হাঁস ভোজন পার্টি // হাঁসের মাংস রান্নার রেসিপি (১০% পে-আউট লাজুক খ্যাকের জন্য)
স্টিমিটের সকল সহযোদ্ধারা,
আসসালামু আলাইকুম,
আশা করি সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমি ভালো আছি। সবাইকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।
আজকে আমি আপনাদের সামনে আমার পরিবারকে নিয়ে কিছু আনন্দঘন মুহূর্ত ও হাঁস ভোজন পার্টির, হাঁসের মাংস রেসিপি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
দীর্ঘ এক বছর পর আমি ও আমার পরিবার সবাই গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২১ । বাচ্চাদের পরীক্ষা শেষে প্রতিবছরই ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া হয়। তো তারই ধারাবাহিকতায় এ বছরও আমরা সবাই গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম বেড়াতে। আমার গ্রামের বাড়ি যেখানে, তার পাশের গ্রাম হচ্ছে আমার শ্বশুরবাড়ি। আমরা বেশিরভাগ সময় শ্বশুরবাড়ি বা মনে করেন বাচ্চারা তাদের নানার বাড়ি বেড়াতে পছন্দ করে তাই সেখানে বেশিরভাগ সময় কাটিয়ে থাকি।
আমি এই সিস্টেমে প্লাটফর্মে কাজ করি এটা কমবেশি সবাই জানে সে কারণেই সবাই আমাকে রিকোয়েস্ট করেছিল ছিল যে একটি স্পেশাল রেসিপি তৈরি করে তাদেরকে খাওয়ানোর জন্য। যারা রিকোয়েস্ট করেছে তারা মূলত আমার শ্যালক শালিকা। তো এখন বলুন শ্যালক শালিকা যদি একটা রিকোয়েস্ট করে তাহলে কি আর না রেখে পারা যায়। তখন আমি স্পেশাল অফার দিলাম সবাইকে অফারটি ছিল আমরা আজকে সবাই মিলে সবার পকেট থেকে সমান পরিমাণ টাকা দিয়ে হাঁস পার্টির আয়োজন করবো। আর এই হাঁসের মাংসের রেসিপি আমি আজকে সবাইকে রান্না করে খাওয়াবো। সবাই এক কথায় রাজি হয়ে গেল এবং আমরা হাঁস পার্টির প্রস্তুতি শুরু করে দিলাম। যদিও সেই হাস পার্টির পুরো কার্যক্রমে আমার মানে আমার স্ত্রীরির মেজ ভাবী আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। সেই প্রস্তুতির মাঝে আমি আপনাদের জন্য হাঁসের মাংস রেসিপি ধাপে ধাপে উপস্থাপন করছি।আমাদের হাঁস পাটির মধ্যে আর তেমন কোনো আইটেম আমরা রাখেনি সাথে পোলাও করে ছিলাম শুধু। আমরা এই হাঁস পার্টির জন্য মোট ছয়টি হাঁস কিনেছিলাম কিন্তু আমরা রান্না করেছিলাম চারটি হাঁস। যেহেতু আমার শ্বশুরবাড়ির ফ্যামিলিতে সদস্য সংখ্যা অনেক বেশি ছিল সদস্য সংখ্যার উপর বিবেচনা করেই চারটি হাঁস রান্না করা হয়েছিল।
হাঁস ভোজন পার্টি নিয়ে অনেক কথাই বলে ফেললাম, তাহলে বন্ধুরা চলুন কিভাবে আমি হাঁসের মাংসের রান্না করেছি তা আপনাদের সামনে ধাপে ধাপে উপস্থাপন করি।
উপকরণ ও পরিমাণঃ
- হাঁস : ৪ টি
- পেঁয়াজ কুচি: ৪ কাপ
- জিরা গুঁড়া: ২ কাপ
- গরম মসলার গুঁড়া: ১ কাপ
- মরিচের গুঁড়া: ৫ চামচ
- হলুদের গুঁড়া: ৫ চামচ
- লবণ: পরিমাণমতো
- আদাবাটা: ১ কাপ
- রসুনবাটা: ১.৫ কাপ
- তেজপাতা : ৮ থেকে ১০ টি
- কাঁচা মরিচ: ১০ থেকে ১২ টি
- দারচিনি: পরিমাণমতো
- এলাচ: ৫০ গ্ৰাম ও
- সয়াবিন তেল: আধা লিটার।
প্রথম ধাপঃ
- যেহেতু আমি এই রেসিপিটি গ্রামের বাড়ি লারকি চুলায় রান্না করবো, তাই প্রথমে বেশকিছু লারকি নিয়ে চুলাটি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে নিলাম। এরপর একটি বড় পাতিল চুলার উপরে বসিয়ে যেখানে পরিমাণমতো সয়াবিন তেল দিয়ে তেল গরম করে নিলাম। তারপর এরমধ্যে পেঁয়াজকুচি গুলো দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে নিলাম, যতক্ষণ না পর্যন্ত পেঁয়াজের বাদামি রং না আসে।
দ্বিতীয় ধাপঃ
- পেঁয়াজ বাদামি রং হয়ে আসলে আমি এক এক করে এরমধ্যে সকল ধরনের মসলাগুলো দিয়ে দিলাম।
তৃতীয় ধাপঃ
- সবগুলো মসলা আইটেম দেওয়ার পর বেশ কিছুক্ষণ এগুলোকে ভেঁজে নিলাম। এরপর হাঁসের মাংস গুলোকে এর মধ্যে দিয়ে ভালো করে নেড়ে চেড়ে নিলাম। প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট এগুলোকে ভালো করে ভেজে নিলাম।
চতুর্থ ধাপঃ
- এবার আমি আগে থেকে করে রাখা গরম পানি পরিমাণমতো এর মধ্যে ঢেলে দিলাম তারপর আরো ভালো করে নেড়ে চেড়ে একটা ঢাকনা দিয়ে ডেকে রাখলাম, যতক্ষণ না পর্যন্ত হাঁসের মাংস সিদ্ধ না হয়।
চূড়ান্ত ধাপঃ
- বেশ কিছুক্ষণ পর ঢাকনা তুলে হাঁসের মাংসগুলো সিদ্ধ হয়েছে কিনা চেক করে নিলাম এবং সাথে স্বাদটা কেমন হয়েছে তো চেক করে রেসিপিটি সম্পূর্ণ করলাম।
- এভাবেই তৈরি হয়ে গেল আমার আজকের হাঁস পার্টির হাঁসের মাংসের রেসিপিটি। আজকে রেসিপিটি এতটা সুস্বাদু হয়েছিল যা আমি নিজেও কল্পনা করতে পারিনি। সবাই অনেক আনন্দ ও মজা করে খেয়েছিল। আর সবার এই আনন্দ মজার মধ্যে আমি আমার রেসিপির তৈরির সার্থকতা খুঁজে পেয়েছি এবং নিজেও অনেক আনন্দিত হয়েছি।
আমার এই পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সেই সাথে এই পোষ্টে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং এই পোস্টটি কেমন লেগেছে আপনারা আপনাদের মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন।
শুভেচ্ছান্তে,@alauddinpabel
বিভাগ | ফটোগ্রাফি |
---|---|
ডিভাইস | রেডমি নোট ১০এস |
লোকেশন | গাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ 🇧🇩 |
ফটোগ্রাফার | @alauddinpabel |
উফফ! কি বলবো হাঁসের মাংস রান্নার ছবিটি দেখে লোভ সামলিয়ে রাখা বড় দায়। আমিতো প্রথমে দেখে ভেবেছিলাম রোস্ট পরে দেখলাম হাঁসের মাংস রান্নার রেসিপি দিয়েছেন আপনি। দেখতে তো খুবই লোভনীয় লাগছে এবং খুব সুন্দর করে আপনি রেসিপিটি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন।
উফফ! সত্যি ভাই আপনার মন্তব্যে আমি একেবারে অনেক মুগ্ধ। অসংখ্য ধন্যবাদ গঠনমূলক মন্তব্যের অনুপ্রাণিত করার জন্য।
হাঁসের মাংসের রেসিপি দেখে আমার ভীষণ খাইতে ইচ্ছা করতেছে। হাঁসের মাংস খাইতে বেশ ভালই লাগে আমার আপনি সুন্দর একটা রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইয়া। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ প্রতিটি ধাপ সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
অসাধারণ মন্তব্য করেছেন ভাই খুব ভালো লেগেছে আপনার মন্তব্যটি পড়ে অসংখ্য ধন্যবাদ এজন্য আপনাকে। শুভকামনা আপনার জন্য।
ভাইয়া দারূন একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন... হাসের মাংস আমার দারূন লাগে। আমি হাসের মাংস পিঠার সাথে খাই সেই লাগে ভাইয়া। আপনার রেসিপিও নিশ্চয় দারূন হয়েছে খেতে। শুভকামনা রইলো ভাইয়া এতো সুন্দর একটা রেসিপি শেয়ার করার জন্য 💗💗💗
জি ভাই খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছিল। অসংখ্য ধন্যবাদ গঠনমূলক মন্তব্যে উৎসাহ দেওয়ার জন্য।
আপনার হাঁস ভোজন পার্টিটা খুবই মজার হয়েছে পড়েই বুঝতে পারছি ।সবাই মিলে একসঙ্গে আনন্দ করে কোন কিছু রান্না করলে সেটা যেমন সুস্বাদু তেমনি অনেক মজা হয় ।সবাই মিলে একসঙ্গে রান্না করার আনন্দই আলাদা। কেমন যেন একটা পিকনিক পিকনিক ভাব হয়েছে। লেখাটা পড়ে খুবই ভালো লাগলো ।আর আপনার রান্নাটা চমৎকার হয়েছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে।খুবই সুস্বাদু হয়েছে হাঁসের মাংস। প্রতিটি ধাপ আপনি খুব চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। যেটি দেখে খুব সহজে বুঝতে পারছি কিভাবে রান্নাটা করেছেন।ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর মজার একটি রেসিপি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।
আপনার মন্তব্যটি পড়ে আমি সম্পূর্ণ ভাবে বুঝতে পারলাম যে আপনি আমার সম্পূর্ণ পোষ্টটি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন, এজন্য আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। ঠিকই বলেছেন আপু সবাই মিলে একসাথে কিছু রান্না করার মজাই আলাদা। আপনার জন্য শুভকামনা অবিরাম।
আপনার হাসের মাংসের রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে একদম দেশি মুরগের মাংস। অনেক লোভনীয় হয়েছে। আপনি অনেক সুন্দরভাবে ধাপগুলি বর্ণনা করেছেন। আমার কাছে হাসের মাংস দিয়ে রুটি খেতে অনেক ভালো লাগে। আপনাদের পার্টিতে উপস্থিত থাকতে পারলে সেই কাজ হতো জমিয়ে খেতে পারতাম। যাইহোক, আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
খুব সুন্দর ও গঠনমূলক মন্তব্য করেছেন ভাই। অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর ও গঠনমূলক মন্তব্যে আমাকে উৎসাহ ও অনুপ্রাণিত করার জন্য।
ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, কিন্তু দুঃখের সাথে জানাচ্ছি রাত করে হাঁসের মাংস দেখলাম খুব বড় একটা পার্টি জমিয়ে মজা করে রান্না করে খাচ্ছেন কিন্তু আমি তো আর লোভ সামলাতে পারলাম না, এত সুন্দর খাবার মিস করে গেলাম ভাই, ভাই আপনার পার্টির রান্নার উপস্থাপনা খুবই সুন্দর লেগেছে আমার কাছে, মাঝেমধ্যে এমন রান্নার পার্টি হলে খারাপ হয় না। আর যদি হয় রাজ হাঁস তাহলেতো রাজার মতো উদযাপন হত। আমার রাজহাঁসের মাংস খুবই প্রিয়। কিন্তু এ হাঁসগুলো আর মাংস খেতে খুবই সুস্বাদু। শুভকামনা রইল ভাই আপনার জন্য।
ভাই লোভ সামলানোর কথা বলছেন এরকম রেসিপি দেখলে কি আর লোভ সামলানো যায়। তবে একটা আয়োজন করেন আমরা যারা স্টিমিট আছি সবাই মিলে একটা পার্টি করি তাহলে মনে হয় খারাপ হবে না। অসংখ্য ধন্যবাদ অসাধারণ ও গঠনমূলক মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনেক অনেক উৎসাহিত করার জন্য।
প্রথমেই বলি লাকরির চুলায় রান্না ভীষণ মজাদার হয়। 😋
আর যদি 🦆 হাসের মাংস এতো মজা করে রান্না করা হলে তো ভাই জিভে জল আসবেই😋
কি সুন্দর রং তরকারির 😋
যাক উপস্থাপনা সুন্দর ছিল ভাই।
জি ভাই আপনি ঠিকই ধরেছেন লারকি চুলায় রান্নার কারণে এই রেসিপির স্বাদটা দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছিল। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা অবিরাম।
অসাধারণ একটি রেসিপি আপনাদের উপহার দিয়েছেন। হাঁসের মাংস গুলো দেখেই জিভে জল চলে এসেছে। আপনার রেসিপি পোস্টটি পড়ে মনে হচ্ছে হাঁসের মাংস গুলো খুবই সুস্বাদু এবং মজাদার হয়েছিল। ধন্যবাদ আপনাকে।
জি ভাই আপনি ঠিকই বুঝতে পেরেছেন রেসিপিটি অনেক মজা ও সুস্বাদু হয়েছিল, বিশেষ করে লাড়কি চুলায় রান্নার কারণে। অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য শুভকামনা আপনার জন্য।