আজকে আমি আপনাদের সামনে আবার হাজির হয়েছি আমার একটি ভ্রমণকাহিনী নিয়ে। আজকে আমি আপনাদের সাথে জলসিঁড়ি পার্কে আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলবো। জলসিঁড়ি পার্ক ঢাকা শহর থেকে এক ঘন্টার দূরত্বে জলসিঁড়ি আবাসনে অবস্থিত। এই পার্কটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত, এবং মনোরম একটি পরিবেশে কিছুটা সময় কাটানোর জন্যে অত্যন্ত উপযুক্ত।

---

_{ছবিটি তোলার তারিখ :- ৬ জানুয়ারি ২০২৪
ডিভাইস :- Realme Narzo 20}

---

আমরা যখন পৌছাই তখন প্রায় দুপুর দেড়টার মতো বাজে। একদম ভরদুপুরে কোনকিছু দেখে মজা পাওয়া যাবে না, এজন্যেই আমরা পার্কের রেস্টুরেন্টে বসে খেয়ে নিই। আমরা সপ্তাহের শেষে যাওয়ার কারণে প্রচুর ভিড়ের সম্মুখীন হই, এজন্যে খাবার অর্ডার করতে কিছুটা সময় চলে যায়। তবে অর্ডার করার পর খাবার বেশ তাড়াতাড়িই চলে আসে। মেনুর একটি বিষয় ছিলো যে এখানে বাংলা খাবার পাওয়া যায় না, সবই বলতে গেলে বিদেশি খাবার, তবে এটা আমাদের জন্যে কোন সমস্যা তৈরি করে নি। খাবার বেশ সুস্বাদু ছিলো, যা আমরা বেশ উপভোগ করেছিলাম।

---

_{ছবিটি তোলার তারিখ :- ৬ জানুয়ারি ২০২৪
ডিভাইস :- Realme Narzo 20}

---

খাওয়াদাওয়া শেষ করে আমরা বাইরে বের হওয়া মাত্রই জায়গাটার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে যাই। তখন পড়ন্ত বিকেল, ভরদুপুরের রোদটা ছিলো না। সেই সময় আমরা সবাই পালা করে অনেকক্ষণ খোলা জায়গাতে ব্যাডমিন্টন খেললাম, আর খেলতে খেলতে সময়টা বেশ সুন্দরভাবে চলে গিয়েছিলো বলতে হবে। এরপর আমরা পার্কের বাকি অংশগুলো ঘুরে দেখতে গেলাম।

---

_{ছবিটি তোলার তারিখ :- ৬ জানুয়ারি ২০২৪
ডিভাইস :- Realme Narzo 20}

---

পার্কের ঠিক মাঝামাঝি এলাকায় অবস্থিত আক্ষরিক অর্থেই একটা কৃত্রিম “জলসিঁড়ি”। এদিকে ওদিকে কিছু ট্রাম্পোলিন ছিলো, যেখানে বাচ্চারা লাফালাফি করছিলো। সামনে ছিলো বিরাট এক মুক্তমঞ্চ, যেখানে কোন একটা পিকনিক চলছিলো। এর পাশেই রান্না হচ্ছিলো, আর খাবারের সুবাস চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছিলো। আরেকটু সামনে আগালেই আরো বেশ কিছু স্লাইড ও দোলনা, সেখানেও মোটামুটি বাচ্চাদের একটা ভিড় লেগেছিলো। তা থেকে আরেকটু এগোলেই হবিট হোল, যা মূলত ‘লর্ড অব দা রিংস’, ‘পাইরেটস অব দা ক্যারিবিয়েন’ ও ‘হ্যারি পটার’ থেকে অনুপ্রাণিত একটি প্রদর্শনী। এটাও বেশ সুন্দর ছিলো।

---

_{ছবিটি তোলার তারিখ :- ৬ জানুয়ারি ২০২৪
ডিভাইস :- Realme Narzo 20}

---

তবে পার্কের মূল আকর্ষণ হলো পার্কের মধ্যে অবস্থিত সম্পূর্ণ বাস্তব মেইজ অর্থাৎ গোলকধাঁধাটি। আমি শুধু গোলকধাঁধার কথা বইতে পড়েছিলাম আর সিনেমায় দেখেছিলাম, এর আগে বাস্তবে আমার এটা দেখার সৌভাগ্য হয় নি। তাই আমি এটার জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম। আর সত্যি বলতে, আমি যতটা আশা করেছিলাম, এটা তার থেকেও বেশি অবাক করেছে আমাকে। গাছ ছেঁটে ছেঁটে বেশ সুন্দর করে মেইজটি গড়ে তোলা হয়েছে, আর প্রবেশের অনেকগুলো রাস্তা যেমন ছিলো, বের হয়ে আসারও ৩টি রাস্তা ছিলো। অর্থাৎ, আপনি এই একই মেইজ তিনটি আলাদা উপায়ে সমাধান করতে পারবেন। মাঝখানে রাস্তা দেখার জন্যে কিছু টাওয়ার ও একটা ব্রিজ ছিলো, যাতে আমরা রাস্তা দেখে বের হতে পারি। এটা একদম অন্যরকম একটা অভিজ্ঞতা ছিলো আমার জন্যে। আমি নিজে প্রায় ১ ঘন্টার মতো সময় নিয়ে শেষ পর্যন্ত অন্য কারো সাহায্য ছাড়াই বের হয়ে আসতে পেরেছিলাম, আর এটা আমার অনেক ভালো লেগেছিলো।

---

_{ছবিটি তোলার তারিখ :- ৬ জানুয়ারি ২০২৪
ডিভাইস :- Realme Narzo 20}

---

_{ছবিটি তোলার তারিখ :- ৬ জানুয়ারি ২০২৪
ডিভাইস :- Realme Narzo 20}

---

এরপর সন্ধ্যা হয়ে আসে, আর আমরা পার্ক থেকে বের হয়ে যাই। তবে সেসময়ও পার্কটির সূর্যাস্তের পরের সৌন্দর্য দেখে আমরা আবার মুগ্ধ হই। সত্যি বলতে ঢাকার মতো ব্যস্ত শহরে যদি এরকম পার্ক আরো কয়েকটা করা যেত, তাহলে ঢাকার মানুষ বাস্তবিক অর্থেই একটু স্বস্তি পেত বলে আমার বিশ্বাস। আপনারাও চাইলে ঘুরে আসতে পারেন, একটি ভালো সময় যে আপনাদের কাটবে, এই বিষয়ে আমি একদম নিশ্চিত।

---

যদি আপনাদের আমার পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন।

---

💗ধন্যবাদ💗