আমার উৎসবের ভ্রমণ কাহিনী || প্রতিযোগিতা-১৭ || ১০% বেনিফিট লাজুক খ্যাক এর জন্য ও ৫% এবিবি স্কুলের জন্য
আসসালামু আলাইকুম
১১ই মে ২০২২ইং
ঈদ মোবারক সকল আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে
ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি,
ঈদ এই শব্দটা হয়তো বা দুই অক্ষরের কিন্তু এর প্রভাব খুব তীব্র। প্রতিটি মানুষ সারা বছর অপেক্ষা করে এই একটি শব্দ কখন কোনদিন ঠিক হবে আর নারীর টানে মানুষ আপন মানুষের কাছে ফিরে যাবে। এই একটা শব্দ সাথে করে নিয়ে আসে এক আকাশ স্বপ্ন,ভালোবাসা,আত্নার টান, যেন বাতাসের ভেলায় ভেসে এসে বলে চলে যাও আপন নিড়ে,সব ব্যস্ততার শেষ আজ,,আজ তুমি মুক্ত,আজ তুমি স্বাধীন। আর এই দিনটা সবার কাছেই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজ আপনাদের মাঝে এই দিনটা উপলক্ষ করে আমার ভ্রমণ নিয়েই কিছু কথা শেয়ার করবো। কেমন কাটলো আমার এই দিনটা, কোথায় কোথায় ঘুরলাম,কি খেলাম,ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমার ভ্রমন কাহিনী
ক্যামেরায় | ডিভাইস | লোকেশন |
---|---|---|
আলামিন | পোকো এম ২ | source |
ঈদের আগের দিন কে চাঁদরাত বলা হয় বা লোকাল ভাষায় চানরাত।ঈদের এই আমেজ টা শুধু একদিন আগে নয় বরং প্রায় একমাস আগ থেকেই শুরু হয়।কে কি পড়বে,কোন মার্কেটে যাবে,কোথা ঘুরতে যাবে কি করবে ইত্যাদি ইত্যাদি। আর ঈদের আগের দিনেই ব্যস্ততা থাকে সবচেয়ে বেশি।এর পাশা পাশি অনেকে এইদিন ছুটি পেয়ে চলে যায় নিজে গ্রামে।
আমিও প্রতি বার এইদিন গ্রামের বাড়ি বেরাতে যাই।এখান থেকে শুরু হয় আমার গ্রামে ভ্রমন কাহিনি।
আমার গ্রামের বাড়ি ভোলা(বরিশাল) , পড়াশোনার জন্য ঢাকা থাকা হলেও সারা বছর অপেক্ষা করি কখন এই সময়টা আসবে আর গ্রামে মা-বাবার সাথে ঈদ করবো,দেখা করবো।অনেক আগ্রহ নিয়েও মা-বাবাও বসে থাকে কখন আমি বাড়ি যাবো।এই ফিলিংস টা বলে বুঝানো সম্ভব না।আমার মত যারা শহরে থেকে গ্রামে ঈদে যায় একমাত্র তারাই বুঝে।যাই হক আমি যেহুতু ভোলা (বরিশাল) এর লোক তাই বাংলাদেশের সকলে জানেন লঞ্চ হলো আমাদের গ্রামে যাওয়ার যানবাহন।
ক্যামেরায় | ডিভাইস | লোকেশন |
---|---|---|
আলামিন | পোকো এম ২ | source |
বুড়িগঙ্গা, পদ্না, মেঘনা,বোড়ানদী, বুকের উপর দিয়ে বয়ে চলা উদাসীন বাতাসে,মনমাতানো দুপাশে গাছের সাড়ির মনরম দৃশ্য, নদীর বুকে ছোট ছোট মাছ ধরার নৌকা, জেলেদের গলাছাড়া গান,,মুগ্ধ কর প্রকৃতি দেখতে দেখতে কখন যে শেষ হয়ে যায় আমার লঞ্চ যাত্রা বুঝাই যায় না।
এরপর লঞ্চঘাট এসে পৌছালে গাড়িওয়ালা মামাদের -মামা কোথায় যাবেন,"আসেন আমার গাড়িতে আসেন"টানাটানি, চিল্লাচিল্লি বিরক্ত কর হলেও কেমন যানি একটা আনন্দ পাওয়া যায় এই দৃশে।তখন মনে হয়, না সত্যি আমি গ্রামে এসেছি।কেননা এরকম মিস্টি হইহট্টগোল শহরের মানুষ করতে পারে না।এরপর তো ভাড়ার একটা ব্যাপার আছে,,ঈদের তো ভাড়া দিগুনেরও বেশি হয়ে যায়। যানি দিগুন ভাড়া দেওয়া লাগবে তাও ইক্টু মজা করার জন্য ভাড়া কসাকসি করি।জানি শেষ টাতে আমি হারবো তাও গ্রামে ঢুকার প্রথম যে বিনোদন টা তা ইক্টু উপভোগ করা আর কি। এরপর আঁকাবাকা রাস্তা দিয়ে,লক্কর জক্কর গাড়িতে বাড়ির দিকে যাওয়া। দুপাশে গাছের সাড়ি,ধানক্ষেতের অপরুপ চিত্র,আকাশ যেনো ওই দুরের ধানক্ষেতের শেষে জমিনের সাথে মিশে গেছে,এত অপূর্ব দৃশ্য দেখতে দেখতে বাড়ি এলাম।মা-বাবার আমাকে দেখে বুকে জড়িয়ে নিলো। হাতমুখ ধুয়ে আসতে দেরি এটা খাও ওটা খাও অনেক খাবার খেলাম।
ঈদের দিন।
ক্যামেরায় | ডিভাইস | লোকেশন |
---|---|---|
সাগর | পোকো এম২ | source |
ঈদের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজে গেলাম।নামাজ শেষ করে এলাকার চাচাতো ভাই,মামাতো ভাই,পরিচিতো সবার সাথে কোলাকুলি করে, ছোটদের সালামি দিয়ে,আর বড়দের কাছ থেকে সালামি নিয়ে শুরু হলো আমার ঈদের দিন।এরপর সেমাই, নুডলস, পায়েস বিভিন্ন মিস্টি জাতিও খাবার খেতে খেতে তো পেট গোপাল ভাড়ারের মত হয়ে যায়। আত্নীয় স্বজনের বাসায় ঘুরতে ঘুরতে সকাল গড়িয়ে বিকাল। আর কি বলবো চাচা চাচি দের বিয়ে কর বিয়ে কর এই এককথা এই সারা দিন শুনতে হয়,,,কি বলিতো বলুন- সবে আমার ২৩ বছর, এই বয়সে কেউ বিয়ে করে,,, এখন তো ঘুরবো ফিরবো খাবো দাবো। বিচার টা আপনারাই করুন।
বিকালে ইকোপার্কে পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাওয়া
ক্যামেরায় | ডিভাইস | লোকেশন |
---|---|---|
আলামিন | পোকো এম ২ | source |
এরপর বিকাল বেলা আমাদের গ্রামে মেঘনা নদীর পারে কক্সবাজারের মত করে একটি ছোট একটা বিজ বানিয়েছে,সেখানে ঘুরতে গেলাম সাথে মা-ছোটবোন,বড় বোনের ছেলেরা ছিলো, ভাইগ্নারা নৌকা রাইডে উঠলো,নদীর পারে কিছুখন ঘুরলাম, ছবি তুললাম, নদীর মনরম প্রকৃতি দেখলাম এরপর বাসায় চলে আসলাম।
বন্ধুদের কাটানো সময়।
ক্যামেরায় | ডিভাইস | লোকেশন |
---|---|---|
আলামিন | পোকো এম ২ | source |
পরের দিন বন্ধুদের সাথে মেঘনা নদীর পাড়ে ঘুরতে গেলাম,নদীর পারে গিয়ে মন আর মানলো না,,,নদীর পাড়ের লোকদের কাছ থেকে কাপড় হাওলাদ নিয়ে, পড়ে দিলাম মেঘনা বুকে লাফ। কি যে মজা হয়েছে, নদীর ঢেউয়ের সাথে নিজেকে মিলিয়ে দেওয়ায়,সেটা বুঝানো সম্ভব না। এরপর নদীর পাড়ে টংয়ের দোকানে বসে চা, কলা,পেপসি খেলাম।জানেন কি আর বলবো দোকান দার আমাদের কাছ থেকে ১০ টাকা বেশি নিলো।বললাম মামা কেন বেশি দাম দিবো, বললো বাজারে এখন নাকি মাল পাওয়া যায় না তাই বেশি দাম নিচ্ছি।কি করার টাকা দিয়ে চলে এলাম।
ক্যামেরায় | ডিভাইস | লোকেশন |
---|---|---|
মহিন | পোকো এম ২ | source |
গ্রামে ভ্রমন করার মজাই অন্য রকম। শহর থেকে গ্রামে এসে প্রতিটি দিন আমার এত সুন্দর কেটেছে যা আমি বলে বুঝাতে পারবো না। পুকুরে গোসল করা,নৌকা চালানো,রাতে ব্যাঙ এর বৃস্টি ডাকা ডাক,সকালে পাখির কিচিরমিচির শুনে ঘুম ভাঙ্গা।বিকেলে শীতল হাওয়া গায়ে লাগিয়ে মাটির আকাবাকা পথ দিয়ে হেটে যাওয়া। এসব কিছুর স্বাদ জীবনকে আরো হাজার বছর বাচার স্বপ্ন দেখায়।
জানি না আমি কতটুকু গুছিয়ে ও বুঝিয়ে আমার গ্রামের ভ্রমণ কাহিনী লেখতে পেরেছি। আসলে গ্রামের ভ্রমন কাহিনী কথা বলে বা লেখে বুজা বার মত নয়।তাই সকলে ক্ষমার দৃস্টিতে দেখবেন।আমি এখনো গ্রামেই আছি,, তাই গ্রামের আরো অনেক মজার মজার কথা আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো অন্যকোনো দিন।সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন, সকলনকে নিয়ে অনেক সুন্দর সময় কাটান এই দোয়াই করি।
ভাই আপনি অনেকদিন থেকেই অ্যাক্টিভ নন, আপনার কি কোনো সমস্যা হয়েছে? আপনি যদি কোনো সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। আমি আপনার সাথে যোগাযোগ করতে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছি। বেশিদিন ইন্যাক্টিভ থাকলে আমরা লেভেল উঠিয়ে দিয়ে থাকি, ধন্যবাদ।
প্রতিটি মানুষই ভ্রমণ করতে চাই । ভবন খুব আনন্দদায়ক একটি ব্যাপার। ভ্রমণ করতে খুব মজা লাগে। সমুদ্রের মধ্যে জাহাজে করে ভ্রমণের আলন্দ কি করে বুঝাবো। কয়েকদিন হচ্ছে আমিও জাহাজে করে সমুদ্রে ভবন করেছিলাম। আমার খুব মজা লেগেছে। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল
ধন্যবাদ আপনাকেও এত কষ্ট করে আমার পোস্টি পড়ার জন্য
আপনি একদম ঠিক বলেছেন সারা বছর আমরা এই উৎসবের দিনগুলি জন্য অপেক্ষা করে থাকি। ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানে উৎসব। আপনার ঈদযাত্রার কাহিনী আমার ভালো লেগেছে ।এই মন মাতানো যাত্রা আমার বেশ পছন্দ হয়েছে। ঈদের দিন এবং ঈদ পরবর্তী সময় আপনি দারুন উপভোগ করেছেন বলে মনে হয়েছে। ইকোপার্কে আপনি দারুন সময় অতিবাহিত করেছেন। এত সুন্দর অনুভূতি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনি আমার পোস্টি সম্পূর্ণ পড়েছেন,, এটা জেনে আমার খুব ভালো লাগলো,,,আশা করি এরকম সাপোর্ট আরো পাবো ইনশাআল্লাহ। ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।
আসলে ভাইয়া ঈদ আসে আমাদেরকে ঘোরাফেরা আর খাওয়া-দাওয়া করানোর জন্য। আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে দারুণভাবে ঘোরাঘুরি করেছেন। আপনারা নৌকা চালিয়েছেন, পুকুরে গোসল করেছেন। সবমিলিয়ে ঈদের দিনটি দারুণভাবে উপভোগ করেছেন আপনারা।
হিম ভাই অনেক মজা হয়েছে এই সময় গুলো,,,ধন্যবাদ আপনাকে