"ইলাইহানীর জঙ্গলে মায়া"পর্ব-০২| |10% Beneficiary To @shy-fox | |

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম।
আমি আলামিন ইসলাম আছি আপনাদের সাথে। আমার ইউজার নেমঃ@alamin-islam। আমি বাঙালি, বাংলাদেশের একজন নাগরিক।আশা করি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি এর সকল সদস্যবৃন্দ আল্লাহর অশেষ রহমতে ভাল আছেন। আমি ও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

silhouette-3777403__480.jpg
source

আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য "ইলাইহানীর জঙ্গলে মায়া" কাল্পনিক ভূতের গল্পের দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করতে চলেছি। আশা করি, গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে।

প্রথম পর্বে ডাইনি মহিলাটি যখন মায়ার উপর আক্রমণ করেছিল তখন সে বলেছিল ইলাইহানীর জঙ্গলে গেলেই নাকি মৃত্যু হবে। এ কথা শুনে তারা সবাই তাড়াতাড়ি সেখান থেকে চলে আসে। এবং তারা বিষয়টিতে ভীষণ ঘাবড়ে যায়। এরপর তারা পাঁচ বন্ধু মিলে চিন্তা করে, এই ডাইনি মহিলাটি সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের সবাইকে প্রথমে ইলাইহানীর জঙ্গলে যেতে হবে। এই কথা শুনে পাঁচ বন্ধুর মধ্যে বিজয় যেতে রাজি হয় না। কারণ সে একটু ভীতু প্রকৃতির ছিল। তারপর বাকিরা চারজন মিলে তাকে জোর করায় বিজয় মোটামুটি ভাবে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাই। তারা সবাই পরিকল্পনা করে তারা পরের দিন সকালে ইলাইহানীর জঙ্গলের উদ্দেশে রওনা হবে। এরপর সবাই সবার বাড়িতে প্রোজেক্টের কাজে বাইরে ঘুরতে যাচ্ছে বলে রওনা দিয়ে দেয় ইলাইহানীর জঙ্গলের উদ্দেশ্যে।

এরপর তারা সবাই একটি প্রাইভেট গাড়িতে করে জঙ্গলের সামনে গিয়ে উপস্থিত হয়। সেখানে পৌঁছাতেই মায়ার মধ্যে এক অস্বস্তি কাজ করতে থাকে। তবে সেসব তখন পাত্তা না দিয়ে তারা পাঁচ বন্ধু মিলে জঙ্গলের ভেতরে ঢুকে যায়। জঙ্গলের ভেতর প্রবেশ করতেই তাদের এক বৃদ্ধ লোকের সঙ্গে দেখা হয়। লোকটিকে দেখে পাঁচ বন্ধু লোকটির কাছে এগিয়ে গিয়ে তাকে ইলাইহানীর জঙ্গল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেই লোকটি বলে ,এখানে কেন এসেছ তোমরা? এখানে থাকলে বিপদ হবে তোমরা চলে যাও। তাই বলে বৃদ্ধ লোকটি চলে যায়। এই বৃদ্ধ লোকটির কথা শুনে তারা পাঁচ বন্ধু মোটামুটি ভাবে ঘাবড়ে গেলেও তারা জঙ্গলের ভেতরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। জঙ্গলের ভিতরে প্রবেশ করতেই তারা একটি অদ্ভুত আওয়াজ শুনতে পাই। আওয়াজটা কে লক্ষ্য করেই তারা এগিয়ে যেতে থাকে। কিছুটা দূরে যেতেই তারা দেখে একটি ছোট্ট গ্রাম দেখা যাচ্ছে এবং সেখানে কোন উৎসব বা রীতি চলছে বলে মনে হচ্ছে।

এরপর তারা সবাই মিলে সেই গ্রামের কাছে এগিয়ে যায় । তবে সেখানে যেতেই তারা লক্ষ্য করে এখানকার মানুষগুলো বেশ অদ্ভুত রকমের। এর মধ্যে মায়া সেখানকার একটি মহিলার সাথে কথা বলতে গেলে মহিলাটি রেগে তাকিয়ে তাড়াতাড়ি ঘরে চলে যায়। অন্যান্য মহিলাগুলো তাদেরকে দেখে তাড়াতাড়ি ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। এই বিষয়টি মায়াদের বেশ অদ্ভুত লাগে। ঠিক তখনই ওই গ্রামের একটি পুরুষ ব্যক্তি যার নাম স্বপন সে মায়াদের সাথে কথা বলার জন্য এগিয়ে আসে। তখন স্বপন নামের লোকটি‌ মায়া ও তার বন্ধুদের জিজ্ঞাসা করে আপনারা এখানে কেন এবং আপনাদের পরিচয় কি? তখন বিজয় বলে, আমরা একটি মহিলার পরিচয় সম্পর্কে জানতে এসেছি। এরপর ওই স্বপন নামের লোকটির কাছে তারা ওই ডাইনি মহিলা সম্পর্কে বিস্তারিত খুলে বলেন। তখন স্বপনের চোখে মুখে একটি অন্যরকম বিষয় লক্ষ্য করা যায়। তবে বিষয়টিকে এড়িয়ে স্বপন বলে ওই মহিলাটি কোন ডাইনি নয় , সে একটি মানসিক রোগী। সে ডাইনি মহিলাটির নাম ইরা। সে আমাদের গ্রামেই থাকতো।

এ কথা শোনার পরে সেই পাঁচ বন্ধু ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতেই স্বপন নামের লোকটি বলে আপনারা এখন এখান থেকে যেতে পারবেন না। এখন প্রায় সন্ধ্যা নেমে এসেছে, আর এই সময় জঙ্গলে নানা ধরনের বিপদজনক পশুপাখি ঘুরে বেড়ায়। তাই আপনারা আজকে রাতে এখানে থেকে যান। প্রথমে মায়া ও তার বন্ধুরা আপত্তি করলেও পরে রাজি হয়ে যায় সেখানে থাকার জন্য। তবে তখনো মায়ার মধ্যে বেশ একটা অস্বস্তিক কাজ করে। এরপর মায়া ও তার বন্ধুদের থাকার জন্য তারা একটি ঘরে নিয়ে যায়। সেই ঘরটা ছিল বেশ নোংরা এবং ভৌতিক। তবে সেখানেই তারা কোনো রকম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে থাকার জন্য অ্যাডজাস্ট করে নেয়। এরপর রাতের খাবার খাওয়ার জন্য স্বপন তাদেরকে ডাকতে আসে। তখন মায়ারা খাওয়া টেবিলে গিয়ে দেখে সেখানে তাদেরকে খাওয়ার জন্য কাঁচা মাংস দেওয়া হয়েছে। এখানকার সবাই নাকি কাঁচা মাংস খায়। এইসব দেখে মায়া ও তার বন্ধুদের বমি চলে আসে। সেই রাতে তারা কোন রকম খেয়ে বা না খেয়ে ঘুমোতে চলে যাই , ঠিক তখন থেকেই তাদের সাথে ভুতুড়ে কান্ড শুরু হতে থাকে।

মায়া যখন বিছানায় ঘুমাতে যায় তখন সে তার পাশে এক বীভৎস আকৃতির কুৎসিত মহিলাকে দেখতে পাই। মহিলাটি মায়ার গলা টিপতে আসছে। এসব দেখে মায়া ভয় পেয়ে এক দৌড়ে বাইরে চলে যায়। বাইরে গিয়ে সে দেখে দূরের একটি বাড়িতে কিছু মানুষজন দাঁড়িয়ে আছে। সেখানে একটি মহিলার বাচ্চা ডেলিভারি হওয়ার সময় হয়েছে । তখন মায়া বিষয়টি ভালোভাবে বোঝার জন্য সামনে এগিয়ে যায়। এরপর মায়া যা দেখে তা সে নিজেও বিশ্বাস করতে পারেনা। মায়া দেখে সদ্য জন্মানো এক নবজাতক শিশুকে তারা মায়ের কোলে না দিয়ে একটি ভয়ানক বাড়ির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। মায়াও তাদের পেছু নেয়। মায়া তাদেরকে পিছু করে দেখে তারা সেই শিশুটিকে এক ভয়ংকর দেখতে পিশাচ এর কাছে ছুঁড়ে দিয়েছে এবং পিশাচটি সেই বাচ্চাটাকে গিলে ফেলে।এসব দেখে মায়া চিৎকার করে ওঠে।

চলবে.....

এই গল্পটিকে আমি তিনটি পর্বে ভাগ করেছি। অন্তিম পর্ব নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে হাজির হব।

IMG_20221214_022237.jpg

আমি@Al-Amin ইসলাম , আমি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, আমার ইচ্ছা আমি দেশ ও দশের জন্য ভবিষ্যতে কিছু করতে চাই, আমার গর্ব হয় নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয় দিতে। আমি গর্বিত বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে। বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ, বাংলাদেশের মানুষ মাছে ভাতে বাঙালি, প্রকৃতির রূপ, রস ,গন্ধ সবকিছুই আমার অহংকার।

প্রয়োজনে পাশে আছি আমার সাথে যোগাযোগ করুন:-

ফেসবুক || টুইটার || ইউটিউব || ডিস্কোড

ধন্যবাদ সবাইকে।


Sort:  
 2 years ago 

খুবই ভয়ংকর ছিল আপনার আজকের এই গল্পটি।যদিও আমি প্রথম পর্ব পড়িনি কিন্তু দ্বিতীয় পর্ব পড়ে ভীষণ ভালো লেগেছে কারণ এরকম ভয়ংকর গল্প গুলো পড়তে একটু বেশি ভালো লাগে যদিও একটু ভয় লাগে। যখন মায়া চিৎকার করলো এরপরে কি হলো তা জানার একটু বেশি আগ্রহী। আমার মনে হয় ওই গ্রামের সবাই কোন কিছু লুকাচ্ছে। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি পরের পর্ব শেয়ার করবেন। সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

এই গল্পটি কিন্তু খুবই ভয়ঙ্কর ছিল। ওই বাচ্চাটিকে কেন ভয়ংকর দেখতে পিশাচ এর দিকে ছুড়ে ফেলে। আমার মনে হয় ওই গ্রামটির সবাই কোন একটি রহস্য লুকাতে চাচ্ছে মায়া এবং তার বন্ধুদের কাছ থেকে। ছোট বাচ্চাটিকে পর্যন্ত তার মায়ের কোলে দেয় নি সত্যি খুবই ভয়ঙ্কর একটি গল্প। ভূতের গল্প কিন্তু আমি ভীষণ পছন্দ করি পড়তে এবং দেখতে দুটোই। পরের পর্ব একটু তাড়াতাড়ি শেয়ার করলে ভালো হয়। কারণ আর ধৈর্য ধরে বসে থাকতে পারছি না। ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 62613.64
ETH 2438.01
USDT 1.00
SBD 2.67