প্রিয় ঋতু এখন বর্ষাকাল, যার সুন্দর্যে আমি মুগ্ধ।
আস্সালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের প্রাণ প্রিয় বন্ধুরা, সম্মানিত এ্যাডমিন ও মডারেটরবৃন্দ, কেমন আছেন আপনারা? আশাকরি সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আজকের পোস্টে আমি প্রিয় ঋতু এখন বর্ষাকাল নিয়ে আলোচনা করব। ভুলত্রুটি হলে দয়া করে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ!
প্রিয় ঋতু এখন বর্ষাকাল। সবার কাছে বসন্তকাল ভাল লাগলেও আমার কাছে এখন বর্ষাকাল সব চাইতে ভাল লাগে। আমিও আগে বসন্তকাল বেশি পছন্দ করিতাম। কারন তখন গাছে গাছে নানান রকমের ফুল এবং ফলের সমারহ এবং ককিলের কন্ঠের গান শুনে মনটা ভরে উঠত। কিন্তু বর্তমান সময়ে শুধুমাত্র বর্ষাকাল এবং শীতকাল ছাড়া সারা বছর এমন গরম পড়ে যে, আর কোন ঋতুই ভাল লাগে না। শীতকাল যাওয়ামাত্র গরম শুরু হয়ে যাই। মাস খানেক আগের কথা চিন্তা করলেও দেখা যাবে প্রচন্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে ছিলাম। এরপর কারেন্ট এর সমস্যা। সারাদিন এদিক সেদিক করে কাটালেও রাত্রে কোথায় যাব। রাত্রে ঘুমাতে গেলেই কারেন্ট নাই। আর কারেন্ট চলে গেলেই আর ঘুম আসে না। আর ঘুম না হলে শরীল এমনিতেই খারাপ লাগে। এরপর সকালে উঠেই অফিসে যেতে হবে এ জন্য যে করেই হোক একটু ঘুমাতে হবে। কিন্তু প্রচন্ড গরমে কোনরাত্রে ঠিকমত ঘুমাতে পারতাম না। ক্লান্ত শরীল নিয়ে অফিসে যেতে হত।
অবশ্য অফিসে এসির ব্যবস্থা আছে। কিন্তু যখনই ১০ মিনিট এর জন্য বাইরে আসি তখনই গরমে নাজেহাল হয়ে পড়িতাম। কারন এ বছর এর তাপমাত্র ছিল অনেক বেশি প্রায় ৪৫ ডিগ্রির মত। আর এত গরম আগে কখনও আমি দেখিনি। আগেকার সময় গরম পড়লেও কয়েকদিন এর মধ্যে বৃষ্টির দেখা পেতাম কিন্তু বর্তমান সময়ে দেখছি শুধুই গরম কোন বৃষ্টির দেখা নেই। ১০ দিন ২০ দিন এমনকি ১ মাস পার হলেও কোন বৃষ্টির দেখা পাওয়া যাইনী। আসলে এ সব আমাদের হাতের কামাই। এই গরমের মধ্যে অফিস থেকে বাড়ি যেতে একটুও মন চাইত না। কারন বাড়ি গেলেই আবার সেই গরম শুরু হয়ে যাবে। যে বেতন পাই তাতে বাসায় এসি কেনার সামথ্য নেই। যদি ও এদিক সেদিক করে কিনি তারপরও প্রতি মাসে মিনিমাম ৫০০০ টাকার মত বিল আসবে। এই জন্য এসিটা কেনা হয়না। এভাবে অনেক কষ্টে গরমকাল পার করিলাম।
শুরুহল বর্ষাকাল। বর্ষাকালে সারাদিন বৃষ্টি। বৃষ্টির কারনে চারিপাশের তাপমাত্র অনেকটা কমে গেছে তাই জনজীবনে স্বস্থি ফিরে এসেছে। তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারনে এখন নিয়মিত রাত্রে ঘুমাতে পারছি। সতেজমন নিয়ে অফিসে এসে নিয়মিত কাজকর্ম করিতে পারছি। সাথে সাথে মাথা ঠান্ডা করে আমার বাংলা ব্লগে নিয়মিত পোষ্ট এবং কমেন্ট করিতে পারছি। বর্ষাকাল শুধু আমার জন্য কল্যাণ বয়ে আনেনি সকলের জন্য বর্ষার ফলে কিছুটা উপকৃত হয়েছে। বিষেশকরে গাছপালা সবুজ ও সতেজ হয়ে ওঠে, এ সময় মাঠে ঘাটে সব জায়গায় পানি থই থই করে। আমার বাড়ি একটু নিচু এবং ঘের এলাকায় হওয়ায় একটু বৃষ্টিতে তলিয়ে যাই।
এ কদিনের বৃষ্টিতে বাসার সামনে পানি জমে গেছে। ঘেরগুলি সব ডুবে গেছে। ঘের বাঁচানোর জন্য সবাই ঘেরের চারপাশে নেট দিয়ে ঘিরে ফেলেছে, যেন মাছ বাইরে যেতে না পারে। কিন্তু এত এত নেট দেওয়ার পরও মাছ বাইরে চলে আসে। রাস্তার ওপরে মাছ আর মাছ। কেউ জাল দিয়ে কেউ মশারি দিয়ে মাছ শিকার করে। আমিও মাছ ধরতে অনেক বেশি পছন্দ করি। বিশেষকরে এই বর্ষায় আমি বাসার সামনে পানির স্রোতে মশারি দিয়ে অনেক মাছ ধরি। আর রাত্রে টর্চ লাইট নিয়ে চলে মাছ শিকার। আমার অফিস প্রায় রাত্র ১০ পর্যন্ত হয় এ জন্য দ্রুত বাসায় এসে কোনরকম খেয়ে টর্চ লাইট নিয়ে মাছ ধরতে বাইরে চলে যাই। আমার সাথে আমার ভাগ্নেও থাকে। দুই জন প্রাই রাত্র ২টা পর্যন্ত মাছ ধরব এবং অনেকগুলি মাছ নিয়ে বাসায় ফিরতাম। আম্মু ঐ রাত্রে সব মাছ কুটে ধুয়ে ফ্রিজে রাখত। এভাবে ঘুমাতে প্রায় রাত্র ৩ বেজে যেত।
পানির জন্য চলাচলের জন্য একটু কষ্ট হয়। তবুও বর্ষায় আমি যে আনন্দ উপভোগ করি তা অন্য আর কোন ঋতুতে করি না। তাই আমার কাছে বর্ষাকাল সব চাইতে বেশি ভাল লাগে। আপনাদের কাছে কোন ঋতু সব চাইতে বেশি ভাল লাগে এবং কেন ভাল লাগে তা কমেন্ট করে জানাবেন।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনাদের সবার ভালো লেগেছে। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। সামনে আরো নতুন ও আকর্ষণীয় পোস্ট নিয়ে হাজির হবো। ততদিন পর্যন্ত সাথেই থাকুন।
বর্ষার সময় নিয়ে খুব সুন্দর একটি ব্লক লিখেছেন আপনি। বেশ কিছুদিন ধরে আমাদের এখানে বৃষ্টি হলো। আজকে অবশ্য রোদ উঠেছে। তবে বৃষ্টির এই মুহূর্তে বেশ বিভ্রান্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে আবার প্রাকৃতিক পরিবেশ শীতল থাকায় ভালো লেগেছে। সব মিলে ভালো-মন্দ দুইটাই অনুভব করা হয়েছে।