হ্যালো বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন।

আজ আমি আপনাদের সাথে কাল্পনিক ভুতের গল্পের তৃতীয় পর্ব অর্থাৎ অন্তিম পর্ব শেয়ার করবো। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
তাহলে চলুন আর দেরি না করে গল্প শুরু করা যাক-

Source

দ্বিতীয় পর্বে পাঁচ বন্ধুর মধ্যে কার শরীরে শয়তানি শক্তির আত্মা প্রবেশ করেছে সেই আলোচনা নিয়ে শেষ হয়ে গিয়েছিল। আজ সেখান থেকেই শুরু করছি। এরপর বৃদ্ধ লোকটিকে জিজ্ঞাসা করা হলো, আমাদের মধ্যে কার শরীরে শয়তানি আত্মা প্রবেশ করেছে আমরা বুঝবো কি করে? তখন বৃদ্ধ লোকটি বলে , তোমরা এখানে চারজন বন্ধু রয়েছো, আমি তোমাদেরকে দেখে বুঝতে পারছি তোমাদের কারো মধ্যে আত্মা নেই, কিন্তু তোমাদের ৫ নম্বর বন্ধুটি কোথায়?তার শরীরে রয়েছে সেই শয়তানি আত্মা। অর্থাৎ কাজলের শরীরে রয়েছে সেই আত্মাটি। একথা শুনে সবাই ভীষণভাবে ভয় পেয়ে যায়। কাজল মারা গেছে শুনে তারা সবাই ভীষণ কষ্ট পায়।

Source

এরপর বাকি চার বন্ধুর মধ্যে একজন বলে ওঠে তাহলে আমাদেরকে সবার আগেই কাজলকে খুঁজে বের করতে হবে এবং ওর শরীরটাকে মেরে ফেলতে হবে।তখন বৃদ্ধ লোকটি বলে, এই ভুল তোমরা একদম করোনা। তাহলে তোমরা সবাই খুব শীঘ্রই মারা পড়বে। তিন দিনের মধ্যে সেই শয়তানি শক্তির আত্মাকে কাজলের শরীর পরিবর্তন করতে হবে তবে এর মাঝে যদি তার সেই শরীরটাকে কোন ভাবে নষ্ট করে দেওয়া হয় বা পুড়িয়ে দেয়া হয় তবে যার‌ দ্বারা তার শরীর নষ্ট করা হয়েছে সে আত্মাটি তার শরীরে ঢুকে যাবে। অর্থাৎ যার তিনদিন পরে মারা যাওয়ার কথা সে তিনদিন আগেই মারা যাবে। তখন বাকি চার বন্ধুর মধ্যে একজন বলে ওঠে, তাহলে আমাদের কি বাঁচার কোন উপায় নেই? আমরা এর হাত থেকে বাঁচবো কি করে? তখন বৃদ্ধ লোকটি বলে, এই আত্মার হাত থেকে বাঁচা অসম্ভব। ও সবাইকে মেরে ফেলবেই তবে আমরা চেষ্টা করতে পারি মৃত্যুর আগে নিজেকে বাঁচানোর শেষ লড়াই করতে। বৃদ্ধ লোকটি আরো জানায়, এই আত্মাটি খুবই চালাক। এই আত্মাটি তার সামনে থাকা মানুষের মাইন্ড পড়তে পারে।

Source

অর্থাৎ তুমি যা ভাবছো, তুমি যা চিন্তা করছো, তোমার সমস্ত গোপন তথ্য এই আত্মাটি বুঝে ফেলবে। তাই আমাদেরকে এই আত্মাটিকে পেছন থেকে আঘাত করার চেষ্টা করতে হবে। এই আত্মাকে কোনোভাবেই খতম করা সম্ভব নয় তবে একে বন্দী করার কৌশল আমাদেরকে পেছন থেকেই করতে হবে।এরপর আত্মাকে বন্দী করার জন্য তারা একটি কৌশল বের করে। কৌশলটা হলো বাকি চার বন্ধুর মধ্যে একজন এ প্ল্যান সম্পর্কে কিছুই শুনবে না। বাকিরা মিলে আত্মাকে বন্দি করার কৌশল করবে এবং যে এই প্ল্যান সম্পর্কে কিছুই জানবেনা তাকে আত্মার সামনে যেতে হবে এবং আত্মাটি যখন তাকে মারার চেষ্টা করবে তখন সে কোনভাবে সেই বেসমেন্টের ঘরটিতে অর্থাৎ যে রুমে আত্মা টি বন্দি ছিল সেই বন্দি করা রুমে ঢুকে যাবে। যখন সেই আত্মাটি ওর পেছনে পেছনে সেই রুমের সামনে যাবে তখন আমরা বাকিরা পেছন থেকে আত্মাকে ওই রুমে ধাক্কা দিয়ে ঢুকিয়ে বন্দি করে দেবো। এভাবে তারা তিনজন বন্ধু ও বৃদ্ধ লোকটি সহ এই কৌশলটি করে ফেলে।

Source

যে একজন এই প্ল্যান সম্পর্কে কিছুই শুনে ছিল না তার নাম ছিল রকি। কিন্তু রকি তার বাকি তিন বন্ধুকে অবিশ্বাস করতে শুরু করে। যখন রকি কে প্ল্যান শুনতে দেওয়া হয়না এবং তাকে রুমের বাইরে চলে যেতে বলে তখন রকি ভাবে হয়তো এরা সবাই মিলে আমাকে আত্মার হাতে মেরে ফেলে নিজেরা আমাকে রেখেই পালিয়ে যাবে। এ অবিশ্বাস নিয়ে রকি লুকিয়ে তাদের সমস্ত প্ল্যান শুনে ফেলে। এরপর একটা সময় তারা বুঝে ফেলে রকি তাদের সমস্ত প্লান শুনে নিয়েছি। এ কারণে রকি ও বাকিদের মধ্যে বড়োসড়ো একটা মারামারি হয়। এই মারামারিতে ভুলবশত রকি ঝুল বারান্দা থেকে নিচে পড়ে মারা যায়। এর সাথে সাথে তাদের করা প্ল্যান টাও নষ্ট হয়ে যায়। কারণ এই প্ল্যান সম্পর্কে সবাই জানে। আত্মাটি তাদের সামনে আসলেই সব বুঝে ফেলবে এবং সে সাবধান হয়ে যাবে।এ কথা চিন্তা করে সবাই ভীষণভাবে ভেঙে পড়ে।

Source

এরপর তিন দিন পার হতেই আত্মাটি আরো এক বন্ধুকে মেরে তার শরীর দখল করে নেয়। এরপর আত্মাটি সেই বৃদ্ধ লোকটিকেও মেরে ফেলে। বাকিরা তখন ভাবতে থাকে আমরা কেউ বাঁচবো না আমাদের মৃত্যুও এভাবেই হবে।এরপর জীবিত বন্ধুদের মধ্যে একজন যার নাম জাবেদ সে নিজের মনে মনে ভাবতে থাকে, আমরা কেউই বাঁচবো না যদি আমরা শুধুমাত্র নিজেদের জীবন নিয়ে ভাবি। আমরা এসেছিলাম পাঁচ বন্ধু। মারা গেছে তিন বন্ধু এখন বেঁচে আছি আমরা দুই বন্ধু। আমরা যদি দুইজনই এখান থেকে বেঁচে বেরোতে চাই তবে আমরা দুজনই মারা যাবো। কিন্তু আমাদের দুজনের মধ্যে কেউ যদি নিজ ইচ্ছায় আত্মা টিকে তার নিজের শরীরে প্রবেশের অনুমতি দেয় তাহলে সে এক মিনিটের মতো আত্মাকে বশ করতে পারবে। এবং সেই এক মিনিটের মধ্যে সে যদি নিজের ইচ্ছায় সেই রুমে যেয়ে নিজেকে বন্দী করে নেয় তবে আত্মা সহ সেও ওই রুমে বন্দি হয়ে যাবে। এতে আত্মাটি তাকে মেরে তার শরীর দখল করে নিলেও আত্মাটি সেই ঘর থেকে বেরোতে পারবে না। এভাবে আত্মাটা আবারো আগের মতো সারা জীবন ধরে বন্দি হয়ে যাবে। এই ভাবনা নিয়ে জাবেদ যখন আত্মাটির সামনে দাঁড়ায় তখন আত্মা টি তার মাইন্ড পড়ে তার প্ল্যান সম্পর্কে সব বুঝে ফেলে।ঠিক ওই মুহূর্তে আরেক বন্ধু যার নাম রাঘব সে জাবেদ কে বাঁচাতে আত্মাকে পেছন থেকে ছুরি মারে এর ফলে আত্মাটি রাঘবের শরীরে ঢুকে যায়। যখন সে বুঝতে পারে সে আত্মা টিকে কন্ট্রোল করতে পারছে তখন সে দৌড়ে বেসমেন্টের ঘরে চলে যায় এবং নিজেই নিজেকে ওই ঘরটাতে বন্দি করে নেই। এবং জাবেদ কে বলে তুমি তালা লাগিয়ে দাও। কিন্তু জাবেদ কিছুতেই রাজী হয়না। সে বলে তোমাকে আমি একা রেখে যাবো না। তোমাকে আমি আমার সাথে নিয়ে যাবো। তখন রাঘব বলে, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই এই আত্মাটি আমাকে মেরে আমার শরীর পুরোপুরি ভাবে দখল করে নেবে। তখন আমি আর আমি থাকবো না। শরীর আমার থাকবে কিন্তু আত্মাটি আমার শরীর দখল করে নেবে। সে তোমাকেও মেরে ফেলবে এবং আত্মাটির লক্ষ্য পূরণ হয়ে যাবে। তুমি তাড়াতাড়ি চলে যাও, তোমাকে বাঁচতে হবে। এরপর জাবেদ তার অনিচ্ছা সত্বেও রাঘব কে বন্দি করে দেয় এবং সে পালিয়ে যায়। এভাবে আত্মাটি আবারো ওই বেসমেন্টের ঘরে বন্দী হয়ে যায়।

আর এখানেই আমার ভয়ানক ভূতের গল্পটি সমাপ্ত হলো।

ধন্যবাদান্তে,,

আমি@Al-Amin ইসলাম , আমি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, আমার ইচ্ছা আমি দেশ ও দশের জন্য ভবিষ্যতে কিছু করতে চাই, আমার গর্ব হয় নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয় দিতে। আমি গর্বিত বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে। বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ, বাংলাদেশের মানুষ মাছে ভাতে বাঙালি, প্রকৃতির রূপ, রস ,গন্ধ সবকিছুই আমার অহংকার।

প্রয়োজনে পাশে আছি আমার সাথে যোগাযোগ করুন:

ফেসবুক || টুইটার || ইউটিউব || ডিস্কোড

---