স্মৃতির পাতা থেকে// শৈশবের ফেলে আশা একটি দিনের মাছ ধরার মজার ঘটনা।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

১০% পে-আউট 'লাজুক-খ্যাক' এর জন্য

স্টিমিটের সহযোদ্ধারা,

আসসালামু আলাইকুম, আশা করি ঈদ পরবর্তী সবাই ভালই আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও বেশ ভালো আছি। এছাড়াও যারা অসুস্থ আছেন সকলের শেফা কামনা করে শুরু করছি আমার আজকের এই পোস্ট।

pexels-photo-386003.jpeg
উৎস

বর্ষাকাল চতুর্দিকে পানি আর পানি। খাল, বিল, ডোবা-নালা সব পানিতে টুইটুম্পুর। এই সময়টায় খাল বিলে প্রচুর পরিমাণে মাছ পাওয়া যায়। যদিও আমি শহরে থাকতাম কিন্তু ছোটবেলা থেকেই গ্রামে গিয়ে মাছ ধরার খুব ইচ্ছা সব সময় করতো এবং যখনই গ্রামে যেতাম পারি আর না পারি মাছ ধরতে নেমে যেতাম। অনেক সময় মাছ পেতাম আবার অনেক সময় পেতাম না কিন্তু যখন পেতাম আনন্দে আত্মহারা হয়ে যেতাম এবং যখন বাড়ি নিয়ে আসতাম বাড়ির সবাইও মাছ পেয়ে অনেক খুশি হতো। কিন্তু তারপরেও আমাকে সাবধান করত, কারণ আমি তখন খুব ছোট ছিলাম। যেহেতু সাঁতার জানতাম সেই কারণে তেমন কোন ভয় পেতাম না। আসলে সত্যি বলতে মাছ ধরার এত ইচ্ছা এত আগ্রহ ছিল, অনেক সময় এবং ধৈর্য নিয়ে এ মাছ ধরতে যেতাম এতে করে যত বৃষ্টি হোক আর রোদ হোক।

pexels-photo-3099187.jpeg
উৎস

ইতিমধ্যে হয়তো আপনারা বুঝে ফেলেছেন যে আমার মাছ ধরার ব্যাপারে কতটা আগ্রহ ছিল। তো সে আগ্রহ থেকে আমি একবার চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে গিয়েছিলাম ওই সময়টা ছিল বর্ষাকাল। ঠিক চতুর্দিকে পানি আর পানি সবাই মাছ ধরায় ব্যস্ত। তো এভাবে আমিও মাছ ধরার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি যেহেতু প্রচুর পরিমাণে পানি আর আমার কাছে ওই মুহূর্তে মাছ ধরার মতো তেমন কোন উপকরণ ছিল না, তাই বাড়িতে আগে থাকা পাঁচটি বড়শি নিয়ে এবং ছোট কিছু গুড়া মাছ ধরে সে গুড়ো মাছ দিয়ে মাছ ধরার জন্য প্রস্তুতি নেই। ঐদিন হালকা-পাতলা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছিল সকালবেলায় ঠিক দশটা থেকে এগারোটার সময় হবে হয়তো। আমার কাছে ছিল পাঁচটা বড়শি, আর এই বড়শিগুলো এক হাত পরিমাণ সুতোয় কলমির ডাটার মধ্যে দিয়ে বেধে তৈরি করা ভাসমান বড়শি। আমি গুঁড়ো মাছগুলো জ্যান্ত থাকা অবস্থায় বড়শিতে আটকে রাস্তার পাশে খালের মধ্যে কিছু পরিমাণ কচুরিপানা সরিয়ে সেখানে এক এক করে বড়শি গুলো ফেলে দিলাম। আর কিছুক্ষণ ধরে অপেক্ষা করতে লাগলাম।

pexels-photo-12796774.jpeg
উৎস

এখন বলব সবচাইতে মজার ঘটনা সেটি হল আমি যখন বড়শি গুলো ফেলে অপেক্ষা করছিলাম ঠিক ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর হঠাৎ করে কি একটা আশ্চর্যজনক ব্যাপার সেটি হল মাছে পাঁচটা বড়শি একসাথে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। যেহেতু সেগুলো ভাসমান তাই কচুরিপানার নিচ দিয়ে বড়শিগুলোকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। ওই মুহূর্তে আমি তো একটু হতবাক হয়ে গেছিলাম। এখন আমি কোন বড়শিটাকে ধরবো এটাই বুঝতে পারছিলাম না। তো যাই হোক বাকিগুলোর চিন্তা বাদ দিয়ে প্রথম বড়শিটার জন্য নেমে পড়লাম পানিতে। পানিতে নেমে বেশ কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করার পর অনেক দূরে গিয়ে বড়শিটা পেলাম একটি ধান গাছের সাথে প্যাচানো অবস্থায়। তারপর পড় সেটাকে প্যাচ খুলে তুলে দেখি অনেক বড় একটি শোল মাছ, আমি তো খুশিতে একেবারে আত্মহারা। সেই কি খুশি আশেপাশে যেই দেখছিল সেই অবাক হয়ে গেল।

এরপর আমি প্রথম বড়শির মাছটিকে উপরে নিয়ে এসে রেখে দ্বিতীয় বড়শি খুঁজতে লাগলাম এবং সেটাও খুঁজে পেলাম আরো একটি বড় শোল মাছ নিয়ে। এক এক করে আমি পাঁচটি বড়শি খুজে পেলাম এবং পাঁচটিতে পাঁচটি শোল মাছ ছিল যদিও কোনটা বড় কোনটা ছোট। তখন আমি সবগুলো মাছ নিয়ে দৌড়ে বাড়ি চলে গেলাম। বাড়িতে মাছ গুলো দেখে তো সে কি অবাক সবাই অবাক হয়ে গেল আসলে আমি নিজেও অনেক অবাক হয়ে গেছি একসাথে পাঁচটা বড়শিতে পাঁচটা মাছ পেয়ে যাব কল্পনা করতে পারি নাই।

যাইহোক বন্ধুরা এই ছিল আমার শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত একটি বাস্তব গল্প। আশা করি গল্পটি পড়ে আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই মন্তব্যের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না।

আমার পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

শুভেচ্ছান্তে,@alauddinpabel

আমি আলাউদ্দিন পাবেল।
গাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে।
তারিখঃ ১৬-০৭-২০২২ ইং

Sort:  

Papgooi!🎣 We've resteemed this gem. 👍

 2 years ago 

মাছ ধরতে আপনার মত আমারও খুব ভালো লাগে পদ্মা নদীর পাশে বাড়ি হওয়াতে ছোটবেলা থেকেই অনেকবার নদীতে মাছ ধরেছি আসলে মাছ ধরার মজাটাই অন্যরকম খুব ভালো লাগলো আপনার মাছ ধরার গল্পটি পড়ে শুভকামনা রইল আপনার জন্য

 2 years ago 

আপনার জন্য শুভকামনা রইল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে আমার মাছ ধরার বাস্তব গল্পটি পড়ে অসাধারণ ও গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 58004.44
ETH 2579.54
USDT 1.00
SBD 2.40