---

কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করছি সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সকলেই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।আজকে আমরা যে সিনেমাটা নিয়ে কথা বলবো তা হলো ‘স্পাইডার-ম্যানঃ অ্যাক্রস দা স্পাইডার-ভার্স’। এটি কলম্বিয়া পিকচার্স ও সনি অ্যানিমেশন স্টুডিওস এবং মার্ভেল এন্টারটেইনমেন্ট এর সম্মিলিত প্রযোজনায় নির্মিত একটি অ্যানিমেটেড মুভি, যা ২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘স্পাইডার-ম্যানঃ ইনটু দা স্পাইডার-ভার্স’ সিনেমার দ্বিতীয় কিস্তি।

---

বিষয়	নাম
মুভির নাম	স্পাইডার-ম্যানঃ অ্যাক্রস দা স্পাইডার-ভার্স
সময়কাল	১৪০ মিনিট
পরিচালক	জোকুইম দস সান্তস
শ্রেষ্ঠাংশে	শ্যামেইক মুর, হেইলি স্টাইনফিল্ড, জেক জন্সন, কারান সোনি, ইসা রেই, অস্কার আইজ্যাক।
মুক্তির তারিখ	০২ জুন, ২০২৩।
মূল ভাষ	ইংরেজি
কান্ট্রি অফ অরিজিন	যুক্তরাষ্ট্র

---

_{স্ক্রীনশট:- HQflix}

মূল কাহিনী

আর্থ-৬৫ তে, পুলিশ ক্যাপ্টেন জর্জ স্টেসি জানে না যে তার মেয়ে গোয়েন স্টেসি হচ্ছে স্পাইডার-ওম্যান। কয়েক বছর আগে, গোয়েনের কারণে তার বন্ধু পিটার পার্কার মারা যায় যখন সে নিজের অজান্তে লিজার্ড অবস্থায় শহরে তান্ডব চালাচ্ছিলো। এরপর থেকেই পুলিশ তাকে খুঁজছে। একদিন রাতে, গোয়েনের ইউনিভার্সে একটি ইটালিয়ান রেনেঁসার ইউনিভার্সের ভালচার চলে আসে। মিগেল ও’হারা এবং জেস ড্রু সেখানে আসে মাল্টিভার্সাল পোর্টাল ব্যবহার করে, আর গোয়েনকে তারা সাহায্য করে। কিন্তু একপর্যায়ে জর্জ গোয়েনকে ধরে ফেলে, আর গোয়েন নিজের পরিচয় জর্জকে জানায়। প্রচন্ড অভিমানে জর্জ গোয়েনকে গ্রেফতার করতে চায়, মিগেল গোয়েনকে স্পাইডার-সোসাইটির সদস্য করে নেয়, আর তারা তিনজন সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

আর্থ-১৬১০ এর ব্রুকলিনে, কোলাইডার দুর্ঘটনার ১৬ মাস পর, মাইলস মোরালেস এর সাথে স্পটের দেখা হয়, যার ঐ কোলাইডার দুর্ঘটনার ফলে পুরো শরীর পোর্টালে ভরে গেছে। স্পট তার এই অবস্থার জন্যে মাইলসকে দায়ী করে, এবং জানায় যে যে মাকড়শাটা মাইলসকে কামড়েছিলো সেটা এই ইউনিভার্সের না, বরং আর্থ-৪২ এর। স্পট এরপর নিজেকে দুর্ঘটনাবশত একটি ভয়েডে নিয়ে যায়, যেখান থেকে এরপর সে বিভিন্ন ইউনিভার্সে যেতে থাকে।
গোয়েন আর্থ-১৬১০ এ গোপনে স্পটের গতিবিধি নজরদারি করতে গিয়ে মাইলসের সাথে দেখা করে। মাইলস গোপনে গোয়েনকে অনুসরণ করে, এবং তারা আর্থ-৫০১০১ এ যায় এবং সেখানে পবিত্র প্রভাকরের সাথে দেখা করে- যে ওই ইউনিভার্সের স্পাইডার-ম্যান। এরপর তাদের সাহায্য করতে হোবি ব্রাউন আসে, এবং তারা একসাথে স্পটকে আক্রমণ করে। স্পট সেই ইউনিভার্সের কোলাইডারকে গ্রাস করে ফেলে, আর মাইলস স্পটের সাথে ভবিষ্যতের কিছু ঘটনা নিজে দেখতে পায়, যার মধ্যে ইন্সপেক্টর সিং (পবিত্রের গার্লফ্রেন্ড গায়ত্রীর বাবা) এবং মাইলসের বাবা জেফার্সন ডেভিসের মৃত্যুদৃশ্য ছিল। কোলাইডার ধ্যন্স হওয়ার সময়, মাইলস ইন্সপেক্টর সিং কে বাঁচাতে সক্ষম হয়, কিন্তু একটি “ক্যানন ইভেন্ট” ব্যাহত হয়। স্পাইডার-সোসাইটির সদস্যরা এসে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে, আর জেস ড্রু গোয়েন, মাইলস ও হোবিকে আর্থ-৯২৮ এ স্পাইডার-সোসাইটির হেডকোয়ার্টারে নিয়ে যায়, যেখানে তাদের সাথে পিটার বি পার্কার, তার মেয়ে মেইডেই পার্কার, ও মিগেল ও’হারার সাথে দেখা করে। মিগেল জানায় যে স্পাইডার-সোসাইটির সব অভিযানে ক্যানন ইভেন্ট অক্ষত রাখতে হয়, আর ক্যানন ইভেন্ট হচ্ছে সেইসব ঘটনা যা সব স্পাইডার-মানুষের জীবনেই ঘটে। এর মধ্যে একজন পুলিশ ক্যাপ্টেনের মৃত্যুও রয়েছে।

_{স্ক্রীনশট:- HQflix}

মাইলস বুঝতে পারে যে তার মানে তার বাবাও মারা যাবে, আর মিগেল জানায় যে সেটা ২ দিনের মধ্যে ঘটবে। মাইলস তার বাবাকে বাঁচাতে চায়, কিন্তু মিগেল জানায় যে তাকে বাঁচালে তার ইউনিভার্স ধ্বংস হয়ে যাবে। মিগেল মাইলসকে বন্দিকরে রাখে, কিন্তু হোবি তাকে পালাতে সাহায্য করে। মিগেল স্পাইডার-সোসাইটির সবাইকে মাইলসকে ধরার জন্য আদেশ দেয়। মিগেল কোনমতে মাইলসকে ধরতে পারে, আর সে জানায় যে মাইলস ই হচ্ছে প্রথম ব্যতিক্রম, কারণ যে মাকড়শাটা মাইলসকে কামড়েছিলো সেটা তাকে কামড় দেওয়ার কথা ছিলো না, আর মাইলসের স্পাইডার-ম্যান হওয়ার কোন কথা ছিলো না। মাইলস মিগেল থেকে পালিয়ে যায়, কিন্তু সে বুঝতে পারে যে ভুল্ক্রমে আর্থ-৪২ এ চলে গেছে নিজের ইউনিভার্সের জায়গায়। মিগেল গোয়েনকে বরখাস্ত করে, আর তাকে নিজের ইউনিভার্সে পাঠিয়ে দেয়। গোয়েনের সাথে তার বাবার দেখা হয়, আর সে বুঝতে পারে যে তার বাবা চাকরি ছেড়ে দেওয়ায় তার ক্যানন ইভেন্ট এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। গোয়েনের বাবা তাকে হোবির দেওয়া একটি পোর্টাল ওয়াচ দেয়।
মাইলস দেখে যে আর্থ-৪২ এ তার আংকেল অ্যারন এখনও বেঁচে আছে, এবং তার বাবা মারা গেছে। এখানে নিউ ইয়র্ক অপুরাধে ভরপুর কারণ কোন স্পাইডার-ম্যান নেই, আর এই ইউনিভার্সের মাইলস আসলে প্রাউলার। আর্থ-৪২ এর মাইলস আর্থ-১৬১০ এর মাইলসকে অবহরণ করে নিয়ে যায়। গোয়েন তার ওয়াচ ব্যবহার করে আর্থ-১৬১০ এ গিয়ে বুঝতে পারে এ ভুল ইউনিভার্সে চলে গেছে, আর এজন্যে তাকে বাঁচানোর জন্যে গোয়েন একটি দল গঠন করে, যার মধ্যে রয়েছে পিটার বি পার্কার ও তার মেয়ে মাইডেই, পবিত্র প্রভাকর, হোবি ব্রাউন, মার্গো কেস, স্পাইডার-ম্যান নয়ার, পেনি পার্কার, আর স্পাইডার-হ্যাম; আর ঐদিকে মাইলস পালানোর প্রস্তুতি নেয়।

_{স্ক্রীনশট:- HQflix}

ব্যক্তিগত মতামত

এই মুভিটি আমার মতে আমার দেখা সেরা মুভিগুলোর একটি ছিলো। এই মুভিটার নির্দেশনা, পরিচালনা, সংগীত পরিচালনা, অ্যানিমেশন, কন্ঠাভিনয়- সব ছিলো অসাধারণ। বিষেষ করে এই মুভিটার অ্যানিমেশন এতো সুন্দর যে প্রত্যেক সেকেন্ডে মুভিটাকে থামালে যে দৃশ্য দেখা যাবে, তা বাঁধাই করে রাখার মতো। সিনেমাটার গল্প অনেক আকর্ষনীয় এবং নতুন, কোন জানা গল্পের পুনরাবৃত্তি না এটা। প্রত্যেকটা সংলাপ ছিলো উপভোগ করার মতো। মুভিটার ইমোশনাল মুহূর্তগুলোতে যেমন আমি কেঁদেছি তেমনই হাস্যকর মুহূর্তে আমি হেসেছি। গোয়েনের ক্যারেকটার ডেভেলপমেন্ট দেখার মত ছিলো, আর আমি সত্যিকার অর্থেই বলতে পারি যে আমার দেখা সেরা স্পাইডার-ম্যান মুভি ছিলো এটা। আমি আশা করি আপনারাও মুভিটি সেরকমভাবেই উপভোগ করবেন।

ধন্যবাদ

_{Posted using SteemPro Mobile}