রহস্যগল্প "মাশরুম" // গল্পের রিভিউ (১০% পে-আউট 'লাজুক-খ্যাক' এর জন্য)

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

স্টিমিটের সহযোদ্ধারা,
আসসালামুয়ালাইকুম, সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি।

received_1045807439590595.jpeg

আমি আজকে আপনাদের সামনে রহস্যগল্প "মাশরুম"এই গল্পের রিভিউ উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে আমার রিভিউটি ভালো লাগবে।
তাহলে চলুন আর দেরী না করে আমার তৈরি করা রিভিউটি আপনারা সবাই দেখে নিবেন।

⭐⭐গল্পের রিভিউ⭐⭐

গল্পের নাম: মাশরুম।

লেখকের নাম: Phantom.
গল্পের ক্যাটাগরি: রহস্য গল্প।
গল্পের চরিত্রে: ডাক্তার সোমা, মিস্টার ভি. বালাপোরিয়া এবং কেয়ারটেকার ছোট্টুলাল।

গল্পের সারসংক্ষেপ:
ডাক্তার সোম একজন আমেরিকা ফেরত মাশরুম গবেষক। তিনি টক্সিক প্রজাতির মাশরুম নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি মাশরুমের জিনোম সিকোয়েন্স চেঞ্জ করে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের মাশরুম উৎপাদন করতে চেষ্টা করেন।

ডাক্তার সোম আমেরিকা থেকে দুবছর আগে এসে মধ্যপ্রদেশের এই পাণ্ডববর্জিত জঙ্গলের মধ্যে একটি গবেষণাগার স্থাপন করেছিলেন। সেই গবেষণাগার পরিদর্শনের জন্য মধ্যপ্রদেশের সরকার একজন পরিদর্শক পাঠিয়ে ছিলেন তার নাম হলো মিস্টার ভি. বালাপোরিয়া।

তিনি পরিদর্শনে এসে ডাক্তার সোমের গবেষণাগারে পরিদর্শন ও গবেষণার কাগজপত্র পরীক্ষা করে মোটামুটি সারাদিন কেটে দিলেন। সন্ধ্যার সময় তারা দুজনে ডাক্তার সোম এর ব্রাজিল থেকে আনা কফি খেতে খেতে এই মাশরুম নিয়ে আলোচনা করছিলেন। সেখানে ডাক্তার সোম এটা বলেছিলেন যে তার যতগুলো মাশরুম গবেষণা হচ্ছে তা প্রায় সবগুলোই ব্রাজিল থেকে আসা। তখন মিস্টার ভি. বালাপোরিয়া ডাক্তার সোমকে জিজ্ঞাসা করলেন কোথায় আপনার গবেষণাগারে তো কোন মাশরুম দেখতে পেলাম না। তখন ডাক্তার সৌম বললেন দেখুন আমার গবেষণাটা মূলত জিন নিয়ে। আর আপনি যদি আমার গবেষণাকৃত মাশরুমগুলো দেখতে চান তাহলে আপনাকে ওই যে জঙ্গলের মাঝে প্লাস্টিকের শেডটি দেখা যাচ্ছে সেখানে আপনাকে যেতে হবে। তখন মিস্টার ভি. বালাপোরিয়া সেখানে যাওয়ার জন্য অনেক কৌতুহলী হয়ে উঠলেন এবং তিনি এখনই সেখানে যাবেন সে অভিপ্রায় ব্যক্ত করলেন। তখন ডাক্তার সোম তাকে একটি শর্তে নিয়ে যাবেন বলে আশ্বস্ত করলেন। শর্তটি ছিল কোন মাশরুমে হাত দিয়ে স্পর্শ করা যাবে না। তখন তিনি ডাক্তার সোমকে প্রশ্ন করলেন কেন করা যাবে না তিনি উত্তরে এটাই বললেন নিরাপত্তাজনিত কারণে এবং আপনি যদি মাশরুমের স্পর্শ করেন তাহলে আপনার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। তখন মিস্টার ভি. বালাপোরিয়া মৃদু হেসে ডাক্তার সোমকে আশ্বস্ত করে তারা সেখানে রওনা দিলেন।

মিস্টার ভি. বালাপোরিয়া মাশরুম গবেষণাগারে গিয়ে দেখে সে পুরাই অবাক হয়ে গেলেন এবং জীবনে এত বাহারি ধরনের মাশরুম সে কখনো দেখিনি বলে ডাক্তার কে বলতে লাগলেন। মাশরুমগুলো দেখতে দেখতে হঠাৎ করে তার নাকে একটি মিষ্টি গন্ধ এসে পৌঁছালো এবং সে কোথা থেকে আসছে তা দেখার জন্য সেখানে থাকা একটি পিতলের গামলায় কাছে গিয়ে পৌঁছালেন। গিয়ে দেখলেন কোন মাশরুম নেই শুধু একটি পিতলের গামলা। তিনি ভালোভাবে দেখার চেষ্টা করছিলেন। হঠাৎ ডাক্তার সোম এটা দেখতে পেয়ে তার উপরে খুবই রাগান্বিত হয়ে তাকে এখান থেকে নিয়ে চলে আসলেন। এই বিষয়টির জন্য ডাক্তার সোম তার উপরে খুবই রেগে গিয়েছিলেন। এতে করে মিস্টার ভি. বালাপোরিয়া একটু অবাকই হলেন।

তারপর তারা রাতের ডিনার শেষ করলো শেষ করে যার যার ঘরে ঘুমানোর জন্য চলে গেল। এদিকে মিস্টার ভি. বালাপোরিয়া এই ঘটনার পর থেকে রাতে ঘুম আসছিল না। সে অনেক বেশি কৌতুহলী হয়ে উঠলো। রাত যখন দুটো বাজে তখন সে জানালা আফসার দেখতে পেল ডাক্তার সোম তার মাশরুম গবেষণাগার থেকে ফিরে আসছে এতে করে সে আরো বেশি কৌতুহলী হয়ে উঠল। তখন সে ডাক্তার সোমের বুকসেলফ থেকে একটা ডাইরি পেলো। যদিও কারো অনুমতি ছাড়া কারো ডায়েরি করা অন্যায় কিন্তু সেই মুহূর্তে তিনি তার মাত্রাধিক কৌতহলের কাছে ন্যায়-অন্যায় ভোদটা হারিয়ে ফেললেন। এবং সেখানেই তিনি দেখতে পেলেন ডাক্তার সোমের "আমার মাস্টারপিস" একটি আবিষ্কার সম্পর্কে কিছু তথ্য পেলেন। এবং এটাই হলো ডাক্তার সোম এর সেরা আবিষ্কার। এটা দেখে মিস্টার ভি. বালাপোরিয়া এটাই বুঝতে পারলেন যে সেই পিতলের গামলা টি হচ্ছে ডাক্তার সোমের তখন রেগে যাওয়ার মূল কারণ। এবার তিনি ঠিক করলেন তিনি আবার সে মাশরুম গবেষণা ঘরে যাবেন এবং এর বিষয়ে তিনি আরো ভাল করে খোঁজখবর নেবেন। যদিও তিনি ডায়েরি পড়ে এর সম্পর্কে কিছু জেনে ছিলেন এবং জেনে তখনই কিছুটা ভয় উদ্বিগ্ন হয়ে গিয়েছিলেন তার পরেও তিনি অতি উৎসাহের কারণে সেখানে যাবেন বলে ঠিক করে।

এরপর তিনি ডাক্তার সোমকে কিছু না জানিয়ে চুপিচুপি সেখানে চলে গেলেন এবং সেখানে গিয়ে তিনি সেই পিতলের গামলাটার কাছে গেলেন। এর আগে তিনি যে রকম মিষ্টি গন্ধ পেয়েছিলেন এখন তারচেয়ে বেশি মিষ্টি গন্ধ পাচ্ছেন। এরপর তিনি পর্দা দেওয়া ঘরটা ছিল সেখানে পর্দাটা সরিয়ে সেখানে কি আছে দেখতে চাইলেন তার মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে। সেখানে তিনি দেখলেন কিছু গিনিপিগ খাঁচার মধ্যে রাখা আছে আর কিছু মৃত গিনিপিগ পড়ে আছে। এরপর তিনি আবার সেই পিতলের গামলার কাছে এসে দাড়ালেন এবং খুব গভীরভাবে তিনি সে গামলার মাটির দিকে তাকিয়ে থাকলেন এবং সেখানে দেখতে পেলেন কিছু সাদা কালো বাদামি রঙের গিনিপিগের লোম পড়ে আছে।

তিনি কোন কিছু মনে না করে সেই মৃত গিনিপিগের লোমগুলো স্পর্শ করলেন, আর এটাই ছিল তাঁর জীবনের সবচাইতে বড় ভুল। এরপর তিনি যা দেখতে পেলেন সেই পিতলের গামলার মাটিতে থাকা অসংখ্য ছিদ্র থেকে কুচকুচে কালো রংয়ের শতশত পিনের একটা কুশন যেন উপরের দিকে নিমিষেই উঠে এলো। এবং তখনই তিনি ভাল করে দেখতে পেলেন সেই মাশরুমগুলো। শত শত আলপিন আকৃতির নিকষ কালো মাশরুম এই মুহূর্তে তিনি কোন কিছু না চিন্তা করে না ভেবে সেগুলোর মাথার উপরিভাগে স্পর্শ করলেন। এরপর তিনি আস্তে আস্তে ত্রিশ মিনিটের মধ্যেই সম্পূর্ণভাবে প্যারালাইজড হয়ে গেলেন এবং তিনি দেখতে পেলেন কালো মাশরুম গুলো রক্তের মতো লাল রঙের আকার ধারণ করল। অবশেষে তিনি মৃত্যুবরণ করলেন।

গল্পের পজিটিভ দিক:

  • গল্পটি থেকে আমরা খুব ভালো একটি শিক্ষা নিয়েছি সেটি হল কৌতুহল ভালো কিন্তু অধিক কৌতুহল মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। তাই আমাদেরকে ভালোভাবে যেকোন বিষয়ের উপরে জেনে বুঝে পা বাড়াতে হবে। এবং গল্পটি পড়ে আমরা খুবই আনন্দ পেয়েছি যেহেতু গল্পটির মধ্যে পুরোটাই জুড়ে রহস্যে ভরা ছিল।

গল্পের নেগেটিভ দিক:

  • সত্যিকার অর্থে এই গল্পের কোন নেগেটিভ বিষয় আমার নজরে আসেনি। তবে আমি এখানে এটাই বলব, যে বিষাক্ত মাশরুম গবেষণা করে তৈরি করা হচ্ছে এবং যা মানুষের ক্ষতি করে সেরকম গবেষণা ডাক্তার সোমকে না করাই উচিত।

লেখক এর উদ্দেশ্যে কিছু কথা:

  • এই গল্পটি খুব অসাধারণ একটি গল্প ছিল আর এই গল্পটি নিয়ে আমি আপনার প্রথম গল্প পড়েছি। আসলে যে এরকম অসাধারন গল্প লিখতে পারে তার উদ্দেশ্যে কারো কিছু বলার থাকতে পারে না আমার ও কিছু বলার নেই। আমি শুধু এটাই বলব যে আপনি এরকম আরো ভালো ভালো গল্প লিখে আমাদেরকে উপহার দিবেন এবং আমরা যাতে আপনার গল্প কে অনুসরণ করে ভবিষ্যতে আপনার মত হতে না পারলেও যাতে আমরা এই গল্প লেখার ব্যাপারে উৎসাহিত হতে পারি। অনুসরণ করতে পারি আপনাকে। সে সাথে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম একটি অসাধারন রহস্য ঘেরা গল্প আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য।

রেটিং: আমার অবজার্ভেশন ১০/১০

শুভেচ্ছান্তে,@alauddinpabel
আমি আলাউদ্দিন পাবেল।
গাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে।

Sort:  

অসাধারণ রিভিউ করেছেন ভাই।পুরো গল্পটির সারাংশ আপনার পোস্টে তুলে ধরেছেন।খুব সুন্দর হয়েছে।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে গল্পটি আমাদের মাঝে পুনরায় তুলে ধরার জন্যে।শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।

 3 years ago 

আপনার জন্য শুভকামনা। ধন্যবাদ আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।

খুব সুন্দর রিভিউ করেছেন ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে গল্পটির সারাংশ সংক্ষেপে তুলে ধরার জন‍্য।

 3 years ago 

ধন্যবাদ অসাধারণ মন্তব্যের জন্য।

 3 years ago 

আপনি মাশরুম গল্পের রিভিউ টি অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন। আপনাকে স্পেশালিস্ট বলা যেতে পারে। আপনি রান্নাবান্না থেকে শুরু করে অংকন রিভিউ আপনি অনেক পারদর্শী। আপনি গল্পটির ভালো এবং মন্দ দিক দুটি তুলে ধরেছেন এবং কি বুঝতে অনেক সহজ করে দিয়েছেন। আপনি পুরো গল্পটাকে ছোট্ট একটা গল্প বানিয়ে দিয়েছেন যেখানে পুরোটাই গল্প উঠে এসেছে গল্পের সারমর্ম। আপনার জন্য রক্তিম শুভেচ্ছা রইল ভাই।

 3 years ago 

আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার অতি অতি অতি মূল্যবান সম্পদ মূলক মন্তব্যের জন্য

 3 years ago 

অর্কিড গল্পের শেষ পর্বে চেষ্টা করুন, শেষ হ্যাঙ্গআউটের দাদার প্রশ্নের উওর মন্তব্য আকারে দেওয়ার জন্য। যদি উওর গ্রহণ যোগ্য হয় তাহলে ভাল কিছু সম্মানী পাবেন । ধন্যবাদ।

 3 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনার পরামর্শের জন্য। তবে আমি দাদার কুইজের উত্তর তো মন্তব্য আকারে দিয়ে দিয়েছি আর সেটা শেষ পর্বে নয়, 11 তম পর্বে দাদা দিতে বলেছিলেন।
তাহলে এখন শেষ পর্বে কি এর মন্তব্যটি দিতে হবে?

 3 years ago 

খুব ভালো রিভিউ লিখেছেন 👍
শুভ কামনা রয়েছে আপনার জন্য সবসময়ই ☺️

 3 years ago 

আপনার জন্য শুভকামনা। অসংখ্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 64364.24
ETH 3416.30
USDT 1.00
SBD 2.48