বন্যার সময় আমাদের করণীয়।
বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম
আসসালামু আলাইকুম
শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভালো আছেন। আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি।
প্রিয়, আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে আবার এসে হাজির হলাম। আজ আমি আপনাদের, বন্যার সময় আমাদের করণীয় বিষয় সমূহ সম্পর্কে বলতে চাই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি দেখবেন আশা করি।
আসুন শুরু করি
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশে প্রতি বছর কম বেশি বন্যা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে হচ্ছে দুর্যোগপ্রবণ দেশ। বাংলাদেশ প্রতিবার বন্যায় প্লাবিত হয়। তবে কিছু কিছু বন্যা খুবই ভয়াবহ হয়ে থাকে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে বাংলাদেশে বন্যার প্রকোপ অনেক বেশি। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী দেশ। তাছাড়া হিমালয়ের পর্বতমালা গুলোর পাশে বাংলাদেশের অবস্থান। হিমালয়ের বরফগলা ও বৃষ্টির পানিতে তুলনামূলকভাবে পানির উচ্চ প্রবাহের কারণে বাংলাদেশ বন্যায় প্লাবিত হয়। তাছাড়া মৌসুমী ঋতুতে অতি বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশের বন্যায় প্লাবিত হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের বন্যার আরেকটি বিশেষ কারণ হলো আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের পানি অস্বাভাবিকভাবে আমাদের দেশে প্রবাহিত হওয়া। বাংলাদেশে বেশ কয়েকবার বন্যা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। কিছু বন্যার ধ্বংসযজ্ঞ এতো বেশি ছিলো যে বাংলাদেশের তিনভাগের দুই অংশের বেশি পানিতে তলিয়ে গিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রতি মুহূর্তে আমাদের দেশের পরিবেশের ভারসাম্য হারিয়ে যাচ্ছে। এতে করে প্রতিবার আমাদের দেশে ব্যাপক হারে বন্যার সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমাদের দেশে ঘন ঘন বন্যার ফলে দেশের বিপুল জনসংখ্যার মাঝে ক্ষুধা, দারিদ্র, বেকারত্বের সমস্যা সম্মুখীন হয়।
তাছাড়া পরিষ্কার পানি ও স্যানিটেশনের সংকট,পুষ্টি জনিত সমস্যা এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবের মধ্যে পড়তে হয়। জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন এর ফলে আমাদের দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি বন্যার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। বন্যার ফলে পানি বাহিত সংক্রামক রোগের হার ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। বন্যা আমাদের দেশে প্রতিবার অভিশাপ হিসেবে দেখা দেয় । বন্যার ফলে গ্রাম অঞ্চলের প্রান্তিক জনগণ বেশ ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। বন্যার কারণে বিদ্যুৎ, পানি এবং গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দেয়। রাস্তার ক্ষতি হওয়ার কারণে পরিবহনের ক্ষেত্রে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হয়। কৃষির অর্থনৈতিক অবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। প্রান্তিক কৃষক সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে।
সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। বন্যার সময় সাধারণ জনগণের অনেক কিছুই করণীয় থাকে। এতে করে বন্যার হাত থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যায়। বন্যার আগাম সতর্ক বার্তা পেলে গৃহপালিত পশু, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং পরিবারের সদস্যদের কে সাথে নিয়ে নিরাপদ স্থানে বা, সরকার কর্তৃক আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যেতে হবে। বন্যার সময় শুকনো খাবার মুড়ি, চিড়া, বিস্কুট এবং শুকনো নারিকেল জাতীয় ফল সংরক্ষণ করতে হবে। বন্যার সময় খাবারের সংকট তীব্রভাবে দেখা দেয় তাই যতো সম্ভব শুকনো খাবার সংগ্রহ করা উচিত।
বন্যার সময় খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে পানিবাহিত রোগের সংক্রামক চারিদিকে দ্রুত চড়িয়ে পড়ে। তাই বিশুদ্ধ খাবার পানি সংগ্রহ করতে হবে। বন্যার সময় গবাদি পশু এবং শিশুদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে কারণ বন্যার সময় গবাদি পশুর জন্য কাঁচা ঘাস পাওয়া যায় না। তাই শুকনো ঘাসের ব্যবস্থা করতে হবে। পরিবারের ছোট শিশুদের প্রতি সবসময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে পানিতে চলে না যায়। বন্যার সময় পানির স্রোত অনেক বেশি থাকে এবং অনেক জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয় এতে করে শিশুরা পানিতে পড়ে মারা যেতে পারে। এই জন্য ছোট শিশুদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে আমাদের ।
বন্যার সময় নিরাপদ জায়গা ছাড়া অন্য কোন জায়গায় চলাফেরা করা উচিত নয়। কারণ বন্যার সময় অনেক প্রকার পোকামাকড় এবং খুবই বিষাক্ত সাপের উপদ্রব বেশি হয়ে থাকে। বন্যার সময় প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম সাথে রাখতে হবে। কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে যাতে তাকে যেন প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া যেতে পারে। বন্যার সময় এই বিষয় গুলো প্রতি নজর দিলে বন্যার হাত থেকে জনজীবন এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা রক্ষা পাওয়া যাবে।
পোস্টটির কোথায় ভুল ত্রুটি হলে সুন্দর ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।
এতক্ষণ আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে আমার পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আপনাদের উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা পেলে আমি অন্য কোন বিষয় উপস্থাপন করবো, ইনশাআল্লাহ।
অন্য সময়ে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা হবে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিবেন । এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।
সবাইকে শুভ রাত্রি
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।
আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা 💜💙 এবং অভিনন্দন রইলো।
আমার পরিচিতি
আমি আওলাদ হোসেন আজিম ।আর আমার ইউজার নাম @ah-agim আমি একজন বাংলাদেশী। মাতৃভাষা বাংলায় বলে পেরে আমি খুব গর্বিত। আমার মনে ভাষা বাংলায় প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সন্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন, মডারেটর সহ সকল সদস্যদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা বিরাজমান। আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমি বিভিন্ন ধরনের কাগজের ( কারুকাজ ) এবং বিভিন্ন রকমের রান্না ( রেসিপি ) করতে পছন্দ করে থাকি। আমি ফটোগ্রাফি করে থাকি। ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে অনেক অনেক বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সমূহ ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে ভালো লাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
![witness_proxy_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
https://x.com/MdAgim17/status/1812021704463646893?t=yySkwlFotHblT-CTlzmS5Q&s=19
বেশ উপকারী এবং সময়োপযোগী পোস্ট। অতিবৃষ্টি এবং আরো নানা কারনে বাংলাদেশে বন্যা হয় এতে করে আমাদের অনেক ক্ষয়ক্ষতি।বন্যার সময় কি করতে হবে তা জানানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
বন্যার সময় উপকূলীয় এলাকার মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।ভোগান্তির দিনগুলো যারা অতিক্রম করে তারাই জানে এই পরিস্থিতি কতটা কষ্টের।আপনি দারুন শিক্ষণীয় একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
বন্যার ক্ষয়ক্ষতির কথা শুনে সত্যিই অনেক খারাপ লাগে। বিভিন্ন এলাকায় এখনো মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। তাদের কথা ভাবতেও খারাপ লাগছে ভাইয়া। বন্যার সময় করণীয় বিভিন্ন পরামর্শ আপনি আপনার পোস্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাই।
বন্যার এই সমস্যা প্রান্তিক এলাকার মানুষগুলো খুব ভালো করে জানে। তারা একটা অসহনীয় অবস্থার মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত করতে থাকে যেটা একেবারে অমানবিক। বন্যার সময় তো অনেক দিকে খেয়াল রেখে চলতে হয়। তবে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হলো এটার একটা চিরস্থায়ী সমাধান।