হ্যালো আমার প্রিয় স্টিমিট বন্ধুগণ, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সকলেই অনেক ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ইনশাআল্লাহ অনেক ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। আমার মনটা আজ ভীষন ভারাক্রান্ত হয়ে আছে। আজ আমার পুরনো দিনগুলোর কথা খুব করে মনে পড়ছে। আজ আমার ফোনের গ্যালারিতে গিয়ে মনটা খুব বেদনাময় হয়ে গেল। কতদিন হল আমার প্রাণ প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় না। কতদিন হয়ে গেল আর একত্রিত হওয়া হয় না। যাইহোক বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি আমার কিছু আনন্দঘন মুহূর্ত আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেব বলে। আপনাদের সঙ্গে এই আনন্দের মুহূর্ত গুলো ভাগ করতে পারলে হয়তো বা আমার মনটা ভাল হয়ে যাবে।

বন্ধুরা দিনটি ছিল 2021 সালের সেপ্টেম্বর মাসের 18 তারিখ। এ দিনটিতে আমার জীবনের সেরা একটি মুহূর্ত কাটিয়েছে। এই দিনটি ছিল আমার ভীষণ এক আনন্দের দিন অনেক মজা মাস্তি এবং হই-হল্লোড় হয়েছে আমার প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে। আমার বন্ধু গুলো ছিল এক একটা ভীষণ হারামি তারা আমায় খুব জ্বালাত। সেই সময় কিছু মুহূর্তের জন্য তাদের এই জালানো গুলো আমার কাছে বিরক্তিকর মনে উঠেছিল। তারা অনেক খুনসুটি করত আমার সাথে। এমন সময় মনে হয় একবারও আসেনি যে তারা আমায় পচানোর সুযোগ পেয়েছে কিন্তু এ সুযোগটি তারা হাতছাড়া করেছে। যে জায়গায় যে মুহূর্তে হোক না কেন তারা যদি আমার একটু দুর্বলতাকে তো সেটা নিয়েই আমাকে পচাত পচাত। আমি সাথে সাথে তাদের সাথে রাগান্বিত হয়ে বাজে রিঅ্যাক্ট করতাম এবং তারা বেহায়ার মতো খিলখিল করে হাসতে আর মজ নিত।

এসবে আমার সেই সময়গুলোতে প্রচন্ড রাগ হতো নিজের সঙ্গে প্রচন্ড জেদ হত। তাদের আমি প্রচুর বকা দিতাম বাজে কথা বলতাম। কিন্তু তার বিনিময় উল্টো রিয়্যাক্ট করা তো দূরের কথা সব সময় হেসেই উড়িয়ে দিতো। আমি তখনও তাদের বন্ধুত্ব এত ভালোভাবে পড়তে পারিনি। ওই যে আগেই বলেছিলাম তারা ছিল এক একটা হারামি। তবে এখন মনে হয় আমার এই বন্ধু গুলো আমার জীবনের সত্যি কারের নায়ক। কেন বলছি এমন করে, এর পিছনেও অনেক শক্তিশালী ব্যাখ্যা আছে। আমি বারবার বলছি আমার বন্ধু গুলো হারামি কিন্তু তারা এতটা ভালো মানুষ যে তাদের ব্যবহার আমায় মুগ্ধ করেছে। তারা আমার খারাপ সময়ে চীনের প্রাচীরের মতো পেছনে দাঁড়িয়েছে এবং এ সবথেকে শক্তিশালী এক দেয়ালের মতো দাঁড়িয়ে থেকে আমাকে সাপোর্ট করেছে। তারা আমাকে কখনোই পিছুপা হতে দেয়নি আমার স্বপ্নগুলোকে তারা কখনোই হার মেনে নিতে দেয়নি। বলতে পারেন আজ আমি মোটামুটি আমার স্বপ্নের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছি।

আমার জীবনের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য এবং স্বপ্ন আমি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করব। এই স্বপ্নটা আবার সকল বন্ধু জানে এবং এই স্বপ্নের সারথি তারা। তারা আমায় সব সময় অনুপ্রাণিত করেছে এবং আমার খারাপ সময় গুলোতে তারা সব সময় পাশে থেকেছে। তাদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে কখনোই ছোট করতে চাই না। আমার জন্য যত কিছু করেছে তা কখনোই লিখে বা বলে শেষ করা যাবে না এমন। ওই যে বললাম তারা আমার জীবনের সত্যি কারের নায়ক। কিন্তু তারপরও আমি তা তাদের বারবার ভিলেন হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেই সবার মাঝে। এতক্ষণ তো আপনাদের অনেক দুঃখের কথা শুনালাম আমার সুখের বাণী আনন্দঘন মুহূর্তের কথা শোনানোর কথা বলে। তো বন্ধুরা চলুন আনন্দের মুহূর্ত গুলো শেয়ার করে নেয়া যাক ছবিতে ছবিতে গল্পে গল্পে।

এখানে একটি আমার দুঃখের ছোট একটি গল্প আছে। এই গল্পটি আমি বড় করতে চাই না আর কখনো আমার ইচ্ছা হবে কিনা জানিনা এই গল্পটি বড় করার। লজ্জাবোধ টুকু দূর করে বলছি জানিনা এটা বলা উচিত হবে কিনা কেননা এখানে আমার ছোট বড় অনেকেই আছেন। তবুও আজ যেন আমি একটু আবেগী হয়ে গেছি, একথাটি না বললে কেন জানি মনের মধ্যে কেমন কেমন একটা ব্যাপার চলে আসছে। কথাটি হলো সেই সময় আমার একটা মেয়ে বান্ধবী ছিল এবং তার সঙ্গে আমার ব্রেকআপ হয়ে যায়। আমার মনটা ভীষণ খারাপ ছিল সেই সময় এই কথাটি আবার এক ভিলেন বন্ধু জানতে পারে। পরদিন সকাল বেলা সবাই আমার মেসেজ সামনে হাজির ও হ্যা বলা হয়নি এরা সবাই পড়াশোনার সুবাদে বগুড়ায় অর্থাৎ একই শহরে থাকা আমাদের সেই সময়টাতে।

সকালবেলা আমার মেসেজ সামনে এসেই ফোন আলমগীর কোথায় তুই। আমি বললাম মেসেজ একজন বলল আমি আসতেছি তোর মেসেজ সামনে দরজা খোল। আপনি তো পুরোই সারপ্রাইজড দেখি একে একে সব হারামি গুলো উপস্থিত। তখনও আমি তাদের প্রাণ সম্পর্কে কিছু জানি না। আমি তাদের একসঙ্গে দেখে প্রশ্ন করলাম কিরে তোরা সবাই যে এক সঙ্গে কোনো সমস্যা হয়েছে কিনা। এই সময় এক বাঁদর ফ্রেন্ড মজা করে বলল বিশাল সমস্যা হয়েছে রে বন্ধু তুই তাড়াতাড়ি প্যান্ট শার্ট পরে বের হয়েনে যাইতে হবে এক জায়গায়। আমি বললাম কোথায় তার পাল্টা উত্তর তোকে জানতে হবে না ওকে বের হতে বলছিস তুই বের হয়ে আয়। ব্যাস কোন কথা নেই আমি আর কোন প্রশ্ন না করে তুমি গিয়ে তাড়াহুড়ো করে একটা প্যান্ট আর গেঞ্জি পড়ে চলে আসলাম।

কিন্তু আমার মন কিছুতেই সাঁই দিচ্ছে না তাদেরকে বললাম কি হয়েছে বলবি। তো কোথায় যাচ্ছে আমরা? এক বন্ধু আমায় বলল আরে মামা শুনলাম তোর ব্রেকআপ হয়েছে। তাই চল একটু চিল করে আসি এমন দিনে মন খারাপ করতে নেই। আমরা আছি না!! আমরা থাকতে তোর মন খারাপ কেন হবে। যাইহোক তাদের কথা শুনে আমি একটু নিস্তার পেলাম। কত কিছুই চিন্তা করে বসে ছিলাম না জানি কি না কি হয়েছে। তাদের বললাম এখন বল তাহলে আমরা যাচ্ছি কোথায় তাদের উত্তর প্রেমে ছেকা খেয়েছি তাই চল সারিয়াকান্দি প্রেম যমুনার ঘাটে যাব। শুনে হেসে দিলাম তাদের এসব খুনসুটি দেখে আমার মন খারাপ উধাও কোথায় হারিয়ে গিয়েছে তা জানা নেই আমার।

এই দিনে আমরা ভীষণ মজা করেছি নৌকায় উঠে তো আমাদের যেন এক বাঁধভাঙ্গা উল্লাস। সব হারামি গুলো একসাথে কি যে একটা অনুভূতি তা বলে বুঝাবার মত নয়। আর যেকোনো জায়গায় গেলে আমার এই বন্ধু আর সেলফি না তুলে চলেই না। জন্যই তো আমি তারে বলি সেল্ফি পাগলা আবার কখনো বলি বিউটি প্লাস এসব বলে তাকেও আমি প্রচন্ড খেপায়।

আমার এতগুলো বন্ধুর মধ্যেও আমার খুবই নিকটতম এবং কাছের একজন বন্ধু রউফ। ওকে আমি সব সময় খেপাতাম। এবং সে আমার কথা মাঝে মাঝে অভিমান করত। আমি এটা বুঝতে পারতাম এবং তার সঙ্গে আরো বেশি বেশি খুনসুটি করতাম। এবং তার অভিমানের পাল্লা টা যখন একটু বেশি ভারী হয়ে যেত তখন তাকে খুশি করার জন্য তার প্রিয় জিনিস গুলো তার সামনে হাজির করতাম। বিশেষ করে সে পড়াশোনার বিষয় ছিল খুব সিরিয়াস। এই জন্যই তাকে আমি তার মন খারাপের দিনে চেষ্টা করতাম ভালো একটা বই উপহার দেওয়ার জন্য।

আমার বন্ধুদের নিয়ে গল্প তো বলে শেষ করা যাবেনা। কিন্তু আমার সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা প্রচন্ড পড়াশোনা করতে হয়। আর আমার জন্য দোয়া করবেন আমার স্বপ্ন যেন পূরণ হয়। আজ আর গল্প না বাড়ায় আজকের মত গল্পটি এখানে শেষ করা যাক। আজ আর না হয় আবার আমার বন্ধুদের গল্প আপনাদের সাথে ভাগ করে নেয়া যাবে।

আজ এই গল্পটি লেখার মূল উদ্দেশ্য হলো তাদের আমি খুব মিস করছি। তাদের কথা আমার খুব মনে পড়ছে আজ। এখন আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার জন্য এক একজন এক এক শহরে অবস্থান করছি। কিন্তু তাতেও আমাদের দূরত্বটা এতটাও বেড়ে যায়নি ভার্চুয়ালি সব সময় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়ে থাকে। কিন্তু তাতেও কেন জানি মন ভরেনা তৃপ্তি পায় না। যেখানেই থাকুক হারানো বন্ধু গুলো ভালো থাকুক সবাই পূর্ণ হোক সবার স্বপ্ন এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আজকের গল্প এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ সবাইকে আমার এই গল্পটি পড়ার জন্য।