অবুজ মেয়েদের আমার দেখা বাস্তব জীবনের গল্প | |15% Beneficiary To @shy-fox | |5% Beneficiary To @abb-charity

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

আসসালামু আলাইকুম।
আমি আলামিন ইসলাম আছি আপনাদের সাথে। আমার ইউজার নেমঃ@alamin-islam। আমি বাঙালি, বাংলাদেশের একজন নাগরিক।আশা করি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি এর সকল সদস্যবৃন্দ আল্লাহর অশেষ রহমতে ভাল আছেন। আমি ও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

আজ আমি আপনাদের সাথে নারী শিক্ষা নিয়ে আমার ভাবনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরবো। আমাদের সমাজে এখন অনেক নারীরাই নিজেকে স্বশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলছে। তারা প্রতিনিয়ত প্রমাণ করে আসছে যে তারা কোন অংশে পুরুষদের তুলনায় কম নয়। সর্বক্ষেত্রে তারা সমানভাবে সফলতা অর্জন করছে। এখন নারীরা দেশ শাসন থেকে সর্বক্ষেত্রে নিজের অবদান রাখছে। পুরুষদের টেক্কা দিয়ে নারীরা এই সমাজে নিজেদের একটি মজবুর আসন তৈরি করে নিয়েছে। কিন্তু আজ আমি কিছু ব্যর্থ নারীদের জীবন সম্পর্কে আলোচনা করব।

বর্তমান সমাজের পিতা-মাতারা অনেক আধুনিক হয়ে উঠেছে ।তারা অতীতের কুসংস্কারকে তুচ্ছ করে আধুনিক সমাজে নিজেদের কে প্রতিষ্ঠা করে চলেছে। এখনকার অধিকাংশ ঘরে দেখা যায় যে, আগের মতো আর ছেলে মেয়ে নিয়ে কেউ ভেদাভেদ করে না। পিতা-মাতা ছেলে সন্তানকে যতটা শিক্ষিত করার চেষ্টা করে ঠিক ততটাই তাদের কন্যা সন্তানকেও সমাজে স্বীকৃত হিসেবে গড়ে তোলার কঠোর প্রচেষ্টা করে। এখনকার অনেক পিতা-মাতা ই বাল্যবিবাহ তে দ্বিমত পোষণ করেন।

asian-1870022_640.jpg

Source

কিন্তু আমাদের বর্তমান এই কলিযুগে ছেলেমেয়েরা কিশোর বয়স থেকেই নিজেদের জীবনটাকে ধ্বংস করে ফেলছে। এখনকার সব জায়গাতেই দেখা যায় যে, ষষ্ঠ অথবা সপ্তম শ্রেণীতে পড়া মেয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করছে। বর্তমান যুগ এবং বর্তমান সমাজে প্রতিদিনই এরকম কিছু না কিছু ঘটনা শোনা যায়। এই বিয়ে করার ফলে তাদের জীবনের পরিণতি কি হয় আজ আমি তা আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব।

couple-3581038__480.webp

Source

আজ আমি আপনাদের সাথে যে গল্পটি শেয়ার করব সেটা একটি বাস্তব ঘটনা। সপ্তম শ্রেণীতে পড়া একটি মেয়ে তার প্রায় সমবয়সী ছেলের সাথে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। এই বিয়ে টা দুই পরিবারের কেউই মেনে নেয়নি । তাদের দুজনেরই পড়াশোনা নষ্ট হয়ে যায়। ছেলেটা কোনো এক চায়ের দোকানে কাজ করতে শুরু করে সংসার চালানোর জন্য এবং মেয়েটি লোকের বাড়িতে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ তাদের পরিবার তাদের মেনে নেই নি, তাই তারা নিজের খরচ নিজে বহন করার জন্য কাজ করতে শুরু করে। এভাবে কিছুদিন চলতে থাকে। এরপরে তারা দুজনেই নিজেদের জীবন নিয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। তারা অতীতের জন্য আফসোস করতে থাকে প্রতিটি ক্ষণে ক্ষণে। এরমধ্যে মেয়েটির জীবনে এমন একটি সময় আসে যখন সেই ছেলেটি অর্থাৎ তার স্বামী তাকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তখন সেই মেয়েটির মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। কারণ সেই মেয়েটির নেই শিক্ষাগত যোগ্যতা, সেই মেয়েটির নেই নিজের থাকার আশ্রয় স্থল, সেই মেয়েটির নেই তার বাবা-মার আশ্রয়। মেয়েটি নানান চিন্তায় পড়ে যাই এবং সে এসব চিন্তা ভাবনা করতে করতে ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

tea-stall-6227725__480.jpg

Source

মেয়েটি ভাবতে থাকে আমার জীবন এখন চলবে কি করে! আমি কিভাবে এই সমাজের বুকে মাথা উঁচু করে বাঁচবো! এরপর মেয়েটি সমস্ত কিছু ছেড়ে জীবনে একা চলার চেষ্টা করে। এবং সে নিজের খরচ চালানোর জন্য একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কাজ শুরু করে। এমন অবস্থায় তাকে সমাজের অনেক কটু কথা শুনতে হয়েছে। এইভাবে মেয়েটির জীবনের উজ্জ্বল আলোর শিখা নিভে যায়। এখন মেয়েটি কোনমতে তার জীবিকা নির্বাহ করছে। তবে সে যদি আজ সমাজের সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতো এবং নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে বড় কিছু হতে পারতো তাহলে তার জীবনটা কতই না সুখের হতো। আমরা মানুষ এবং মানুষ মাত্রই আমার ভুল করি।

woman-5893942__480.webp

Source

এখন আমি মেয়েটির বাবা মায়ের কথা বলি। মেয়েটির বাবা-মা চেয়েছিল তাদের মেয়েকে অনেক দূর পড়াশোনা করাবে। মেয়েটিকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য স্বাবলম্বী করে তুলবে। তারা চেয়েছিল তাদের মেয়ে বড় হয়ে কোনো উঁচু পোস্টে চাকরি করবে। কিন্তু তাদের সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি। কারণ তাদের মেয়ে আবেগের বশে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আমাদের সমাজে প্রতিনিয়ত এমন অনেক ঘটনা ঘটছে। কেউ না জেনে আবেগের বশে এই ভুলগুলো করে ফেলে আবার কেউ কেউ সবকিছু জেনেও আবেগের বশে জীবনে এরকম ভুল করে ফেলে।

girl-1828541_640.webp

Source

আমাদের সমাজে কিন্তু আজও সবার আগে নারীদের দিকেই আঙ্গুল উঠে। এই ভুলগুলোর কারণে একটি ছেলের জীবনে যতটা পরিবর্তন ঘটে তার থেকেও অনেক বেশি পরিবর্তন ঘটে একটি মেয়ের জীবনে। সমাজ ছেলেটিকে মেনে নিলেও এই ধরনের মেয়েকে সহজে মেনে নিতে চায় না। সব দোষে সব শেষে নারীদেরই দোষী ধরা হয়। এই বিষয়টি আমি একেবারেই মেনে নিতে পারিনা। আমি মনে করি, কম বয়সে এসব আবেগের ভুলের দোষে একজন ছেলে ও মেয়ে উভয়ই সমানভাবে দোষী।

নারীরা এখন পুরো বিশ্ব জয় করে চলেছে। কিন্তু সমাজে এমন কিছু কিছু নারী রয়েছে যারা এই সকল বিশ্বজয়ী নারীদের থেকে অনেক পিছিয়ে পড়েছে তাদের অতীতে করা কিছু ভুলের কারণে। আমরা সবাই জানি, শিক্ষার কোন বয়স নেই । এই সমাজে পিছিয়ে থাকা সকল নারীরা যখন নিজেদের প্রচেষ্টা ও আত্মবিশ্বাসের সাথে আবার নিজের পায়ে দাঁড়াবে এবং সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচবে তখন তারাও বিশ্বজয়ী নারীদের কাতারে নাম লেখাবে।


আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল সদস্যবৃন্দকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ, সবাই সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন।

আমার ব্লগ টি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ইতি,

IMG_20211011_185559.jpg

আমি@Al-Amin ইসলাম , আমি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, আমার ইচ্ছা আমি দেশ ও দশের জন্য ভবিষ্যতে কিছু করতে চাই, আমার গর্ব হয় নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয় দিতে। আমি গর্বিত বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে। বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ, বাংলাদেশের মানুষ মাছে ভাতে বাঙালি, প্রকৃতির রূপ, রস ,গন্ধ সবকিছুই আমার অহংকার।

Sort:  

ভাই আপনার এই পোস্টটি অসাধারণ হয়েছে সত্যিই একটি বাস্তবমুখী পোস্ট করেছেন.

 3 years ago 

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে

 3 years ago 

আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো আপনি নারী শিক্ষা নিয়ে সমাজে নারীর অবস্থান নিয়ে সুন্দর করে আলোচনা করেছেন। বর্তমানে নারী পুরুষ সমানতালে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে নারীকে পিছিয়ে রাখার কোন সুযোগ নেই। তারা তাদের যোগ্যতা দিয়ে তাদের মেধা দিয়ে সমাজে অবস্থান করে নিচ্ছে। তারা আজ করুণার পাত্র নয় ।পিতা-মাতার কাছে বোঝা নয় তারা আজ অহংকার। একটা সময় ছিল পরিবারের মেয়ে সন্তান দের অবহেলার চোখে দেখা হতো ।তাদের সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হতো ।কিন্তু বর্তমানে পিতা-মাতার তাদের এই ধরনের চিন্তাভাবনা থেকে দূরে সরে এসেছে ।তারা ছেলেমেয়ে না শুধু সন্তান হিসেবে দেখছে এবং তাদের শিক্ষা-দীক্ষায় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যোগ্য করে তুলছে ।আপনাকে অনেক অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।

 3 years ago 

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 60868.40
ETH 2377.54
USDT 1.00
SBD 2.64