের স্থানগুলোতে কোন মানুষের কোন মানুষ নেই। এটা সত্যি আমাদের বাঙালি জাতির জন্য অনেক দুঃখজনক একটি বিষয়।

প্রথমত আমি আমাদের স্টলের দিকে এগিয়ে গেলাম। আমাদের স্টলটির ৯৮ নাম্বার। অনেকটা বইমেলার মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছে সেই স্টলটি। সেখানে গিয়ে আমাদের কাব্যকলি কাব্যগ্রন্থের খোজ খবর নিলাম, কতগুলো বিক্রি হল, এখনও কতগুলো রয়েছে সবকিছু হিসাব নেওয়ার পরে আমি বিজ্ঞানভিত্তিক স্টলগুলোতে ঘোরাঘুরি করছিলাম। এর মধ্যে আমার ব্ল্যাক হোল নিয়ে একটি বই আমার চোখে পরল। প্রথম একপৃষ্ঠা পড়তেই আমার কাছে অনেক ভালো লেগে যায় পরবর্তীতে সেই বইটি আমি কিনে ফেলি।

সাইকোলজিকাল বিষয়গুলো আমার ব্যক্তিগতভাবে অনেক ভালো লাগে। বিশেষ করে মানুষের আচার-ব্যবহার এবং এই সকল বিষয় নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষণ এটা সত্যিই আমার কাছে অনেক ভালো লাগে এবং ইন্টারেস্টিং লাগে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আপনাদের যেসব বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে ইন্টারেস্ট রয়েছে সেগুলো বিষয়গুলোতেই আপনার পড়াশোনা করা উচিত। তাহলে ভালো কিছু করা যেতে পারে। সেই বিষয়টি চিন্তাভাবনা করে মূলত আমি এসব বই পড়ি। বিভিন্ন ধরনের সাইন্সের বই মহাকাশে ভিত্তিক বই এছাড়াও আরো বিভিন্ন রকমের সাইকোলজিকাল বিষয়বস্তু, মানুষ কিভাবে চিন্তা ভাবনা করে, ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায় কি এসব বিষয়গুলো পড়তে আমার অনেক ভালোই লাগে।

যদিও আমি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর একজন ছাত্র তারপরও আমার এইসব বিষয়ে বেশি আকর্ষণ কাজ করে তাই বলে যে আমি টেক্সটাইল সেক্টরকে ভালোবাসি না তা কিন্তু নয়। আমি প্রতিদিন আমার পাঠ্যপুস্তক থেকে কিছু হলেও পড়ার চেষ্টা করি এবং টেক্সটাইল সম্পর্কে নতুন নতুন বিষয় অনুধাবন করার চেষ্টা করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় কি জানেন আমাদের যে সকল পাঠ্যপুস্তক বই রয়েছে সেগুলোতে যেসব টেকনোলজির কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো ২০ থেকে ২৫ বছর পুরনো. বর্তমান সময়ে টেকনোলজি এবং মেশিন অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে এসব বই গুলো প্রতিনিয়ত আপডেট করা জরুরি বলে মনে করছি।

তাই যখনই কোনো বিজ্ঞানভিত্তিক নতুন নতুন বই বের হয় সেগুলো পড়ার চেষ্টা করি, টেক্সটাইলের যখন নতুন নতুন বিষয় গুলো দেখতে পাই। তখন নিজেকেই অনেক গর্ব মনে হয় কারন একটা বিষয় কি মানুষ যতদিন পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে ততদিন পর্যন্ত মানুষের কাপড়ের প্রয়োজন পরবে। হোক ছোট কিংবা বড়, যাই হোক না কেন আমাদের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার কিন্তু এই চাহিদা পূরণ করে। তাই ছোট করে দেখার কিছু নেই আমি অনেক গর্ববোধ করি আমি একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র। তারপরও নতুন নতুন অনেক গুলো বিষয় রয়েছে যার কারণে আমাদের আগে অনেক বড় বড় মেশিনের কাজ বর্তমানে অনেক ছোট ছোট মেশিনে নিখুঁত কাজ সম্পাদন করা যায়। এই বিষয়গুলো আমাদের ফ্যাক্টরিগুলো জানান দিতে হবে এবং সেই সব মেশিন গুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। প্রতিবছর বাংলাদেশে টেক্সটাইল মেলার আয়োজন করা হয়। যেখানে নতুন নতুন মেশিন এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি আমরা দেখতে পাই। এবার যাওয়া হয়নি অনেক ব্যস্ততার কারণে এবং সেই সময় আমার পরীক্ষা চলছিলো।

যাইহোক টেক্সটাইল মেলানিয়ে অন্য একদিন কথা বলব যদিও আমি এবার যাইনি কিন্তু এর আগেরবার আমি গিয়েছিলাম টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে এবং সেখানে অনেক ধরনের নতুন নতুন প্রযুক্তি দেখতে পেয়েছি যাদের কার্যক্রম সম্পন্ন বিভিন্ন বর্তমান মেশিনের সাথে পরিচিত হয়েছি। যাই হোক বইমেলা থেকে আরেকটি বই কিনেছি সেটাও বিজ্ঞান বিষয়ে। এখনও বইগুলো পড়া শুরু করে নি তবে আস্তে আস্তে বইগুলো পড়া শুরু করব এবং পরবর্তীতে বইগুলোর কেমন লেগেছে এবং কোন কোন বিষয় এখানে উপস্থাপন করা আছে সেই বিষয়গুলো নিয়ে পরবর্তীতে রিভিউ দিব। বইগুলো কিনে আমি এক জায়গায় বসে কফি খেতে থাকলাম এবং সেখানে অনেক সময় অতিবাহিত করলাম।

পরবর্তীতে সন্ধ্যার পরে আমি বইমেলা থেকে বেরিয়ে আসি এবং বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। এই ছিল মোটামুটি বই মেলায় যাওয়ার অনুভূতি তবে একা গিয়েছি জন্য আরও সময়টা বেশ উপভোগ করতে পেরেছি। কারণ বন্ধুবান্ধবের সাথে গেলে শুধুমাত্র ঘোরাঘুরি এবং আড্ডা মজা হয় এভাবে করে বইয়ের স্টল এর সাথে পরিচিত হওয়া, এই বিষয়গুলো থেকে অনেকটাই দূরে থাকতাম। তাই আমি মনে করি মাঝে মাঝে একা বের হওয়ার মধ্যেও অনেক মজা রয়েছে। নিজেকে জানা যায়, নিজের সাথে সময় কাটানো যায় এবং নিজের মধ্যেই থাকা যায়। অনেক কিছুই বলে ফেললাম আপনাদেরকে। সবাইকে আহবান জানাচ্ছি বই মেলায় ঘুরে আসুন আর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কিন্তু আমাদের বাংলাদেশের বইমেলা শেষ হয়ে যাচ্ছে। যাই হোক সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

---

---

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP	500 SP	1000 SP	2000 SP	5000 SP

---

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

---

---

বিষয়: অমর একুশে বইমেলা

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......