"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা -০৯ // শীতের পিঠা // বিবিখানা পিঠা রেসিপি (১০% পে-আউট লাজুক খ্যাকের জন্য)
স্টিমিটের সহযোদ্ধারা,
আসসালামু আলাইকুম, আশা করি আপনারা সবাই ও আপনাদের পরিবারকে নিয়ে আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালই আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি। আমি আজকে "আমার বাংলা ব্লগ" কতৃক আয়োজিত এবারের শীতের পিঠা তৈরি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত উচ্ছ্বাসিত। তাই আমি এই কমিউনিটির ফাউন্ডার, সকাল এডমিন ও মডারেটরের প্রতি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ এইজন্য যে তারা এরকম একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। আশা করি আমি আজকে যে শীতের পিঠা তৈরীর রেসিপিটি আপনাদের সামনে শেয়ার করবো, রেসিপিটি আপনাদের কাছে ভাল লাগবে।
পিঠা পুলি বাঙালির একটি ঐতিহ্য। পিঠা পছন্দ করে না এমন লোক পাওয়া মুশকিল। তবে শহর এলাকায় পিঠা তৈরি তেমন পরিলক্ষিত না হলেও গ্রামের অধিকাংশ এলাকায় এই পিঠা উৎসবের আয়োজন হয়ে থাকে। ইদানিং শহরের কিছু কিছু জায়গায় পিঠার মেলার আয়োজন হচ্ছে। যা শহরের মানুষের জন্য এবং যারা নতুন প্রজন্ম তাদেরকে এই পিঠা সাথে পরিচিত হওয়ার একটা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমি মনে করি এটা আমরা যারা শহরে থাকি তাদের জন্য খুবই আনন্দের একটি বিষয়। তাই আমাদের প্রত্যেক বাবা-মায়ের উচিত তাদের সন্তানদেরকে এসব পিঠা মেলায় নিয়ে গিয়ে শীতকালীন পিঠা গুলোর সাথে পরিচিত করানো উচিত।
আমি আজকে যে এই রেসিপিটি আপনাদের সামনে শেয়ার করব সেটি নাম হচ্ছে "বিবিখানা পিঠা রেসিপি।"
শরীয়তপুরের এক বিখ্যাত খাবারের নাম বিবিখানা পিঠা। এ পিঠা মূলত তালের জ্বাল দেয়া ঘন রস দিয়ে তৈরি হয়। চালের গুড়া, ময়দা, গুঁড়াদুধ, ঘন তরল দুধ, চিনি, তেল, ডিম, এলাচগুঁড়া এর প্রধান উপাদান। চালের গুঁড়া, ময়দা, গুঁড়াদুধ, এলাচগুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে তাতে ডিম ফাটিয়ে মিশ্রণ তৈরি করা হয়।
Source
এটি শরীয়তপুর জেলার বিখ্যাত পিঠা হলেও আমার কাছে তারা যেভাবে পিঠাটি তৈরি করে থাকে সেভাবে খুব একটা ভালো লাগে না, তাই আমি আমার মতো করে এটি তৈরি করলাম। আমার বানানো রেসিপিটি অত্যন্ত সুস্বাদু হয়েছিল এর আগেও আমি এই পিঠাটি কয়েকবার বানিয়ে খেয়েছিলাম তাই এই পিঠাটি আমার কাছে খুব ভালো লাগে। এই জন্য আমি আপনাদের সামনে এই বিবিখানা পিঠা রেসিপিটি শেয়ার করছি।
এই বিবিখানা পিঠাটির সবচাইতে আকর্ষণ হচ্ছে বা আমার যে জন্য এই পিঠাটি সবচাইতে বেশী ভালো লাগে তা হল এই পিঠার মধ্যে আলাদা আলাদা দুইটা পিঠার স্বাদ পাওয়া যায়। একটি হচ্ছে আমরা যে কেক খেয়ে থাকি সেই কেকের একটা স্বাদ এবং তার সাথে ভাপা পিঠারও একটা স্বাদ পাওয়া যায়। এক কথায় আপনি যদি এই পিঠা খেয়ে থাকেন তাহলে আপনি মনে করবেন যে আপনি কেক খাচ্ছেন এবং সেইসাথে ভাপা পিঠাও খাচ্ছেন। আর যেহেতু পিঠাটি সাথে খেজুরের রসের গুড় মেশানো হয়েছে তাই এর প্লেবারটা কেমন হবে আপনারা বুঝতেই পারছেন।
উপকরণ ও পরিমাণ।
- চালের গুঁড়া: ১.৫ কাপ
- ময়দা: ০.৫ কাপ
- ডিম: 2 টি
- ঘি: ১.৫ চামচ
- বেকিং পাউডার: ১ চামচ
- ঘন গরুর দুধ: ১ কাপ
- চিনি: ৪ চামচ
- খেজুরের রসের গুড়: ১ কাপ ও
- লবণ: পরিমাণমতো।
প্রস্তূত প্রণালী
শুকনা মিশ্রণঃ
- প্রথমে আমি একটি পেয়ালার মধ্যে চাউলের গুড়া,ময়দা, বেকিং পাউডার ও পরিমাণমতো লবণ দিয়ে শুকনা ভাবে সব গুলোকে একসাথে মিশিয়ে নিলাম। একটা কথা বলে রাখি আমি এখানে চাউলের গুড়ার সাথে ময়দা মিশালাম এই জন্য যাতে আমার পিঠাটি ঠাণ্ডা হলেও শক্ত হয়ে না যায়। যাতে এটি নরম থাকে এবং সেইসাথে খেতেও খুব ভালো লাগবে।
তরল মিশ্রণঃ
পিঠাটি তৈরি করার জন্য আমাকে এখানে বেশ কয়েকটি আইটেম একসাথে মিক্স করে একটি তরল মিশ্রণ তৈরি করতে হবে, তা ধাপে ধাপে আপনাদের সামনে শেয়ার করছি।
- আপনারা লক্ষ্য করেন আমি প্রথমে ডিম দুটিকে একটি পেয়ালা মধ্যে ভেঙ্গে নিয়েছি। তারপর পরিমাণমতো ঘি, খেজুরের রসের গুড়, চিনি, নারিকেল, ঘন গরুর দুধ ও শুকনা মিশ্রণটি একসাথে দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিলাম। মিশ্রনটিকে এমন ভাব মিশাতে হবে যাতে করে মিশ্রণটি ভালো করে মিশে যায়।
- এ পর্যায়ে আমার বিবিখানা পিঠা বানানোর সকল উপকরণ নিয়ে মিশ্রণটি তৈরি হয়ে গেল।
চূড়ান্ত পর্যায়ঃ
এখন আমি আপনাদের সামনে শেয়ার করব কিভাবে আমি এই মিশ্রণটিকে একটি বিবিখানা পিঠা তৈরী করে নিলাম।
- একটি পেয়ালা নিয়ে তারমধ্যে তেল মাখিয়ে নিলাম এরপর সেই পেয়ালার মধ্যে আমি মিশনগুলোকে ঢেলে নিলাম।
- এরপর আমি একটি পাতিলে পরিমাণমতো পানি দিলাম এবং সেখানে নিচে একটি কাপড় পানির মধ্যে দিলাম। এরপর পাতিল এর মধ্যে পানির উপরে একটি স্ট্যান্ড বসিয়ে মিশ্রণটি ভরা পেয়ালাটিকে বসিয়ে দিলাম।
- এরপর আমি মিশ্রণটির উপরে নারিকেলের গুড়া কিছু ছিটিয়ে দিলাম এবং একটি ছোট্ট প্লেট দিয়ে পেয়ালাটিকে ঢেকে দিলাম। তারপর তার ওপরে আরো একটি ঢাকনা দিয়ে পাতিলটি ডেকে দিলাম।
- এরপর চুলার আগুনের তাপমাত্রা টা ৫ মিনিট সম্পূর্ণ তাপমাত্রা দিয়ে এরপর তাপমাত্রাটা মিডিয়াম আছে রেখে প্রায় ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট চুলায় রেখে দিলাম।
- আর এভাবেই তৈরি হয়ে গেল আমার আজকের শীতকালীন পিঠা রেসিপি বিবিখানা পিঠা। এবং এই পর্যায়ে আমার বিবিখানা পিঠা রেসিপিটি পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।
আশা করি আমার পিঠা রেসিপি সম্পূর্ণ প্রস্তুত প্রণালী দেখে আপনারা পিঠার রেসিপি তৈরি করতে পারবেন।
আমার আজকের রেসিপিটি দেখার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনারা সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর আমার জন্য দোয়া করবেন।
শুভেচ্ছান্তে,@alauddinpabe
বিভাগ | ফটোগ্রাফি |
---|---|
ডিভাইস | রেডমি নোট ১০এস |
লোকেশন | গাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ 🇧🇩 |
ফটোগ্রাফার | @alauddinpabel |
ভাই এই পিঠার নাম আমি প্রথম শুনলাম।আগে কখুনো এমন পিঠার নাম শুনিও নি আবার খাইও নি।প্রথমে দেখে ভেবেছিলাম এটা ভাপা পিঠা পরে ধাপ গুলো সুন্দর করে দেখলান এটা ইউনিক একটি পিঠার রেসিপি ছিল।আপনার জন্য অগ্রিম শুভেচ্ছা।
পিঠাটি দেখতে তাই মনে হয়। তবে আপনি পিঠার রেসিপি একবার বানিয়ে খেয়ে দেখবেন আশা করি ভালো লাগবে। অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার তৈরি করা বিবিখানা পিঠাটির নামটি আমার কাছে অনেক সুন্দর লেগেছে। বিবিখানা নামটিই অন্য রকম। আর এই পিঠাটি আমার কখনোই খাওয়া হয়নি। আসলে নতুন নতুন পিঠার রেসিপি দেখতে কার না ভালো লাগে। আপনার পিঠার রেসিপিটি আমি একবার বানিয়ে দেখবো অবশ্যই।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
বাহ ভাইয়া শীতের বিবিখানা পিঠা রেসিপি শেয়ার করেছেন আমাদের সাথে। অনেক সুন্দর হয়েছে ভাইয়া আপনার রেসিপি টা। অনেক সুন্দর উপস্থাপন করেছেন। প্রতিটা ধাপ সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন আমাদের সাথে। শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন রইল।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার গঠনমূলক মন্তব্য আমাকে অনুপ্রাণিত করে। আশা করি আরো ভালো ভালো রেসিপি আপনাদের উপহার দিতে পারব।
বাহহহহ, আসাধারনএকটি পঠির রেসিপি দেখলাম।দরুন হয়েছে দেখতে। মনে হচ্ছে খেতেও খুবই মজা হয়েছিল। 😋😋
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আমাদের মাঝে এত সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য
জি আসলে খেতে খুব মজা হয়েছিল। একবার বাসায় বানিয়ে খেয়ে দেখবেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মন্তব্যের জন্য।
আপনি খুব সুন্দর পিঠার রেসিপি তৈরি করেছেন। বিবিখানা পিঠা আমি প্রথম নাম টি শুনলাম। খেতে নিশ্চয়ই খুবই মজার হবে ।পিঠা তৈরির প্রতিটি ধাপ আপনি এতো সুন্দর করে দেখিয়েছেন কি আর বলব। প্রতিটি ধাপ আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। একদম স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, কিভাবে আপনি পিঠা তৈরি করেছেন ।ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সঙ্গে এত সুন্দর একটি পিঠার রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনাদের মন্তব্য পেলে আরও উৎসাহ বেড়ে যায়। আশা করছি আপনাদের জন্য আরো ভালো ভালো রেসিপি নিয়ে আসতে পারবো।
পিঠার নাম যেমন সুন্দর তার সাথে পিঠাটিও খুব ভালো লাগতেছে। অনেক সুন্দর করে তৈরি করেছেন বিবিখানা পিঠা। অনেক ধন্যবাদ খুব সুন্দর করে পিঠা বানিয়ে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
আরে ভাই ২০১৮ এর শেষের দিকের স্মৃতি মনে করায় দিলেন।প্রথমবার ঢাকায় গিয়েছিলাম।ফুফাতো ভাইয়ের মেসে উঠেছিলাম,ঝিগাতলায়। ওখানে স্থানীয় দোকানে এইটা পাওয়া যেত।খাওয়ার পর তালুতে কিছুটা লেগে থাকতো।দুধ দিয়ে খেতে বেশ ভালোই লেগেছিল।
আপনার উপস্থাপনা এবং রেসিপি বাছাইকরণ অসম্ভব ভালো ছিল।ধন্যবাদ ❣️
জ্বি ভাই ভালোই বলেছেন। আর আপনার পিছনে কিছু স্মৃতি মনে করে দিতে পারছি বলে নিজেকে ধন্য মনে হচ্ছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ভাইয়া আপনি দারুন একটি পিঠা রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার পিঠা দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুবই ভাল হয়েছে। তবে বিবিখানা এই নামটি আমার কাছে একদমই নতুন। যাইহোক সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন আপনি। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
আপনার জন্য শুভকামনা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনি খুব সুন্দর করে বিবিখানা পিঠা টি প্রস্তুত করেছেন দেখে খেতে ইচ্ছা করছে। ধাপ গুলো সুন্দর করে উপস্থাপন করেছে।
ভাই একবার বানিয়ে খেয়ে নিবেন আশা করছি ভাল লাগবে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
বিবিখানা পিঠা নামটা একেবারে নতুন শুনলাম। বিবিখানা পিঠা কখনো খাওয়া হয়নি তবে আপনার পিঠার রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে এটি খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। আপনার রেসিপিটা আমি বাসায় ট্রাই করে দেখবো। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া একটি ইউনিক পিঠার রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার জন্য শুভকামনা রইল। আপনার মন্তব্য আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে।