ভুতুড়ে বাড়ির গল্প-প্রারম্ভিক পর্ব || 10% Beneficiary To @shy-fox

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

আসসালামু আলাইকুম।
আমি আলামিন ইসলাম আছি আপনাদের সাথে। আমার ইউজার নেমঃ@alamin-islam। আমি বাঙালি, বাংলাদেশের একজন নাগরিক।আশা করি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি এর সকল সদস্যবৃন্দ আল্লাহর অশেষ রহমতে ভাল আছেন। আমি ও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

ভুতুড়ে বাড়ির গল্প প্রথম পর্ব

আজকে আমি আপনাদের সবার সাথে শেয়ার করার জন্য একটি ভুতুড়ে বাড়ি নিয়ে গল্প লিখেছি। আশাকরি গল্পটি পড়ে আপনাদের খুব ভাল লাগবে।

ghost-4862639__480.webp

Sources

আজ আমি আপনাদের সাথে আমার লেখা গল্পের চরিত্র অপু ও দীপুর সাথে ঘটে যাওয়া রহস্যময় ভৌতিক কাহিনী শেয়ার করব।

সে অনেক দিন আগের কথা- অপু ও দীপু দুই বন্ধু। এরা ছিল স্কুলের ছাত্র। এরা খুবই দূরন্ত স্বভাবের ছেলে। তখন সবেমাত্র দশম শ্রেণীতে উঠেছে। অপু ও দীপু একদিন স্কুল ছুটির সময় বাড়ি ফেরার পথে একজন অপরিচিত মানুষের কাছ থেকে জানতে পারে তাদের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি ভুতুড়ে বাড়ি রয়েছে।অথচ তারা সেই খবরটি জানেই না। স্বভাবতই তাদের দুজনের ভীষণ কৌতহল হল বাড়িটি সম্পর্কে।
কিন্তু এই কথাটিই আগেই বলেনি যে, ওরা দুজনে কেউ ভুতে তেমন বিশ্বাস করে না।

তাই ওরা দুজনে ঠিক করল ,মানুষের এই ভুল ধারণা আমাদের ভাঙতে হবে । ভূত বলে যে কিছু নেই তা প্রমাণ করতে হবে। তাই আমরা কালকে ছুটির দিনে সকাল সকাল ভুতুড়ে বাড়ি দেখার জন্য বেরিয়ে পড়বো।

যেই ভাবনা সেই কাজ। তারা এক ছুটির দিনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পরল ভূতের বাড়ি পরিদর্শন করার উদ্দেশ্যে। ভুতুড়ে বাড়িতে যাওয়ার জন্য তারা একটি অটো ভাড়া করল। এই অটো ভাড়া করতে যেয়ে তাদের বেশ অনেকটাই ঝক্কি পোহাতে হয়েছে। কারণ কোনো অটোই ভূতূড়ে বাড়ির নাম শুনে যেতে চাইছিল না। সবার মধ্যে একটা ভয় কাজ করছিল। অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে একটি অটো যেতে রাজি হয়েছিল যদিও তাকে ভাড়া ডবল দিতে হয়েছিল।

এরপর তারা পৌঁছে গেল তাদের গন্তব্যস্থলে অর্থাৎ ভুতুড়ে বাড়িতে। ভুতুড়ে বাড়িতে ঢুকতেই তাদের বেশ গা টা ছমছম করে উঠলো। সেদিকে তারা অতটা পাত্তা না দিয়ে বাড়ির বাইরের চারপাশটা ঘুরে দেখতে লাগলো।

বাড়িটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটি বেশ বহু বছরের পুরনো। এই বাড়ির ইতিহাস হিসেবে জানা যায় এই বাড়িতে একটি জাদুকরী তান্ত্রিক মহিলা থাকতো। তার প্রেমিক তাকে ঠকানোর কারণে সেই মহিলা বাড়ির পেছনে তেতুল গাছে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তারপর থেকে এই বাড়ি থেকে অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটার কারণে বাড়িটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে বহু বছর। এই বাড়িটি সম্পর্কে লোকমুখে আরো একটি কথা শোনা যায়, তা হচ্ছে আজ পর্যন্ত এই বাড়িটিতে যত জন মানুষ গিয়েছে তারা আর কেউ ফিরে আসেনি। অনেক বছর পর অপু ও দীপু দুই বন্ধু এই বাড়িতে প্রবেশ করেছে। প্রবেশ করা মাত্রই বাড়ির ভেতর থেকে অদ্ভুত কিছু শব্দ পাওয়া যাচ্ছিলো যা খুবই ভয়াবহ ছিল । এতে তারা কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছিল। এরপর আস্তে আস্তে ভীত মন নিয়ে তারা বাড়ির সদর দরজার কাছে পৌঁছানো মাত্রই সদর দরজা একাই খুলে গিয়েছিল। এতে তারা আরো বেশি ভয় পেয়ে গেল। তখন দিপু বলল, "অপু আমি কিছু অনুভব করতে পারছি ,আমাদের হয়তো এই বাড়িতে ঢোকা ঠিক হবে না ,চল আমরা চলে যাই"। একথা শুনে অপু দীপকের নিয়ে ঠাট্টা করে বলল, "ভূত আসলে ভূতের সাথে বন্ধুত্ব করে নেব তাহলে তো আর ভয় পাবিনা"। এই কথা শুনে দীপু হালকা হেসে ভেতরে যাওয়ার সম্মতি দিল।

এরপর তারা আস্তে আস্তে বাড়ির ভিতর প্রবেশ করল এবং বাড়ির ভেতরটা ঘুরে দেখতে লাগলো। বাড়ির ভেতরটা ঘুরে দেখার সময় তাদের গা টা আরো বেশি ছমছম করতে লাগলো। পুরো বাড়িটা ঘুরে দেখতে দেখতে তারা একটি রুমের দরজার সামনে এসে দাড়ালো। রুমের দরজাটা অনেক তালা এবং তন্ত্র মন্ত্র দিয়ে বাঁধানো দেখেই বোঝা যাচ্ছে। এইসব দেখে তারা দুজনেই কিছুটা ভয় পেয়ে গেল। এরপর ভীত সুরে বলল দরজার ওপরে কি আছে চল দেখা যাক। তখন দিপু বললো ,"আমার খুব ভয় লাগছে চল চলে যাই"। অপু দিপুর কথায় কান না দিয়ে একটি ইট জোগাড় করে তালা টা ভেঙ্গে ফেলল।
দরজা খুলতেই তারা অদ্ভুত কিছু জিনিস দেখতে পেল। ঘরের ভিতরে বেশ কিছু পুরনো চটে যাওয়া আসবাবপত্র এবং অনেক গুলো তন্ত্র-মন্ত্রে ভরা পুরনো বই। এরপর তারা ঘরের সব জিনিসপত্র ঘাটাঘাটি করে কৌতুহল এর সাথে দেখা শুরু করলো। এগুলো দেখতে দেখতে হঠাৎ তারা বাইরে থেকে একটি অদ্ভুত শব্দ শুনতে পেল। তারা একটুও ভয় পেয়ে বলল, কে ওখানে! কেউ কি আছেন?

কিন্তু তারা পরে আর কোন আওয়াজই শুনতে পেল না। এরপর তারা বাড়ির বাইরে বের হয়ে আসলো। এরপর তারা সেই তেঁতুল গাছ টার দিকে যেতে লাগলো। গাছটার দিকে যেতে যেতে দীপু-অপু কে বলতে লাগলো, লোকেরা বলে এইটা নাকি ভুতুড়ে বাড়ি, ভাই কোন ভূতের তো দেখা পেলাম না কিন্তু বাড়িটা ঘুরে দেখতে আমার বেশ রোমাঞ্চকর লেগেছে। এভাবে তারা দুজন একে অপরের সাথে কথা বলতে বলতে গাছটার কাছে পৌঁছাল। গাছটার কাছে পৌঁছতে গাছের চেহারাটা দেখে ওদের বেশ ভয় ভয় লাগছিলো। গা টা বেশ ছমছমিয়ে আসছিল। এই তেতুল গাছটা ছিল প্রায়ই ১০০ বছরের পুরনো এবং বেশ গম্ভীর। তেতুল গাছে তখন অনেক তেতুল ধরেছিল। গাছে তেতুল দেখে ওদের তেঁতুল খাওয়ার ইচ্ছা হল। গাছ থেকে তেঁতুল পারার জন্য অপু গাছে উঠতেই গাছ থেকে পড়ে গেল। অপু বেশ ভালোই ব্যথা পেয়েছিল। এরপর দীপু নিচ থেকে হাত দিয়ে অল্প কিছু তেঁতুল নিয়ে পকেটে ভরে নিল এবং অপুকে হাত ধরে তুলল।

এরপর তারা সেই তেঁতুল খেতে খেতে ভুতুড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিজ বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিল এবং তারা সন্ধ্যের আগে নিজ বাড়িতে পৌঁছে গেল।
এরপর বাড়িতে ফিরে তারা রাতের খাবার খেয়ে নিজের ঘরে ঘুমাতে গেল ‌। ঘুমের মধ্যে এক ভয়ংকর স্বপ্নে তাদের দু'জনের ঘুম ভেঙে গেল এবং তাদের দুজনের চোখই রক্তের মত লাল হয়ে গেল। এরপর তারা দুজনেই আনমনে রাতের অন্ধকারে একা একাই পায়ে হেঁটে সেই ভুতুড়ে বাড়িতে পৌঁছালো। এরপর তারা দুজনেই সরাসরি সেই তেঁতুল গাছটার নিচে গিয়ে দাঁড়িয়ে পরল ..........(চলমান)

আশা করি আপনাদের সবার এই ভূতুড়ে বাড়ির গল্পটি অনেক বেশী ভালো লাগবে। যদি আমার লেখা এই গল্পটি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন ।তাহলে আমি অনেক খুশি হব। আমার লেখা ভুতুড়ে বাড়ির গল্পটি পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।


IMG_20211005_232015.jpg

আমি@Al-Amin ইসলাম , আমি মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার, আমার ইচ্ছা আমি দেশ ও দশের জন্য ভবিষ্যতে কিছু করতে চাই, বর্তমানে আমি সরকারি চাকরির জন্য পড়াশোনা করছি,আমার গর্ব হয় নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয় দিতে। আমি গর্বিত বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে। বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ, বাংলাদেশের মানুষ মাছে ভাতে বাঙালি, প্রকৃতির রূপ, রস ,গন্ধ সবকিছুই আমার অহংকার।

Sort:  
 3 years ago 

দারুণ লেখছেন। অনেক রোমাঞ্চকর। পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপু, আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।

 3 years ago 

সুন্দর একটি ভূতের গল্প আপনি দেখেছেন ভাইয়া। আপনার এই ভূতের গল্প টি সবেমাত্র আমি পড়েছি, রাতের বেলা স্বাভাবিক ভুতের গল্প,ভুতের কথা শুনলে ভয় লাগে।আপনার গল্পটি পড়ে তেমনি ভয় লেগেছে। তবে অনেক ভালো লেগেছে আপনার গল্পটি।আপনার দ্বিতীয় গল্পটি পড়ার অপেক্ষায় আছি।ধন্যবাদ

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপু গল্পটি পড়ার জন্য।

 3 years ago 

আপনার লেখা গল্প টা অনেক সুন্দর হয়েছে। গল্পটা পড়তে কেমন যেন গা ছমছম করে উঠছিল। আশা করি সামনে গল্পটি পড়ে আরো অনেক কিছু বুঝতে পারব।

 3 years ago 

আমার লেখা গল্পটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।

 3 years ago 

অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই গল্পটা আমি যখন পরছিলাম তখন অনুভব করছিলাম এটা অনেক ভালো হয়েছে।পরবর্তী পর্ব দ্রত লিখুন। অপেক্ষায় রইলাম।

 3 years ago 

পরের পর্বটি খুব শীঘ্রই আপনাদের সাথে শেয়ার করব। গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

 3 years ago 

💖💖

 3 years ago 

ভুতুড়ে বাড়ির গল্প অনেক সুন্দর লাগলো ভাই আপনি অনেক সুন্দর করে লিখেছেন। পরের পর্বের জন্য অপেক্ষার রইলাম ধন্যবাদ আপনাকে আপনার জন্য শুভকামনা রইলো

 3 years ago 

ধন্যবাদ ভাই আপনাকে, গল্পটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।

 3 years ago 

গল্পটি অনেক সুন্দর হয়েছে। আমিও অপু ও দীপুর মতই ভূত বলতে কিছু আছে মনে করি না।কিন্তু ভূতের গল্প পড়তে ও শুনতে ভালোবাসি। আর অপু ও দীপু যে স্বপ্নটা দেখেছে সেটা হলো তাদের সারাদিনের চিন্তা চেতনার ফল।মানুষকে যেটা বেশি ভাবায় সেটাই স্বপ্নে রুপ নেয়। এতো সুন্দর গল্প লেখার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।

 3 years ago 

ঠিকই বলেছেন আপনি, কোন কিছু নিয়ে বেশি চিন্তা-ভাবনা করলে সেটিই বাস্তবে স্বপ্নের রূপ নেয়। আমার লেখা গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

 3 years ago 

অনেক সুন্দর হয়েছে আসা করি খুব তারাতাড়ি পরের পবঁ পাব।

 3 years ago 

আশা করি খুব শীঘ্রই পরের পর্বটি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আমার লেখা ভূতের গল্প টি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া।

অনেক সুন্দরভাবে প্রফেশনার লেখকের মতো লিখেছেন ভাই। আশা করি পরের পর্ব খুব তাড়াতাড়ি পেয়ে যাবো।

 3 years ago 

ভুতুড়ে গল্পটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম, ধন্যবাদ ভাইয়া।

দারুণ লেখছেন ভাইয়া আপনার ভৌতিক গল্পটা। অনেক রোমাঞ্চকর ছিল। সামনের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।

 3 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।

 3 years ago 

বাহ!!
ভাইয়া গল্পটি তো অনেক বেশি সুন্দর হয়েছে।
ভালো হলো এই গল্প রাতে চোখে পড়েছি কারণ আমি যথেষ্ট ভীতু। 🤪
সামনের পর্ব তাড়াতাড়ি চাই কিন্তু ভাইয়া।

 3 years ago 

অবশ্যই খুব তাড়াতাড়ি পরের পর্বটি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 63209.62
ETH 2570.91
USDT 1.00
SBD 2.76