২১ নম্বর রুমের রহস্য | |10% Beneficiary To @shy-fox | |

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম।
আমি আলামিন ইসলাম আছি আপনাদের সাথে। আমার ইউজার নেমঃ@alamin-islam। আমি বাঙালি, বাংলাদেশের একজন নাগরিক।আশা করি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ আল্লাহর অশেষ রহমতে ভাল আছেন। আমি ও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

প্রতিদিনের মত আজকেও আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি, তবে আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য একটি রহস্যময় গল্প লিখেছি। গল্পটির নাম দিয়েছি " ২১ নম্বর রুমের রহস্য ভেদ"। আশা করি, আমার আজকের গল্পটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।

yale-university-1604159__480.jpg

Source

রাহাত এবং শিহাব দুই বন্ধু ‌। তারা দুজনে একটি ইউনিভার্সিটির বাংলা বিভাগে পড়াশোনা করে। তবে দু'জনের পড়াশোনায় কোন মন নেই। তাদের দুজনের শখ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর। তারা দুজনেই অ্যাডভেঞ্চার করতে খুবই ভালোবাসে। একদিন ইউনিভার্সিটির ক্যান্টিনে তারা দুজনে যখন বসে আড্ডা দিচ্ছিল তখন তারা পাশে থেকে কিছু একটা শুনতে পেলো। তারা শুনতে পেল পাশে কিছু ছেলে মেয়ে একটা অদ্ভুত বিষয় নিয়ে কথা বলছে। তারা বলছে আজ থেকে পাঁচ বছর আগে আমাদের ইউনিভার্সিটির ২১ নম্বর রুমে একটি মেয়ে আত্মহত্যা করেছিল। এখনো নাকি ওই রুমে ওই মেয়েটির আত্মা কে দেখা যায়।

তাই ওই রুমটি একেবারের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ৫ বছর আগে। এখনো নাকি ঐ রুমটার আশপাশে গেলে কিছু অদ্ভুত আওয়াজ শুনা যাই রুমের ভেতর থেকে। তাছাড়া রাত বারোটার পর ওই রুমের আশেপাশে গেলে নাকি ঐ আত্মাটিকে অনুভব করা যায়। এই কথাগুলো শুনে রাহাত বেশ ভয় পেয়ে যাই কিন্তু অন্যদিকে শিহাব এই কথাগুলোকে নিয়ে খুব মজা করে। সে হেসে উড়িয়ে দেয় কথাগুলো এবং গুজব বলে আখ্যায়িত করে এই বিষয়টাকে।

এরপর ইউনিভার্সিটি শেষ করে তারা তাদের মেসে ফিরে যায়। রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ দুই বন্ধু বিছানায় শুয়ে নানা ধরনের গল্প করতে থাকে, হঠাৎ শিহাব বলে ওঠে দোস্ত এখন কয়টা বাজে দেখতো ? তখন রাহাত বলে রাত বারোটা বাজে। তখন শিহাব বলে চল ইউনিভার্সিটির ২১ নম্বর রুমে যাওয়া যাক। তখন রাহাত চমকে উঠে বলে পাগল হয়েছিস নাকি তুই? দুপুরবেলা শুনলিনা তুই ক্যান্টিনের ওই ছেলে মেয়েগুলো কি বলছিল ঐ রুমটার ব্যাপারে! তখন শিহাব হেসে বলে আরে সেজন্যই তো যাবো, যে দেখি কোন ভূতের দেখা পাই কিনা। এই কথা বলে শিহাব জোড় করে রাহাতকে ইউনিভার্সিটিতে নিয়ে আসে। এরপর তারা লুকিয়ে ইউনিভার্সিটির দেওয়াল টপকে ইউনিভার্সিটির পেছনদিকে প্রবেশ করে।

ইউনিভার্সিটি চারিদিক সুনসান ফাঁকা , চারদিক যেন বেশ ছমছমে একটা ভাব। দিনের বেলা ইউনিভার্সিটির রূপ যতটা প্রাণোচ্ছল এবং যতটা দুরন্ত মনে হয় রাত্রি বেলা ইউনিভার্সিটির রূপ যেনো ঠিক উল্টো। ইউনিভার্সিটি টা দেখে মনে হচ্ছে বেশ নিস্তব্ধ এবং গম্ভীর। এরপর তারা আস্তে আস্তে ইউনিভার্সিটির হল গুলোতে ঢোকার পেছনদিকের দরজায় চলে আসে। পিছন দিকে দরজাটা তখন আশ্চর্য রকম ভাবে খোলা ছিল কিন্তু চারিদিকে কেউ ছিলনা। এই বিষয়টি শিহাবের কাছে বেশ সন্দেহজনক লাগলো।
এরপর তারা দুজন আস্তে আস্তে পা টিপে টিপে ২১ নম্বর রুমের কাছে পৌঁছে যায়। ২১ নম্বর রুম এর কাছে তারা এসে দেখে ২১ নম্বর রুমে যেই তালা ঝুলানো ছিল সেই তালা নেই। ২১ নম্বর রুম ভেতর থেকে লক করা। এইটা দেখে রাহাত ভীষণ ভয় পেয়ে গেলেও শিহাব ভয় পাইনা। শিহাবের মনে সন্দেহ জাগে এটা কোন ভূতের গল্প নয় এর পেছনে রয়েছে অন্য কোন গল্প।

এই কথা ভাবতে ভাবতেই ভেতর থেকে তারা কিছু আওয়াজ শুনতে পাই, তখন রাহাত বলে চল আমরা এখান থেকে পালাই, ভেতরে নিশ্চয়ই ভূত রয়েছে, আমাদেরকে এখনই ধরে ঘাড় মটকে দেবে চল পালাই। তখন শিহাব বলে তুই চুপ থাক , আজকে এই ভূতের পর্দা আমি ফাঁস করবো। এরপর শিহাব ২১ নম্বর রুমের জানালার ফাঁকা দিয়ে যা দেখতে পায় সে সেটা দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না। সে দেখে রুমের ভেতরে মদ এবং ড্রাগস এর ব্যবসা চলছে। এটা দেখে সে রাহাতকে বলে দেখ তোর ভূতের কান্ড। এরপর সে রাহাতকে বলে জানলার ফাঁক দিয়ে দেখ ভূত কি করছে! এরপর রাহাত জানলার ফাঁক দিয়ে দেখার সময় হঠাৎ একটু আওয়াজ করে ওঠে আর তখন ঘরের ভেতরে থাকা লোকজন আওয়াজ শুনে বুঝতে পারে রুমের আশেপাশে কেউ রয়েছে।

এরপর রাহাত এবং শিহাব বিপদ বুঝেই সেখান থেকে পালিয়ে যায়। সেই রুমের ভেতরে থাকা লোকজন তাদের কে দেখতে পায় না। ফলে তারা বিড়াল ভেবে তাদের কাজ আবার শুরু করে দেয়। এরপর রাহাত এবং শিহাব সেইফ জায়গায় পৌঁছে পুলিশকে ফোন দেয়। এরপর তারা সমস্ত ঘটনা খুলে বলাই পুলিশ ইউনিভার্সিটি তে পৌঁছে সেই বেআইনি কাজ করার লোক গুলোকে ধরে ফেলে। এর সাথে কলেজেরও কিছু মানুষ যুক্ত ছিল যার জন্য ২১ নম্বর রুমটি নিয়ে গুজব ছড়িয়ে তারা এ কাজটি চালনা করতে পেরেছিল। এরপর সকাল হলে যখন ইউনিভার্সিটিতে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা আসা শুরু করে তখন তাদের মধ্যে এই ঘটনাটি ছড়িয়ে যায়। এবং তারা সবাই ২১ নম্বর রুমের আসল রহস্য জানতে পারে।

IMG_20220517_194446.jpg

আমি@Alamin-Islam , আমি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, আমার ইচ্ছা আমি দেশ ও দশের জন্য ভবিষ্যতে কিছু করতে চাই, আমার গর্ব হয় নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয় দিতে। আমি গর্বিত বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে। বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ, বাংলাদেশের মানুষ মাছে ভাতে বাঙালি, প্রকৃতির রূপ, রস ,গন্ধ সবকিছুই আমার অহংকার।

প্রয়োজনে পাশে আছি আমার সাথে যোগাযোগ করুন:-

ফেসবুক || টুইটার || ইউটিউব || ডিস্কোড

ধন্যবাদ সবাইকে।


Sort:  
 2 years ago 

গল্পটি পড়ে আমার খুবই ভালো লাগছিল যখন আমি 21 নম্বর রুম এর রহস্য জানতে ছিলাম তখন আমার ভেতরে এক ধরনের ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। হরর মুভি দেখলে যে রকম অবস্থা হয় ঠিক একই রকম অনুভুতি হচ্ছিল। যে আসলে কী অপেক্ষা করছে কিন্তু পরক্ষনে যখন দেখলাম যে আসলে এখানে মদ এবং ড্রাগস-এর ব্যবসা চলে তখন পুরো টুইস্ট নষ্ট হয়েছে। ভূত দেখলে মনে হয় ভালো লাগতো। যাই হোক আত্মহত্যার কাহিনী কে কেন্দ্র করে অসাধু লোকজন এই ব্যবসাকে চালিয়ে গিয়েছে কিন্তু অসৎ ব্যবসা কখনোই বেশিদিন টিকে না। এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আপনার সুন্দর ও গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল আপু আপনার জন্য।

 2 years ago 

কিছু কুচক্রী মহল মানুষের অন্ধবিশ্বাস কে হাতিয়ার বানিয়ে তাদের অপকর্ম গুলো চালিয়ে যায়। কিন্তু অপরাধ বেশি দিন স্থায়ী হয় না।
গল্পটি প্রথমের দিকে আসলেই ভেবেছিলাম এটা মনে হয় একটি ভৌতিক গল্প। মদ আর ড্রাগস এর বিষয়টি গল্পটিকে অন্যদিকে নিয়ে গেল। খুব ভালো লাগলো গল্পটি পড়ে। গল্পটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আপু আমাদের দেশের সাথে এই 21 নম্বর রহস্য রুমের কাহিনীর মিল রয়েছে বলে আমি মনে করি, অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে।

 2 years ago 

ভাইয়া, আপনার লেখা গল্পটি আমি খুব মনোযোগ সহকারে পড়েছি।গল্পটি পড়েছিলাম খুব ভয়ে ভয়ে কারণ ভূতের গল্প মনে করেছিলাম। পরবর্তীতে পুরো গল্পটা পড়ে বুঝতে পারলাম আসলে এখানে ভূতের থেকেও বড় ভূত আস্তানা গেড়েছে।আসলে ভাইয়া, গুজব ছড়িয়ে ইউনিভার্সিটি 21 নাম্বার রুমে মাদকের ব্যবসা চালাত। যদি এই বিষয়টা দুই বন্ধু না দেখতো বা সাহস না করতো তাহলে হয়তো এইটা গুজব থেকে যেত। খুব ভালো লেগেছে ভাইয়া আপনার গল্পটি পড়ে।ধন্যবাদ ভাইয়া, এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।।

 2 years ago 

আপনি ঠিকই বলেছেন, ভূতের চেয়ে বড় অদ্ভুত ভূত-পেত্নী আস্তানা গেড়েছে, আপনার সুন্দরতম মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে।

 2 years ago 

আমি তো ভূতের গল্প মনে করেছিলাম ভাই। পরে পড়ে কাহিনি অন্যটা আবিস্কার করলাম। থাকে কিছু কিছু বদ লোক থাকে যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার অন্য গুজব ছড়িয়ে ফায়দা লুটে। গল্পটি এমনই। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য

 2 years ago 

সুন্দর মূল্যায়নের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

আমি প্রথমে ভেবেছিলাম ভূতে নাকি ধরে ফেলবে। পরে দেখি গল্পের মোড় অন্যদিকে। ২১ নাম্বার হলটা নিয়ে তাহলে ভূতের সন্দেহ ছিল সবার মাঝে। এবার সব ফাসঁ হলো তাহলে। খুব সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করেছেন ভাইয়া পড়ে ভালো লাগলো।

 2 years ago 

গল্পের মোড় বাস্তবে গল্পের সাথে ও বাস্তবিক জীবন চলার পথে সাদৃশ্যপূর্ণ বলে আমি মনে করি, সুন্দর মূল্যায়নের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ভাইয়া যে ভাবে শুরু করলেন,ভয় পেয়ে গেছিলাম। শেষ অংশ পড়ে সস্থি পেলাম। অনেক সুন্দর লিখেছেন। অনেক ইউনিভার্সিটিতে এমন কিছু বানানো গল্প থাকে যা কখেনো কেউ জানে না। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

আমার গল্পটি আপনার কাছে ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম আপনার সুন্দর মূল্যায়নের মাধ্যমে আমাকে অনেক উৎসাহ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল ভাই আপনার জন্য।

 2 years ago 

আপনার পুরো পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। আসলে আমাদের সমাজে অনেক লোক থাকে যারা বিভিন্নভাবে নিজের স্বার্থ হাসিল করার সুযোগ খুজে। আসলে এই গল্পটি থেকে অনেক কিছু বুঝার রয়েছে এত অসাধারন পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।

 2 years ago 

সুন্দর মূল্যায়নের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.17
JST 0.031
BTC 81242.61
ETH 3198.79
USDT 1.00
SBD 2.79