রহস্য | |10% Beneficiary To @shy-fox | |

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম।
আমি আলামিন ইসলাম আছি আপনাদের সাথে। আমার ইউজার নেমঃ@alamin-islam। আমি বাঙালি, বাংলাদেশের একজন নাগরিক।আশা করি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি এর সকল সদস্যবৃন্দ আল্লাহর অশেষ রহমতে ভাল আছেন। আমি ও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি, তবে আজ আমি আপনাদের সাথে একটি ভিন্ন ধরনের বিষয় শেয়ার করবো। আজ আমি আপনাদের সাথে একটি কাল্পনিক ভূতের গল্প শেয়ার করতে চলেছি। ব্যক্তিগতভাবে ভুতে আমি বিশ্বাস করিনা। তবে ভূতের কাল্পনিক কাহিনী গুলো শুনতে আমার কাছে খুব ভালো লাগে। আজকে আমি যে ভূতের গল্প টি শেয়ার করবো তা সম্পূর্ণ কাল্পনিক এবং আমার নিজের লেখা। যার সাথে বাস্তবের কোন মিল নেই। আশা করি ,এই ভূতের গল্প টি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক আজকের ভূতের গল্প:-

ghosts-572038__480.webp.jpg

source

অমাবস্যার রাত। আমি এবং আমার ছোট ভাই ঘুমিয়ে আছি। হঠাৎ ঘুম ভেঙে যেতেই খেয়াল করলাম লোডশেডিং হয়েছে। তখন বোধহয় রাত ২:০০ বাজে। প্রচুর গরম পড়ছিল, এই গরমে আমার ভাইও উঠে পড়ল। এরপর মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে আমরা ঘরের মধ্যে টর্চলাইট খুঁজতে থাকলাম। কিন্তু ঘরের কোথাও কোনো টর্চলাইট পেলাম না এবং এই গরমে বাতাস করার জন্য কোন হাতপাখাও পেলাম না হাতের সামনে। আর এত অতিরিক্ত গরম পড়ছিল তাই ঘরেও থাকা যাচ্ছিল না এই গরমে। তাই আমরা দুজনে ঠিক করলাম বাইরে যেহেতূ মৃদু হাওয়া বইছে তাই একটু বাইরে থেকে হাঁটাহাঁটি করে আসা যাক।

এরপর আমরা দুজন বাড়ির বাইরে বের হলাম। আমাদের বাড়ির সামনে ছিল একটি ছোট আম বাগান। আম বাগানের পরেই ছিল একটি খেলার মাঠ। এবং খেলার মাঠ পেরিয়ে ছিল একটি বড় তেঁতুল গাছ। আমরা দুজনে ঠিক করলাম আম বাগানের ভেতর দিয়ে একটু ঘোরাঘুরি করে আসা যাক। যেহেতু প্রচুর গরম পড়েছে তাই বাগানের ভিতর গেলে গরম কম লাগবে। এরপর আমি এবং আমার ছোট ভাই আম বাগানের মধ্যে হাঁটতে লাগলাম। রাতের বেলায় অতিপরিচিত আমবাগানটাও যেন বেশ অপরিচিত মনে হচ্ছিল। আমবাগানের প্রতিটি গাছ যেন খুব নিস্তব্ধ এবং গম্ভীর মনে হচ্ছিল। বেশ গা ছমছমে একটি পরিবেশ। তারপরেও এসব পাত্তা না দিয়ে আমরা হাঁটাহাঁটি করতে লাগলাম। হঠাৎ করে আমরা খেয়াল করলাম ছোট আমবাগানটাও যেন বেশ বড় মনে হচ্ছে। আমবাগানের শেষ সীমানা পর্যন্ত যেন পৌঁছাতেই পারছিনা। আম বাগানের ভেতরের রাস্তাগুলো যেন গোলকধাঁধা হয়ে যাচ্ছে।

মোবাইলের আলোয় তবুও রাস্তা গুলো ঠিকভাবে চেনার চেষ্টা করছিলাম। কোনভাবে আমবাগানের শেষ সীমানায় পৌঁছাতেই আমরা যা দেখতে পেলাম তার জন্য আমরা মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। যেই আমবাগানের শেষে চেনা-পরিচিত আমাদের খেলার মাঠ ছিল সে আমবাগানের শেষ সীমানায় সে খেলার মাঠ টি আর নেই। সামনে রয়েছে একটি শ্মশান। আমরা দুজনেই হতভম্ব হয়ে গেলাম। আজ বিকেলেও যেখানে খেলার মাঠ ছিল এই রাতের মধ্যে খেলার মাঠ কিভাবে শ্মশানে পরিণত হলো এই ভেবেই আমরা চমকে উঠলাম।

এরপর ভালোভাবে চারিদিক তাকাতেই আমরা বুঝতে পারলাম আমরা আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় ১ মাইল দূরের একটি শ্মশানে দাঁড়িয়ে রয়েছি। যে শ্মশান টাই মানুষ দিনের বেলাতেও আসতে ভয় পাই সেই শ্মশান টাই আমরা এই গভীর রাতে দাঁড়িয়ে রয়েছি। এই কথাটা আমরা বুঝতে পেরেই আমাদের বুক ধরফর শুরু হয়ে গেল। আমরা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিলাম না আমবাগানের পরে খেলার মাঠের জায়গায় এই শ্মশান কিভাবে চলে আসলো।এরপর আমি ভয়ে ভয়ে আমার ছোট ভাইকে বললাম এত কিছু না ভেবে চল এক দৌড়ে আমরা পালিয়ে যাই। এই কথা বলতে না বলতেই আমরা কারো এক আর্তনাদের চিৎকার শুনতে পেলাম। এই চিৎকারটা শুনে আমাদের দুজনেরই অবস্থাটা প্রায় খারাপ হয়ে গেছিল। চিৎকার শেষে আমরা নূপুরের ঝনঝন আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলাম এবং কোন এক মহিলার জোরে জোরে হাসির শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম। এইসব শুনে ভয়ের চোটে দুজনেই যখন দৌড় দিতে লাগলাম তখন দেখতে পেলাম আমরা যে আমবাগানটা দিয়ে এসেছিলাম সেই আমবাগান আর পেছনে নেই।

আমবাগানের জায়গায় তটস্থ ভাবে দাঁড়িয়ে আছে সেই তেঁতুল গাছ। এরপর যখন সামনের দিকে দৌড় দিতে যাব তখন দেখতে পেলাম সাদা শাড়ি পরা কোন এক মহিলা আমাদের সামনে দাড়িয়ে জোরে জোরে হাসছে। এইসব দেখে আমাদের দুজনেরই হৃদপিণ্ড যেন ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছিল। দুজনেই ভয়ে গলার আওয়াজটাও বের করতে পারছিলাম না। এরপর সামনে থাকা সেই সাদা শাড়ি পরা মহিলাটা কি যেন বলতে লাগলো। বলতে বলতেই সে এক মহিলার রূপ থেকে পিশাচের রূপে পরিণত হল। যা দেখার জন্য আমরা দুজন মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। পিশাচটার মুখ যেন কুচ্ছিত ভয়াবহ হয়ে উঠলো এবং তার পুরো শরীর বড় বড় লোমের জন্তুর মত ঢাকা ছিল। তা দেখে আমরা দুজনে অতিরিক্ত ভয় পেয়ে দিগ্বিদিক শুন্য হয়ে দিলাম এক দৌড়। আমাদের পিছন পিছন সেই পিশাচ টাও দৌড় দিল আমাদের কে ধরার জন্য। এরপর দৌড়াতে দৌড়াতে আমরা সেই আম বাগানের মধ্যে আবার পৌঁছে গেলাম।

আম বাগানের মধ্যে পৌঁছে যেতেই পিশাচ তার হাত বাড়িয়ে যেই আমার পিঠে বড় বড় নখ দিয়ে আঁচড় বসাতে গেল আর ঠিক সেই মুহূর্তে আমার ঘুম ভেঙে গেল। ঘুম থেকে উঠে দেখতে পেলাম পাশে আমার ভাই ঘুমিয়ে আছে। এরপর আমি বুঝতে পারলাম এতক্ষণ আমার সাথে যা ঘটেছিল তা আমি আমার স্বপ্ন দেখছিলাম। এটা নিছকই একটি দুঃস্বপ্ন ছিল। এরপর মুহূর্তে আমি হঠাৎ করে আমার পিঠে একটু ব্যথা অনুভব করলাম। কি হয়েছে দেখতে আয়নার সামনে এসে দাঁড়াতেই আমি চমকে উঠলাম। আমি লক্ষ্য করলাম আমার পিঠে কারো নখের আঁচড়ের দাগ লেগে আছে। তাহলে সেই রাতে কি হয়েছিল, আমি দুঃস্বপ্ন দেখেছিলাম নাকি সত্যিই ঘটনাটি ঘটেছিল তা আমার কাছে আজও রহস্য।

IMG_20220423_215646.jpg

আমি@Alamin-Islam , আমি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, আমার ইচ্ছা আমি দেশ ও দশের জন্য ভবিষ্যতে কিছু করতে চাই, আমার গর্ব হয় নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয় দিতে। আমি গর্বিত বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে। বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ, বাংলাদেশের মানুষ মাছে ভাতে বাঙালি, প্রকৃতির রূপ, রস ,গন্ধ সবকিছুই আমার অহংকার।

Sort:  
 2 years ago 

আপনার কাল্পনিক ভূতের গল্পটি পড়ে গা ছমছম করে উঠলো। গল্পটি পড়তেই ভয় লাগছিল এরকম ঘটনা যদি বাস্তবে ঘটে তাহলে হয়তো ওখানে হার্ট ফেল করব।
খুব সুন্দর উপস্থাপনা ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল আপু আপনার জন্য।

 2 years ago 

মোবাইলের আলো ব্যবহার করে আমবাগানের শেষ মাথায় পৌঁছানো মাত্রই চোখের সামনে ভেসে উঠলো সামনে মাঠটি আর নেই অনেক সুন্দর ভাবে গল্পটি আমাদের সামনে উস্থাপন করেছেন। পিচাষের আপনার পিঠে নখ বসানোর ঘটনা আমাকে খুবই ভয় পাইয়ে দিয়েছে। ধন্যবাদ সুন্দর একটি গল্প উপহার দেওয়ার জন্য।

 2 years ago 

ভাই পৃথিবীতে ভূত বলে কিছু নেই সব গুলোই কাল্পনিক, আপনি সুন্দর মূল্যায়নের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল ভাই আপনার জন্য।

 2 years ago 

আসলে ভুতের গল্প আমার বেশ ভালো লাগে ☺️
আপনি আর আপনার ছোট ভাই পিশাচের খপ্পরে পরেছিলেন সে আর একটু হলেই ধরে ফেলতো 🤗
যাক বেঁচে গিয়েও পিঠে নখের দাগ , বেশ ভয়ানক সবকিছু 🪄
ভালো ছিল গল্প।
🤗

 2 years ago 

ভাই আপনার ভূতের গল্প ভালো লেগেছে জেনে খুবই খুশি হলাম, সুন্দর মূল্যায়নের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল ভাই আপনার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.12
JST 0.027
BTC 61555.74
ETH 2980.33
USDT 1.00
SBD 2.51