আমার স্মরণীয় দিনলিপি || ১০/০৯/২০২১ ইং || ১০% পে-আউট লাজুক খ্যাক-কে

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

স্টিমিটের সহযোদ্ধারা,
আসসালামু আলাইকুম, পরম করুনাময় আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি, আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আমি আজকে আপনাদের সামনে আমার দিনলিপিটি উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আমি এখানে আরেকটা জিনিস বলে রাখি সেটি হল আমার আজকের দিনলিপিটি আমার জন্য একটি স্মরণীয় দিনলিপি।

IMG_20210902_172436.jpg

সকালবেলা

আমার দিনলিপিটি শুরুতে আপনাদের ফুলের শুভেচ্ছা। আমার সবচেয়ে প্রিয় এবং পছন্দের জিনিস হচ্ছে ফুল। ফুলকে আমি খুব ভালবাসি এই জন্যই আমি আমার বারান্দায় ছোট পরিসরে ফুলের গাছ লাগিয়েছি।

received_2817176551750136.jpeg

আর আমি আজকে সকালে উঠেই প্রথমে আমি আমার সেই ছোট পরিসরে লাগানো ফুলের গাছ গুলোতে পানি দিয়ে তাদেরকে সারাদিনের জন্য একটু সতেজ করে দিলাম। এরপর আমি "আমার বাংলা ব্লগে" পোষ্ট করার জন্য একটি চিত্রাংকন "বাস্তবসম্মত চোখ" নিজের হাতে অংকন করলাম। এরপর আমি গোসল করে আমার দোকানে ফার্মেসিতে আসার জন্য প্রস্তুতি নিলাম। আমি রেডি হয়ে সকালের নাস্তা শেষ করে দোকানের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম।

received_4623866694303741.jpeg

এরপর আমি দোকানে এসে কিছুক্ষণ সময় দেওয়ার পরে হঠাৎ একটা ফোন আসলো। ফোনটা নাম্বারটা আমি চিনতে পারছিলাম না তারপরে রিসিভ করলাম। ফোনটা রিসিভ করে আমি তো হতবাক জানেন আমাকে কে ফোন দিয়েছে শুনলে আপনারাও অবাক হয়ে যাবেন। আমাকে ফোন দিয়েছিল আমার সেই ছোটবেলায় স্কুলে একসাথে পড়েছিলাম। মোটামুটি এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পরে থেকে তার সাথে আমার আর কোন যোগাযোগ ছিলনা। দীর্ঘ প্রায় ২১ বছর পর তার সাথে কথা এবং সে আমার এক অন্য বন্ধুর মাধ্যমে আমার মোবাইল নাম্বার নিয়ে আমার সাথে যোগাযোগ করে। একটা সময় স্কুলে যখন লেখাপড়া করতাম আমরা খুব ক্লোজ ফ্রেন্ড ছিলাম আমরা যখন যা করতাম একসাথেই করতাম যখন যা সিদ্ধান্ত নিতাম একসাথেই নিতাম। এতটাই ক্লোজ ছিলাম। আমার এই প্রিয় দোস্তকে নিয়ে ছোটবেলার আমার যে কত স্মৃতি জড়িয়ে আছে ওই ফোনটা পেয়ে শুধু তাই মনে হতে লাগলো। অনেকক্ষণ ফোনে কথা বলার পর সে আমাকে বলল আজকে আমাকে একটা সারপ্রাইজ দিবে আমি বললাম কিরে দোস্ত তুই কি সারপ্রাইজ দিবি। তখন সে বলল আমিতো এখন ঢাকায় আছি তুই তোর ঠিকানাটা আমাকে মেসেজ করে পাঠিয়ে দে আমি বললাম ঠিক আছে দিচ্ছি তার মানে কি তুই আমার সাথে দেখা করতে আসতেছি। তখন দোস্ত আমার বলল এইজন্যেই তো তোর ঠিকানাটা নিতেছি। আমি এখনই রওনা দিচ্ছি তোর সাথে দেখা করার জন্য আমি আর থাকতে পারছি না। দোস্ত আমার এটা বলার পরে বলতেছে যে দোস্ত আমি এখনো রওনা দিব তুই ঠিকানাটা পাঠিয়ে দে সাক্ষাতে এসে পরবর্তী কথা বলব। এতক্ষণ যাকে নিয়ে আমি এত কথা বললাম এত স্মৃতিবিজড়িত কথাগুলো মনে হল তাঁর নামটাই কিন্তু আপনাদের কে বলা হল না। তার নামটি হল নজরুল ইসলাম (বাবু)। আমরা স্কুলে থাকতে তাকে দুষ্টামি করে বাইবা বলে ডাকতাম।

IMG_20210903_131529.jpg

দুপুরবেলা

যেই কথা সেই কাজ দোস্ত আমার ঠিকই আমার সাথে দেখা করার জন্য রওনা দিয়ে দিল আমিও তার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম যদিও দিনটি ছিল শুক্রবার। কারণ এদিকে আবার দুপুর হয়ে গেল জুমার নামাজ পড়তে হবে। আমি দোকান বন্ধ করে বাসায় চলে গেলাম। এবং অজু করে আমার ছেলেকে নিয়ে জুমার নামাজ পড়তে মসজিদে চলে গেলাম।

IMG_20210910_142540.jpg

মসজিদ থেকে এসে আমি আমার দোস্ত কে ফোন দিলাম কতটুকু আসছে জানার জন্য সে বলল আমি মোটামুটি চলে এসেছি কিছুক্ষণের মধ্যেই তোর দেওয়া ঠিকানা মতে স্টেশনে নামবো তখন আমি বললাম তুই যেখানে নামবি আমি সেখানে থাকবো এটা বলে আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম।
কিছুক্ষণের মধ্যে দোস্ত আমার চলে এলো। আমরা একজন একজনের সাথে হাত মিলিয়ে কোলাকুলি করে আনন্দে উৎফুল্ল, দুইজনে অনেকদিন পর আমাদের এই দেখা।

IMG_20210910_143213.jpg

এরপর আমি তাকে নিয়ে আমার বাসায় পৌছে গেলাম। যেহেতু এই সময়টা ছিল দুপুরে লাঞ্চের সময় তাই দেরি না করে দোস্ত কে হাত মুখ ধুয়ে আমরা দুপুরের লাঞ্চ করে নিলাম। লাঞ্চ শেষ করে আমরা কিছুক্ষণ রেস্ট নিলাম এরপর দুজনে বেরিয়ে পড়লাম একটু ঘুরাঘুরি করার জন্য।
অনেকক্ষণ রিক্সা নিয়ে আমরা গাজীপুরের এদিক-ওদিক ঘোরাফেরা করলাম এরপর সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল দোস্ত আমাকে বলল সে নাকি চলে যাবে তার নাকি আগামী কাল অফিস আছে তাকে যেতেই হবে। আমি তাকে অনেক রকমভাবে রিকোয়েস্ট করলাম থাকার জন্য কিন্তু সে থাকবে না। সে বলল পরে একদিন হাতে টাইম নিয়ে এসে থেকে যাবে, আমাকেও একদিন যেতে বলল তার বাড়িতে বেড়াতে।

received_176296347857346.jpeg

বিকেলবেলা

এখন আমার দোস্ত এর বিদায়ের পালা আমি আমার দোস্ত কে বিদায় দিতে বাসস্ট্যান্ডে আসলাম এবং তার সাথে আবার হাত মিলিয়ে কোলাকুলি করে তাকে গাড়িতে তুলে দিলাম। কি যে খারাপ লাগলো সেটা আমি বলে বুঝাতে পারব না।
দুনিয়াবী চিরন্তন সত্য কথা আসলে যেতেই হবে এটা ভেবেই নিজেকে শান্ত করে আবার বাসায় চলে গেলাম। এর পর হাত মুখ ধুয়ে বিকেল বেলার নাস্তা সেরে আমি আবার দোকানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেলাম। এর মাঝে সময়টুকু আমার ছোট ভাই দোকানে বসে ছিল।

রাত্রিবেলা

যাইহোক ছোট ভাইকে দোকানে এসে নাস্তা খাইয়ে ওকে বাসায় পাঠিয়ে দিলাম এরপর আমি রাত এগারোটায় দোকান বন্ধ করে বাসায় ফিরে গেলাম। বাসায় ফিরে আবার গোসল করে রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করে কিছু সময় ডিস্কড এ চ্যাটিং করে এরপর ঘুমিয়ে গেলাম।

আমার এই দিনপঞ্জিটি পড়ার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমার এই দিনপঞ্জি পরে যদি আপনাদের কাছে ভাল লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন আর আমাকে সাপোর্ট করবেন।

শুভেচ্ছান্তে,@alauddinpabel

বিভাগফটোগ্রাফি
ডিভাইসরেডমি নোট ১০এস, টেকনো স্পার্ক
লোকেশনগাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ 🇧🇩
ফটোগ্রাফার@alauddinpabel

আমার পরিচয়
আমি আলাউদ্দিন পাবেন। আমার জন্ম ১৯৮৩ সালের পয়লা জানুয়ারি নোয়াখালী জেলা অন্তর্গত সোনাইমুড়ি থানার আওতাধীন বারগাঁও গ্রামে। বর্তমানে আমি গাজীপুরে আমার পরিবার নিয়ে বাস করছি। আমি পেশায় একজন ফার্মাসিস্ট তার পাশাপাশি পার্টটাইম হিসেবে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কাজ করছি। আমার সবচেয়ে প্রিয় খেলাটি হলো ক্রিকেট খেলা। আমি ক্রিকেট খেলা দেখতে ও খেলতে খুব ভালোবাসি। সেই সাথে আমি আর্ট করতেও খুব ভালোবাসি। আমি সুস্বাদু রেসিপি তৈরি করতে ভালোবাসি এবং মাঝে মাঝে তৈরি করে আমার পরিবারের সাথে শেয়ার করে তারা খুব আনন্দিত হয়। আমি নিয়মিত লিখি না তবে স্টিমিট এ যোগ দেওয়ার পর থেকে মোটামুটি নিজে থেকে কিছু লেখার চেষ্টা করি।

Sort:  
 3 years ago 

অত্যান্ত সুন্দর স্বরণীয় দিনলিপি ছিলো।আপনার জন্য শুভ কামনা এবং ভালোবাসা রইল।

 3 years ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার স্মরণীয় দিনলিপিটি পড়ার জন্য। আপনার জন্য ও শুভকামনা রইল।

 3 years ago 

ভাই খুব সুন্দর দিনলীপি বর্ণনা করেছেন। আপনার জন্য শুভকামনা।

 3 years ago 

আমার দিনলিপিটি ভালোভাবে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল।

Hi, @alauddinpabel,

Thank you for your contribution to the Steem ecosystem.


Please consider voting for our witness, setting us as a proxy,
or delegate to @ecosynthesizer to earn 100% of the curation rewards!
3000SP | 4000SP | 5000SP | 10000SP | 100000SP

Coin Marketplace

STEEM 0.36
TRX 0.12
JST 0.040
BTC 70839.13
ETH 3563.41
USDT 1.00
SBD 4.77