"||চোখের সামনে ভেসে ওঠা স্মৃতিময় দিনগুলো||" (১০% লাজুক শিয়ালের জন্য বরাদ্দ)।
২৩ রমাদান, ১৪৪৩ হিজরি
২৫ এপ্রিল,২০২২সাল
স্মৃতিময় দিনগুলো যেন বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠে।
হ্যালো
মানুষ আমি ব্যক্তি হিসেবে নই তো এত দামি, ভালো থাকায় আসল সফলতা এটাই আমি মানি।
এখন পর্যন্ত জীবনের সবথেকে বেশি সময় কাটিয়েছি আমি আমার গ্রামের বাড়িতে। গত দুই চার বছর যাবত হয়তোবা আমি পড়াশোনার সুবাদে বাড়ির বাইরে অবস্থান করছি। কিন্তু আমার জীবনের একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে আমার গ্রামের বাড়িতে কাটানো সেই মুহূর্তগুলো। গ্রামের বাড়িতে পাঠানো এমন কিছু মুহূর্ত আছে যেগুলো আজীবন সাধনা করলেও হয়তো বা ভুলে যাওয়া অসম্ভব। এই জীবনে কখনই এই মধুর স্মৃতিগুলো ভুলা যাবে না কেননা এই স্মৃতিগুলো আমার জীবনের সাথে এমনভাবে জড়িয়ে আছে যে গ্যালারি ঘাটলেই তা বোঝা যায়। অনেক আগে হয়তোবা মানুষজন অনেক ভালো ভালো মুহূর্ত কাটিয়েছে কিন্তু এভাবে ক্যামেরাবন্দি করে রাখার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। কিন্তু বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির এই যুগে এই অনুভূতিগুলো আমরা একটুখানি ক্যামেরাবন্দি করে রাখতে পারি।
তারই সুবাদে আমি আমার কিছু আনন্দঘন অতীত আমার ফোনে ক্যামেরাবন্দি করে নিয়েছিলাম। তারই কিছু অংশ আমি আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেবার চেষ্টা করেছি আজ। আশা করি আমার এই আনন্দঘন মুহূর্তের গল্পগুলো আপনাদের সকলের অনেক ভালো লাগবে। গরম পেরিয়ে মাত্র শীত শীত ভাব চলে এসেছে। অর্থাৎ সময়টা ছিল সম্ভবত ইংরেজি মাসের ডিসেম্বর। তো এই সময়ে প্রায় পড়াশোনা তাগিদে যারা বাইরে থাকে তারা সকলেই গ্রামে চলে আসেন এবং এই সময়টাতে অনেক হৈ-হুল্লোড় এবং মজা মাস্তি হয়ে থাকে। কেননা শৈশবকালের সব বন্ধুরা এই সময় একটা সুযোগ পায় একত্রিতভাবে সমবেত হবার। এই সময়ে এই জন্যই অনেকেই অনেক উদ্যোগ নিয়ে রাখে অনেকেই অনেক প্লানচেট করে রাখে এবং এই সময়টাতে পিকনিক খাওয়ার ধুম পড়ে যায়।
এই সময়ে আমি তখন সবেমাত্র পড়াশোনার তাগিদে গ্রাম থেকে শহরের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছি। বলতে পারেন শহরের নতুন অতিথি বা নতুন বাসিন্দা ছিলাম আমি। তখনো শহরের সঙ্গে খুব একটা ভালো ভাবে খাপ খেয়ে নিতে পারিনি। এর মাঝেই চলে আসলো সেই সোনালী মুহূর্ত অর্থাৎ আমি যেই সময় টার কথা বললাম এতক্ষণ আপনাদের ডিসেম্বর মাস। আমিও একটু কিছুদিনের জন্য সময় পেলাম বাড়িতে আসার। কেননা আমার মন শুধু আনচান করছিল বাড়িতে আসার জন্য আসলেই আমি সেই সময়টাতে বুঝতে পারছিলাম গ্রামের মানুষজন শহরে থাকাটা কতটা কঠিন। গ্রামের মানুষ গ্রামের সহজ-সরল ভাবে চলাফেরা করতে পারে কিন্তু শহরে তা কোনভাবেই সম্ভব হয় না যান্ত্রিক শহরে নিজেকেও যন্ত্রের মত চলতে হয়। আর গ্রাম থেকে জানা যায় প্রথমের দিকে এই ব্যাপারটা অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।
আরেকটি কথা সেটি হচ্ছে এই ডিসেম্বর মাসে ফসলের মাঠ প্রায় ফাঁকা থাকে। এই ফসলের মাঠ ফাঁকা থাকাটাও গ্রামের ছেলেপেলে দের জন্য আলাদা একটা সুযোগ। গ্রাম অঞ্চলে সচরাচর সেইভাবে উপযোগী খেলার মাঠ না থাকায় অনেক গ্রামেই ছেলেপেলেরা ফসলের জমিতে হাল চাষ করে খেলার মাঠ বানিয়ে থাকে। এই সময়টাতে ফসলের জমিতে দেখা যায় কেউ কেউ ক্রিকেট খেলার জন্য খেলার মাঠের মতো করে ফসলের মাঠ প্রস্তুত করে। আবার কেউ কেউ ফসলের মাঠ কে ফুটবল খেলার মাঠ বানানোর জন্য প্রস্তুত করে নেয়।
তখন একদিন আমরাও সবাই মিলে একত্রিত হবে সমবেত হয়ে বসে আছি। হঠাৎ করেই কথা উঠলো ফসলের মাঠে ফুটবল খেলার জন্য একটি মাঠ বানানো হোক। যেই কথা সেই কাজ কেননা গ্রামের ছেলেপেলে অনেক পরিশ্রম হয়ে থাকে তাদের জন্য ফসলের জমিতে এই মাঠটা খুব ছোট একটি কাজ। এজন্যই তারা আর সময় না নিয়ে সকলেই আমরা বেরিয়ে পড়লাম মাঠ বানানোর জন্য। এবং সেই দিনে আমরা মাঠটি বানিয়ে ফেলে ছিলাম এবং সেই দিন আর খেলা হলো না আমাদের। কেন আসে দিন ও আমাদের কাছে খেলার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ উপকরণ ছিল না।
সেই রাতে আমরা কিছু টাকা চাঁদা তুলে পরদিন সকাল বেলা আমাদের নিকটবর্তী শহরে চলে যায়। এবং সেখান থেকে খেলার জন্য একসেট জার্সি এবং একটা ফুটবল কিনে নিয়ে আসি। জার্সি এবং ফুটবল পেয়ে আমরা ভালোই উৎসাহিত ছিলাম এবং চিন্তা করছিলাম কখন বিকেল হবে কখন বিকেল হবে আর আমরা সেই মাঠে খেলতে যাব। তো অপেক্ষার প্রহর শেষে সেই বিকাল এসেছিল এবং আমরা অনেক মজা মাস্তি করে সেই দিনটি সারাদিনের মাধ্যমিক শেষ করেছিলাম এবং অনেক উপভোগ করেছিলাম এই দিনটি। এই দিনের কথা আমার আজীবন মনে থাকবে কখনো ভুলব না আমি সেদিনের কথা।
সকলের সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। নিজে ভালো থাকবেন এবং অপরকে ভালো রাখতে সাহায্য করবেন। আল্লাহাফেজ।
Join the Discord Server for more Details
জীবন পাতার শেষ হওয়া একটা পাতার সংরক্ষণঃ
ভাই আপনার এই গ্রামের বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে কাটানো দিনগুলো দেখে আমার অতীত মনে পড়ে গেল। আমার অনেক বন্ধুবান্ধব ছিল। যাদের সঙ্গে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছি। সেই স্মৃতি গুলো কখনো ভুলবার নয়। আপনার সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
এত সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
সত্যি প্রযুক্তি আমাদের কতশত উপকারে আসে। চারবছর আগে উঠা ছবি এখন দেখলে মনের মধ্যে আলাদা একটা ভালো লাগা কাজ করে। এটা ঠিক বলেছেন ভাই গ্রামের ছেলেরা অনেক পরিশ্রমী হয়। আমরাও ফসলের মাঠকে খেলার মাঠ বানিয়েছি।তবে এই রকম একটি মাঠে খেলতে গিয়ে একবার আমার পা অনেকখানি কেটে গিয়েছিল শামুকে। কিন্তু সেই মজাদার দিনগুলো এখনো মনে পড়।।
ওটা সম্ভবত কাটানো হবে। পাঠানো হয়ে যাওয়ায় কেমন একটা লাগছে পড়তে।
ভাই আসলে ওইটা কাটানো হবে। আপনি ঠিক ধরেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি পুরো সময়টা গ্রামে কাটিয়েছেন শুনে আমার তো ভীষণ ভালো লাগলো। আসলে গ্রামে বসবাস করতে এই আমার মনে হয় একটু বেশি ভালো লাগে। আমার কাছে শহরের বন্দিজীবন একদম ভালো লাগেনা। আপনার গ্রামের অনেক গুলো স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে দেখে ভালো লাগলো। আজকে তো একদম স্মৃতি তুলে ধরেছেন। এরকম স্মৃতি গুলো সত্যিই ভুলার নয়। আমাদের মাঝে কথা গুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
কথা কওয়ার আসলেই গ্রাম অনেক আনন্দদায়ক একটি জায়গা।