ভুতুড়ে স্টেশন| |10% Beneficiary To @shy-fox | |

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম।
আমি আলামিন ইসলাম আছি আপনাদের সাথে। আমার ইউজার নেমঃ@alamin-islam। আমি বাঙালি, বাংলাদেশের একজন নাগরিক।আশা করি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি এর সকল সদস্যবৃন্দ আল্লাহর অশেষ রহমতে ভাল আছেন। আমি ও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

প্রতিদিনের মত আজকেও আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। তবে আজ আমি আপনাদের মাঝে ভিন্ন আঙ্গিকে হাজির হয়েছি। আজ আমি আপনাদের সাথে একটি ভূতের গল্প শেয়ার করব। ভূতের গল্প পড়তে এবং লিখতে আমার সব সময়ই খুব ভালো লাগে। তাই আজ আমি আপনাদের সবার সাথে শেয়ার করার জন্য একটি ভূতের গল্প লিখেছি। গল্পটির নাম দিয়েছি "ভুতুড়ে স্টেশন।"ভুতুড়ে স্টেশন" গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক একটি গল্প। এই গল্পটির সাথে বাস্তবের কোন মিল নেই। শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য এই গল্পটি আমি লিখেছি। যারা ভূতের গল্প পড়তে খুব ভালোবাসেন আশা করি, তাদের কাছে এই গল্পটি খুবই ভালো লাগবে। ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক গল্পটি-

warsaw-1662163__480.jpg

Source

রাতের ট্রেন ছিল। ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জে নেমে ছিলাম রাত ১:৩০ টাই। স্টেশনে ট্রেন এসে দাঁড়ালে সুনামগঞ্জের সব যাত্রীরা স্টেশনে নেমে গেল, আমিও তাদের সাথে নেমে গেলাম। এরপর ট্রেন আবার তার নিজ গন্তব্যে ছোটা শুরু করলো। অনেক বেশি রাত হওয়াতে সব যাত্রীদের আত্মীয়-স্বজন তাদেরকে এসে সাথে করে নিয়ে গিয়েছিল। স্টেশনে শুধুমাত্র যাত্রী হিসেবে আমি একাই ছিলাম। আসলে সুনামগঞ্জে আমি আমার এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের বাড়িতে জমি জায়গার বিষয়ে কাগজ পাতি আনতে গিয়েছিলাম। আমাকে অত রাত্রে নিয়ে যাওয়ার মতো তেমন কেউ সেখানে ছিল না। তাই আমি একাই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। স্টেশনে আমি একা। আশেপাশে তাকিয়ে দেখি দূর-দূরান্তে কাউকে দেখা যাচ্ছে না। তাই আমি স্টেশনমাস্টারের রুমের দিকে এগিয়ে গেলাম। স্টেশন মাস্টার কে জিজ্ঞাসা করলাম, এখান থেকে সোনাতলী গ্রাম কতদূর? তিনি আমাকে বললেন, অটোতে ৩০ মিনিটের পথ।

abandoned-4452278__340.jpg

Source

এরপর আমি স্টেশন থেকে বেরিয়ে রাস্তায় বের হলাম। রাস্তাতে যেয়ে দেখি কোন অটো-রিকশা বা মানুষজনের টিকি টুকুও নেই।এরপর আমি আবারো স্টেশন মাস্টারের রুমে চলে গেলাম। যেয়ে দেখি স্টেশন মাস্টার ঘুমাচ্ছে। আমি তাকে ডেকে তুলে জিজ্ঞাসা করলাম, কোন অটো কি পাওয়া যাবে এখন সোনাতলী যাওয়ার জন্য? স্টেশনমাস্টার আমাকে জানালেন এখন মাঝ রাত হয়ে গেছে। এখন আর আপনি কোন অটো-রিকশা কিছুই পাবেন না, লাস্ট যেই অটো ছিল তা ১০ মিনিট আগেই তো বেরিয়ে গেছে। এই কথা শুনে আমি বেশ চিন্তায় পড়ে গেলাম। এরপর ঠাণ্ডা মাথায় ঠিক করলাম আজকের রাতটা স্টেশনে কাটিয়ে দেবো। এরপর আমি স্টেশনের একটি বেঞ্চে গিয়ে বসলাম। স্টেশনের বেঞ্চে গিয়ে বসতেই হঠাৎ আমার মনে হলো এই স্টেশন টা কেমন যেন অদ্ভুত। অন্যান্য স্টেশনগুলোতে রাত হলেও কোন ভিখারি বা দরিদ্র লোক অবশ্যই স্টেশনের কোথাও না কোথাও তো থাকবেই কিন্তু এই স্টেশনে আশেপাশে একটা মানুষ তো দূরে থাক পোকা পর্যন্ত নেই। এই এত বড় ফাঁকা স্টেশনে রয়েছি শুধুমাত্র আমি । এরপর আমি পকেট থেকে আমার ফোন বের করে ভাবলাম একবার বাড়িতে ফোন দেই কিন্তু ফোনে কোন নেটওয়ার্ক অদ্ভুতভাবেই ছিল না। এরপর আমি ঘুমানোর জন্য বেঞ্চের উপরে শুয়ে পড়লাম। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ একটি লোক এসে আমাকে ডেকে বলল ভাই আপনি কি সোনাতলী গ্রামে যাবেন, আমি যাত্রি নিয়ে যাচ্ছি। এই কথা শুনে আমি চমকে উঠে বললাম আমি সোনাতলি গ্রামে যাব কিন্তু আপনি কি করে জানলেন আমি সোনাতলী গ্রামে যাবো। তখন লোকটি আমাকে বলল, আমি স্টেশন মাস্টারের কাছ থেকে শুনেছি তাই আপনাকে নিতে আসলাম। এই শুনে আমি তাড়াতাড়ি করে লোকটির সাথে তার অটো পর্যন্ত চলে গেলাম। গিয়ে দেখি অটোতে যাত্রী বলতে শুধু আমি এবং চাদরে মোড়া অন্য একটি লোক আগে থেকেই অটোতে বসে আছে। অতশত না ভেবে আমি লোকটির পাশে গিয়ে বসলাম।

nordbahnhof-4683447__480.webp

Source

এরপর অটো স্বাভাবিক ভাবে চলতে শুরু করল। ২০ মিনিট অটো চালানোর পর অটোচালক বলল, ভাই আপনারা বসেন, আমি একটু হালকা হয়ে আসি। এরপর প্রায় ২০ মিনিট হয়ে গেছে কিন্তু অটোচালক এখনো আসলো না। তাই আমি অটো থেকে নেমে পড়লাম। নেমে আশেপাশে দেখতে লাগলাম। অটো থেকে নেমে আমি পেছন ফিরে তাকাতেই দেখতে পেলাম আমার ঠিক পিছনে সেই স্টেশন। তখন আমি হতবাক হয়ে গেলাম। কারণ ১০ মিনিট ধরে অটো যদি চলতে থাকে তাহলে তো আমরা স্টেশন থেকে অনেকটা দূরে থাকবো, তাহলে আমরা আবার এখানে কি করে! এদিকে অটো ড্রাইভার এর কোন খোঁজ নেই। অন্যদিকে অটোর ভিতরে ঢুকে আমার পাশে বসে থাকা সেই লোকটিকে জিজ্ঞেস করতে গেলেই দেখলাম অটোতে সেই লোকটিও নেই। সবমিলিয়ে আমি খুবই ঘাবড়ে গেলাম এবং খুবই ভয় পেয়ে গেলাম।

alone-2395558__480.webp

Source

এরপর আমি অটো থেকে ব্যাগ নিয়ে এক দৌড়ে স্টেশন মাস্টারের রুমে চলে গেলাম। রুমের সামনে গিয়ে দেখি স্টেশন মাস্টারের রুম লক করা এবং আশেপাশে কেউ নেই। আমি খুবই ভয় পেয়ে গেলাম। এরকম পরিস্থিতিতে কী করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এরপর হঠাৎ আমার চোখ পড়ল, স্টেশনের যেই বেঞ্চটিতে আমি শুয়ে ছিলাম সেই বেঞ্চটিতে যেন কেউ একজন চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। আমি আস্তে আস্তে সেই বেঞ্চের কাছে এগিয়ে গেলাম। এরপর ভীত গলায় জিজ্ঞাসা করলাম আপনি কে? কিন্তু কোন সাড়া শব্দ পেলাম না। এরপর আমি আস্তে আস্তে লোকটির মুখের উপর থেকে চাদর সরানোর চেষ্টা করলাম। চাদরটা তুলতেই দেখতে পেলাম সেখানে ওই অটো চালকটি ঘাড় ঘুরিয়ে পিছন দিক করে শুয়ে আছে এবং আমি চাদর তুলতেই রক্তবর্ণ চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এই দৃশ্যটি দেখে আমার চোখ কপালে উঠার দায়। এরপর আমি ভয়ে এক দৌড়ে সেখান থেকে পালিয়ে গেলাম। এরপর আমি এক দৌড়ে গিয়ে পৌঁছালাম অটোর কাছে। অটোর কাছে যেয়ে দেখি আমার পাশে যাত্রী হিসেবে চাদরে মোড়া যে ব্যক্তিটি বসেছিল সে পিছন দিক ফিরে অটোর পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। আমি লোকটির কাছে যেয়ে পিছন থেকে তাকে সমস্ত ঘটনা বলতে থাকলাম কিন্তু সে কিছু না বলে হঠাৎ করে উচ্চ শব্দে হাসা শুরু করলো এবং হাসতে হাসতে সে তার মাথাটা সম্পন্ন ঘুরিয়ে (ঘাড় মটকানো মতো করে) আমার দিকে তাকালো। এই দৃশ্যটি দেখে আমি সেখানেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলাম। এরপর আমার ঘুম ভাঙতেই আমি দেখতে পেলাম আমি আমার আত্মীয়ের বাড়িতে তাদের ঘরে শুয়ে আছি এবং আমার মাথায় কে একজন পানি ঢালছে। পরে আমি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে তাদের কাছে সমস্ত ঘটনা খুলে বলতেই তারা আমাকে বলল, ওই স্টেশনে একজন অটো ড্রাইভার ছিল, সে প্রতিদিনই রাতের যাত্রী তাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দিত কিন্তু হঠাৎ দু'বছর আগে তাকে কেউ খুন করে স্টেশনে ফেলে গিয়েছিলো। আর তারপর থেকেই যেসকল যাত্রীরা স্টেশনে গভীর রাতে একা থাকে তাদের মধ্যে অনেকেই নাকি অটো ড্রাইভার এর আত্মা বিরক্ত করেছে বলে শোনা যায়। আর এখানেই "ভুতুড়ে স্টেশন" গল্পটি সমাপ্ত হয়।

IMG_20220205_123258.jpg

আমি@Al-Amin ইসলাম , আমি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, আমার ইচ্ছা আমি দেশ ও দশের জন্য ভবিষ্যতে কিছু করতে চাই, আমার গর্ব হয় নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয় দিতে। আমি গর্বিত বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে। বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ, বাংলাদেশের মানুষ মাছে ভাতে বাঙালি, প্রকৃতির রূপ, রস ,গন্ধ সবকিছুই আমার অহংকার।

প্রয়োজনে পাশে আছি আমার সাথে যোগাযোগ করুন:-

ফেসবুক || টুইটার || ইউটিউব || ডিস্কোড


Sort:  
 2 years ago 

আপনার অভিজ্ঞতার লেখা পড়ছিলাম আর নিজেকে আপনার জায়গায় কল্পনা করছিলাম। ভৌতিক রহস্যগুলো আমার ভালো লাগে পড়তে। তবে যেহেতু আপনার স্টোরি বাস্তব ভিত্তিক তাই বেশি আকর্ষণীয় লাগছে। অনেক ধন্যবাদ আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

গল্পের শুরুর দিকে আমি লিখেছি এটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক একটি ভূতের গল্প। এর সাথে বাস্তবের কোন মিল নেই। তাই এটা একদমই বাস্তবভিত্তিক গল্প নয়। আমি ভূতের গল্প লিখতে, পড়তে এবং ভুতের মুভি গুলো দেখতে খুব পছন্দ করি, সেই সকল অভিজ্ঞতা নিয়ে আমি নিজের কাল্পনিক দৃষ্টিতে একটি ভূতের গল্প লিখেছি।

 2 years ago 

ওয়াও অসাধারণ একটি ভূতের গল্প লিখছেন ভাইয়া। ভাইয়া আপনার গল্পটি পড়ে আমি নিজে একটু ভয় পেয়ে গেলাম। সত্যিই অসাধারণ লিখছেন ভাইয়া। আপনার গল্পটি আমার কাছে খুবেই ভালো লেগেছে। সুন্দর একটি গল্প লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

আপনার সুন্দরতম মন্তব্য পেয়ে আমি অনেক খুশি হয়েছি। আমার লেখা স্টেশনের ভূত"কাল্পনিক এই ভূতের গল্প টি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে আমি খুবই আনন্দিত। গল্পটি অসাধারণ হয়েছে কিনা জানিনা তবে আমি আমার সাধ্যমত লেখার চেষ্টা করেছি। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য।

 2 years ago 

ওয়াও অসাধারন একটি ভূতের গল্প লিখেছেন কিন্তু সুনামগঞ্জের রেল স্টেশনে গিয়ে এইরকম একটা অভিজ্ঞতার অনুভূতি যা পড়ে আমি অবাক হলাম।
আসলে আমি ভুতের বিষয়টিকে কোনভাবেই বিশ্বাস করিনা। আমিও অনেক রাতে অনেক জায়গায় গিয়েছি কিন্তু এরকম ঘটনা ঘটেনি আপনার সাথে ঘটে যাওয়া কাহিনীটি আমাকে অবাক করেছে ।শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাই।

 2 years ago 

আপনি হয়তো গল্পটি ভালো করে পড়েননি, আমি গল্পের শুরুতেই লিখেছি এটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক একটি গল্প, এর সাথে বাস্তবের কোন মিল নেই। গল্পটি আমি শুধুমাত্র যারা ভূতের গল্প পড়তে ভালোবাসেন তাদের জন্য লিখেছি। তবে হ্যাঁ আমিও বাস্তবে ভূত বিশ্বাস করিনা। কিন্তু ভুতের গল্প লিখতে, পড়তে এবং ভুতের মুভি গুলো দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে।

 2 years ago 

পুরো গল্পটা পড়লাম। ভীষণ ভয় লাগছিল পড়ে। বিশেষ করে ঘাড় মাথা ঘুরানো ব্যাপারটা বেশ ভয়ানক ছিল, সবমিলিয়ে দারুন 👌

 2 years ago 

গল্পটি আপনি পড়েছেন জেনে খুবই ভালো লাগলো। আমি আমার নিজের কল্পনা শক্তি দিয়ে সাধ্যমত গল্পটি কে একটু ভয়ানক করার চেষ্টা করেছি। আশাকরি, গল্পটি আপনার ভালো লেগেছে।

 2 years ago (edited)

ভাই ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ দিনের বেলায় গেলেই পারতেন।আমি ওই জন্য রাতে কোথাও যেতে কমফোর্ট ফিল করি না।আপনার সাথে ঘটে যাওয়া ভূতের গল্পটি পড়ে ভয় পেলাম।

 2 years ago 

যদি সত্যি ভয় পেয়ে থাকেন তাহলে আমার গল্পটি লেখা সার্থক হয়েছে, হিহিহি...। ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ দিনের বেলা গেলে তাহলে তো আর ভূতের গল্প টা জমলো না। ভূতের গল্প লেখা, পড়া এবং দেখার জন্য পারফেক্ট টাইম হলো রাত। দিনের বেলা ঠিক ভূত ভূত ফিল আসেনা। যাইহোক, আপনার সুন্দরতম মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আপনার টাইটেল দেখে প্রথমেই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম সত্যিই ভুত আছে মনে হয়।
চমৎকার লিখেছেন। পুরো কাহিনি বেশ আকর্ষনীয় ছিলো। শুভ কামনা রইলো।

 2 years ago 

আমার লেখা ভুতের গল্পটি আপনার কাছে বেশ আকর্ষণীয় লেগেছে জেনে খুবই ভালো লাগলো। ভূতের গল্পের কাহিনীটিকে আমি আমার কল্পনাশক্তি দ্বারা একটু ভয়ানক করে তোলার চেষ্টা করেছি। গল্পটি আপনার কাছে ভয়ানক লেগে থাকলে আমার লেখাটা সার্থক হয়েছে। আপনার সুন্দরতম মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 57740.57
ETH 3127.01
USDT 1.00
SBD 2.33