আমার স্মৃতির পাতা থেকে নেওয়া (পর্ব ১) // ১০% পে-আউট লাজুক খ্যাঁক 🦊
হ্যালো, স্টিমিটের আমার সহযোদ্ধারা, আসসালামুয়ালাইকুম, আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় আমিও ভালো আছি। আমি আজকে আপনাদের সামনে আমার জীবনের কিছু ঘটে যাওয়া ভাল ও খারাপ স্মৃতি শেয়ার করতে যাচ্ছি।
এখন আমি আপনাদের সামনে আমার ছোটবেলার একটি খারাপ স্মৃতি বর্ণনা করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
আমার এই খারাপ স্মৃতির আমি নাম দিয়েছি "সবাই কেন আমায় ঠকায়"আপনারা সবাই জানেন অতীত ঘাটলে মানুষ কষ্ট পায়। আসলে আমিতো অতীত ঘাটতে চাই না কিন্তু এই অতীত আমার পিছু ছাড়ে না। কোন মানুষ যদি আমার কাছে ছোটখাটো বিষয়ে কোনোসহযোগিতা চায় আমি কেন জানি খুব সহজে না করতে পারিনা। কিন্তু যখন আমি তাকে সহযোগিতা করলাম পরবর্তীতে আমি তার কাছে যদি কোনো সহযোগিতা চাই সে যখন আমার মুখের উপরে সরাসরি না করে দেয় তখন আমি আমার সেই পুরনো অতীতে ফিরে যেতে বাধ্য হই। যাই হোক আমি আপনাদের সামনে আমার একটি পুরনো ছোটবেলার অতীতের মারাত্মক স্মৃতি আপনাদের সামনে শেয়ার করব।
হার-জিত লাভ-ক্ষতি নিয়েই আমাদের কিন্তু জীবন। তাই এই জীবনে মানুষ একবার হারবে আর একবার জিতবে এটাই বাস্তবতা। আর এই বাস্তবতায় আমি বুঝিনা কেন জানি আমি সারাজীবনে হেরেই গেলাম। তখন আমি শুধু নিজেকেই নিজে ধিক্কার দেই আর বারবার বলি এটি কেন করলাম কি কারনে করলাম? সামনে আর কখনো করবো না এমন শপথ নেওয়ার পর ওই একই ভুল আবার হয়ে যায় আর ঠিক তখনই আমার এই একটি প্রশ্ন জাগে "সবাই কেন আমায় ঠকায়"। তখন আবার এই চিন্তা আসে যে আর কাউকে সহজে বিশ্বাস করব না সহযোগিতা করব না কিন্তু জানিনা কেন জানি এই অবস্থানে আমি থাকতে পারিনা।
মূল ঘটনা:
১৯৯৬ সালে, আমি যখন ক্লাস সেভেনে পড়ি, বয়স তখন ১৩ বছর। আমাদের ওই সময় মানুষের হাতে হাতে তেমন কোন মোবাইল ফোন ছিল না সে কারণে আমার খালুর ও মোবাইল ফোন ছিল না। খুব কম মানুষের হাতেই মোবাইল ফোন ছিল এবং তখন প্রচুর দাম ছিল। তখন শুধু চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ আদান-প্রদান করা হত। আমি তখন চট্টগ্রামে থাকতাম একদিন আমি আমার বড় খালুর সাথে নানার বাড়ি যাওয়ার জন্য বায়না ধরেছি অনেক দিন বাড়ি যাই না। যে কথা সেই কাজ আমি বাড়ি যাওয়ার জন্য বড় খালুর সাথে রওনা হলাম চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে রাত ৯:০০ টার ট্রেনে করে নোয়াখালী যাব। স্টেশনে পৌঁছে গেলাম এবং ঠিক ৯:০০ সময় আমাদের ট্রেনটি নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে দিল। এটাই ছিল আমার জীবনের প্রথম ট্রেন জার্নি।ঘটনাটি আমার জন্য যেমন আনন্দের ছিল আবার দুঃখের কারণ ছিল।
আমি তখন খুবই আনন্দিত ও উচ্চসিত ছিলাম যেহেতু ট্রেনে করে এই প্রথম বাড়ি যাচ্ছি। বড় খালু সিটে বসেছিল আর আমাকে চিট এর উপরে যেখানে ব্যাগ রাখা হয় সেখানে আমাদের ব্যাগ মাথা নিচে দিয়ে আমি শুয়ে ছিলাম। যেহেতু আমার ট্রেন জার্নিতে ছিলো রাতের বেলায় আর আমি ছিলাম জানালার উপরের তাই বাইরে তেমন কিছু দেখা যাচ্ছিল না এবং যেহেতু শুয়ে ছিলাম তাই আমার ঘুম এসে গিয়েছিলো হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল এবং আমি শুনতে পারছি সামনের স্টেশনে (লাকসাম) আমাদের নামতে হবে তো আমি উপর থেকে নিচে নেমে খালুকে ডেকে তোলার চেষ্টা করতেছি ঠিক ওই মুহূর্তে দেখি আমার খালু সহ আরো আশে পাশে যারা ছিল সবাই পকেটমারের পাল্লায় পড়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। এবং মাটিতে অনেকগুলো ডাব পড়ে আছে যেগুলো থেকে তারা পানি খেয়ে ছিল এবং যার যেখানে যা কিছু ছিল সব কিছু নিয়ে গেছে এগুলো দেখে আমি খুব ভয় পেয়ে গেছিলাম।
একপর্যায়ে আমি কান্না শুরু করেছিলাম। আমার বড় খালুর জ্ঞান ফেরানো সম্ভব হচ্ছিল না। এরমধ্যে আবার ট্রেন ছেড়ে দিল আমি অনেক মানুষকে বলেছিলাম যে আমাকে একটু সাহায্য করেন আমি এই স্টেশনে নামবো কিন্তু আমার খালু অজ্ঞান হওয়ার কারণে আমি তাকে নামাতে পারছি না সে বিষয় হলো কেউ তখন আমাকে সাহায্য করবে না। আর আমরা যে স্টেশনে নামার কথা শেষ স্টেশন পার হয়ে পরবর্তী স্টেশনে চলে গেলাম, কিন্তু আমি ঐসময় জানতাম না আমি কোন স্টেশনে এসে পৌছালাম সেরকম খেয়াল নেই স্টেশনের নাম কি। চোখে মুখে অনেক পানি ছিটানোর পর আমার বড় খালু একটু হালকা হালকা জ্ঞান ফিরে এলো কোন ভাবে অন্য একজন লোক এর মাধ্যমে ধরে ওই স্টেশনে বড় খালু কে নিয়ে নেমে পড়লাম।
তারপর আমি স্টেশনের এক কোণে নিরিবিলি জায়গায় গিয়ে খালুকে শুয়ে দিলাম এখানে একটি বিষয় বলে রাখি আমি যে ব্যাগে মাথা দিয়ে শুয়ে ছিলাম সেই ব্যাগে খালুর হাতের ঘড়ি ছিল অনেক দামী এবং আমার ছোট খালার এসএসসি পরীক্ষার ফিসের জন্য প্রায় ৬০০০ টাকা ছিল। এগুলো কিন্তু আমার কাছে থাকার কারণে পকেট মাররা নিতে পারেনি। এবিষয়টি আমি কিন্তু জানতাম এবং এই ব্যাগের ছোট্ট একটা তালা মারা ছিল এবং সেইটার চাবি ও আমার কাছে ছিল। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতেছি কোনোভাবেই বড় খালুর জ্ঞান ফিরে আসতেছেনা। আমি খুব ভয় পাচ্ছিলাম।
চলবে................
শুভেচ্ছান্তে,@alauddinpabel
আমি আলাউদ্দিন পাবেল।
গাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে।
আমার পরিচয়
আমি আলাউদ্দিন পাবেন। আমার জন্ম ১৯৮৩ সালের পয়লা জানুয়ারি নোয়াখালী জেলা অন্তর্গত সোনাইমুড়ি থানার আওতাধীন বারগাঁও গ্রামে। বর্তমানে আমি গাজীপুরে আমার পরিবার নিয়ে বাস করছি। আমি পেশায় একজন ফার্মাসিস্ট তার পাশাপাশি পার্টটাইম হিসেবে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কাজ করছি। আমার সবচেয়ে প্রিয় খেলাটি হলো ক্রিকেট খেলা। আমি ক্রিকেট খেলা দেখতে ও খেলতে খুব ভালোবাসি। সেই সাথে আমি আর্ট করতেও খুব ভালোবাসি। আমি সুস্বাদু রেসিপি তৈরি করতে ভালোবাসি এবং মাঝে মাঝে তৈরি করে আমার পরিবারের সাথে শেয়ার করে তারা খুব আনন্দিত হয়। আমি নিয়মিত লিখি না তবে স্টিমিট এ যোগ দেওয়ার পর থেকে মোটামুটি নিজে থেকে কিছু লেখার চেষ্টা করি।
হার জিত এর মাধ্যমে আমাদের জীবন আর তখনকার সময় যেমন দামি ফোন ছিল না আপনি ভালো লিখেছেন অনেক ভাল লাগলো।ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। আসলে মানুষ সবাই ঠকায় আর অতীত বড় ভয়ঙ্কর। আপনার জন্য শুভকামনা রইল
আপনার জন্য শুভকামনা রইল আমার এই পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সাথে আরো একবার ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
খুবই দুর্দশা পূর্ণ একটি ঘটনা ভাই।আসলে বিপদে পরলে কেউ সহজে সাহায্য করতে চায় না।অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই।কিন্তু,
এত বড় বাক্য পাঠকের মনকে বিরক্ত করতে পারে।সুতরাং বিরাম চিহ্নের সঠিক ব্যাবহার করা উচিত।
শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
জি ভাই ঠিকই বলেছেন এত বড় বাক্য হওয়া উচিত না, তবে হয়তো দিয়েছিলাম চিহ্নটা পড়ে নাই মনে হয় তবে পরবর্তী পর্বগুলোতে আপনার দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী ভালো হবে চেক করে পোস্ট করব ইনশাআল্লাহ। ধন্যবাদ ভাই আপনার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যের জন্য। শুভকামনা রইল।
ভাই আপনি একটা বাজে পরিস্থিতিতে পরেছিলেন। তবে আশেপাশের মানুষের থেকে এমন ব্যবহার কখনোই কাম্য নয়। বিপদের সময় অন্তত সাহায্য করা উচিত ছিল। আপনার সাথে ঘটে যাওয়া এই বাজে অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাই।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আমার পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য আসলে দুনিয়াতে মানুষ সবাই যার যার চিন্তা নিয়ে ব্যস্ত কেউ কারো বিপদ দেখলে আরো দূরে সরে যায় এটাই বাস্তবতা আর বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনার স্মৃতির কষ্টের একটি গল্প আমাদেরকে শুনাইলেন। আশা করি আরও গল্প শুনতে পাবো।
ইনশাআল্লাহ চেষ্টা করছি আরো লেখার জন্য তবে আশা করি সামনের দিকে পাবেন। ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনার পোস্টটি পড়ে আপনার সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম। আপনি আপনার জীবনের কিছু স্মৃতি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। যদিও আপনার সেই স্মৃতিগুলো বেদনাদায়ক ছিল। অতীতের আপনার বেদনাদায়ক ঘটনাগুলো আমাদের মাঝে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
জি ভাই খুব শিগ্রই আসতেছে পরবর্তী পর্ব। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ে আপনার গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।
Hi, @alauddinpabel,
Thank you for your contribution to the Steem ecosystem.
Please consider voting for our witness, setting us as a proxy,
or delegate to @ecosynthesizer to earn 100% of the curation rewards!
3000SP | 4000SP | 5000SP | 10000SP | 100000SP