মানুষের জীবনের সব লক্ষ্য পূরণ হয় না
আস্সালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের প্রাণ প্রিয় বন্ধুরা, সম্মানিত এ্যাডমিন ও মডারেটরবৃন্দ, কেমন আছেন আপনারা? আশাকরি সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। প্রতিটি মানুষের একটি স্বপ্ন থাকে লেখাপড়া করে বড় চাকুরী করার কিন্তু সকলের আশা কখনও পূরন হয় আবার কখনও পূরন হয় না। এমন একটি ঘটনা আজ আমি আমার লেখার মাধ্যমে তুলে ধরতে যাচ্ছি।। ভুলত্রুটি হলে দয়া করে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ!
ছোটবেলা থেকে আমার একটি শখ ছিল বড় হয়ে পড়ালেখা করে সেনাবাহিনীতে যোগদান করে দেশের সেবা করিব। সে জন্য অনেক কষ্ট করে পড়ালেখাটা চালিয়ে যাই। অনেক বাধা বিপত্তি থাকা সত্বেও আমার মা এবং বাবার চেষ্টায় এস.এস.সি পাশ করি এবং সেনা বাহিনীতে যোগদানের জন্য আবেদন করি কিন্তু মামা খালু এবং টাকা না থাকার কারনে সেনা বাহিনীতে চাকরীটা হল না। আরও পড়ালেখা চালিয়ে যেতে থাকি। এইচ এস সি পাশ করেই বিভিন্ন সরকারী চাকরীর জন্য আবেদন করিতে থাকি। অনেক প্রতিষ্ঠান থেকেও লিখিত পরিক্ষার কার্ড এসেছিল এবং পরিক্ষা ও দিয়েছিলাম। কিন্তু ঐ যে মামা খালু এবং টাকার অভাবে কোন সরকারী চাকরী হল না।
অনেক অনেক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করেছি কিন্তু সেখান থেকে কোন লিখিত পরিক্ষার কার্ড পাইনী। পরবর্তীতে যোগাযোগ করে জানতে পারলাম যে নিয়োগ পরিক্ষা ছিল শুধুমাত্র দেখানোর জন্য যাদের চাকরী দিবে তাদের চাকরী আগে থেকে হয়ে গেছে। তাহলে কেন পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আমাদের সাথে এমন নাটক করা হল। এমন প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে করা হলেও তারা কোন উত্তর দিতে পারত না। এভাবে বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানে আবেদন করার সাথে সাথে অর্নাস এ ভর্তি হয়ে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে থাকি।
যখন সরকারী প্রতিষ্ঠানে আবেদন করে করে ক্লান্ত হয়ে পড়ি তখন বিভিন্ন কোম্পানীতে আবেদন করতে থাকি। এক সময় ভিলেজ হেল্থ কেয়ার নামে একটি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করি এবং তারা আমাকে ভাইভা দেওয়ার জন্য ঢাকায় ডাকে। অনেক কষ্ট করে টাকা পয়সা ম্যানেজ করে ঢাকায় চলে যাই ভাইভা দিতে সেখানে গিয়ে ভাইভা দেওয়ার পর তারা কিছু টাকা দাবী করল আমি বললাম সাথে তো টাকা নিয়ে আসি নাই বাসায় গিয়ে বিকাশে দেই তারা বলল ঠিক আছে দিয়েন। বাসায় এসে বিকাশে টাকা দেওয়ার পরে আমার চাকরির বিষয়ে জানতে চাইলে আজ হবে কাল হবে বলে টালাতে থাকে এক সময় তাদের সব মোবাইল নম্বর বন্ধ।
এরপর বিভিন্ন কোম্পানিতে আবেদন করি এবং ভাইবার জন্য গেলেই বলে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা কি? আমি বলি স্যার আমি তো পড়ালেখা করছি আর এটাই আমার প্রথম চাকরীর ভাইবা। আমি আগে কোন কোম্পানীতে চাকুরী করিনাই। এ কথা শোনা মাত্র তারা আর চাকরীতে নিতে চাইত না। এভাবে বিভিন্ন কোম্পানীতে চাকরীর ভাইবা দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে যাই। সাথে সাথে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে থাকি এক সময় মনে করি ব্যাবসা করিব কিন্তু সেটার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। ফলে সেটাও হয়ে উঠল না। আমার বড় ভাইয়ের একটি কম্পিউটার এর দোকান ছিল সেখান থেকে কাজ শিখতে থাকলাম এবং কিছু দিনের মধ্যে কম্পিউটারে যাবতীয় কাজ শিখে ফেললাম।
কিছুদিন পরে শহরের একটি প্রাইভেট ফার্মে কম্পিউটার এ লোক নেওয়া হইবে এমন একটি নিয়োগ দেখে সেখানে চাকুরীর আবেদন করিলাম। একদিন ভাইবার জন্য সকলে ডাকল আমি তার মধ্যে ছিলাম। আমি কম্পিউটারে সব ধরনের কাজ করিতে পারিতাম টাইপ, ইন্টারনেট,কম্পিউটার সার্ভিসিং, ফটোশপের কাজ ইত্যাদি সব বিষয়ে ধারনা ছিল ফলে আমি সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছিলাম ফলে ঐ খানে আমার চাকুরীটা হয়ে যাই। মাত্র ৩০০০ টাকা বেতনে আমার চাকরীটা হয়। পরবর্তীতে অবশ্য বেতন বাড়িয়ে দেয়। এভাবে আজ পর্যন্ত আমি ঐ ফার্মে কাজ করছি প্রাই ১৩ বছর হয়ে গেল আমি এখানে কাজ করছি।
আজ পোষ্টটি লেখার সময় মনে মনে ভাবছিলাম কি হতে চেয়েছিলাম আর কি হলাম। আসলে ভাগ্যে যেটা থাকবে সেটাকেই মেনে নিয়ে চলতে হবে।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনাদের সবার ভালো লেগেছে। আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। সামনে আরো নতুন ও আকর্ষণীয় পোস্ট নিয়ে হাজির হবো। ততদিন পর্যন্ত সাথেই থাকুন।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
সত্যি বলতে এই অভিজ্ঞতা প্রায় সকলেরই সেম, নির্মম বাস্তবতা।
প্রিয় হাফিজুল্লাহ ভাই আপনি আমার পোষ্টে কমেন্ট করেছেন দেখে মনটা আনন্দে ভরে উঠল। আমার বাংলা ব্লগে আপনি ছাড়া আমার তেমন পরিচিত কেউ নেই তাই আমার পোষ্টে কেউ তেমন কমেন্ট করে না। আমার পোষ্টে কমেন্ট করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমি আপনাকে discord একটি SMS করেছি সময় পেলে একটু দেখেন।